নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যভুবন

তবু সে তো স্বপ্ন নয়, সব-চেয়ে সত্য মোর, সেই মৃত্যুঞ্জয়

সাপিয়েন্স

আমি পথভোলা এক পথিক এসেছি ... ফাগুন প্রাতের উতলা গো চৈত্র রাতের উদাসী

সাপিয়েন্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

তৃতীয় সূত্র

১৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:৫৬





হাসান সাহেব জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়েছিলেন। আগে এখান থেকে অনেক দূরের মাঠের শেষ পর্‍্যন্ত অবারিত দৃষ্টি ছিল। সবুজ ছায়া এসে চোখের ওপরে একটা ঘোর তৈরী করত। কোন চিন্তার ধারা নয়, শুধু নিরবচ্ছিন্ন শান্তি। বুদ্ধদেব যে নির্বানকেই পরম মোক্ষ ঘোষণা করেছিলেন, তার কারণ কিছু বোঝা যেত। সারাদিনের হাজারো সমস্যা থেকে মুক্তির অবসর। এখন দশ ফুট দূরে দূরে ছ’তলা ভবন। মাঠ কবেই কাবার। শুধু গরীব অসহায় কৃষক নয়, সরকারী জমিও ভূমিদস্যুরা চমৎকার চারকোনা প্লট বানিয়ে বিক্রি করে দেয়। প্রবাসীরাই শুধু নয়, যারা খোদ ঢাকা শহরে থাকে, এখানেই বড় হয়েছে, তারাও এদের কাছ থেকে কেনে। এক তস্করের বাবা কেরাণী ছিল এককালে। এখন তার সম্পত্তির পরিমাণ সে নিজেই জানে না। যখন বাপটা হাসপাতালে স্ট্রেস টেস্ট করতে গিয়ে মারা পড়ল, তখন এই লোক বাপের বাড়িটা নিজেই টুকরো টুকরো করে ফ্ল্যাট বানালো। অন্য শরীক বোনদের কিছুই জানাবার প্রয়োজন মনে করে নি। বোনেরা কেস করে দিয়েছিল। শেষে কি হয়েছিল হাসানের জানা নেই।



ইউটিউব আবার খুলে দেয়ার পরে এদিক সেদিক এলোমেলোভাবে চলতে চলতে সেই দু বছরের সামরিক সরকারের সময় চোখ বাঁধা অবস্থায় আজমল সাহেবের রিমাণ্ডের জিজ্ঞাসাবাদ শুনে বেশ বিনোদন পেয়েছিলেন। এক ভূমি-তস্কর তাঁকে কত করে মাসে দিত জানা গেল। কিন্তু তিনি বললেন সব দলের নেতাকে দিয়ে দিয়েছেন। নেতা আবার যোগ বিয়োগ করতে ভালোবাসেন না, ভুল হয়ে যায় বার বার। তাই আলমারীর মধ্যে তাকে তাকে নোট সাজিয়ে রাখেন, আবার কাউকে দিতে হলে, যেমন মিটিং-এ লোক ভাড়া করে আনতে, বান্ডিল বান্ডিল ওখান থেকে বার করে দিতেন। গুণে না, ভলিউম দেখে সব আন্দাজ করেন। এটা হাসান শুনেছেন দলের বেশ উঁচু মহল থেকে, ভুল হতে পারে না। এখন অবশ্য এসব কায়িক পরিশ্রম করতে হয় না তাঁকে। এতজন তাঁকে ঘিরে থাকে, তিনি কখনো নিজের পছন্দের ডিজাইনের নোটগুলো দেখতেই পান না, শুধু রাখাল বালক ঠিকমত কাজ করছে কি না তার খেয়াল রাখেন। নোট ছাপিয়ে দেশ ভরে দিতে হবে। তাহলেই তো সবাই বড়লোক, এতে এত জটিলতা কি আছে! বেশি শিক্ষা দিয়ে মানুষ কি এমন লাভ করতে পারে?



হাসান সাহেব তাঁর টাকের ওপরে আলতো নরম পরশ পান। হাসেন।

- খালি ঘুমাও তুমি।

- হা হা। না, ঘুমাচ্ছিলাম না তো।

- হুম, খালি নানীর স্বপ্ন দেখ। আচ্ছা বলো তো, কি অন্যায়! আমার মধ্যে তো নানীর জীনের চার ভাগের একভাগ আছে। কিন্তু আমি ওনার এক শ ভাগের এক ভাগও সুন্দর হই নি। যত সব লটারী প্রকৃতির। আর আমি কখনো লটারীতে জিতি না। এবার পিকনিকের র‍্যাফলে ১০০ টা টিকেট কিনেছিলাম, পেলাম একটা ফুলদানী! জঘন্য ভাগ্য।

- তোমার ভাগ্যে এক রাজপুত্র আছে, অবশ্য যদি তুমি নিজেই কোন পাড়ার মাস্তান বাকের ভাইকে পছন্দ করে থাকো, তাহলে অন্য কথা।

- তোমার মনে হয় মা আমাকে বাকের ভাই টাইপের কাউকে বিয়ে করতে দেবে।

- হুঁ, সেখানে সমস্যা আছে। তোমার মা খুব প্র্যাক্টিকাল মাইন্ডেড।

- আমারও এই সব অবাস্তব রূপকথায় কোন আকর্ষণ নেই। কিন্তু আমার বন্ধুরা পাগল। ওরা বলে আমার মধ্যে কোনো রোমান্টিসিজম নেই। নীরস অংকের বইয়ের মতো। তোমার গুণ পেয়েছি।

- আমি অংকের মাস্টার হলেও নীরস ছিলাম না। আমার দশটা কবিতা ছাত্রাবস্থায় জাতীয় পত্রিকায় বেরিয়েছে।

- তাই? কিন্তু সব কিছুতেই অংক পাঞ্চ না করতে পারলে তোমার ঘুম হয় না। তখনো তাই করতে?

