নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুধু মাত্র ১৯৫ জন পাক সেনা ধর্ষণ করে নাই.,শুধু তারা হত্যাকান্ড ঘটায় নাই প্রত্যেক পাক সেনা ধর্ষণ করেছে হত্যা করেছে

৩১ শে মার্চ, ২০১৬ ভোর ৬:১৮

সামান্য কিছু কথা বলবো,ছোট মুখে একটু বড় কথা কিন্তু সত্যি কথা
আমাদের অনেক পরিচিত মানুষদের অযথা করা একটা ভুলের কথা
আমার এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বুদ্ধিজীবীদের ওপর একটা ক্ষোভ আছে। সেই ক্ষোভটা হচ্ছে- তারা বারবারই বাংলাদেশী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি যখন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বলেন তখনই বলেন ১৯৫ জন পাকিস্তানির বিচারের কথা। বারবার বলতে বলতে ভাব খানা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন পাকিস্তানের ১৯৫ জন সৈনিক আর অফিসারই যুদ্ধের সময় অপরাধ করেছে। বাকিরা সব দুধে ধোয়া তুলশিপাতা।
চটপট কিছু ডাটায় চোখ বুলিয়ে নেই-
১.
উদ্ধৃত করছি অস্ট্রেলিও চিকিৎসক ডক্টর জিওফ্রে ডেভিসের লেখা "দ্য চেঞ্জিং ফেস অব জেনোসাইড" গ্রন্থ থেকে। উল্লেখ্য ১৯৭২ সালে অস্ট্রেলিও চিকিৎসক ডক্টর জিওফ্রে ডেভিস বাংলাদেশে আসেন। দেশ স্বাধীন হবার একদম পরপরই যাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়েছিলো বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুরোধে ১৯৭২ সালে ধর্ষিত বীরাঙ্গনাদের চিকিৎসা এবং গর্ভপাতের জন্য। ‘দ্য চেঞ্জিং ফেস অব জেনোসাইড’ ড. জিওফ্রে ডেভিসের ডাইরি। এই ডাইরিতে উঠে এসেছে অজানা অনেক তথ্য। আমি কিছুটা সম্পাদনা করে তুলে ধরছি-
ড. ডেভিস তার ডাইরির এক জায়গায় লিখেছেন-
ধর্ষণের শিকার গর্ভবতীদের ১০ ভাগ দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন। এভাবে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ অবাঞ্ছিত গর্ভবতীদের সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন লাখ। যেসব জেলা আমি ঘুরেছি, এদের বেশিরভাগেই দেখা গেছে অবাঞ্ছিত গর্ভবতীদের সংখ্যাটা ছিল গ্রাম পিছু ১০ জন করে!
ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ থানা পিছু ছিল দেড়হাজার করে এবং জানুয়ারির শেষ নাগাদই গ্রামের দাই, হাতুরে ও হোমিওপ্যাথরা মিলে এদের বেশিরভাগেরই ব্যবস্থা করে ফেলে। রয়ে যায় অল্প কজনা। থানা পিছু দেড় হাজার করে ৪৮০টি থানায় (যেহেতু প্রশাসনিক ভবন, এখানে সামরিক অবস্থান দীর্ঘমেয়াদী হওয়াটাই স্বাভাবিক) ৩ লাখ ৬০ হাজার পোয়াতির সন্ধান পাওয়া যায়।
২.
