নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

"হ্যাঁ, মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছিলো"

২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৪:৩৬

"হ্যাঁ, মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছিলো"

গতকাল মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছিলো।
আপনারা ভাবছেন মেয়েটি খুব যন্ত্রনা পেয়েছে?
না তা নয়,ধর্ষণে মেয়েটি শারীরিক থেকে মানসিক যন্ত্রনা বেশি পাচ্ছে!
পরিবারের সবচেয়ে আদরের সে মেয়েটি হাঁটি হাঁটি করে কলেজে পা দিয়েছিলো,
কলেজে উঠেই একটু স্বাধীনতা খুঁজে পেয়েছিলো!

আসলে মেয়েটির লজ্জা পাওয়া উচিত না,
সে ধর্ষিতা বলে। ভয় না পেয়ে চলা উচিত।একসময় তার আর দুঃখ পাওয়াও উচিত না। সে কেন পাবে?
আসলে কি ধর্ষিতা মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছিল, নাকি ধর্ষিতা মেয়েটি আমাদেরকে ধর্ষণ করেছিলো?
আমাদের সমাজ কে, আমাদের বিবেক কে!!

হ্যাঁ মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছিলো,

সোস্যাল মিডিয়ায় কিছু লোক বলছে-এক হাতে কখনো তালি বাজে না,দুজনেরই সমান দোষ!
কিছু লোক বলেছে- তারা যদি অবাধে আর
ছোট-খাটো জামা না পরতো তাহলে কখনোই তারা ধর্ষনের স্বীকার হতো না!
আবার কেউ ধর্ষনকারীদের হিংস্র পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট বলে আখ্যায়িত করছে। যারা নিরীহ কোনো মেয়ে দেখলে ঝাপিয়ে পড়ে!
আমরা সবাই প্রতিবাদ করেছিলাম! যে যার মতো, যে যার জায়গায় কিন্তু আমরা এক হয়ে পাশে দাঁড়াতে পারিনি!
মেয়েটি আসলে ধর্ষিত হয়নি,আমরা হয়েছি!

হ্যাঁ মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছিলো,

তখন নয় যখন সে আসলেই ধর্ষিত হয়েছে,বরং তখন যখন সবাই তামাশা দেখছিলো আর ভিডিও করছিলো।
সেই ভিডিও যখন অনলাইনে আপলোড করা হয়েছিলো, যখন ভাইরাল হয়েছিলো ভিডিওটি
যখন সবাই দেখে মজা নিয়েছিলো!
যখন বেশি বেশি শেয়ার করেছিলো!
যখন কিছু লোক ধর্ষনের কারন মেয়েটার অবাধে চলেফেরা আর ছোট-খাটো ফিটিং জামার দোষ দিচ্ছিলো!!

শুধু কি আর মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছিলো?

ধর্ষিত হয়েছিলো মেয়েটির পরিবার,যাদের
সমাজের ছোট নেই, বড় নেই সবার সামনে অপমানিত হতে হয়েছিলো!
ধর্ষিত হয়েছিলো আইনের কাছে!
যে আইন একজন 'ধর্ষিতাকে' তার নিজ বাড়ীতে থেকে কলেজে ভর্তির নিশ্চয়তা দিতে পারে না! বরং সেফহোমের নামে তার লেখাপড়া ও গোটা জীবনকে
ধর্ষণ করে!সেটাকে আর যাই হোক আমি অন্তত আইন বলতে পারি না,বিচারও বলতে পারি না!!
'আইন' শুধু ধর্ষিতাকে টানাহেঁচড়া করতে দেখি! ধর্ষকদের টানাহেঁচড়া করতে দেখি না।

তাকে কি শুধুই একজন ধর্ষক ধর্ষন করেছিলো?

