নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাই সেকেন্ড ম্যারেজ

১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৪


১১

— প্লেন ডিলেইড। বাবা এয়ারপোর্টে ফোন দিয়েছিলেন।
এটা প্রত্যেকবারই করা হয়। বাবার এক বন্ধু আছেন এয়ারপোর্টে। হাই অফিশিয়াল। তাঁকে ফোন করে জেনে নেওয়া হয়, প্লেন রাইট টাইমে আছে কি না। দুষ্টুমির হাসি হেসে সেই তথ্যটাই নিবেদিতা জানাল। দরজায় নক হওয়ার সময় এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল, দ্যা স্টোরি ইজ ওভার। আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু ফেলে যাচ্ছি কি না দেখছি। ওদিকে দরজায় আওয়াজ হওয়ার সাথে সাথেই ঝট করে নিবেদিতা উঠে পড়ে। দ্রুত গিয়ে নিজে গিয়ে দরজা খোলে। আর ওখান থেকে যখন ফিরে আসে তখন আমি উঠছি।
খবরটা শোনার সাথে সাথে মনে হল, দ্যা লাক ইজ উইথ মি। গল্পের একটা হ্যাপি এন্ডিং হতে চলেছে। এই প্লেন ডিলে হওয়াটা, মাস্ট বি সাম কাইন্ড অফ সাইন। সারা মুখ জুড়ে যে আমার আনন্দের একটা ঝলমলে হাসি বইছিল, ব্যাপারটা নিজেই লক্ষ্য করিনি। নিবেদিতার দিকে যে মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়েছিলাম, সেটাও বুঝতে পারিনি। সম্বিত ফিরে পেলাম যখন নিবেদিতার আওয়াজ শুনতে পেলাম
— সো? নাও হোয়াট?
চোখে দুষ্টুমির হাসি আছে, কিন্তু একটা রুক্ষতাও আছে। এতো সুন্দর করে সাজানো আমার এক্সপ্লানেশানটা শোনার পরে ভেবেছিলাম, কিছুটা হলেও নরম হবে নিবেদিতা। বাট, মনে হচ্ছে, আই ওয়াজ রং। তেমন কিছুই হয়নি। দেরী করে ফেলেছি কি? ডিড শী টেক হার ডিসিশান অলরেডি? দ্যা ফাইনাল ডিসিশান?
ফিল করলাম, কষ্ট হচ্ছে। আবার এটাও বুঝলাম, আই হ্যাভ নো অপশান। জোর করে সম্পর্ক হয় না। ও যদি সিদ্ধান্ত নিয়েই থাকে, আই স্যুড অনার দ্যাট। সিদ্ধান্ত নিলাম, এ ব্যাপারে ওকে আর ডিস্টার্ব করব না। বরং আমার তরফ থেকে যতটা সম্ভব ওকে হেল্প করব। ধীরে ধীরে নিবেদিতা এসে আমার পাশে বসল। ঠোঁটের কোনে এখনও হাসি।
— দাঁড়িয়ে আছ কেন? বস।
ডোম দেয়া পুতুলের মত চুপচাপ বসে পড়লাম। নিবেদিতার দিকে তাকালাম। এখনও অপূর্ব সেই দুষ্টুমির হাসি। ইজ শি এঞ্জয়িং মাই সিচুয়েশান? মনে হচ্ছে অ্যাজ একটু বেশি বেশিই হাসছে। স্পেশালি এই মিষ্টি আর দুষ্টুমির হাসিটা। হাসিটা মুখে ঝুলিয়ে রেখেই বলল
— সো, ইউ গট থ্রি মোর আওয়ারস টু সলভ দ্যা পাজল।
নিবেদিতার দিক থেকে চোখ সরাতে একটুও ইচ্ছে করছে না। মনে হচ্ছে এই পুরোটা সময় তাকিয়ে তাকিয়ে ওকে দেখি। আবার মনের এক কোনে একটা অভিমানও উথলে উঠছে। আমার সব কিছু বুঝতে পারছে আর এটা বুঝতে পারছে না আমি কি চাই? ধীরে ধীরে চোখ সরিয়ে নিলাম। বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে সামনের দিকে তাকালাম। বললাম