যুদ্ধশিশু সম্পর্কে সারা পৃথিবী জুড়ে যে গবেষণা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সুসান ব্রাউনমিলার অ্যান্থনির (জন্ম: ফেব্রুয়ারি ১৫, ১৯৩৫) গবেষণা গ্রস্থ-নিবন্ধগুলো। ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর সাড়া জাগানো গ্রন্থ ‘অ্যাগেইনস্ট আওয়ার উইল: ম্যান, উইম্যান অ্যান্ড রেপ। সাইমন এন্ড শুস্টার নামের প্রকাশনী থেকে বের হয় এই গ্রন্থটি। আজ পর্যন্ত ১৬ টি বিদেশী ভাষায় অনূদিত হয়েছে এটি। বইটির কাজ যখন শুরু হয়- তখন বাঙলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে, অর্থাৎ এটি ১৯৭১ সালের ঘটনা। সম্ভবত সে কারণেই বইটির একটা বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলী এবঙ তার আদলে যুদ্ধশিশু সম্বন্ধে আলোচনা। বইটির কিছু অংশের অনুবাদ এখানে তুলে ধরছি-
….ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানড প্যারেন্টহুড আবিষ্কার করে যে, স্ত্রী রোগের সংক্রামণের মাত্রা ব্যাপক। একজন অস্ট্রেলিয় চিকিৎসক নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন. “পরীক্ষা করে প্রায় প্রতিটি ধর্ষিতারই যৌনরোগ পাওয়া গেছে”।
সবচেয়ে ভয়াবহ বিপদটি ছিলো গর্ভধারণ। সন্তান-সম্ভবা ধর্ষিতার সংখ্যা সঠিকভাবে নিরূপণ করা না গেলেও ২৫,০০০ জন ছিলো একটি গ্রহণযোগ্য সংখ্যা। ধর্ষিতা অন্তঃসত্ত্বা মেয়েদের মনোভাবটি ছিলো কল্পনাতীত। সামান্য অংশই বাচ্চা ধারণ করতে আগ্রহী ছিলো। প্রায় জন্মদানের পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া মেয়েরা অনাগত বাচ্চার ভবিষ্যত নিয়ে সামান্যই আগ্রহ প্রকাশ করতো। জোরপূর্বক ধর্ষণের ফসল হিসেবে বাচ্চাদের ভীতিকর আবির্ভাব উপলব্ধির সঙ্গে সঙ্গে এটাও অনায়াসে অনুমেয় যে, বাঙলাদেশে ফরসা রঙের পাঞ্জবি বৈশিষ্ট্যের জারজ সন্তানেরা কখনোই বাঙালি সংস্কৃতিতে গৃহীত হবে না- এমনকি তাদের মায়েরাও না।”
গবেষক সুসান ব্রাউনমিলার ধর্ষণের সংখ্যাকে প্রায় চার লাখ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন-
During the nine-month terror, terminated by the two week armed intervention of India, a possible three million people lost their lives, ten millions fled across the border to India and 200,000, 300,000 or possible 400,000 women (three sets of statistics have been variously quoted) were raped. Eighty percent of the raped women were Moslems, reflecting the population of Bangladesh, but Hindu and Christian women were not exempt.
[Against Our Will : Men, Women and Rape; Susan Brownmiller; Page 81]
সুসান ব্রাউনমিলার আরও লিখেছেন;
“Rape in Bangladesh had hardly been restricted to beauty… girls of eight and grandmothers of seventy-five had been sexually assaulted.”
বাংলাদেশীদের ওপর পাকিস্তানিদের ধর্ষণ প্রক্রিয়া শুধুমাত্র যৌন লালসা চিরতারথ করার জন্য ছিলো না। আট বছরের শিশু থেকে পচাত্তর বছরের নানি-দাদিরাও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর পাকিস্তানীরা স্থানিকভাবেই শুধু ধর্ষণ করেনি, শত শত নারীকে মিলিটারি ব্যারাকে নিয়ে আটকে রেখেছে রাতে ব্যবহারের জন্য।
Some women may have been raped as many as eight times in a night. How many died from this atrocious treatment, and how many more women were murdered as part of the generalized campaign of destruction and slaughter, can only be guessed at.
৩.
