নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিথি (২১ তম পর্ব)

২৭ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫

২১

লন্ডনে আমার ট্রান্সজিট। ঘন্টা ছয়েক দেরী। একটা চেয়ারে বসেছিলাম এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল। ফোনটা পকেটে রেখেছিলাম। হাতে নিয়ে বেশ বড়সড় ধাক্কা খেলাম। ইটস জেসমিন। এমন না যে ও আমাকে আগে ফোন করেনি। করেছে, বাট হাসপাতাল রিলেটেড ব্যাপারে। রুগী সম্পর্কে ডিসিশান জানতে কিংবা রুগীর ফলো আপ দিতে। ইভেন, ওকে মার পছন্দ করার ব্যাপারটা যখন হাসপাতালে জানাজানিও হল, তখনও ও একটা ডিসেন্সি মেইনটেইন করে চলত। দেখা হলে, বাকী সব জুনিওর ডাক্তারদের মত, সালাম দেয়া কিংবা রুমে ঢোকার আগে নক করা, এসব ছিল।
এখন যেহেতু ছুটিতে, তাই হাসপাতাল রিলেটেড ব্যাপার হতেই পারে না। আর রুগী রিলেটেড ব্যাপার ছাড়া আগে কখনও আমাকে ও ফোন করেনি। ইভেন আমাদের বিয়ে হব হব করলেও, ফর্মালিটি ব্যাপারটা ছিল। সম্পর্কটা এখনও সিনিওর কলিগের সাথে জুনিওর কলিগের যেমন হয়, স্যার বলে সম্বোধন করা অ্যান্ড অল দ্যাট, তেমন।
হাসপাতাল ঘটিত কারণে ফোন করেনি, আই অ্যাম সিওর। দেন হোয়ায়? ইজ ইট আফটার ইফেক্ট অফ এনগেজমেন্ট? অধিকারবোধ? ফোনটা রিসিভ করলাম।
— বলো।
— আসলে, মা ফোন করতে বললেন।
অবাক হলাম। কি এমন ব্যাপার, যে মা নিজে না করে জেসমিনকে বলল। জানতে চাইলাম ব্যাপারটা। বললাম
— মানে?
— মানে কখন পৌঁছবেন, আই মিন ড্রাইভারকে কখন আসতে বলতে হবে।
মা আসলে কি চাইছেন, ব্যাপারটা বুঝলাম। শি ওয়ান্টস জেসমিন টু গেট ইনভলভড। জেসমিনেরও তেমন কোন উপায় ছিল না। কথা বেশি বাড়ালাম না। সম্ভাব্য সময় জানিয়ে দিলাম। এরপরে প্রশ্নটা মনে জাগল। জানতে চাইলাম
— মায়ের সাথে কোথায় দেখা হল?
— উনি আমাদের বাসাতেই আছেন। মানে, আপনার ওখানে একা একা ভাল লাগছিল না, তাই…
এরপরে কিছু ক্যাজুয়াল কথাবার্তা বলে ফোন রাখলাম। গত দুদিনের মিস্টি স্মৃতির রেশটা কমে আসলেও একেবারে মিলিয়ে গেল না। তবে বুঝতে পারলাম, দ্যা সিচুয়েশান ইজ গেটিং মোর কমপ্লিকেটেড। অ্যান্ড আই হ্যাভ ভেরি লিটল টাইমস লেফট। কি করব এখন?
সেদিন যখন আমি আর নীলা ওয়ার ফেরি ক্লোজ টু… আই মিন আই ওয়াজ অ্যাবাউট টু কিস হার এগেইন… তখন সেদিনের ব্যাপারে জানতে চাইলাম
— দেন, হোয়ায় ইউ ডিডন’ট রেসপন্ড?
— বিকজ আই ওয়ান্ট ইউ টু নো এভ্রিথিং অ্যাবাউট মি।
নীলার দিকে তাকালাম। ও সিরিয়াস। যদিও ওর অতীত জানটা আমার জন্য খুব জরুরী না, বাট আই গেস বলাটা ওর জন্য জরুরী। ব্যাখ্যা করে ব্যাপারটা বোঝানো যায়, বাট দিস ইজ নট দ্যা টাইম। ওকে বলতে দিলাম
— বিয়ের সময়, আই ডিসাইডেড, বিয়ের প্রথম রাতেই সব খুলে বলব। আই মিন যতটা তোমাকে জানিয়েছিলাম আর কি। বাট দ্যাট ওয়াজ নট দ্যা হোল ট্রুথ।
নীলা এবার আমার দিকে তাকাল। হয়তো আশা করছে, হোল ট্রুথটা আমি জানতে চাই। নীলার ইচ্ছেকে সম্মান জানালাম। বললাম
— ক্যারি অন।
