নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাই সেকেন্ড ম্যারেজ

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:০৯



— আমি তাহলে বেরোলাম।
নিবেদিতা আজকে ওর ফ্রেন্ডদের ট্রিট দিচ্ছে। সেদিনের সেই রেস্টুরেন্টে। বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে। এইকদিন যে বেরিয়েছিলাম, টিপিক্যাল নতুন বউ টাইপ সাজে বের হত। আজকেই প্রথম ওকে, ওর নিজের ইচ্ছে মত সাজতে দেখলাম। শেষবারের মত আয়নায় নিজেকে দেখে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ওর টিপিক্যাল মিষ্টি হাসিটা দিল। বিছানার ওপর হ্যান্ডব্যাগটা ছিল। ওটা নেয়ার জন্য এগিয়ে এল। হাত বাড়িয়ে ওঠাতে যাবে, এমন সময় ওর হাত চেপে ধরলাম।
— না গেলে হয় না?
কেন বললাম, নিজেই জানি না। সেদিনের সেই ইশিতা এপিসোডের পর থেকে সম্পর্কটা আবার কেমন এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। ম্যাসেজটা পেয়ে কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আই জাস্ট কান্ট বিলিভ মাই লাক। ওদের ব্রেকআপটা আর দিন পাঁচেক আগে হলে কি এমন হত? আমার কাছে ফিরে আসতেই যে ব্রেকআপ করেছে, এমনটা বলছি না। অ্যান্ড প্লিজ ডোন্ট থিঙ্ক দ্যাট, প্যাচআপের জন্য আমি উতলা হয়ে আছি। একটা গিল্টি ফিলিং আসলে ভেতরে ভেতরে কাজ করছে।
আমি যে কনফিউশানে পড়েছি, আমার চেহারায় সম্ভবতঃ সেটা বোল্ড লেটারে লেখা ছিল। সো, সম্পর্কে আবার শীতলতা নেমে এসেছিল। কথাবার্তায় আবার এসে ভর করে ফর্মালিটি। নিয়ম মেনে পরিমিত কথা বলা। কোন আবদার নেই, কোন কপট রাগ নেই। ওর অপূর্ব সুন্দর ভ্রুকুটিও, দুষ্টুমিভরা মিষ্টি হাসি, সব গায়েব। সকালে চা পেয়েছি, একই স্বাদ। শুধু দেয়ার পরে আমার চুমুক দেয়া পর্যন্ত কোন অপেক্ষা ছিল না। কেমন হয়েছে, তা জানবার জন্য আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকাটা ছিল না। সবই স্বাভাবিক, শুধু প্রাণ নেই।।