ডা. এম.এ. হাসান তাঁর গ্রন্থে উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানে ধর্ষিতের সংখ্যা দুই থেকে চার লাখের কথা বলা হয়েছে। তাঁর নিজের জরিপের উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন,
‘১৯৯১-২০০২ সাল পর্যন্ত দেশের ৪২ জেলার ২৫টি থানায় পরিচালিত আমাদের গবেষণায় গৃহীত অসংখ্য সাক্ষাতকারের মধ্য থেকে নির্বাচিত ২৬৭ ব্যক্তির সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে, একাত্তরে দু’লাখ দু’হাজার জন নারী ধর্ষিত হয়েছে ওই সব স্থানে।… সারা দেশে ধর্ষিত ও নির্যাতিত নারীর সংখ্যা সাড়ে চার লাখের ওপরে। ডক্টর হাসান পরবর্তীতে লেখেন ‘যুদ্ধ ও নারী’। মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর নির্মমতা নিয়ে যারা সন্দিহান তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য এই বই। এই বইটিতে উদ্ধৃত হয়েছে এমন সব ঘটনা যা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে আগ্রহী মানুষকে অনেক চিন্তার খোরাক জোগান দেবে।
এবারে একটু দৃষ্টিপাত করা যাক ওয়ারক্রাইম ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির দিকে। স্বাধীন বাংলাদেশে এইসব বিরঙ্গনাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশী কাজ তারার করেছে। তারা একাত্তরের নারী নির্যাতনের একটি সামগ্রিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করে, এর মাধ্যমে জানা যায়-
১. স্পট ধর্ষণ, স্পট গণধর্ষণ ও বন্দী নির্যাতিতার সম্মিলিত সংখ্যা চার লাখ আটষট্টি হাজার (স্পট ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার তিন লাখ সাতা হাজার ছশ এবং বিভিন্নভাবে পাকিস্তানীদের নিকট বন্দী নির্যাতিত নারী এক লাখ চল্লিশ হাজার চারশ’ নারী)।
২. চিহ্নিত স্থানে নির্যাতিতা নিহত ও অপহৃতসহ স্পট ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার- তিন লাখ ষাট হাজার। এঁদের মধ্যে শুধুমাত্র স্পট ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার প্রায় তিন লাখ সাতাশ হাজার যা মোট নির্যাতিতার সত্তরভাগ। এঁদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন প্রায় ত্রিশভাগ অর্থাৎ এক লাখ আট হাজার নারী।
৩. নির্যাতিত বন্দী নারী প্রায় এক লাখ চল্লিশ হাজার (এক লাখ চল্লিশ হাজার চারশ’) যা মোট নির্যাতিতার প্রায় ত্রিশভাগ। এরমধ্যে কারাগার, ক্যাম্প, বাঙ্কার প্রভৃতি স্থানে নির্যাতিতার সংখ্যা মোট নির্যাতিদের প্রায় আঠারভাগ।
এছাড়াও বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্ট, মার্শাল ল’ আদালত এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলের বাড়িঘর, অফিস আদালত, হোটেল, বিনোদন কেন্দ্র প্রভৃতি স্থানে নির্যাতিত হন বারোভাগ (ক্যাটাগরি দুই-শতকরা পাঁচভাগ এবং ক্যাটাগরি তিন-সাতভাগ)।
৪. বন্দী নির্যাতিত নারীদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা আশিভাগ অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ছিয়াশি হাজার। এঁদের মধ্যে চল্লিশভাগকে হত্যা করা হয়েছে অথবা তাঁরা নিজেরাই আত্মহত্যা করেছেন।
[একাত্তরের নারী নির্যাতন : ইতিহাসের কৃষ্ণ অধ্যায়; ডা. এম এ হাসান; প্রসঙ্গ ১৯৭১ : মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, পৃষ্ঠা ৩]
.
তাই বারবার বারবার ১৯৫ বলা একটু কমান...
বহির্বিশ্বের চাপ, অর্থনৈতিক দুরাবস্থা, ব্যবসায় রীতিমতো ধস, বাইরের দেশগুলোর হঠাৎ বিরুদ্ধে চলে যাওয়া, প্রতিদিন গণহারে সৈনিকদের মৃত্যু সংবাদ, মুক্তিবাহিনীর বীরোচিত যুদ্ধ সব মিলিয়ে জেনারেল ইয়াহিয়া বুঝতে পেরেছিলেন ক্রান্তিকাল উপস্থিত। খুব বেশিদিন টিকে থাকা অসম্ভবপর। খুনের নেশায় উন্মত্ত ইয়াহিয়া ২৫শে মার্চ গোপণে “অপারেশন সার্চলাইট” এর নির্দেশ দেয়ার সাথে সাথেই বুদ্ধিজীবী হত্যারও নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। আর তার নির্দেশ অনুযায়ী বিগত ন’মাস ধরে বিচ্ছিন্ন অথচ নিয়মিতভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হচ্ছিলো। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় মিত্রবাহিনী যোগ দেয় মুক্তিবাহিনীর সাথে। ইসলামাবাদের শাসক ইয়াহিয়া বুঝে যায় যে সময় হয়ে গেছে।
.
