নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাই সেকেন্ড ম্যারেজ

১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৩৬


--কার ফোন?
উত্তর না দিয়ে ঠোঁটে সেই বিখ্যাত দুষ্টুমির হাসি ঝুলিয়ে নিবেদিতা ফোনটা আমার হাতে দিল। আমাদের সংসার বেশ ভালোই জমে উঠেছে। আবার টিপিক্যাল বাঙালি হাসব্যান্ড হয়ে উঠছি। হানিমুন পিরিয়ড বলতে যা বোঝায়, তেমন সময়ই কাটছে আমাদের। নিবেদিতাও টিপিক্যাল গৃহিণী টাইপ আচরণ করছে। পরিবারের সবার সাথে মিশে যাওয়া, আমার খেয়াল রাখা, সকালের বেড টি তো আছেই। একাকী জীবনে আমি অনেকটাই গোছানো স্বভাবের হয়ে গিয়েছিলাম, সেসবে আবার পরিবর্তন শুরু হয়েছে। ফোন এখানে সেখানে রাখা, সময় মত চার্জে না দেয়া, শাওয়ার সেরে বিছানায় টাওয়েল ফেলে রাখা—নিয়ম করেই করছি। কিছুটা ইচ্ছাকৃত, কিছুটা বদভ্যাস। নিবেদিতাও কখনও হেসে মেনে নিচ্ছে, কখনও আগ্রাসী রুপ নিচ্ছে। ‘এসব আমার একদম পছন্দ না’ টাইপ শাসন শুরু হয়ে গেছে।
দাওয়াত পর্ব মোটামুটি শেষ। এরপরে দেখা গেল, আমাদের হাতে বেশ অনেকটাই অলস সময়। কিছুদিন তাই ঘোরাঘুরিও করলাম। ঢাকার আশেপাশেই দুদিন লং ড্রাইভে গেলাম। টিন এজ জুটির মত আবোল তাবোল সব গল্প করলাম। নিবেদিতার গল্পের অনেকটা জুড়েই ছিল তার স্টুডেন্ট লাইফ। মাঝে মাঝে আসল ওর ফ্যামিলি লাইফ। ওর বাবার গল্প খুব কম, মায়ের গল্প আরও কম। যা বুঝলাম, তার সারাংশ হচ্ছে, বাবার জন্য জমা রয়েছে একরাশ অভিমান। সম্ভবতঃ একসময় বাবাই ছিল আইডল, এরপরে স্বপ্নভঙ্গ। থার্ড রোমিওর বাপকে পুলিশে দেয়াটাই সম্ভবতঃ কারণ।
ইন্টেরেস্টিংলি, নিজের প্রেম সম্পর্কে তেমন কিছু এখনও বলছে না। যা বলার সেদিনই, কথা প্রসঙ্গে দুজনের নাম জানিয়েছিল। বিয়ের আগে খুব বেশি ইনভেস্টিগেট করার সুযোগ পাইনি। তবে এখন আর করব না, এটা সিওর। এখন যদি কিছু জানতে হয়, ওকেই জিজ্ঞেস করব। প্রতীকের সাথে যে প্রেম ছিল, সেটা পরিষ্কার জানালেও রিফাতের সাথে সম্পর্কটা এক্সপ্লেইন করেনি। প্রেমের রিউমার ছিল, ব্যাস এতোটুকুই বলেছে। যদিও এসব জানা জরুরী না, বাট সব বলছে, কিন্তু এসব টপিক এড়িয়ে যাচ্ছে, এই ব্যাপারটা আবার নিবেদিতার সাথে যাচ্ছে না। তবে প্রথম দুজন যেহেতু ড্রাগ অ্যাডিক্ট, ধরেই নেয়া যায়, ওগুলো বাতিলের খাতায়। আর আচরণে এমন কিছুও এখন পর্যন্ত দেখিনি, যা দেখে মনে হতে পারে, ওদের নিয়ে ও আদৌ কনসার্নড।
আরও একটা ব্যাপার মাথায় ঘুরছে। ওর মুখ থেকে এখনও তেমন কিছু বের হয়নি, সেটা কি ইচ্ছাকৃত? ওয়েটিং ফর দ্যা রাইট টাইম? আমার মন বলছে, ও বলবে। আমার যতটুকু জানা দরকার, ও জানাবে। এবং সেটা আমার প্রশ্নের উত্তরে না, ও নিজেই বলবে। সাস্পেন্সটা আমার নিজেরও মন্দ লাগছে না। তবে সময় দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর মাত্র দিন পাঁচেক হাতে আছে।
