নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাই সেকেন্ড ম্যারেজ

১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৮:৩২


১২
— ড্রইংরুমে গিয়ে বসো। সবাই অপেক্ষা করে আছে।
এইমাত্র ইশিতার সাথে কথা শেষ করলাম। সাধারনতঃ আমি কারো সাথে ফোনে কথা বললে নিবেদিতা পাশে থাকে না। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। সম্ভবতঃ একসাথে বেরোতে চাচ্ছে। খানিকটা বাধ্য হয়েই আমাদের কথা শুনল। তেমন কোন কথা অবশ্য হয়নি। ফরম্যাল হাই হ্যালোর পরে ফ্লাইট যে তিন ঘণ্টা লেট, সেই তথ্যটা জানালাম। লন্ডনে ট্রান্সজিট। শীতের কাপড় হ্যান্ডব্যাগে যেন রাখি, এজাতীয় কিছু উপদেশ। এটা ইশিতার পুরনো অভ্যাস। এরপরে কিছু নালিশ। বাড়িটা রীতিমত ডাস্টবিন বানিয়ে রেখেছি। এই কয়দিনে ও সবকিছু একহাতে সামলেছে। এখন নাকি ওটা বসবাসের যোগ্য হয়েছে। বাবা মার কথাও জানতে চাইল। আরও কথা বলতে চাচ্ছিল হয়তো, আমার হু হাঁ টাইপ উত্তর শুনে হয়তো বুঝল আমি ইন্টেরেস্টেড না। ‘আচ্ছা রাখি’ বলে কথা থামিয়ে দিল।
কথা শেষ করে দেখি নিবেদিতা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে নিজেকে এক পশলা দেখে নিচ্ছে। আমার ধারণা কথাগুলো ও শুনেছে। আমার অস্বস্তিভাবটা ওর চোখ এড়িয়েছে বলে আমার মনে হয় না। দেখলাম আয়নায় আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বোঝার চেষ্টা করলাম, ও কি ভাবছে। স্পষ্ট বোঝা গেল না। আয়নায় আমার দিকে তাকিয়েই ড্রয়িংরুমে যাওয়ার নির্দেশনাটা দিল। ফোনটা বিছানার ওপর রাখতে রাখতে বললাম
— যাচ্ছি।
— যাচ্ছি না, যাও। সবাই তোমার সাথে দেখা করতেই তো এসেছে। আর তুমি এভাবে দরজা আটকে বসে আছ। বাজে দেখাচ্ছে।
— আই নো। বাট আই হ্যাভ সামথিং ইম্পরট্যান্ট টু টেল।
— আবার কি কথা?
— জাস্ট অ্যারাইভড। ব্যাপারটা এই মাত্র মাথায় আসল।
স্মিত হাসি। ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় আমাকে দেখছিল। এবার ঘুরে বসল।
— এই ব্যাপারে কি আর কথা বলার মত কোন কথা আছে?
— আই থিংক আছে। অ্যান্ড আই থিংক, কথাটা এই মুহূর্তেই তোমাকে বলা উচিত।
আমার মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল। একবার হয়তো ভাবল, এব্যাপারে আর আলোচনা করবে না, তারপর কি মনে করে আমার দিকে তাকাল
— ওকে। খুব সংক্ষেপে।
— আই ডোন্ট লাভ ইশিতা।
বেশ স্থির একটা দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল নিবেদিতা। কি বলবে ভাবছে। এরপরে কিছু একটা বলার জন্য মুখ খুলতে যাচ্ছিল এমন সময় আমি আবার বললাম
— আই জাস্ট ফেল্ট ইট। আই থট, ইসিতার সাথে গল্প করতে আমার ভাল লাগবে, বাট লাগল না। অনেস্টলি বলছি, এক সময় ওর গলার আওয়াজ শোনার জন্য অধীর হয়ে থাকতাম। বাট আজকে, আই জাস্ট কান্ট এক্সপ্লেইন, ইট ওয়াজ নট লাইক বিফোর। এক সময় তো মনে হচ্ছিল ও কখন ফোনটা রাখবে।