তাই ডিসেম্বরের ১০ তারিখ থেকে মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী নীল নকশা আঁকেন যার ফল ছিলো ১৪ই ডিসেম্বর। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানী বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। তারা কখনোই চায়নি বাঙ্গালিরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। আর তাই তারা চলে যাওয়ার পর যাতে বাঙ্গালিরা কখনোই সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য শেষ করে দেয় বুদ্ধিজীবীদের। সেদিন প্রায় ২০০ জনের মত বুদ্ধিজীবীদের তাদের বাসা হতে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের চোখে কাপড় বেঁধে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগসহ অন্যান্য আরো অনেক স্থানে অবস্থিত নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের উপর বিভৎস নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাদের নৃশংসভাবে রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ গ্রন্থে এ সম্পর্কে বলা হয়, এটা অবধারিত হয়,
“বুদ্ধিজীবীরাই জাগিয়ে রাখেন জাতির বিবেক, জাগিয়ে রাখেন তাদের রচনাবলির মাধ্যমে, সাংবাদিকদের কলমের মাধ্যমে, গানের সুরে, শিক্ষালয়ে পাঠদানে, চিকিৎসা, প্রকৌশল, রাজনীতি ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণের সান্নিধ্যে এসে। একটি জাতিকে নিবীর্য করে দেবার প্রথম উপায় বুদ্ধিজীবী শূন্য করে দেয়া। ২৫ মার্চ রাতে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল অতর্কিতে, তারপর ধীরে ধীরে, শেষে পরাজয় অনিবার্য জেনে ডিসেম্বর ১০ তারিখ হতে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দ্রুতগতিতে।”-যেটা কখনই শুধুমাত্র ১৯৫ জন দ্বারা সম্ভব নয়।
মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীকে এই বুদ্ধিজীবী হত্যার লিস্ট করতে এবং তা হত্যা বাস্তবয়নে সাহায্য করে জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক গঠিত কুখ্যাত আল বদর বাহিনী। বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান ঘাতক ছিলেন বদর বাহিনীর চৌধুরী মঈনুদ্দীন (অপারেশন ইন-চার্জ) ও আশরাফুজ্জামান খান (প্রধান জল্লাদ)। ডঃ গোবিন্দ চন্দ্র দেব, ডঃ মুনীর চৌধুরী, জহির রায়হান, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে প্রথম দাবী তুলেন সংসদে), ডঃ মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, ডঃ আনোয়ার পাশা, ফজলুর রহমান খান, ডাঃ মোঃ ফজলে রাব্বি, শহীদুল্লাহ কায়সার, সেলিনা পারভীন, মেহেরুন্নেসা, ডঃ আবুল কালাম আজাদসহ আরো কতজন! বাংলাপিডিয়া হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষাবিদ ৯৯১ জন, সাংবাদিক ১৩, চিকিৎসক ৪৯, আইনজীবী ৪২, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী এবং প্রকৌশলী মিলে প্রায় ১৬ জনকে হত্যা করা হয়।
সেদিনের সেই হত্যাকান্ড শুধু একটি গণহত্যাই ছিলো না। সেরেফ একটি জাতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া। নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দূর্বল এবং পঙ্গু করে দেয়াই ছিলো তাদের উদ্দেশ্য। সেই ধাক্কা বাংলাদেশ আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। যার কারণে, আজ স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে তর্ক হয়, দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়া, যুদ্ধাপরাধীরা নির্দ্বিধায় গাড়িতে পতাকা লাগিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়ায়, তারাই আজ জননেতা। পৃথিবীর আর কোন দেশের জন্ম ইতিহাস নিয়ে এমন বিভ্রান্তি নেই। জাতি আজ দ্বিধায়, ইতিহাস প্রশ্নবিদ্ধ। আজ প্রজন্ম পাশ্চাত্য সংস্কৃতি নিয়েই ব্যস্ত। অথচ, আজ তাঁরা বেঁচে থাকলে এই দেশটার চেহারা হতে পারতো সম্পূর্ণ অন্যরকম। হয়তো তৃতীয় বিশ্বে আমরাও হতাম উন্নত এক দেশ। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে অনেক উপরে থাকতাম আমরা। কিন্তু বর্বর, জানোয়ার পাকিস্তানিরা ওদের বাঁচতে দেয় নি। বিজয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে তারা তাদের জীবনের বিনিময়ে দিয়ে গেছে আমাদের এই দেশ।