এরমাঝে আমি আরও একটা ব্লান্ডার করেছি। শিশির যখন ম্যাসেজটা পাঠায়, তখন আমাদের রাত, বাট আমেরিকায় সকাল। আমার ঘুমের ডিস্টার্ব হবে ভেবে ইচ্ছে করেই হয়তো ফোন করেনি। আর আমি যখন ম্যাসেজটা দেখি, তখন আমাদের সকাল। তাই প্রথম যে রিয়াকশানটা হয়ছিল, তা ছিল ইশিতা এখন কোথায়। ওখানে তো ওর কোন রিলেটিভও নেই। শিশির তথ্যটা কখন জেনেছে? আর জানবার পরে কি করেছে? আফটার অল, ফার্স্ট লাভ। দুশ্চিন্তা তো হতেই পারে।
আমার চেহারা দেখে যেকোনো গবেটও বলে দিতে পারবে, আমি টেনসড। আর অস্কার পাওয়া অ্যাক্টর না হলে, নিবেদিতার চোখ ফাঁকি দিয়ে আক্টিং করা অসম্ভব। ব্যাপারটা জানি বলেই, সেই পথে হাঁটিইনি। ইশিতার জন্য যে চিন্তা হচ্ছে, নিবেদিতার কাছে ব্যাপারটা লুকাবার কোন চেষ্টাই করলাম না। দ্যাটস নট দ্যা ব্লান্ডার। ওটা করলাম আরেকটু পরে। সেটা বলছি। আপাততঃ যা করলাম তা হচ্ছে নিবেদিতাকে সোজাসুজিই মনের কথাটা বললাম
— আই স্যুড রিং শিশির।
নিবেদিতা সম্মতি জানাল। আমাকে একা থাকবার সুযোগ দিতেই হয়তো সেখান থেকে চলেও গেল। অন্য কারণও হতে পারে। অভিমান রুল আউট করছি না। তবে আই ডোন্ট থিঙ্ক সো। এই কদিনে ওকে যতোটা চিনেছি, ফ্যাচ করে কাঁদা কিংবা অভিমানে গাল ফোলানো টাইপ মেয়ে ও না।
যাইহোক, ফোনটা করলাম। শিশির ডিটেলস জানালো। সেই ইন্ডিয়ান ব্যাটা আরেকটা বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আরেকটা প্রেম শুরু করে। ইশিতা সন্দেহ করলেও, সিওর ছিল না। কিছু গোয়েন্দাগিরি শুরু করে। আর সেটার কারণে কাহিনী তিক্ত হতে থাকে। অবশেষে চটাস। বাকীটা, টিপিক্যাল বাংলা সিনেমার নায়িকার মত। ব্যাগ গুছিয়ে ট্যাক্সি ডেকে, ব্যাক টু প্যাভিলিওন। ওখানে মায়ের বাড়ি নেই, পরিচিত বলতে কেবল আমার বন্ধু শিশির। আপাততঃ ওর ওখানেই উঠেছে।
সবকিছু জানবার পরে প্রথম যে কাজটা করলাম, তা হচ্ছে নিবেদিতাকে ডিটেইলে সবকিছু জানালাম। আমার বর্ণনায় কিছু একটা ছিল। তাই সোজাসুজি জানতে চাইল
—এখনও ভালোবাসো?
মনের ভেতরে প্রশ্নটা আমারও জেগেছিল। উত্তরটা এড়িয়ে গিয়েছি। মনকে বলতে চেয়েছি, যা করছি, বিপদে পড়া একটা মেয়ের জন্য করছি। নিজের গিল্টি ফিলিংসকেও খানিকটা উসকে দিয়েছিলাম।এসবের জন্য সরাসরি না হলেও, পরোক্ষে তো আমিই দায়ী। আমি যদি শুরু থেকে এতো সেলফিশের মত বিহেভ না করতাম। যদি বাড়ী কেনার জন্য এতো অস্থির না হয়ে উঠতাম, তাহলে হয়তো…। অ্যান্ড দেন আই ডিড দ্যা ব্লান্ডার। বললাম
—জানি না।
আমার এই টাউটামি টাইপ উত্তরটা স্পষ্টভাষায় বলে দিল, আমি দুটো নৌকাতেই পা দিয়ে রাখতে চাইছি।
এরপর নিবেদিতা পাল্টে গেল। সবকিছুই আগের মত চলতে লাগল, বাট সেই মিষ্টি ছোঁয়াটা মিসিং। চোখের সামনে হাঁটছে, চলছে, বাট কি যেন একটা নেই। একসঙ্গে সকালের নাস্তা করলাম। আমার পাতে খাবারও তুলে দিল, আর কিছু নেব কি না জানতেও চাইল, বাট…। দুপুর গড়াতে গড়াতেই একটা ব্যাপার বুঝে গেলাম, আই অ্যাম মিসিং হার। এই কয়দিনে, আমার মনে বেশ ভাল রকমের দাগ ও ফেলে দিয়েছে। একটা প্রত্যাশা তৈরি করে দিয়েছে, টু বি কেয়ারড অফ। কেউ একজন আমার জন্য ভাবছে, এই ফিলিংসটা রিয়েলি অসাম।
এরপরে শুরু হল আমার প্রায়াশ্চিত্ত পর্ব। অযথাই আর অতিরিক্ত আলাপের চেষ্টা শুরু হল। 'এই গিফটটা মামা দিয়েছেন, সুন্দর না?’ উত্তরে নিবেদিতার সেই বিখ্যাত স্মাইল, ‘হ্যাঁ কিংবা না’ দুটোই হতে পারে। হাসিটাতে জাস্ট প্রাণ নেই, এই যা। খানিকক্ষণের ভেতরেই বুঝে গেলাম, আই অ্যাম ইন রং ট্র্যাক।
বিকেলের দিকে ও ড্রেস আপ শুরু করল। আজকের ট্রিটটা দিন দুয়েক আগেই প্রোগ্রাম করা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বেশ খানিকক্ষণ নিজের শাড়ীর খুঁত খোঁজার চেষ্টা করল। এসময় আমি ইউজুয়ালি ওর দিকে তাকিয়ে থাকি। আর ও আড়চোখে দেখে আমি কিভাবে ওকে দেখছি। বারণ করে না, একটা দুষ্টামি মাখা স্মাইল দেয়। আজ দুটোর কোনটাই নেই। না আড়চোখ, না স্মাইল।
