নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমার কাছে আমার কিছু কথা

০১ লা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩৫

হাজার-লক্ষ-কোটি মানুষের ভীড়ে প্রতিদিন গণমানুষের মিছিল-মিটিং। তবু খুঁজে দেখো মানুষ কয়জন? কিংবা এমন মানুষ কয়জন, যাকে কমপক্ষে 'মানুষ' বলতে পারো? এই পর্যন্ত তুমি যতোটুকু এসেছো, নিশ্চয় দেখেছো জাত-বেজাত, কিন্তু কয়জনকে তুমি মানুষ বলতে পেরেছো? প্রতিদিনই তো কতো মানবজন্মের সংবাদ পাও, কিন্তু বলো, কয়জন মহামানব জন্মের সংবাদ আছে তোমার কাছে? প্রেমের অভিনয় মঞ্চ থেকে রাজপথ কিংবা মোবাইল ফোনে প্রতিদিন রঙবেরঙে চলে, দেখো, আত্মবিসর্জন দিয়েও একজন প্রেমিক পাও? যাকে তুমি প্রেম ভেবে গলা জড়িয়ে চুম্বন করছো বৈধ কিংবা অবৈধ পন্থায়, তাঁর সাথে কথা বলছো ফোনে কিংবা মুখোমুখি, আদান-প্রদান করছো দৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্টিপাত পর্যন্ত অনেক কিছু, সে যে তোমাকে প্রেম করে তা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে? হয়তো বয়সের দোষে লাফ দিয়ে বলবে, সে আমার জন্যে মরতে রাজি। আমি বলবো মিথ্যা, এটা তোমার মনের আবেগ। কিন্তু তুমি খুঁজে দেখো এই আবেগ তাকে কতোটুকু স্পর্শ করে। সে কি সিঁড়ি দিয়ে উঠতি পথে তোমার সাথে একটু খেলে যেতে চায়? সে কি ফুলের ভ্রমর তোমার মধু আহরণে মিথ্যা প্ররোচনা দিচ্ছে? এসব তোমার দেখা প্রয়োজন। তোমার বোঝা প্রয়োজন, সে কেনো তোমার ভুলকে ভুল না বলে শুধু জ্বি জ্বি করে। তুমি বলবে, সে তোমায় প্রচণ্ড ভালোবাসে বলে রাগাতে চায় না, যদি হারিয়ে ফেলে -- এই ভয়ে। আমি বলবো, রোগের চিকিৎসা না করে যে ডাক্তার শুধু রোগীর দেহে হাত বুলায় সে নিশ্চয় খুব ভালো ডাক্তার নয়। সেই বন্ধুই ভালো বন্ধু যে সমালোচনা করে সামনাসামনি। সেই মানুষই ভালো মানুষ যে বন্ধুর মুখের সমালোচনা শোনার পর ধৈর্য ধরে এবং ভুল সংশোধনের চেষ্টা করে। আমি এসেছিলাম যে কথাগুলো তোমায় বলতে, আমার অযোগ্যতার কারণে তা হয়তো বলতে পারি নি। কিংবা কিছুটা বলতে চেষ্টা করেছি। হয়তো তুমি আমার কথা বুঝেছো, কিংবা আমি বুঝাতে পারি নি। যদি তোমাকে বুঝাতে না পারি তবে তা আমার ব্যর্থতা। অবশ্য এই ব্যর্থতায় আমার দুঃখ থাকলেও তৃপ্তি আছে। বিজয়ের মিছিলে আনন্দের স্রোত হয়তো হাজারও দেখেছো তুমি কিন্তু পরাজয়ের আনন্দে আত্মহারা কয়জনকে দেখেছো? শুধু সে-ই পারে পরাজিত হয়েও আনন্দিত হতে যার কর্মের প্রতি বিশ্বাস ছিলো, প্রেম ছিলো, অর্থাৎ যে প্রকৃত কর্মপ্রেমিক। আমি দুঃখিত, তোমাকে আমার প্রকৃত পরিচয় দিতে পারলাম না বলে। আসলে প্রেমিক ছাড়া আমার দ্বিতীয় কোন পরিচয় থাকলেও জানা নেই, কিংবা জানলেও জানাতে চাই না। প্রেম কী? কেনো প্রেম হয়? এগুলো তাত্ত্বিক ব্যাপার। তত্ত্ব নিয়ে ব্যবসা করেন অধ্যাপক কিংবা রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবীরা। আমার মতো মূর্খ প্রেমিকরা সকল নিউটনীয় হিসাব ভেঙে প্রেমের দুয়ারে এমন অঞ্জলি দিতে বেশি পছন্দ করে, যাতে থাকে আলো, শুধু আলো। অনেকে বলেন, এটা আলো নয়, আবেগ। আমি বলি, তবু ভালো। হাজার বছরের ভণ্ডামি থেকে এক মুহূর্তের এই আবেগের আলোর অনেক মূল্য একজন প্রেমিকের কাছে। মিষ্টির স্বাদ জিহ্বায় না দিলে বোঝা যায় না। যে জীবনে মিষ্টি খায় নি তার কাছে মিষ্টির স্বাদ বলা আর ভণ্ড প্রেমিকের কাছে