খানিকক্ষণ আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে চোখ নামিয়ে নিল। এরপরে স্মিত হেসে জিজ্ঞেস করল
— দেন?
— আই থিংক, ইটস অল ওভার বিটুইন আস। যদি ফিরেও যাই, আই উইল বি অ্যা এটিএম মেশিন কাম বেড পার্টনার অফ হার।
— কপি ক্যাট?
— বিলিভ মি, শী উইল নট গেট মি।
বড় করে একটা নিঃশ্বাস টেনে নিল। এরপরে সেই স্মিত হাসি নিয়ে আমার দিকে তাকাল
— তাহলে?
— সেটাই ভাবছি।
— সিগারেট লাগবে?
— শেষটাও তো খেয়ে ফেললাম।
— আই হ্যাভ ওয়ান।
বলে নিজের পার্স থেকে এক প্যাকেট সিগারেট বের করে দিল।
— লেডিস ওয়ান। কাজ চলে যাবে, আই থিংক।
প্যাকেটটার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললাম।
— জানো, এদেশে যখন বিয়ে করতে এসেছিলাম, তখন ইচ্ছে ছিল, আধ হাত ঘোমটা দেয়া, লাজুক, সাত চড়ে রা করে না টাইপ একটা টুকটুকে বউ জোগাড় করে নিয়ে যাব।
— আর পেলে আমাকে, যে বিয়ের রাতে বসে নিজের সেলফি শেয়ার করে আর বরের কাছ থেকে চেয়ে সিগারেট খায়।
নিবেদিতার মুখে ঝলমলে সেই হাসি। হাসছি আমিও। সাথে প্রাণ খুলে কথাও বলছি।
— বাট দ্যা ইন্টেরেস্টিং থিং ইজ, আই লাইকড ইট। আমি নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারিনি সেদিন।
— আমিও না।
— মানে?
ইশারায় ব্যালকনি দেখাল নিবেদিতা। বোঝাল, চল ওখানে যাই। ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালাম। এরপরে দুজন ধীরে ধীরে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। দুজনেই সামনের রাস্তার দিকে তাকিয়ে কথা বলতে লাগলাম। নিবেদিতা প্রথমে বলল
— তোমার এই ব্যালকনির প্রেমে পড়ে গেছি। এখানে আসলেই কিছু আছে।
নিবেদিতা সিগারেটের প্যাকেটটা দেখিয়ে ইশারায় জানতে চাইল, কে ধরাবে। আমি ইশারায়ই জানালাম, ও ধরাক। ও সিগারেট ধরাল। একরাশ ধোঁয়া টেনে ছাড়ল। সেদিকে তাকিয়ে বললাম
— একটা কথা বলব?
ঘাড় ঝুঁকিয়ে ইশারায় বোঝাল, বলতে পারি।
— সেদিন, আই মিন আমাদের বাসর রাতে, তোমার সেই সিগারেট চাওয়াতে অবাক হয়েছিলাম। বাট, দ্যা ইন্টেরেস্টিং পার্ট ইজ, ব্যাপারটা আবার ভালোও লেগেছিল।
মাথা ওপর নিচে করে সম্মতি জানাল।
— আই নো। ইনফ্যাক্ট তোমার চোখে আপ্রিসিয়েশান দেখে আমি নিজেও আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম। অ্যান্ড তখনই সিদ্ধান্ত নিই, ভার্জিনিটির ব্যাপারটা তোমাকে জানিয়ে দেব। যা হওয়ার আজকেই হয়ে যাক। হয় এই বিয়ে টিকবে, নয়তো ভাঙবে।
স্মিত হেসে বললাম
— অ্যান্ড দেয়ার স্টারটেড আওয়ার ফেইরি টেল।
— নট ফেইরি, বলতে পার সাসপেন্স থ্রিলার।
সিগারেটটা আমার দিকে এগিয়ে দিল। হাত বাড়িয়ে ওটা নিলাম। অনুভব করলাম, রিয়েলি এঞ্জয় করছি এই আড্ডা। ড্রইং রুমে যেতে একটুও ইচ্ছে করছে না। বরং বুকটা ধুপধুপ করছে, কখন দুঘণ্টা শেষ হয়ে যাবে।