— বিয়েটা যখন করি, তখন আই হ্যাড মাই প্ল্যান। বিয়ের প্রথম রাতেই আমার অ্যাফেয়ারের কথা জানাব। তোমাকে দেখেই বুঝে যাই, আমার সব জানবার পরে ইউ উইল হ্যাভ টু অপশান। আইদার কিক মি আউট। অর চক্ষুলজ্জার কারণে ছয় মাসের জন্য আমাকে মেনে নেয়া। ফোর্স করা ওয়াজ নেভার অ্যান অপশান ফর ইউ।
— তুমি ডাক্তার হলে ভাল করতে। ইউ হ্যাভ শার্প আইজ।
নীলা স্মিত হেসে কমপ্লিমেন্টটা মেনে নিল। এরপরে বলে চলল
— যখন দেখলাম উই চুজ সেকেন্ড অপশান, তখন অপরাধ বোধ লাগলেও, ভেবে রেখেছিলাম, এই কটা দিন তোমাকে যতটা সম্ভব কমফর্টেবল রাখব। এটাও জানতাম, এই কদিনে তোমার জন্য সুন্দর একটা ফিলিং তৈরি হবে, বাট যেটা জানতাম না…
— প্রেমে পড়ে যাবে।
নীলা মাথা দুদিকে নেড়ে ব্যাপারটায় অসম্মতি জানাল। বেশ অবাক হলাম। মনে হচ্ছিল, আই আন্ডারস্টুড দ্যা স্টোরি, বাট আই হ্যাড মোর শক টু অ্যাবসরভ। নীলা বলে চলল
— নট রিয়েলি। ঠিক প্রেমে পড়িনি। বলতে পার, একটু নটি হতে ইচ্ছে করছিল।
এরপরে আমার দিকে তাকাল। চোখে বোধহয় কিছুটা অপরাধবোধ।
— কখন? কক্সবাজারে?
সম্মতি জানাল। বলল
— আই ডোন্ট নো হোয়ায় আই ডিড ইট। বাট, হোয়াট আই নো ইজ… আই ওয়াজ ইঞ্জয়িং। বিলিভ মি, আমি চাইছিলাম, ব্যাপারটা হোক। তোমাকে সিডিউজও করছিলাম, অ্যান্ড দেন...
— অ্যান্ড দেন আই কিসড।
নীলা বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল
— ইয়েস। ইউ ডিডন’ট। আই মেড ইউ ডু ইট। আসলে আই অ্যাম নট টিপিক্যাল বাঙ্গালী লেডি। লজ্জাবতী টাইপ যে না, তা তো বুঝেই গেছ। বিয়ের আগের আমার লাইফও এমনই ছিল। সোহেলের সাথে… আই মিন… উই হ্যাড… ইউ নো। তাই ভেবেছিলাম, উই উইল মেক ইট। ভুলটা ভাঙ্গল যখন ইউ ডিড কিস। ফিল করলাম, আমি চাইছি, বাট সোহেল সম্পর্কে তোমাকে সবকিছু জানাবার পরে। তাই সেদিন রেসপন্ড করিনি।
এক ঝটকায় বেশ কিছু পাজল সলভ হয়ে গেল। নীলার দিকে তাকালাম। ও মাথা নীচু করে আছে। নববধু টাইপ পোজ। মনে হল চাইছে, আমি ধীরে ধীরে ওর মুখটা তুলে ধরি। কাজটা করলাম। ওর থুতনিতে হাত দিয়ে মুখটা উপরে তুললাম। বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম ওর দিকে। নীলাও আমার দিকে তাকাল।
— গল্প শেষ?
নীলা মাথা দুদিকে নাড়ল। বলল
— বললাম না, আমি বাংলা সিনেমার মত সতী সাধ্বী টাইপ নায়িকা না।
হেসে ফেললাম। বললাম
— ইয়েস। ভেরি কমপ্লিকেটেড নায়িকা। বল, বাকীটাও শুনি।
— এরপরে যখন সোহেল ফিরে আসল, ওকে সামনে পেলাম, ফিল করলাম, আই লাভ হিম মোর। ওর এক অ্যাডভোকেট ফ্রেন্ডের সাথে আলাপ করে আসবার আগেই ও ডিভোর্সের সব কাগজপত্র ঠিক করে ফেলেছিল। কাগজটা হাতে পেয়ে… আই ক্যান্ট এক্সপ্লেইন হাও আই ফেল্ট…। এখন তোমার যা অবস্থা আর কি। সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। ব্যাপারটা সোহেলকে বললাম। ও বলল, এভাবে তোমার কাছে থাকলে, ডিসিশান নিতে পারব না। এখান থেকে যদি সরে যাই, দেন ফিল করতে পারব, আমি আসলে কি চাই। মনে হল, হি ইজ রাইট। দেন…
— দেন হ্যাপেন্ড দ্যা অ্যাক্সিডেন্ট।
— কোথায় অ্যাক্সিডেন্ট। ওটা বাবার নাটক ছিল।
— জানতে?
