নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাই সেকেন্ড ম্যারেজ

১৭ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪৪

১০

— থ্রি আওয়ারস মোর।
দুপুরের খাওয়া সেরে নিজের রুমে এসেছি। মা বললেন, একটু রেস্ট নিয়ে নে। এতো লম্বা জার্নি। কারণ সেটা না। ভাই বোনরা সবাই এসেছে, এই শেষ সময়টা আমার সাথে কাটাতে। ওদিকে আবার নিউলি ওয়েড কাপল। মা ভাবলেন, লজ্জা পাচ্ছে সবার মাঝ থেকে উঠে যেতে। তাই, ‘রেস্ট ফর্মুলা’। আমি উঠে এসেছি অন্য কারণে। লাস্ট অপারচুনিটি টু সেটল আওয়ার স্কোর।
বিছানায় আধশোয়া হয়ে নিবেদিতাকে দেখছি। ব্যাপারটা খানিকক্ষণ লক্ষ্য করল নিবেদিতা। একবার ভ্রু নাচিয়ে জানতে চাইল, কি দেখছি। মাথা দুদিকে নেড়ে বোঝালাম, কিছু না। এরপরেই আসল সতর্কতা বাণী, সময় শেষ হচ্ছে। তৃতীয় পাজল এখনও শলভ হয়নি। আই এগ্রি। এখনও পারিনি। মনে অনেক কথাই আসছে, আবার সেগুলো নাকচও হয়ে যাচ্ছে। একবার মনে হল, আমি সমিতকে নিয়ে সন্দেহ করছি, এমন কিছু বলতে চাইছি। পরে মনে হল, না। আর যাই হোক, সন্দেহ আমি করছি না। তেমন কিছু হলে, নিবেদিতাই আমাকে বলবে, আর কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই বলবে। দেন হোয়াট? আমার চোখ কি বলছে? সেই চিন্তা মনে মনে চললেও, সময়টা গল্প করে কাটাতে ইচ্ছে করছে। বললাম
— আই নো।
আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল
—দেন?
— ব্রেন খুলছে না
ঠোঁটে সেই স্মিত হাসি। উত্তর দিল
— সিগারেট?
মন্দ হয় না। শেষ এই সময়টা একটু সুন্দর কাটবে। বিছানা ছেড়ে উঠলাম। বেড সাইড টেবিলে সিগারেটের প্যাকেটটা ছিল। ওটা হাতে নিয়ে ব্যালকনিতে আসলাম। একটু পরে নিবেদিতাও পাশে এসে দাঁড়াল। আমি সামনের রাস্তার দিকে দেখছিলাম। আজ খানিকটা মেঘলা। রোদ তেমন সমস্যা করছে না। নিবেদিতা আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে একটা জিজ্ঞাসা। স্পষ্ট পড়তে পারা যাচ্ছে। বললাম
— তুমি ধরাও।
কোন প্রতিবাদ না করে সিগারেটটা ধরাল। একরাশ ধোয়া ছেড়ে সিগারেটটা আমার দিকে এগিয়ে দিচ্ছিল। ইশারায় বারণ করলাম। স্মিত হেসে উত্তর দিল
— এটা তোমার দরকার। আমার না।
— আই নো।
— দেন?
— তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে।
ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি। সিগারেটে আরেকটা পাফ টেনে উত্তর দিল
— হঠাৎ?
— ঠিক হঠাৎ না। জাস্ট… বলতে পার, মনের কথা বলছি।
ব্যাল্কনির রেলিংয়ে খানিকটা ঝুঁকে দাঁড়িয়েছে নিবেদিতা। কথার ফাঁকে ফাঁকে সিগারেট টানছে। অদ্ভুত সুন্দর লাগছে ওকে আজকে। সামনের দিকে তাকিয়েই বলল
— খুব কথা বলছে আজকে তোমার মন?
— কথা আগেও বলত, বাট চোখ।
কিছুটা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাল। বোধহয় বুঝতে পারছে, আমি আরও কিছু বলব। উত্তর না দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। আমিও অপেক্ষা করে আছি। অবশেষে ও মুখ খুলল। কিছুটা গম্ভীর।
— ডোন্ট ইউ থিংক, ইটস টু লেট।
মাথা ঝুঁকিয়ে সম্মতি জানালাম। বললাম
— আই নো। তারপরও… বলতে ইচ্ছে করছে।
কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিল। একটু ভাবল। এরপরে আমার মাথা তুলল। এরপরে আবার সেই হাসি। সিগারেটে শেষ আরেকটা টান দিয়ে আমার দিকে এগিয়ে দিল
— অনেকদিন অভ্যাস নেই। এর বেশি পারব না।
ওর হাত থেকে সিগারেটটা নিতে নিতে জানতে চাইলাম
— গল্পটা শুরু করি?
ওর চুলগুলো মুখের ওপর এসে পড়ছিল। সেগুলো সরাতে সরাতে অবাক গলায় বলল
— গল্প? আবার?
— ইয়েস। ফর দ্যা লাস্ট টাইম।
— রাজকন্যার গল্পের রাক্ষসীয় ভার্সান?
সিগারেটে টান দিয়ে সামনের দিকে ধোঁয়া ছাড়লাম। ওর দিকে না তকিয়েই বললাম
— নাহ। একটা বস্তাপচা বাংলা ফিল্মের গল্প।
জানি, স্মিত হাসি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে নিবেদিতা। ওর হাসিটা মিস করতে চাইলাম না। ঘুরে দাঁড়ালাম। সোজাসুজি ওর দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলাম।
— এক নায়ক আর দুই নায়িকার গল্প।
চোখে কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে আছে নিবেদিতা। কিছু বলল না। আমি বলতে থাকলাম
— সো, দ্যা স্টোরি ইজ, গল্পের নায়ক একটা সমস্যায় পড়েছে। নায়ক ভালবেসে বিয়ে করে প্রথম নায়িকাকে। এরপরে শুরু হয়ে তাদের সুখের সংসার। আমেরিকার ব্যস্ত জীবনের সাথে তাল মেলাতে, আর একটু সচ্ছল জীবনের আশায় দুজনই ব্যস্ত হয়ে পড়ে অর্থ উপার্জনে। যে বেতন সে পেতো, তার সাথে যুক্ত হয় ফ্রি ল্যান্সিংয়ের ইনকাম। আমাউন্টটা নেহাত মন্দ ছিল না। তাই সে সিদ্ধান্ত নেয়, দ্রুত লোণ শোধ করবে। ব্যাপারটা নায়িকার সাথে ডিসকাস করেই সে ঠিক করে। কিছুদিনের ভেতরেই সে বুঝতে পারে, কাজটা ভুল করে ফেলেছে। নায়িকার সাথে তার সম্পর্কে যে শীতলতা আসছে, সেটাও সে টের পায়। বাট, নিজেকে এই বলে কনভিন্স করে, আর তো মাত্র কয়েকটা দিন। বোর লাগছে?
— হ্যাঁ। জানা গল্প দ্বিতীয়বার শুনতে বিরক্ত লাগে।
— সরি, বাট গল্পটা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, দ্বিতীয় নায়িকাকে এই তথ্যটা জানানো, যে নায়ক ততটা গাধা না, যতোটা সে ভাবে।
— ওকে, দ্বিতীয় নায়িকা গট দ্যা ম্যাসেজ। নেক্সট
— সো, পুরো প্রবলেমটা বোঝা সত্ত্বেও, নায়ক হেল্পলেস ছিল। ব্যাঙ্কের কিস্তি ইচ্ছে করেই বেশি নিয়েছিল, ফলে চাইলেও সে নিজের কাজ কমাতে পারছিল না। লোন রিসিডিউল করা যেত, বাট… ভাবল, আর তো মাত্র বছর চারেক। বাট দেন দ্যা ডিসাস্টার হ্যাপেন্ড। ব্যাপারটায় সবাই নায়িকাকে দোষ দিলেও, নায়ক তা করতে পারে না। সে নিজেকেই অপরাধী ভাবতে থাকে। ভাবে, একটু ধীরে চললে কি এমন ক্ষতি হত।
— শেষ?
— না। আরেকটু আছে। তো বছর তিনেক পরে, যখন নায়ক দ্বিতীয় নায়িকাকে বিয়ে করে, তার কিছুদিনের মাথায়ই প্রথম নায়িকার ডিভোর্স হয়ে যায়। ওর সেকেন্ড হাসব্যান্ডের সাথে। নায়কের ভেতর একটা গিল্টি ফিলিংস আগে থেকেই ছিল আর এই নতুন ডেভেলপম্যানটে তখন সে তার পুরনো পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবার একটা সম্ভাবনা দেখতে পায়। সে প্রথম নায়িকার জন্য কিছু একটা করতে চায়, যেন আমেরিকায় সে একটু নিশ্চিন্ত লাইফ লিড করতে পারে। মাথায় দুটো অপশান আসে। একটা হচ্ছে নিজের বাড়িটা ওকে দিয়ে দেয়া আর ওর জন্য একটা ভাল চাকরী জোগাড় করে দেয়া। যেহেতু তার জীবনে তখন দ্বিতীয় নায়িকা চলে এসেছে, তাই সে ঠিক করে প্রথম নায়িকার জন্য সে যদি কিছু করেই তা দ্বিতীয় নায়িকার সাথে ডিসকাস করেই করবে। অ্যান্ড হি ডিড দ্যাট। ব্যাপারটায় দ্বিতীয় নায়িকা সম্মতিও দেয়। অ্যান্ড দেন কেম দ্যা আল্টিমেট এনিমি অফ লাফ।