— সেটাও বলা যায়। প্রতি মুহূর্তে কাহিনীর মোড় পাল্টেছে। এই মনে হয়েছে সংসারটা বোধহয় ভাঙল, আবার পরের মুহূর্তেই মনে হয়েছে, উই আর ব্যাক।
— জানো, ছোটবেলায় যখন সাসপেন্স থ্রিলার পড়তাম, যত রাতই হোক, শেষ না করে ঘুমাতাম না।
— ওটা কমবেশি সবাই করে। আমি অবশ্য আরেকটা কাজ করতাম, শেষটা কি হবে, তা গেস করার খেলা খেলতাম।
এতক্ষণ সামনের দিকে তাকিয়ে নিবেদিতা কথা বলছিল, এবার আড়চোখে আমার দিকে তাকাল।
— আমাদের কেসটায় কি গেস করেছিলে?
মাথা দুদিকে নেড়ে বোঝালাম নিজের ভাগ্যকেই বিশ্বাস করতে পারছি না। বললাম
— ইট চেঞ্জড এভ্রি ডে। রিয়েলি, এক্সপেরিয়েন্স অফ অ্যা লাইফটাইম।
— চল ঘরে গিয়ে বসি।
— আরও গল্প করবে? সবাই কি ভাববে? চলো।
— যাওয়া যায়। বাট হোয়াট ইজ দ্যা ডিসিশান দেন?
দুজনে ধীরে ধীরে হেঁটে ঘরে এসে দাঁড়ালাম। মুখোমুখি। এরপরে আলতো করে চোখ তুলে স্মিত হেসে আমার দিকে তাকাল। এবার দুষ্টুমির সাথে সেই স্মিত হাসি মেশানো। মাথা নিচু করেই বলল
— ডিসিশান তো নিয়েই ফেলেছো।
বলে ধীরে ধীরে চোখ তুলে তাকাল। চোখে কিছুটা লজ্জা, কিছুটা হাসি। আমার হাত দুটো ওর কাঁধের ওপর রাখলাম।
— আমারটা নিয়েছি। তোমারটা?
সোজাসুজি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল
— রিড ইট ইন মাই আইজ।
ওর চোখের দিকে তাকালাম। কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ নামিয়ে ফেলল। ঠোঁটে স্মিত হাসি নিয়ে জানাল
— এতো সময় দেয় যাবে না।
— আর লাগবে না। আই গট মাই অ্যানসার।
— কি পেলে?
— দেয়ার ইজ নো শমিত দেয়ার।
বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। এরপরে বলল
— হি নেভার ওয়াজ। বরং মাথায় ঘিলু থাকলে প্রতীককে নিয়ে সন্দেহ বরং করতে। হি ওয়াজ মাই ফার্স্ট লাভ। ওকে ভোলা বরং আমার জন্য টাফ।
— সেজন্য তুমি ইশিতার ফিরে আসায় ডিসাপয়েন্টেড হয়েছিলে?
— শুধু ডিসাপয়েন্টেড? আই থট, আই লস্ট ইউ।
— স্ট্রেঞ্জ।
— ফার্স্ট লাভ ইজ সামথিং ডিফ্রেন্ট।
এবার বেশ অবাক লাগল। ইশিতাকে যখন আমি ভোলার চেষ্টা করছিলাম, তখন নিবেদিতাই সেটা করতে দেয়নি। আমার অবাক চাহনি দেখে বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল নিবেদিতা। এরপরে আমার দিকে তাকিয়ে বলল
— আই হ্যাভ অ্যা কনফেশান টু মেক।
চলবে

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:০৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অদ্ভুত! সব পাজল সলভবড, তাদের মিল প্রায় হয়ে গিয়েছে আর শেষ লাইনে আবারো একটা টুইস্ট দিয়ে দিলেন! পরের পর্বের অপেক্ষায় তাই বাড়ল, কমল না একটুও! :)

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৫১

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী বলেছেন: পরের পর্ব দিয়েছি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.