অথচ, আমাদের সময় নেই তাদের দিকে ফিরে তাকানোর। আমরা অনেক এগিয়ে গেছি এখন। সেই দিন ৪৫ বছর আগেই ফেলে এসেছি। তখনকার ঐ মিছে একটা তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে এত মাথা ঘামানোর কি আছে? আমিতো ভালো আছি।মুখস্ত বলে দি ১৯৫ জনের কথা এ-ই তো অনেক।এইসব ইতিহাস শোনার সময় তাদের নেই অথচও কত ব্যাথা মিশে আছে এতে।
১৯৭১ সালের ২৯শে মার্চের সকাল থেকে আমরা মিটফোর্ড হাসপাতালের লাশঘর ও প্রবেশপথের দুই পাশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিববাড়ি, রমনা কালিবাড়ি, রোকেয়া হল, মুসলিম হল, ঢাকা হল থেকে লাশ উঠিয়েছি। ২৯শে মার্চ আমাদের ট্রাক প্রথমে মিটফোর্ড হাসপাতালের প্রবেশপথে যায়।
আমরা পাঁচ ডোম ট্রাক থেকে নেমে একটি বাঙালী যুবকের পচা, ফুলা, বিকৃত লাশ দেখতে পেলাম! লাশ গলে যাওয়ায় লোহার কাঁটার সাথে গেঁথে ট্রাকে তুলেছি। আমাদের ইন্সপেক্টর পঞ্চম আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তারপর আমরা লাশঘরে প্রবেশ করে বহু যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ, কিশোর ও শিশুর স্তূপিকৃত লাশ দেখতে পাই! আমি ও বদলু ডোম লাশঘর থেকে লাশের পা ধরে টেনে এনে ট্রাকের সমানে জমা করেছি, আর গণেশ, রঞ্জিত ও কানাই লোহার কাঁটা বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে পচা গলিত লাশ ট্রাকে তুলেছে।
প্রতিটি শব গুলিতে ঝাঁজড়া করা ছিল, মেয়েদের লাশের একজনেরও স্তন দেখতে পাই নি, যোনিপথ ক্ষত-বিক্ষত ও পেছনের মাংস কাটা ছিল! মেয়েদের লাশ দেখে মনে হয়েছে, তাদেরকে হত্যা করার পূর্বে সজোরে টেনে তাদের স্তন ছিড়ে ফেলা হয়েছে, যোনিপথে লোহার রড বা বন্ধুকের নল ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে! যুবতী মেয়েদের যোনিপথের এবং পেছনের মাংস যেন ধারাল চাকু দিয়ে কেটে নিয়ে পরে এসিড দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে! প্রতিটি যুবতীর মাথায় খোঁপা খোঁপা চুল ছিল। মিটফোর্ড থেকে আমরা প্রতিবারে একশত করে লাশ নিয়ে ধলপুর ময়লা ডিপোতে ফেলেছি।
চুন্ন ডোম
(৭-৪-১৯৭৪)
ঢাকা পৌরসভা
রেলওয়ে সুইপার কোলনী
২২৩ নং ব্লক, ৩ নং গেইট
ফুলবাড়িয়া, ঢাকা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
দলিলপত্র-অষ্ট খন্ড
এই গনহত্যা একটি জাতীকে শেষ করে দেয়ার চেষ্টা,যৌথ অভিজান,একটার পর একটা কনস্ট্রাকশন ক্যাম্প চালানো কখনও ১৯৫ জনের পক্ষে সম্ভব না,যে ৯০০০০ সৈন্য ছিল তাদের প্রত্যেকে(each and everyone)কোন না কোন ভাবে জড়িত ছিল হত্যার সাথে,আমাদের মূর্খতা যে আমরা এটা মাত্র ১৯৫ জনে সীমাবদ্ধ করে রাখি
কথা আসলে সামান্য
ছয় লাখ বীরাঙ্গনার সাড়ে তিন লাখ গর্ভবতী
৩০ লক্ষ শহীদ,কোটি কটি মানুষ দেশান্তর
এইসব বীরাঙ্গনাদের নিশ্চয়ই মাত্র ১৯৫ জন পাক সেনা ধর্ষণ করে নাই.,শুধু তারা হত্যাকান্ড ঘটায় নাই
প্রত্যেক পাক সেনা ধর্ষণ করেছে হত্যা করেছে
তারা প্রত্যেকে ধর্ষক,প্রত্যেকে হত্যাকারী
প্রত্যেকে...Each and everyone..
তথ্যসূত্র-১।আরিফ রহমান
২।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র-অষ্টম খন্ড
৩।শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫৪

বিজন রয় বলেছেন: নতুন কিছু নয়।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৩৪

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: নতুন না হলেও এটা একটা বড় ভুল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.