— বাবার এটা রেগুলার প্রোগ্রাম। যেদিন বাসায় সোহেল সম্পর্কে জানায়, সেদিন এরকম করেছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে, ডাক্তার আমাকে আলাদা করে জানিয়েছিল, এটা হিস্টেরিয়া না কি বলে। অ্যাটেনশান সিক করছে।
— সেদিন আমিও কিছুটা চালাকী করেছিলাম। ঠিক ডিজনেস্টি বলব না, আনএথিক্যাল বলতে পার।
— আই নো। তোমার চোখ বলছিল, মিথ্যা বলছ। বাট আই লাইকড ইট।
— ব্যার্থ প্রেমিকের খড় কুটো আঁকড়ে ধরাটা?
নীলা হেসে ফেলল। বলল
— শুনতে ক্রুয়েল লাগলেও, ট্রু। ভাল মতই জানি, একজনকে ছাড়া বাকীদের বিয়ে করা হবে না, তারপরও, উই ওয়ান্ট, ছেলেরা আমাদের প্রেমে পড়ুক। মজা লাগে কখন জান, যখন তোমরা অ্যাক্টিং কর, যে প্রেমে পড়নি। অসাম ফিলিং।
হেসে ফেললাম। বললাম
— বাট তোমার বাবার ব্লকটা জেনুইন ছিল। বাইপাসটাও জরুরী ছিল।
নীলা দুস্টুমি ভরা দৃষ্টিতে তাকাল।
— আমরা প্রেমও বুঝি, সততাও বুঝি। ওটা জেনুইন ছিল, আমি জানি। বাই দ্যাট টাইম, আই টুক মাই ডিসিশান। আমি তোমার কাছেই থেকে যেতে চেয়েছিলাম। ‘আমি কনফিউজড’ এটা সোহেলকে যখন বললাম, তখন ও বোধহয় বুঝে গিয়েছিল। শুধু বলল, টেক ইওর ডিসিশান, আই অ্যাম উইথ ইউ।
— অ্যান্ড দেন কেম দ্যা ডিজাস্টার। ডিভি লটারী
— নট রিয়েলি। আই ওয়াজ জাস্ট টেস্টিং। বলতে পার, চাইছিলাম, সেদিনের মত আবার আমার হাত ধরে বলবে, যেয়ো না। আর আমিও রাজী হয়ে যাব। অ্যান্ড…
— বাংলা সিনেমার এন্ডিং হবে।
— ইয়া। অ্যান্ড দেন তোমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ব।
— আমার ভেতর আসলে তখন অন্য রিয়াকশান কাজ করছিল। মনে হয়েছিল, ডেসটিনি তোমাদের মেলাতে চাইছে। আমি ভিলেন হিসেবে মাঝে দাঁড়িয়ে আছি। সত্যি বলতে, সেদিন আমি অনেক সহজে ডিসিশান নিয়েছিলাম, তোমাকে ভোলার চেষ্টা করব।’
— ভুলটা ওখানেই করেছ। নেভার ডু ইট।
— কোনটা?
— এই যে। ভোলার চেষ্টা। ওটা বোকামী। আমি ভোলার মত হলে, এমনিই ভুলে যাবে। আর না হলে…
থেমে গেল নীলা। বড় একটা নিঃশ্বাস ছাড়লাম। এরপরে নীলার দিকে তাকিয়ে বললাম
— এই আলাপটা দুবছর আগে হলে… এনিওয়ে, এখন?
— এখন তোমার পালা। ডিসাইড। মি? অর...?



চলবে

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখা ভালো হচ্ছে এগিয়েও যান।

২| ২৭ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২

আজিজার বলেছেন: সেই রকম কিছু হবে নাকি সামনে?

৩| ২৭ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার শুরু। আশা করি আগামী পর্বও
সুখপাঠ্য হবে। শুভকামনা রইলো।

৪| ২৭ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৫

কাইকর বলেছেন: ভাল গল্প

৫| ২৮ শে মে, ২০১৮ রাত ২:০৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: দেখতে দেখেতে যখন গল্পের এই পর্যায়ে এসেছি তবে সামনে থাকতে দোষ কোথায়! এইপর্বটিও ভাল লেগেছে।

৬| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২১

তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: আপনার পেজ অপেন হোচ্ছে না, দয়া করে কি এখানে পোষ্ট করা যাবে ?!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.