— আই ডোন্ট নিড এনি।
কথাটা বলেই বুঝতে পারলাম, অভিমান বাড়ছে। এবার নিবেদিতার দিকে তাকালাম। মুখে একটা বিজয়ীর হাসি থাকা উচিত ছিল, বাট, এলো না। নিবেদিতাও আমার দিকে তাকাল। ঠোঁটের হাসি ধীরে ধীরে সরে গেল। কিছুটা উৎকণ্ঠা ফিরে এল। একটা হাত আমার হাতের ওপর রাখল। এবার আমার ঠোঁটে কিছুটা স্মিত হাসির রেখা দেখা গেল। বললাম
— আই সলভড ইট।
আমার দিকে তাকিয়েই জানতে চাইল
— বলবে না?
— বলব। বাট আই থিংক, তার আগে আমি একটা উত্তর জানতে চাই
ধীরে ধীরে চোখ তুলে আমার দিকে তাকাল নিবেদিতা।
— হোয়াট ইজ মাই ফল্ট?
বেশ খানিকক্ষণ আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। এরপরে বড় করে একটা নিঃশ্বাস টেনে নিল। এরপরে বলল
— সিগারেট আছে?
বিছানায় প্যাকেটটা ছিল। হাতে নিয়ে দেখি আর একটা মাত্র আছে। সেটা বের করে ওর হাতে দিলাম। সেটা হাতে নিয়ে বলল
— ব্যালকনিতে চল।
দুজনে এসে ব্যালকনিতে দাঁড়ালাম। ও সিগারেট ধরাল। একমনে কিছুক্ষণ টানল। সামনের রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার ধারণা কি বলবে গুছিয়ে নিচ্ছে। একসময় আমার দিকে না তাকিয়েই সিগারেটটা এগিয়ে দিল। সেটা আমি নিলাম। নিবেদিতা এখনও কিছু বলছে না। অপেক্ষায় আছি। সিগারেটে টান দিলাম। এবার নিবেদিতা ঘাড়টা ঘোরাল। মাস্টারনি লুক।
— দ্যা রিয়েল ফল্ট ইজ, ইউ টুক দ্যা হিরোইনস ফর গ্রান্টেড। ওদের যে একটা মন আছে, তা তুমি কখনও কনসিডার করোনি। আমি বলছি না তুমি তাদেরকে ভালবাসো না, বলতে চাইছি, ইউ লাভ দেম ইন ইয়োর ওন টার্মস। লাইক ইশিতা। তুমি ধরেই নিয়েছিলে, একজন মেয়ে বাড়ি, গাড়ি, টাকা পয়সা এসব চায়। তাই নেমে গেলে টাকা ইনকাম করতে। ওর জন্য একটা বাড়ির ব্যবস্থা করতে। ভাবেলে দিস ইজ দ্যা গিভট, শি ইজ ওয়েটিং ফর। কিন্তু একবারও ভাবলে না, ইশিতা কি কেবলই বাড়ি চায়? কিংবা ডাস শি ওয়ান্ট ইট অ্যাট দ্যা কষ্ট অফ ইউ?
ব্যাপারটা একেবারে বুঝিনি, এমন না। বুঝেছিলাম। ওর অভিমান ভরা চাহনিও চিনেছিলাম। ভেবেছিলাম আর তো মাত্র বছর দুয়েক, এরপরেই তো...। কিন্তু সেই সুযোগ তো পাইনি। তার আগেই তো…। নিজেকে তাই ডিফেন্ড করার চেষ্টা করলাম।
— ডিসিশানটা তো আমি একা নিইনি। ওর সাথে আলাপ করেই নিয়েছিলাম। আর তাছাড়া, মাত্র তো দুটো বছর বাকী ছিল।
— দেয়ার লাইজ দ্যা রিয়েল প্রবলেম। শুরুতে ইশিতাও আর দশটা বাঙ্গালি মেয়ের মত স্বামীর মতকেই নিজের মত হিসেবে চালাতে চেয়েছিল। শুরুতে পেরেওছিল। অ্যান্ড দ্যাট ওয়াজ নট কম্প্রোমাইজ। ও হাসিমুখেই সেসব করেছিল। নতুন বাড়ির স্বপ্নে সে ও বিভোর ছিল। দেন দ্যা সিচুয়েশান চেঞ্জড। একসময় সে একা ফিল করতে শুরু করল। ব্যাপারটা সে তোমাকে বলতেও পারছিল না। অ্যান্ড দেন স্টার্টেড দ্যা প্রবলেম।