শেষ চেষ্টা হিসেবে জানতে চাইলাম
— একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
— জরুরী?
নিঃস্পৃহ কণ্ঠ। নো লাক। হাল ছেড়ে দিলাম। নিজেকে গুটিয়ে নিলাম। বললাম
— নাহ।
— তাহলে বলতে পার।
গলার আওয়াজে কি একটু দুষ্টুমির ছোঁয়া? মনে হচ্ছে। কিন্তু যে কথাটা বলব বলে ঠিক করেছিলাম, সেটা বলতে কেমন যেন হেজিটেট করতে লাগলাম।
— ক্যারি অন
এবার কিছু একটা হল। মনে হল, সামনে একজন বন্ধু বসে আছে। একে মন খুলে বলা যায় সব কথা। খুব সাবধানে শব্দ চয়ন করে কথা বলব ভাবছিলাম, কিন্তু উল্টোটা করলাম। বলে ফেললাম
— আমার জায়গায় তুমি থাকলে কি করতে?
মুখে হালকা প্রসাধনী মাখতে মাখতেই উত্তর দিল
— আই হ্যাড বিন দেয়ার বিফোর।
অবাক দৃষ্টিতে আয়নায় ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। প্রশ্ন করা যায়, বাট মনে হল, ও নিজেই এখন ব্যাপারটা এক্সপ্লেইন করবে। বেশিক্ষণ সময় নীল না। আমার দিকে ঘুরে বলল
— আমার প্রথম প্রেমটা যখন ভেঙ্গে যায়, দেন রিফাতের সাথে বেশ ক্লোজ হয়ে যাই। রটে যায় উই আর ইন অ্যা রিলেশানশিপ। যদিও উই ওয়্যার জাস্ট ফ্রেন্ড দেন, বাট সবাই আমাদের দেখে চোখ বড়বড় করে তাকাতে শুরু করে। দেন প্রতীক সবাইকে বলে বেড়াতে শুরু করে, হি স্লেপ্ট উইথ মি।
— প্রতীক কে? ফার্স্ট রোমিও?
সেই স্মিত হাসি ফিরে এলো।
— হ্যাঁ। ফার্স্ট ওয়ান।
বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম
— ঐ বয়সটাই এরকম।
এবার নিবেদিতা আমার দিকে তাকাল। সোজাসুজি। বলল
—বাট দ্যা স্টেটমেন্ট ওয়াজ ট্রু। আই স্লেপ্ট উইথ হিম।
আমি নিবেদিতার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। বোঝার চেষ্টা করছিলাম, হঠাৎ কেন এসব বলছে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখ নামিয়ে নিলাম। ওর কথা শেষ কি না বুঝতে পারছি না। নিবেদিতা এরপরে আবার আয়নার দিকে ঘুরে গেল। অসমাপ্ত প্রসাধনী শেষ করতে করতে আয়নায় আমার দিকে তাকাল। আমি যখন আবার চোখ তুললাম, দেখলাম ও আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। মনে হল আমার রিয়াকশান চাইছে। প্রশ্নটা আমার ভেতরে ঘুরছিল, করে ফেললাম
— হোয়্যার ইজ দ্যা সিমিলারিটি
— এর কিছুদিন পরে, প্রতীক একদিন দেখা করতে আসে। বলল, আর কখনও হবে না, হি ওয়াজ ড্রাঙ্ক দেন, এটসেট্রা। বাট, আমি আর ফিরে তাকাইনি।
— আর দ্যা টু সিচুয়েশান সিমিলার?
— না। বাট ইফ ইউ টেক অ্যা ফাইনাল ডিসিশান, ইট স্যুড বি ফাইনাল।
কথাটা ঠিক কাকে লক্ষ্য করে বলল, বুঝলাম না। আমি? না ইশিতা? আমার সাথে ইশিতার ব্রেকাপের সিদ্ধান্তটাকে ফাইনাল ডিসিসান বলছে? না আমাকে একটা ফাইনাল ডিসিশান নিতে বলছে?
এরপরে আর কথা হয়নি। গত পনের মিনিট ধরে নিবেদিতার প্রসাধনের ফাইনাল টাচ চলছে। ইচ্ছে করেই কি একটু বেশি সময় নিয়ে আমার সামনে বসে আছে? জানি না। টাইম ইজ রানিং আউট। আমার উচিত একটা ফাইনাল ডিসিশান নিয়ে ফেলা। বোধহয় নিয়ে ফেলেছি। সেকারণেই ও যখন বিছানা থেকে হ্যান্ডব্যাগটা নিতে এলো তখন পাগলের মত কাজটা করলাম। ওর হাতটা চেপে ধরলাম আর…
এমন সময় ফোনের আওয়াজ হল। ফোনটা ড্রেসিং টেবিলের ওপর রাখা।
— হাতটা ছাড়। আই হ্যাভ টু পিক আপ দ্যা ফোন।
গলার আওয়াজে কোথায় যেন একটা সম্মতির সুর টের পেলাম।। সাহস পেয়ে আরেকবার অনুরোধ করলাম।
—প্লিজ
ঠোঁটের কোণে সেই দুষ্টুমির হাসিটা ফিরে এল। বলল
— টোনাটুনি কেস?
আমার মুখেও বিজয়ীর হাসি দেখা দিল। জানতে চাইলাম
— ইজ দ্যাট অ্যা ইয়েস?