আত্মার খবর দেওয়া সমান। যারা স্বার্থের জন্যে প্রেম করে তারা স্বার্থের জন্যে খুনও করতে পারে। স্বার্থ নিয়ে বিলাস করা যায়, প্রেম করা যায় না। আমি একটা আত্মা নিয়ে এসেছিলাম তোমার কাছে। তোমার হাতে হাত রেখে ঘোষণা দিয়েছিলাম -- আই এম কিং অফ লাভ। আর তোমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে একদিন প্রশ্ন রেখেছিলাম; ভাত+ভালোবাসা=? মানুষের মৌলিক সমস্যা কী? ভেবেছিলাম তুমি আত্মায় আত্মা রেখে সকল স্বার্থের উর্ধে ওঠে আলোকিত করবে এই অধমের আত্মা, কিংবা আমিও আলো দেবো তোমাকে। হয়তো তুমি আমায় আলো দিয়েছো, হয়তো আমি তোমাকে আলো দিতে পারি নি। তবে চেষ্টার কোনো কমতি হয় নি। অবশ্যই এই না পারায় তোমার দোষ নয়, আমার অযোগ্যতা। আমি জীবনের সব দোষ আজ মাথা পেতে মেনে নিলাম। আজকে ব্যর্থতার সোপানে দাঁড়িয়ে তোমার সাথে কথা বলছি। হয়তো এটাই আমার জীবনের শেষ কথা। হয়তো এটাই তোমার সাথে আমার মূল কথার সূচনা। আমি আমার পরিচয় পরিষ্কারভাবে না বললেও আশা করি তুমি বুঝতে পেরেছো -- আমি কে? আমি কেনো এসেছিলাম তোমার কাছে।
বিষয়টা আরেকটু পরিষ্কার করে বলি, আমি প্রেমিক। এই পরিচয় ছাড়া তোমার কাছে আমার অন্য কোনো পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। তারপরেও যদি জানতে চাও তবে বলবো -- আমি একজন রক্ত-মাংসের স্বাপ্নিক মানুষ। আমি তোমার কাছে এসেছিলাম একটা প্রেম এবং একটা স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রত্যাশায়। আমার একটা বিশ্বাস ছিলো, তুমি আর আমি হাতে হাত রাখলে আলোকিত হয়ে যাবে -- পুরো পৃথিবীর না হোক -- কমপক্ষে আমাদের পাশের চিত্রগুলো। আমি এই পৃথিবীটাকে সর্বদাই দেখি আমার দেশের ভেতর। আর বলো, তুমি আর আমি ছাড়া এ দেশের নাম কি মাটি নয়? দুঃখিত, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মতো আমি বাংলাকে মায়ের সাথে তুলনা না দিয়ে তোমার সাথে তুলনা দিলাম বলে। তবে এই ভুল খুব ইচ্ছাকৃত। কারণ, আমি আমার মাকে ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি আকাশ-পাতাল সব কিছু থেকে বেশি। কিন্তু আগামীর স্বপ্নে মাকে নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে সরব হতে পারি না। তার কাছ থেকে প্রেরণা নিতে পারি, কিন্তু তাকে নিয়ে শত্রুর মুখোমুখি লড়াকু হতে পারি না। আগেই বলেছি, আমি একজন রক্ত-মাংসের স্বাপ্নিক মানুষ। রক্ত-মাংস ছেড়ে শুধু স্বাপ্নিক হতে পারি নাই বলে দুঃখিত। আমি কিন্তু এখন স্বীকার করে নেবো যে, তোমার সাথে আমার প্রেম নিঃস্বার্থ নয়, এখানে একটা আকাঙ্ক্ষা আছে, আছে প্রচুর লোভ। অনেকে বলেন, ভাই, আমি ভণ্ডামি জানি না। আমি বলি, ভাই, আপনি সবচাইতে বড় ভণ্ড। ভণ্ডামি আপনার না জানার কথা নয়। আপনি অবশ্যই জানেন। দেখুন, আমিও কিন্তু সকল ভণ্ডামি জানি, আর এই জানি বলেই বলতে পারি, কে প্রেম করে আর কে করে ভণ্ডামি।