টিকেট চেঞ্জ করাতে কিছু টাকা গচ্চা গেছে, বাট আই থিঙ্ক ইট ইস ওর্থ অ্যা গচ্চা। ওর সাথে সম্পর্ক এখন অনেক সহজ। ইশিতার সাথে সম্পর্কের টানাপোড়ন নিয়ে একদিন আলাপও হয়েছে। আমার যেসব ভুল আমি পড়ে আবসিকার করেছি, সেসব ওকে জানিয়েছি। হয়তো মনে অগোচরে একটা উদ্দেশ্য কাজ করেছে, ‘হয়তো বলতে চেয়েছি, ‘তোমার সাথে এই ভুলগুলো করব না’। একটা ব্যাপার অবশ্য ও মেইন্টেইন করেছে। ওর কাটা কাটা কথাবার্তা সব আমার জন্য বরাদ্দ রেখেছে, বাসার সবার সাথে যথারীতি সুন্দর সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
রাস্তার জ্যামের অত্যাচারে, আর বিশেষ বাইরে বেরোচ্ছি না। বেশিরভাগ সময় কাটে বাসায়। গল্প গুজবে কিছুটা রিপিটেশান শুরু হয়েছে। ভিন্নতা আনতে এবার আমি গল্প শুরু করলাম। সেদিন ব্যালকনিতে বসে অনেকক্ষণ অফিসের গল্প করলাম। প্রথমদিকের মত না হলেও, স্টিল ইঞ্জয়িং।
অফিসের পরিবেশটা বোধহয় মিস করছি। কাজ না করা ব্যাপারটাও হয়তো কিছুটা বিরক্তি তৈরি করছে। একদিন ভেবেছিলাম কিছু ফ্রিল্যান্স কাজ করি। বসলামও ল্যাপটপ নিয়ে। বাট পারলাম না। মনোযোগ আসছে না। এরমধ্যে আমেরিকা থেকে নতুন কিছু খবর এসেছে। ইশিতাকে মানাবার একটা হাফ হার্টেড ট্রাই নিয়েছিল সেই ইন্ডিয়ান গাই, বাট কাজে দেয়নি। সো, ঐ চ্যাপ্টার সম্ভবতঃ পার্মানেন্টলী ক্লোজড। শিশির একবার ইঙ্গিতে জানতে চেয়েছিল, ‘কি ভাবছিস?’
প্রশ্নটা করার কারণ আছে। সেই ভার্জিনিটি স্টেটমেন্টের পরে শিশিরকে ফোন করেছিলাম। ডিটেইল ওকে কিছু বলিনি, বাট ডিপ্রেসড যে ছিলাম, সেটা ও গলার আওয়াজেই টের পেয়ে যায়। সম্ভবতঃ ভেবেছিল, স্টিল মিসিং ইশিতা। এরমাঝে যে সবকিছু আবার ট্র্যাকে চলে এসেছে, এব্যাপারটা ওকে জানানো হয়নি।
যাই হোক, প্রায় ডিভোর্স থেকে ফিরে এসে এখন আমরা প্রায় সুখী কাপল। প্রায় বলছি কারণ ইশিতার ব্যাপারে ফাইনাল ডিসিশান নিলেও কিছু একটা ব্যাপার আছে, যা মনে খচখচ করছে। কি সেটা, এতদিন না বুঝলেও আজকে বুঝলাম। এনিওয়ে, শিশির লাস্ট যেদিন ফোন করে, সেদিন সরাসরিই জানিয়ে দিয়েছিলাম, নো লুক ব্যাক। শী ইজ পাস্ট নাও।
এরপরে আর শিশির ফোন করেনি। আর যখন জানতে পারল লিভ এক্সটেন্ড করেছি তখন বেশ অবাক হয়ে ফেসবুকে ইমো পাঠিয়েছিল। উত্তরে শুধু জানিয়েছিলাম, দারুণ একটা রূপকথার লাইভ টেলিকাস্ট চলছে।
যাইহোক, ফোনটা হাতে নিলাম। নিবেদিতার হাসির কারণটা বুঝলাম। শিশির ফোন করেছে। শিশির যে ইশিতার সাথে প্যাচ আপে আগ্রহী, ব্যাপারটা নিবেদিতা জানে। আর তাই এই হাসি। আমি হেসে দিলাম। বড় একটা নিঃশ্বাস নিলাম এরপরে ওর দিকে ‘আই অ্যাম হেল্পলেস’ টাইপ একটা দৃষ্টি দিয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম।
--বল
--কথা বলা যাবে?
এক ঝলক নিবেদিতার দিকে তাকালাম। ও তখনও দাঁড়িয়ে আছে। ইচ্ছে করেই পরের কথাটা বললাম
--ইশিতার ব্যাপারে?
নিবেদিতা আবার সেই বাঁকা হাসিটা দিল।এটাই দেখতে চাইছিলাম।
--নিবেদিতা কি ওখানে?
এবার আমার ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি খেলে গেল। তবে বেশ কনফিডেন্টের সাথেই বললাম
—আছে, বাট নো প্রবলেম। তুই বল।
