নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সপ্ন

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী

কিছুই না

আহমাদ যায়নুদ্দিন সানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্প্লিট ৭

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৬



বেশ কিছুক্ষণ আগেই দীপা আংটিটা ফেরত দিয়েছে। এরপরে শান্তভাবেই দুজন কফি খেলাম। একবার রিকোয়েস্ট করলাম, যেন চাকরীটা না ছাড়ে। কথাটা রাখবে কি না, জানি না। উত্তরে কেবল একটা ফ্যাকাসে হাসি দিল। যে দীপাকে আমি চিনি, এরপরে আর ওর থাকার কথা না। ‘আসি' বলে উঠে যাওয়ার কথা। বাট… মনে হচ্ছে দীপা আরও কিছু বলবে মনে হচ্ছে। কথাটা বলেই ফেললাম
— কিছু বলবে?
মাথা নাড়ল দীপা। বলবে না। অস্বীকারে তেমন জোর নেই। মনে হল শি ইজ কনফিউজড, কথাটা বলবে কি না। সাথে এটাও বুঝতে পারছি, কথাগুলো বলে ফেলতে পারলে ও বেটার ফিল করবে।
— চল। তোমাকে এগিয়ে দিই।
দীপা চোখ তুলে তাকাল। মনে হল, থ্যাংকস বলছে। বিল দিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম। আগে, যখন, উই ওয়্যার কাপল, তখন মাজেহ মাঝে এখান থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে লেকের পাশে গিয়ে বসতাম। আজকেও তেমনটাই করব ঠিক করলাম। ফুটপাথ দিয়ে হাঁটছি। দীপা পাশে। কথা বলছে না। মনে হচ্ছে আমাকেই শুরু করতে হবে। বাট বুঝে উঠতে পারছি না, কোণ টপিকে আলাপ শুরু করব।
এমন সময় দীপা নিজেই বলল
— লুবনা ফোন করেছিল।
বেশ অবাক হলাম। দীপার দিকে এক ঝলক তাকালাম। কথাটা ও আমার দিকে তাকিয়ে বলেনি। আমি তাকাবার পরে আমার দিকে তাকাল। চোখে একটা বিষাদ। এই আলাপ কাউকেই কোন স্বস্তি দেবে না। একটাই উপায়, সময়। সময়ই সব ঠিক করে দেবে।
কথাটা ঘোরাবার চেষ্টা করব কি না ভাবলাম। মনে হল কাজটা অনুচিত হবে। লুবনা সম্পর্কে নালিশ ও করবে বলে মনে হয় না। ইন্টেরেস্টিং কিছু একটা বলবে বলেই মনে হচ্ছে।
— কি বলল?
— এই, তুমি ওকে উত্তরায় ড্রপ করে এসেছ।
— আর?
দীপা এবার আমার দিকে তাকাল। জানতাম তাকাবে। তাই ওর দিকে তাকিয়েছিলাম। আমার দিকে তাকিয়েই বলল
— সব। যা আলাপ হয়েছিল তোমাদের মধ্যে।
কথাটায় অনুযোগ ছিল কি না বোঝার চেষ্টা করলাম। মনে হল কিছুটা আছে। বাট সেটা বলার জন্য ও আসেনি। অন্য কিছু বলতে চায়। কথাটা সরাসরিই বললাম
— একথা বলতে তুমি আসনি।
দীপার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল। চোখে অ্যাপ্রিসিয়েশান। বলল
— তুমি খুব ভাল থট রিডার।
পরিস্থিতি বেশ সহজ হতে শুরু করেছে। আমিও হাসলাম। বললাম
— কেবল নিজের থটটাই বুঝতে দেরী করে ফেললাম।
সম্মতি জানিয়ে মাথা নাড়ল দীপা। বলল
— সেটাই।
বত্রিশ নম্বরের মুখে চলে এসেছি। রাস্তা পার হলাম। লেকের পাশে এগিয়ে যেতে যেতে বললাম
— আগের জায়গায়?
ঘাড় কাত করে আমার দিকে তাকাল। মনে হল চোখে কিছুটা খুশি। সম্পর্ক সহজ হয়ে উঠছে? না…অন্য কিছু ভাবছে? মনে হয় না। লুবনার অ্যাফেয়ার আছে জেনে আমি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করব, এমন কিছু দীপা ভাবছে না। আমি সিওর। এটা একটা স্বাভাবিক রিয়াকশান।
— চল।