— থার্ড পারসন?
— নাহ, জেলাসি। দ্বিতীয় নায়িকা ভাবে, নায়ক আবার প্রথম নায়িকার কাছে ফিরে যেতে চায়। আর তাই, দ্বিতীয় নায়িকা ডিসাইডেড টু ব্রেক দ্যা রিলেশানশিপ। সো, নায়কের সামনে এখন দুটো রাস্তা, আইদার সেকেন্ড নায়িকাকে পারসুয়েড করা, আই মিন বোঝানোর চেষ্টা করা যে সে মিথ্যে সন্দেহ করছে ওর…
— ওর লিভ হার, সো দ্যাট শি ক্যান জয়েন দ্যা থার্ড পারসন।
— থার্ড পারসন ঠিক ইম্পরট্যান্ট না, বাট সে থাকাতে নায়ক ইজ ফিলিং দ্যাট, দ্বিতীয় নায়িকার ক্ষতি সে করছে না।
— অ্যান্ড দেয়ার এন্ডস দ্যা স্টোরি, এই তো?
— নাহ। দেয়ার এন্ডস দ্যা এক্সপ্ল্যানেশান অফ দ্যা হিরো।
— গল্পটা খারাপ না। বাট ওয়ান থিং ইজ মিসিং ইন দ্যা স্টোরি।
— কি সেটা?
— দ্যা পয়েন্ট অফ ভিউ অফ দ্যা ফিমেল প্রোটাগনিস্ট। নায়িকারা কি চায় বআ চেয়েছিল। ডিড দ্যা হিরো এভার ট্রাইড টু ফাইন্ড দ্যাট?
নিবেদিতা আমার পাশেই বিছানায় বসে ছিল। ঘাড় কাত করে আমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটা করল। ওর চোখের দৃষ্টিটায় নতুন কিছু আছে। ঠিক রাগ ওটা না। ঘৃণাও না। সামথিং এলস।
এমন সময় দরজায় নক হল। আমদের ডাকতে এসেছে বোধহয়। মুহূর্তে নিবেদিতা নিজেকে সামলে নিল। ঝট করে উঠে দাঁড়াল। এরপরে আমার দিকে তাকিয়ে বলল
— চল। আই থিংক ডাকতে এসেছে। এরপরে দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে বলল, আই থিংক উই শুড স্টার্ট নাও। ওর উই উইল বি লেট।
বসে ছিলাম। ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালাম। নিবেদিতার দিকে তাকালাম। নিবেদিতাও এক ঝলক আমার দিকে তাকাল। এরপরে চোখ ঘুরিয়ে নিল। কিন্তু ঐ এক মুহূর্তের দৃষ্টিতে কিছু একটা ছিল। সাডেনলি আই গট দ্যা অ্যানসার। নাও আই নো দ্যা সলিউশান অফ দ্যা থার্ড পাজল।
চলবে

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩৮

শুভ_ঢাকা বলেছেন: যায়গা মত প্যজ দিয়া তো টেনশনে ফ্যালাইয়া দিলেন। যাই ব্যাল্কনিতে গিয়া বিড়ি ফুঁইকা দেখি থার্ড প্লাজলটা রিজল্ভ করতে পারি কিনা। অ্যান এক্সিলেন্ট রাইটিং স্কিল ইউ হ্যাভ। ইগারলি ওয়েটিং ফর দ্যা নেক্সট ওয়ান।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ২:০৯

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৩৭

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ভেবেছিলাম এই পর্বেই থার্ড পাজল সলভড হবে। অপেক্ষার সাথে সাথে উত্তেজনাও বাড়ল.... :)

আচ্ছা আপনি কি এসব পর্ব আগেই লিখেছেন, না একটার পরে একটা লিখে লিখে তখনই পোস্ট করছেন?

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:১২

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: একটার পর একটা লিখছি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.