সব কথা নীরবে মেনে যাই বলে তুমি আমায় অজ্ঞ কিংবা ব্যক্তিত্বহীন মনে করো না। অহংকার নেই, আছে অহম। আমি তোমার কাছে এসেছিলাম মূলত তোমার মিথ্যা অহংকারগুলোকে পরিষ্কার করে ভেতরে অহম জাগ্রত করতে। যেটাকে কবিগুরু ইকবাল বলেছেন, আসরারে খুদি। আমি বলতে চেষ্টা করেছি বারবার এই মিথ্যা অহংকার তোমাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে। আমি জানি, তোমার কোথায় কী ঘটেছে, কোথায় কোন ত্রুটি আছে। আমি সেই আলোচনায় যেতে চাই না। আমি অতীতকে অতীতে রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন বুকে লালন করি। আমি প্রায়ই বলে থাকি -- পাস্ট ইজ পাস্ট, ফিউচার ইজ লাস্ট। আগামীতে আমাকে বহুদূর এগিয়ে যেতে হবে। আমার সামনে বিশাল সংগ্রামের কিংবা ফসলের মাঠ। আমাকে প্রচুর চাষ করতে হবে। আমার আলোকিত স্বপ্নের মঞ্জিলে যেতে যেতে তোমাকেও সাথে নিয়ে যেতে চাই। তাই পাগলের মতো ছুটে আসি তোমার কাছে। দুই হাত জোড় করে ডাকি সামনের পথে। দেয়ালের ঐদিক দেখা যায় না বলে বিশ্বাস করাতে পারি না তোমাকে অনেক জিনিস। কাকুতি করি, ধমক দিই, প্রেমের কথা বলি, হুমকি দেই, হাত ধরে টানি, চোখের জল ফেলি। এ সবই করি একটা বিশ্বাস থেকে -- যদি কোনোভাবে একবার তোমাকে আলোর মঞ্জিল দেখানো যায়। আর শুধু এজন্যেই আমি নিজেকে মাটির সাথে মিশিয়ে তোমাকে বুকে স্থান দিয়েছি। আমি আমার চেষ্টার কোন ত্রুটি ইচ্ছেকৃত রাখি নি। ভুলবশত ত্রুটির জন্যে দুঃখিত। প্রেমের বস্তু পাই নি বলে আমি আমাকে ব্যর্থ বলবো না। কারণ, প্রকৃত প্রেমিক কখনো ব্যর্থ হয় না। ব্যর্থ তো তারা যারা প্রেমের পথে হাঁটতে গিয়ে অধৈর্য হয়ে বিলাস খুঁজে আলেকজান্ডার কিংবা সম্রাট শাহজাহানের মতো রক্তপাত করে। শক্তি থাকলে জনগণের সম্পদ দিয়ে বিলাসী কবর তৈরি করে তাজমহল নাম দেওয়া যায়, প্রেমিক হওয়া যায় না। প্রেমের ধর্মটাই হচ্ছে না পাওয়ায় তৃপ্ত হওয়া। রিপুর পরাজয়কে বিজয়ী ভেবে তৃপ্ত হওয়ার নাম প্রেম। প্রেমিকা কর্তৃক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে বেদনার আনন্দে হাস্যোজ্জ্বল থাকার নাম প্রেম। তাজমহলের নাম প্রেম নয়। তবে স্মরণ রাখবে, একজন আলোকিত প্রেমিক তখনই নিজকে ব্যর্থ মনে করে চোখের জলে বুক ভাসায় যখন তার প্রেমিকা আলোর পথ ছেড়ে নুহের স্ত্রীর মতো অন্ধকারের দিকে দৌঁড়াতে থাকে, আর সে নুহের মতো পায়ে ধরেও থামাতে পারে না। তুমি যে প্রায়ই আমার চোখে জল দেখো তা কিন্তু এই ব্যর্থতার জল। তুমি কোথায় ভুল করেছো এবং কোথায় ভুল করছো ইত্যাদি শোনার ধৈর্য্য তোমার নেই। তাই আমি চিহ্নিত করে বলে তোমাকে উত্তেজিত করতে চাই না। কারণ, কাউকে উত্তেজিত করা আমার মূল উদ্দেশ্য নয়। আমি চাই তুমি শান্ত মাথায় ভেবে-চিন্তে কাজ করো। আমি চাই তুমি তোমার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের জন্যে বুদ্ধিকে জাগ্রত করো। আমাকে তুমি ভালো না বাসলেও আমি তোমাকে ভালোবাসি, এই সত্যটুকু তুমি না জানলেও আমি জানি। আর এই জানি বলেই শত ঘাত-প্রতিঘাতের ভেতরও তোমার মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করি প্রতিক্ষণ, প্রতিদিন। আমার কবিতা, গান, গল্প, প্রবন্ধে আমি কোনো না কোনোভাবে তোমার কথা বলতে চেষ্টা করেছি। জানি, আমার লেখাগুলো পড়ার সময় কিংবা রুচি তোমার হয়তো নেই। যদি কখনো সময় কিংবা রুচি হয় তবে পড়ে দেখো, এতে তুমি আমার পাশাপাশি তোমাকে দেখতে পাবে অসংখ্য নাম এবং রূপে। কাল-মহাকালে যখনই সময় হয় তোমার, তুমি পড়ে নিও। এখানে অবশ্যই তুমি তোমাকে দেখতে পাবে স্বরূপে-বিরূপে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯

বিজন রয় বলেছেন: মার কবিতা, গান, গল্প, প্রবন্ধে আমি কোনো না কোনোভাবে তোমার কথা বলতে চেষ্টা করেছি।

শেষের দিকে খেদ ফুটে উঠেছে।
++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.