বিচারের দাবিতে মেয়েটি আইনের কাছে যখন গেলো, আইন মেয়েটিকে ধর্ষন করেছিলো চেকআপের জন্য মেডিকেল রির্পোট নামক প্রমাণ পত্র চেয়ে!
মেয়েটির পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন,বন্ধুবান্ধব ধর্ষন করেছিলো একদিনেই! কারন মেয়েটি তাদের কাছে সম্ভাবনাময় মেয়ে থেকে ধর্ষিত মেয়ে হয়ে যায়।
একবারও কি জেনেছিলেন মেয়েটি একসময় বিরক্ত ও অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিলো আপনাদের মুখে "ঐ মেয়েটা" শুনতে শুনতে?
"ঐ মেয়েটার কি হবে?" "ঐ মেয়েটাকে কে বিয়ে করবে?" "ঐ মেয়েটার পরিবারের মান-সম্মান থাকল না"!
আচ্ছা বলেন তো মেয়েটি ও তার পরিবারের সম্মানহানী কিভাবে হলো?

হ্যাঁ মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছিলো,

যদিও মেয়েটি বেঁচে থাকে তাহলে সপ্তাহ, মাস বদ্ধ ঘরে কাঁদবে, কারো দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারবে না। মেয়েটি কাউকে আগের মত বিশ্বাস করতে পারবে না! প্রথমে মেয়েটি এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে চায় না।
আর যখন কথা বলে তখন পরিণাম ভোগ করে পরিবার। সমাজ থেকে পাওয়া লজ্জা এবং ঘৃণা!
যেন মেয়েটি কত বড় অপরাধ করেছে!
প্রথম কতদিন ছেলেটা কে??
এইসব নিয়ে চারপাশ গরম!!
কয়দিন পর মেয়েটির যন্ত্রণার কথা ভুলে
গিয়ে কথা হয়, 'মেয়েটি তখন কি রকম পোশাক পরেছিল?'

মেয়েটি ধর্ষিত তাই,

তার কাছের মানুষরা একসময় জানবে যে, মেয়েটি তাদের চেয়ে একজন অপরিচিত মানুষের সাথে মিশতে পছন্দ করে।
কারণ তারা মেয়েটার দিকে মেয়েটার ধর্ষণ হয়েছিলো এই নজরে তাকায় না।
তারা মেয়েটার উজ্জ্বল দৃষ্টির দিকে তাকায়, তার হাসি দেখে, তার জীবনের লক্ষ্যের কথা জিজ্ঞেস করে!

অথচ আমিও জানি,
মেয়েদের সম্মান তার যোনিপথে না।
মেয়েটার ধর্ষণ মেয়েটার পরিচয় দেয় না যে সে কি রকম চরিত্রের?
মেয়েটা ঐ একটা ঘৃণিত কাজের অনেক ওপরে। আর সে আমার,আমাদের চেয়ে অনেক বেশী সুন্দর।

একদিন আসবেই!

মেয়েটি তার জীবনের প্রত্যেক মূহুর্ত আনন্দের সাথে কাটাবে।
একদিন আসবেই, যেদিন মেয়েটি ভীড় ঠেলে সবার সামনে গিয়ে কারো দয়া ছাড়া বলতে পারবে
"হ্যাঁ আমিই সেই ধর্ষিতা মেয়ে, যে এখনও হাসতে ভুলি নাই।"

সানবীর
২৮.৩.১৮
ঢাকা।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৪:৩৯

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: ধর্ষণ! ধর্ষণ!! ধর্ষণ!!!।
ভালো লাগে না। আর কত শুনতে হবে? দেখতে হবে?

১১ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৬

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: এবার প্রতিরোধ করতে হবে

২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৩২

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: কে?
কাকে?
কখন?
কেন?

কীভাবে ওটা ঘটল???

১১ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৭

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: এখন আর কে কখন হয়না,এখন এটা প্রতিদিনের ব্যাপার হয়ে গিয়েছে

৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৩৫

আমিনুল ইসলাম500 বলেছেন: হ্রদয়বিদারক

১১ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৮

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: প্রতিরোধ করতে হবে

৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৪৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সৌদি আরবের মত ধর্ষণের শাস্তি লিঙ্গ কর্তন করা পর্যন্ত ধর্ষণ চলতেই থাকবে।

১১ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৮

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: সহমত

৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: কিছু কিছু শব্দ আমি ঘৃণা করি, যেমন কোটা, ধর্ষণ, তদন্ত কমিটি, নেতা, ছাত্রলীগ।

১১ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৯

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: আমিও প্রচন্ড ঘৃনা করি শব্দগুলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.