কথাটা বলে নিবেদিতার দিকে তাকালাম। ও ইশারায় জানতে চাইল, চলে যাবে কি না। আমি মাথা নেড়ে বললাম, না। এরপরে হাত ধরে বিছানায় বসালাম। এরপরে শিশির তথ্যটা জানাল। চুপচাপ শুনলাম। কখন যেন নিজের অজান্তেই ঠোঁটের হাসি উধাও হয়ে গেছে। ব্যাপারটা লক্ষ্য না করার কথা না। ওর প্রশ্নের ‘ইয়েস’ বা ‘নো’ কোন ডেফিনিট উত্তর না দিয়েই কথা শেষ করলাম। টপিকটায় নিবেদিতার মতামত জরুরী। যদিও সিদ্ধান্ত একটা আমি মনে মনে নিয়ে ফেলেছি, তারপরও, উত্তরটা দিলাম না। শুধু বললাম
--একটু পরে তোকে রিং করছি।
ফোনটা কেটে দিয়ে নিবেদিতার দিকে তাকালাম। মন বলছে, শী ওন্ট মাইন্ড। তবে সিওর না। এরপরে ওর চোখে চোখ রেখে তথ্যটা দিলাম
--ইশিতা আমার বাসায় উঠতে চাইছে। অ্যাট লিস্ট এই মাসটা। বাসা খুঁজছে, সামনে মাসে চলে যাবে।
নিবেদিতা আমার দিকে তাকাল। ঠিক শীতল চাহনি না। বোঝার চেষ্টা, আমি কি বলতে চাইছি। এরপরে খুব ঠাণ্ডা গলায় উত্তর দিল
--হোয়াট আবাউট ইউ।
দিস ইজ নিবেদিতা। ব্যাং অন টার্গেট। আমি কি চাই? তার চেয়েও বড় প্রশ্ন কেন চাই? উত্তরটা সম্ভবতঃ নিজেও জানি না। এটা কেবল দয়া না। সামথিং মোর দ্যান দ্যাট। কি সেটা? প্রেম? ওর সিম্পলি অ্যা ফিলিং অফ গার্জেনশিপ? ঠিক এই কারণেই কি মনে খচখচ করছে?
এই কদিনে একটা ব্যাপার বুঝে গেছি, কিছু লুকানোর চেয়ে ওকে ফেস করা অনেক সহজ। আর এই মুহূর্তে কোন ক্যাট অ্যান্ড মাউস গেম খেলতে আমি নিজেও চাচ্ছি না। সো, অনেস্ট কনফেশানের সিদ্ধান্ত নিলাম। সোজাসুজি ওর চোখের দিকে তাকিয়েই উত্তর দিলাম
--আমিও চাই। ইনফ্যাক্ট ও যদি চায়, বাড়ীটা ওকে দিয়ে দিতেও আমার আপত্তি নেই। এ বাড়িতে ওরও অধিকার আছে।
খচখচটা সম্ভবতঃ একারণেই। কথাটা বলতে পেরে বেশ রিলিভড ফিল করলাম। নিবেদিতা শান্তভাবে আমার সব কথা শুনল। একবার চোখ নামাল। হয়তো কি বলবে গুছিয়ে নিচ্ছে। এবার কন্সিকুয়েন্সের জন্য ওয়েট করছি। শী ইজ টেকিং টাইম। অপেক্ষা চলছে। ফিলিংসটা মন্দ লাগছে না।
অ্যান্ড দেয়ার শী কামস। ধীরে ধীরে আমার দিকে তাকাল। চোখে নতুন একটা এক্সপ্রেশান। সেই চিরচেনা কনফিউজিং স্মিত হাসি না, অভিমানের শীতল চাহনিও না। কেমন যেন অ্যাপ্রিসিয়েশান টাইপ মনে হচ্ছে। নট সিওর।
আমি তাকিয়ে আছি। উত্তর দেবে? না প্রশ্নটা ঘুরিয়ে করব? আর কিছুক্ষণ ওয়েট করি। এমন সময় মনে হল ঠোঁটের কোনে একটু হাসির রেখা দেখা যাচ্ছে। ‘ইয়েস' টাইপ মনে হচ্ছে। তারপরও, কিছুটা ভয়ে আর কিছুটা প্রত্যাশা নিয়ে আবার জানতে চাইলাম
--ইজ দ্যাট অ্যা নো?
চলবে

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পড়লাম, পরেরটায় যাচ্ছি!

১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৩৩

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:২৯

কাউয়ার জাত বলেছেন: "টিপিক্যাল" শব্দটার আধিক্য চোখে ধরা পড়ে। তবে আকর্ষণটা ধরে রেখেছেন পুরোপুরিই।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৩৩

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: সহমত। সাবধান থাকতে হবে। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.