— আমার তখন উচিত ছিল কাজের চাপ কমিয়ে ফেলা?
— দ্যাট ইজ দ্যা সলিউশান। বাট ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড দ্যা প্রবলেম। প্রবলেমটা হচ্ছে তুমি বোঝারই চেষ্টা করনি, কেন ও পাল্টে যাচ্ছে। আমি কি বোঝাতে পারছি?
মনে মনে বললাম, পারছ। আর বাইরে মাথা ঝুঁকিয়ে সম্মতি জানালাম। নিবেদিতাকে রীতিমত রেসপেক্ট করতে শুরু করেছি। ও বলে চলল
— একটু আড়চোখে তাকানো, নতুন শাড়িটা পড়ার ব্যাপারটা লক্ষ্য করা, কখনও মন খারাপ দেখে জিজ্ঞেস করা, কি হয়েছে, এধরনের ছোটখাট ব্যাপারগুলো তোমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল, আই গেস। কিংবা হতে পারে শি ওয়ান্টেড দোজ টু বি স্পেলড আউট। তোমার মুখ থেকে কথাগুলো শুনতে চেয়েছিল। হয়তো ওর দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়েছো, সে হয়তো ব্যাপারটা লক্ষ্যও করেছে, তারপরও সে চেয়েছিল কথাটা তুমি মুখে বল। রোমান্টিক এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বল যে ওকে অ্যাজ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। এসব আর কি।
ম্লান একটা হাসি হাসলাম। শি ইজ রাইট। চোখের সামনে ইশিতার সব কাজগুলো ভেসে উঠতে লাগল। অলসো দ্যা মিসটেকস আই ডিড। সিগারেট প্রায় শেষের দিকে। ফেলে দিলাম। এরপরে নিবেদিতার দিকে তাকিয়ে বললাম
— তোমাকে বেশ সুন্দর লাগছে।
স্মিত হাসি হেসে বলল
— আই ডোন্ট নিড দ্যাট। তোমার ড্যাবড্যাবে দৃষ্টি দেখেই আমি বুঝে যাই, আমাকে কেমন লাগছে। আমার ঠোঁটের কোনের দুষ্টুমির হাসি যে তোমার কতোটা প্রিয়, সেটা জানি বলেই ইচ্ছে করে বেশি বেশি হাসি। তোমার মুগ্ধ দৃষ্টি এনজয় করি বলেই ড্রেসিং টেবিলের সামনে একটু বেশিক্ষণ বসে থাকি। সো, দ্যা নেক্সট লেসন ইজ, অল উইমেন আর নট দ্যা সেম। কেউ চোখের ভাষাটাই এঞ্জয় করে, কেউ তা মুখের ভাষায় শুনতে চায়। ক্লিয়ার?
— ক্লিস্টার ক্লিয়ার।
— ওকে দেন। উইমেন সাইকোলজির ওপর ক্লাস আপাততঃ শেষ। এবার প্র্যাক্টিক্যালের পালা। দিস টাইম, ডোন্ট ডু এনি মিস্টেক। অ্যান্ড প্লিজ, টিচারের নাক কেটো না। ইশিতা অধীর আগ্রহে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। গো অ্যান্ড গ্র্যাব দ্যা সেকেন্ড অপারচুনিটি।
— চল, ঘরে গিয়ে বসি।
ধীরে ধীরে হেঁটে এসে দুজনই ঘরে বসলাম। একটা ব্যাপার বুঝতে পারলাম, দ্যা স্টোরি ইজ ওভার। নিবেদিতার দিকে তাকালাম। ইচ্ছে করছে হাতটা বাড়িয়ে ওর হাতটা ধরি। আমার চোখ যে কথাটা সেদিন বলছিল, সে কথাটা বলে ফেলি। বলে ফেলি, সেদিন আমার চোখ বলছিল,আই কান্ট লিভ উইদাউট ইউ। কিন্তু, বলতে পারছি না।