চলবে

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৩৯

ভাললাগে না বলেছেন: ভুল করে ২বার পোস্ট হয়েছে মনে হয়।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:২৯

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ঠিক করলাম

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪৮

এ্যান্টনি ফিরিঙ্গী বলেছেন: এটা খুবই অন্যায় যে আপনি লেখাটা অল্প করে পোস্ট করেছেন। তাড়াতাড়ি শেষ করুন।

সকাল থেকে বেশ কয়েক বার মোবাইল টা হাতে নিয়ে চেক করেছি আপনি লেখাটা পোষ্ট করেছেন কিনা দেখার জন্য।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৩০

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: সরি

৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৬

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমি কদিন ব্লগে আসিনি বা লগইন করিনি তবে অফলাইনে থেকে সবগুলো পর্ব পড়েছিলাম। আজকে কমেন্ট করে লাইক দিয়ে গেলাম।

গল্প সুন্দর গতিতে এগোচ্ছে। এখনো জমজমাট!

টোনাটুনি কেস?

কথাটি লাগল বেশ! :)

ভালো থাকুন। আর পরের পর্বটি দিন!

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৯

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ওয়াজ মিসিং ইউ। ওয়েলকাম ব্যাক

৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৯

সোহানী বলেছেন: চলুক............সাথে আছি।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৪০

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: আর বেশি টানতে পারছি না... ধৈর্য আমার নিজেরও শেষের দিকে

৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:০৮

কাউয়ার জাত বলেছেন: বিষয়টা কি। অল্প অল্প সেমাই দিয়ে প্লেট তুলে নিচ্ছেন কেন?

আচ্ছা মানুষ কি মরার আগ পর্যন্ত প্রথম প্রেম ভুলতে পারে না?
তাহলে তো প্রেম ভয়ংকর। জীবনের স্বাদ নষ্টকারী একটা জিনিস?

১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৩৭

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: পাতিল ছোট, তাই অল্প করেই সেমাই রাঁধছি, এই আর কি

৬| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:২৮

ভাললাগে না বলেছেন: পরের পর্বের জন্য বসে আছি

১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৩৪

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: দিলাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.