নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাই সেকেন্ড ম্যারেজ

১১ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:১১

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

— একটা ছোট নিতে পারি?

নিবেদিতার ইশারা বারের দিকে। এবার আর ধাক্কা খেলাম না। ওকে বোধহয় বুঝতে শুরু করেছি। সবকিছুই চেখে দেখা টাইপ। ধর্মীয় কিংবা সামাজিক, কোন ধরনের গোঁড়ামিই নেই। একটু চাইল্ডিস ভাব আছে, বাট একেবারে ছেলেমানুষ না। তবে ওর ক্যারেক্টারের সবচেয়ে লাভেবল অংশ হচ্ছে ওর অনেস্টি। সেদিনের সেই ‘ভার্জিন স্টেটমেন্ট’ একটা ব্যাপার স্পষ্ট বুঝিয়ে দেয়, নো ম্যাটার হোয়াট হ্যাপেনস, ও সত্য বলতে হেজিটেট করবে না। অ্যান্ড শি ইজ রেডি ফর এনি কনসিকোয়েনসেস। ডিভোর্স করলেও সে মেনে নেবে, আর রিলেশানটা কন্টিনিউ করলেও ওর আপত্তি নেই। কিন্তু সম্পর্ক কন্টিনিউ করব কি না, এই সিদ্ধান্ত এখন আমাকে নিতে হবে। এবং ভেবে চিন্তেই নিতে হবে। কারণ একবার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলে আর ফেরবার উপায় থাকবে না।
আমাদের রিলেশানের কি হবে সেব্যাপারে সিদ্ধান্ত না নিতে পারলেও অন্য একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেপারেশানে যদি যাইও, এটাকে কারণ হিসেবে দেখাব না। কি দেখাব, সেটা নিয়ে পরে ভাবা যাবে। আপাততঃ প্রথম কাজ সিদ্ধান্ত নেয়া।
নিজের বউ সম্পর্কে এমন একটা তথ্য জানবার পরে কোনো বাঙ্গালি নিজেকে ঠিক রাখতে পারবে? ভেতরের বাঙ্গালি মন জানতে চাইছে, এমন একটা মেয়ের সাথে সারা জীবন কাটানো পসিবল? ওদিকে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হচ্ছে, এর ব্যাকল্যাশ।
এমনিতেই একবার ডিভোর্স হয়েছে। আবার যদি হয়, তৃতীয় পাত্রী পাওয়া রীতিমত দুঃসাধ্য হয়ে যাবে। শুধু তা ই না, সমস্যা আরও একটা আছে। আগেই তো বলেছি, হাতে আর সময় নেই। সো ডিভোর্স করলে আরেকটা বিয়ে করবার এখন আর সুযোগ নেই। ওখানকার চাকরিতে লম্বা ছুটির বেশ আকাল। যেহেতু এবার নিয়েছি, তাই আগামী বছর দুয়েকের ভেতর আর এতো বড় ছুটি চাওয়া যাবে না। হয় চাকরি ছেড়ে আসতে হবে আর নয়তো ওখানেই কিছু ট্রাই করতে হবে।ওদিকে তিন বছরের একাকী জীবনে রীতিমত অতিস্ট হয়ে গেছি। একজন সঙ্গী না পেলে পাগল হতে সময় লাগবে না।
সবকিছু মিলিয়ে তাই বেশ কনফিউশানে আছি। পরিস্থিতি বলছে, এই বিয়ে কন্টিনিউ করতে। আর টিপিক্যাল বাঙ্গালি মানসিকতা বলছে, কুইট।
আপাততঃ একটা কাজই করছি। বিয়ে পরবর্তী যে কাজগুলো করবার কথা, নিয়ম মাফিক বিভিন্ন দাওয়াত টাওয়াতে যাওয়া, সেগুলো অ্যাটেন্ড করছি। ওয়াইফকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার জন্য যেসব অফিশিয়াল কাজকর্ম আছে, সেসবও শুরু করে দিয়েছি। আজকে সকাল থেকে ছিলাম এমব্যাসিতে। বেশ কিছু ফর্ম টর্ম ফিলআপ করার ব্যাপার ছিল। সবকিছু ঠিক থাকলে হয়তো আগামী তিনমাসের ভেতরই ভিসা হয়ে যাবে।
একটু আগে ওখান থেকেই রওয়ানা দিয়েছিলাম। রাস্তায় যথারীতি জ্যামের খপ্পরে। যখন বুঝতে পারলাম এই জ্যাম টপকে দুপুরের আগে বাড়ি ফিরতে পারছি না, তখন এই সিদ্ধান নিই। ড্রাইভারকে বললাম গাড়ি নিয়ে গুলশানে চাচার বাসায় চলে যেতে। আর আমরা রিক্সা নিয়ে অলি গলি পথে এই রেস্টুরেন্টে চলে আসলাম। বুদ্ধিটা অবশ্য আমার না, নিবেদিতার। এটা ওরই পরিচিত রেস্টুরেন্ট। সাথে বারও আছে। আর একটু আগে যে ছোট একটা চাইল, সেটা ঐ বার থেকেই অর্ডার করতে হবে। আমার নিজেরও খানিকটা ইচ্ছে করছে। সকাল থেকে সময়টা বেশ হেক্টিক গেছে। অর্ডার দিলাম। এরপরে জানতে চাইলাম
— এখানে প্রায়ই আসতে?
বেশ সাবলীল ভাবেই উত্তর দিল