আমাদের প্রেম চলাকালীন সময়ের নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে বসলাম দুজন। আগে যতটা ঘেঁষে বসতাম, এবার ততোটা কাছাকাছি বসলাম না। ব্যাপারটা লক্ষ্য করল দীপা। নিজের অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। জানি সময় লাগবে।
আসলে আমি চাইছি না, আমার কোন আচরণ ওকে কনফিউজ করুক। কথাবার্তায়ও যতটা সম্ভব সাবধান থাকবার চেষ্টা করছি। অপেক্ষা করে থাকলাম। দীপাই আগে বলুক।
— লুবনার বেশ ভালোই ব্রেন ওয়াশ করেছ গতকাল।
এই কথার জন্য আসলেই প্রস্তুত ছিলাম না। কি মিন করতে চাইছে, বুঝতে পারলাম না।
— মানে?
— মানে গতকাল গাড়িতে, প্রেমের ওপর তুমি ওকে বেশ বড়সড় একটা লেকচার দিয়েছিলে, রাইট?
কথা শেষ হয়নি। মাঝখানে একটা পজ নিল কেবল। আমার কাজ হচ্ছে মনোযোগ দিয়ে ওর বাকী কথাটা শোনা। আর আপাততঃ জানান দেয়া, আমি শুনছি। কিছুটা অবাক চাহনি নিয়ে দীপার দিকে তাকিয়ে ঘাড় নাড়লাম। ‘দিয়েছিলাম'। দীপা বলে চলল
— অ্যান্ড দ্যাট চেঞ্জড হার।
‘চেঞ্জড' মানে কি? আমার জন্য সফট হয়ে গেছে? নট ইম্পসিবল। বাট একথা বলার জন্য দীপা আসেনি। অন্য কিছু মিন করছে। আর সেটাই বুঝতে পারছি না। আমার চোখে সেটা স্পষ্ট। আর আমার এই হতভম্ব ভাবটা এনজয় করছে দীপা। ঠোঁটের কোণে হাসি নিয়ে ভ্রু নাচাল। এটা ওর টিপিক্যাল স্টাইল। আমার খুব ভাল লাগত ওর এই ভ্রু নাচানো।
— আমি এখনও বুঝতে পারছি না
স্বীকার করে নিলাম, পাজল এখনও সলভ করতে পারিনি। গতকালকের আলোচনায় দুটো ব্যাপার ছিল। আমার প্রেমে পড়ার ব্যাখ্যা আর ওর তরফ থেকে একটা কনফেশান, একজন ম্যারিড ছেলের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। কিন্তু এই দুটোর সাথে দীপার কথার কোন যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছি না।
— ও যে ওর বসের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে, জান?
এবার সত্যিই অবাক হলাম। দীপার ক্যারেক্টারের সাথে মিলছে না। এই তথ্য জানাবার জন্য দীপা আসল? ও এখনও মেনে নিতে পারছে না, উই ব্রোক? ও কি এখনও এক্সপেক্ট করে আছে, এই তথ্য জেনে আই উইল চেঞ্জ মাই ডিসিশান?
নিজেকে সংযত করলাম। ওকে বেশ নরম করে পুরো ব্যাপারটা আরেকবার বোঝানো দরকার। লুবনা আমাকে ভালবাসবে কি না, তা না জেনেই আমি লুবনার প্রেমে পড়েছি। ইনফ্যাক্ট পড়ে গেছি। উইদাউট এনি এক্সপেক্টেশান। সো, ওর অ্যাফেয়ার আছে, না নাই, তা আমার জন্য জরুরী না। আর অ্যাফেয়ার থাকার মানে এই না যে আমি দীপার কাছে ফিরে আসতে চাইব।
কথাগুলো বলতে গিয়েও থেমে গেলাম। আই থিঙ্ক ও যা বলতে চায়, বলুক। ওর প্রশ্নের উত্তর দিলাম
— জানি। গতকাল বলেছে।
— আর কি বলেছে?
দীপা কি বলতে চাইছে, এখনও ক্লিয়ার হচ্ছে না। মনে হচ্ছে, নতুন কিছু বলবে। অবাক হয়ে জানতে চাইলাম
— আর কিছু, মানে?
— মানে, ওর প্রেমটা নিয়ে ও কি ভাবছে, সেসব কিছু বলেছে?
অস্থির বোধ করতে লাগলাম। দীপার ভুলটা ভাঙ্গানো দরকার। কিন্তু তার আগে এই আলাপ শেষ হওয়া জরুরী। দ্রুত শেষ করার জন্য বললাম
— না। জানতে চাইনি।
দীপা আমার দিকে তাকাল। ঠোঁটে হাসি। এরপরে বলল
— তোমার গতকালকের লেকচার শুনে, শি ডিসাইডেড টু প্রপোজ হিম।
— মানে?
দীপা বেশ কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। ধীরে ধীরে ঠোঁটের হাসি মুছে গেল। এরপরে বলল