টাইম ইজ রানিং আউট ভেরি ফাস্ট। ঘড়ির দিকে তাকালাম। আর মাত্র দু ঘণ্টা। হঠাৎ আবিষ্কার করলাম আমি কি যেন সব আবোল তাবোল বলছি
— আমেরিকায় সমিতের যদি কোন হেল্প লাগে, জানিও।
নিবেদিতা নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল। ধীরে ধীরে চোখ তুলে আমার দিকে তাকাল। চোখের দৃষ্টি স্থির। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল। এরপরে মাথা ঝুঁকিয়ে সম্মতি জানাল।
— আর ডিভোর্সটা আমেরিকায় গিয়ে যদি নাও তাহলে তোমার সিটিজেনশিপ পেতে সুবিধা হবে। অ্যান্ড সমিতেরও হেল্প হবে।
এবারও কিছু বলল না। আবার সম্মতির মাথা ঝোঁকানো। এরপরে চোখ নামিয়ে নিল। এক মুহূর্তের জন্য মনে হল ওর চোখে নতুন একটা কিছু দেখতে পেলাম। ছোট্ট একটা কষ্ট। মনে হচ্ছে এখনই কেঁদে দেবে। না তেমন কিছু হল না। কিছুক্ষণ পরেই আবার আমার দিকে তাকাল। এবার চোখে আর সেই কষ্ট নেই। এবার চোখের দৃষ্টি অনেকটাই স্থির। কিছু একটা বলার জন্য মুখ খুলতে যাবে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল। বেড সাইড টেবিলে ওটা রাখা ছিল। ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে ওটা উঠালাম। স্মার্টফোনের স্ক্রিনের ওপরে লেখা আছে ‘ইশিতা কলিং’। নিজের অজান্তেই নিবেদিতার দিকে তাকালাম। ওর ঠোঁটের কোনে স্মিত হাসি। ম্লান ভ্যারাইটি।
আমার আঙ্গুল কাঁপছে। ফোনটা রিসিভ করব? না কেটে দিব? এমন সময় সেই চির পরিচিত নির্ভরতার হাতটা আমার হাতের ওপর এসে থামল। তাকালাম নিবেদিতার দিকে। মাথা দুদিকে নেড়ে বোঝালে, কাজটা কর না। এরপরে আমার ফোনের দিকে ইঙ্গিত করে স্পষ্ট কণ্ঠে বলল
— পিক আপ দ্যা ফোন। শি ইজ ওয়েটিং।
চলবে

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: চলুক, পরের পর্ব পড়ার সুযোগের অপেক্ষায়।

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৩৩

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫০

শুভ_ঢাকা বলেছেন: লেখক আপনি কি গল্পের পরিণতি নির্ধারণ করে গল্পের বিস্তার করছেন এবং ধীরে ধীরে আপনি আপনার গল্পের সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে দিকে এগুচ্ছেন। আমি আপনার থ্যট রীড করার চেষ্টা করছি :D :P । কিপ ইট গোয়িং।

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৫২

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:০৪

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: বরাবরের মতোই ঝকঝকে, সাবলীল, সাসপেন্সে ভরা! :)

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৫২

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.