— নট প্রায়, সুযোগ পেলে।

— সুযোগ মিনস

— সুযোগ মিনস সামর্থ্য। লাইক, বেতন পেয়ে…

— অ্যান্ড

— অ্যান্ড কেউ অফার করলে।

— অ্যান্ড হু আর দোজ কেউ?
নিবেদিতা চোখ তুলে তাকাল। আমার চোখের ভাষা পড়তে চাইছে। স্মিত হেসে জানতে চাইল
— ইজ দ্যাট ইম্পরট্যান্ট এনিমোর?
অর্থাৎ শি ইজ সিওর, সম্পর্ক আর রাখছি না। সো, এতো জেনে আর কি করব?
শিট। এব্যাপারটা মাথায় কেন আসেনি? শার্লক হোমস তো শুধু আমার ভেতরে নেই, নিবেদিতার ভেতরেও তো একজন আছে। সেই গোয়েন্দাও তো আমাকে অ্যানালাইজ করছে। এই মুহূর্তে আমারও তো পরীক্ষা চলছে। আমার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আর কথা বার্তা থেকে নিবেদিতাও তো বোঝার চেষ্টা করছে, আমি কি সিদ্ধান্ত নিব। যদিও মুখে বলেছিলাম, ‘ইটস ওকে’ বাট আমার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বলে দিয়েছে, সেই ‘ভারর্জিটি স্টেটমেন্ট’ আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
ভেবেছিলাম, আমি অ্যাক্টিং বেশ ভালোই করছি। কিন্তু এখন বুঝলাম, তা না। এই প্রশ্ন আরও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছি, ওর অতীত আমাকে ভোগাচ্ছে। হু ইজ দ্যাট গাই। প্রশ্নটা করে ভুল করে ফেলেছি। যেভাবে গল্প চলছিল, একটু পরে হয়তো ও নিজেই বলতো, বাট আমার প্রশ্ন ব্যাপারটাকে একটু কমপ্লিকেটেড করে দিল। সামাল দেয়ার চেষ্টা করলাম। বললাম
— আই ডিডন্ট মিন দ্যাট। জাস্ট জানতে চাওয়া।

নিবেদিতার চেহারা ঠিক স্বাভাবিক হল না। কথাটা বিশ্বাস করল বলেও মনে হল না। কিছুটা চিন্তিত মুখে গ্লাসে চুমুক দিল। আমি নিজেও কথা খুঁজছি। কিছু একটা বলে সিচুয়েশান স্বাভাবিক করা দরকার। আরেক পেগের অফার করব?

— একটা কথা বলব?

পরিস্থিতি সিরিয়াস হতে যাচ্ছে। আটকানো দরকার। আর মাত্র তিনদিন আছি বাংলাদেশে। কি দরকার এই কটা দিনে সিচুয়েশান আরও ডিটোরিওরেট করার। বললাম

— আলাপটা বাসায় গিয়ে করি?

নিবেদিতা স্মিত হাসল। হাসিটা ম্লান হলেও সেটায় একটা মিষ্টি ভাব ছিল। হাসিটার মানে 'হ্যাঁ' ও হতে পারে আবার 'না' ও। উত্তর কিছু একটা বললে তখন বুঝতে পারব। সেটা শোনার জন্য ওর দিকে যে তাকিয়ে আছি। বেশ সুন্দর লাগছে ওকে। চোখ ফেরাতে পারছি না? অবশেষে ঠোঁট নড়ে উঠল। বেশ সুন্দর করে চোখে চোখ রেখে বলল

— উই আর রানিং আউট অফ টাইম।

না মিসেস শার্লক হোমস, ইউ আর রং। আমি যে কিছু সিদ্ধান্ত জানাইনি, তার কারণ, আমি সিদ্ধান্ত এখনও নিইনি। আমার মনের ভেতর এখনও ঝড় চলছে। তবে এই তাগাদায়, একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে দিল, শি ইজ ওয়েটিং টু হিয়ার দ্যা ডিশিশান। ডিভোর্স যদি করিই, সেটা যেন জানিয়ে দিই।
প্রশ্নগুলো আবার কিলবিল শুরু করল। যদি ডিভোর্স করি, সেটা কখন? এখন? না আমেরিকা গিয়ে? আর যদি না করি, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, কতদিন টিকবে এই বিয়ে?
আরও একটা ব্যাপার আছে। টপিকটা এমনই যে কারো সাথে এটা নিয়ে ডিসকাস করতে পারছি না। বাবা মাকে যে ইনভলভ করব না, সে সিদ্ধান্ত তো আগেই নিয়েছি। ফ্রেন্ডদের সাথেও এনিয়ে আলাপ করতে রুচিতে বাধছে। এমন সময় নিবেদিতা ওর একটা হাত আমার হাতের ওপর রাখল। চোখের ইশারায় বোঝাল, ‘কাম ডাউন’। প্রথমবারের মত মনে হল, ওর কাছে সব খুলে বলা যায়। নিজের অজান্তেই মন খুলে কথা বলা শুরু করলাম

— তুমি আমার সম্পর্কে কতটা জানো?

চলবে

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৩৮

পাউডার বলেছেন:
এক নিঃশ্বাসে পড়া হয়ে গেল। আরেক্টু বাড়িয়ে লিখুন না প্লিজ।

১১ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৩৪

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: চেষ্টা করব। পরের পর্ব দিলাম

২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ২:১৭

সোহানী বলেছেন: ভালো লাগলো। বাকিগুলো পড়ে নিলাম... চলুক সাথে আছি ..........

১১ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৩৫

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: পরের পর্বও দিলাম

৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: বেশ লাগল!

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৬

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.