— দীপা যে ল ফার্মে কাজ করে, ওটা আসলে ওর বসের শ্বশুরের। উনিই টাকা খরচ করে আসিফ ভাই, আই মিন ওর বসকে, লন্ডনে পাঠিয়েছিলেন ব্যারিস্টারি পড়তে। শর্ত ছিল, উনার মেয়েকে বিয়ে করতে হবে।
কথাগুলো কেন বলছে দীপা? পুরোটা বুঝতে না পারলেও এতোটুকু বুঝতে পারছি, এপ্রয়োজনে বলছে না। আর কারণটা বুঝতে হলে, পুরোটা শুনতে হবে। জানতে চাইলাম
— তারপর?
দীপা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। বলে চলল
— এরপরে আর তেমন কিছু হয়নি। ব্যারিস্টারি পড়ে এসে যথারীতি উনি শ্বশুরের মেয়েকে বিয়ে করেন। অ্যান্ড আনটিল নাও, দ্যা ম্যারেজ ওয়াজ গোয়িং নাইসলি।
একটা ব্যাপার এখনও আমার কাছে ক্লিয়ার হচ্ছে না। কথাগুলো আমাকে কেন বলছে দীপা। আমার গতকালকের লেকচার শুনে লুবনা যদি ডিসাইড করেই থাকে, সেই আসিফকে প্রপোজ করবে, তো করুক। আর আসিফ ডিসাইড করুক, সে এই ম্যারেজে থাকবে কি না। আমি তো কাউকে ফোর্স করছি না। ব্যাপারটা দীপাকেও ক্লিয়ার করে বোঝানো দরকার। বললাম
— দেখো, লুবনা বাচ্চা মেয়ে না। আমি বললাম, আর ও ধেই ধেই করে নাচতে নাচতে আরেকজনের বিয়ে ভাঙতে চলে গেল, ব্যাপারটা তা না। ওর মনে ইচ্ছেটা হয়তো আগে থেকেই ছিল। বলতে পার, আমি ওকে একটা রিজন দিয়েছি। স্টে উইথ ইয়োর লাভ। দ্যাটস ইট।
দীপা বেশ কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। এরপরে বলল
— তোমার কি ধারণা, আমি তোমার কাছে নালিশ করতে এসেছি?
দীপার কথা বলার ভেতরে কিছু একটা ছিল, বুঝতে পারলাম, আমার কোথাও ভুল হচ্ছে। পিছিয়ে আসলাম। সরল স্বীকারোক্তি করলাম
— আই অ্যাম রিয়েলি কনফিউজড। কি বলতে চাইছ, আমি এখনও বুঝতে পারছি না।
— আসিফ ভাইয়ের বউ, টুম্পা, আমার ইউনিভার্সিটি ফ্রেন্ড। অ্যান্ড শি ইজ নট দ্যাট গুড লুকিং। অন্ততঃ লুবনার কাছে তো কিছুই না। আমার ধারণা, লুবনা আসিফ ভাইকে প্রপোজ করলে, উনি না করতে পারবেন না।
একবার ভাবলাম বলি, ‘করলে করবে’, কিন্তু বললাম না। দীপার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ওর আরও কিছু বলার আছে। এবার দীপা বাকী কথাটা বলল। কথাটা শুনে মাথা ঘুরে উঠল। হোয়াট হ্যাভ আই ডান! দীপা সম্পর্কে একটু আগে যা ভেবেছিলাম, সব খানখান হয়ে গেল। ওর জন্য একরাশ শ্রদ্ধায় মন ভরে গেল। এক মুহূর্তে বুঝে গেলাম, নিজের জন্য ও আসেনি।
— টুম্পা’স ফাদার ইজ অ্যা ডেঞ্জারাস ক্রিমিন্যাল। আসিফ ভাই যদি টুম্পাকে ডিভোর্স করে কিংবা লুবনাকে বিয়ে করে…
— তাহলে?
— আসিফ ভাইকে হয়ত উনি কিছু করবে না। বাট হি উইল কিল হার।


চলবে

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা দুইবার এসেছে। এডিট করে ঠিক করে নিন।
আর আগের পর্বের লিংক গুলো দিয়ে দিয়েন।

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:২৫

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া এই গল্পের নায়কটার উপর আমার কি যে রাগ লাগে !

যেই রাগের কারণে লেখাগুলো পড়ে চলে যাই কিন্তু কমেন্ট করি না! X((


সবচেয়ে খুশি হবো টুম্পার বাবাকে দিয়ে এই শয়তানটাকেই মেরে ফেললে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.