হাসান হাসেন। না সে-সব বেশ রোমান্টিক স্বাভাবিক কবিতা ছিল। নারী, প্রকৃতির ফ্রীহ্যান্ড অংকন। তবে মনে রাখার মত না, যদিও টেকনিকালি দোষ নেই। এই মেয়ে ঠিকই ধরেছে। আসলে তিনি ছিলেন মনে-প্রাণে গণিতবিদ, কবি নয়। ব্যাপারটা অনেক আগেই বুঝে ফেলেছিলেন, তাই সময় নষ্ট করেন নি জীবনের। দু নৌকোয় পা দিয়ে সামাল দেয়ার মত লম্বা পা ছিল না তাঁর।



মিশা তাঁর চাইতে চার বছর জুনিয়র ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থাৎ তিনি যখন এম এস সি থিসিস শেষ করছেন, তখন সে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়। নবীনবরণের জন্য একটা ছোট নাটিকা লিখেছিলেন হাসান। নায়িকা হিসেবে মনে হয়েছিল মিশাকেই মানাবে ভালো। কিন্তু মিশা বেঁকে দাঁড়ালো -আমি পারবো না, কখনো অভিনয় করি নি, লোকে হাসবে। আমার উচ্চারণও খারাপ।

এত স্মার্ট দেখতে মেয়ে, কিন্তু হাসান বুঝে ফেলেছিলেন, মেয়েটা সত্যি কথাই বলছে। এক মিনিট প্রমিত বাংলায় কথা বললেই হাঁপিয়ে ওঠে। তার পরে শুরু হয় বাঁধ-ভাঙা আবহমান গ্রাম বাঙলার এমন এক মিশেল ভাষা, যার উৎসস্থান হাসানের পক্ষে বার করা সম্ভব হয় নি। তাঁদের পৈত্রিক বাড়ি কুষ্টিয়ায়। নোয়াখালি, সিলেট, বরিশাল, চাটগাঁর মধ্যে এক্সেন্ট ও ব্যাকরণের যে পার্থক্য, এটা প্রায় সবার কাছে স্পষ্ট হলেও তাঁর কাছে কখনো ধরা পড়ত না। অনেকে তাঁর ভাষা নিয়ে একটু ফাজলামি করত – “হাসান্নাথ” রবীন্দ্র উচ্চারণ ছাড়া বাংলা বোঝেন না। এটা মিথ্যা; বুঝতেন তিনি সবই , কিন্তু আঞ্চলিকতার হদিশ ছিল না তাঁর কাছে।



এর পরে হাসান জানলেন এ মেয়ের একাডেমিক অবস্থান ভীষণ নড়বড়ে। ছ'টি কোর্সের মধ্যে তিনটিই ফেল, আর একটা মোটামুটি, অন্য দুটো মার্জিনালি পাশ। কিন্তু মেয়ের মুখে কোন দুঃখ নেই। যেন ধরেই নিয়েছে তার এ বিভাগে পাশ করা হবে না। কিন্তু পুরো একমাস সে যখন ক্লাসে এলো না, হাসানের মনে ভয় ঢুকল। ওর বান্ধবীদের জিজ্ঞেস করে জানলেন শরীর খুব খারাপ, দেশের বাড়িতে চলে গেছে। অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে, ওখানে বরং সেরে ওঠার সম্ভবনা বেশি। কিন্তু হাসান বোধ হয় খোঁজ খবর একটু বেশিই নেয়া শুরু করেছিলেন। লক্ষ্য করলেন কিছু জিজ্ঞেস করলে অন্য মেয়েরা একটু হালকা হাসে। তারপর মুখ গম্ভীর করে বলে - হাসান ভাই, ঠিকানা দেব? চিঠি লিখে কিছু জানাতে চান? তখনো মোবাইলের যুগ আসে নি। স্নেইল্ মেইল দিয়েই যোগাযোগ। হাসান অপ্রস্তুত হয়ে বলেছিলেন।

- না, না, এমনি জিজ্ঞেস করছি। অনেক দিন দেখি নি কি না।

পালাতে গিয়ে হোঁচট খেলেন হাসান। এবং অনেক হাসির সুরের সিম্ফনীও শুনলেন। বুঝলেন তাঁর কান ও মুখে অনেক গরম রক্তের সঞ্চালন। বাড়িতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে অনেক্ষণ ভাবলেন – তিনি কি বাড়াবাড়ি করে ফেলছেন? আসলে এই মেয়েটিতে তাঁর কি কোন বাস্তব ইন্টারেস্ট আছে? এ রকম বোকাসোকা একটা মেয়ের সাথে কি তিনি সারাজীবন কাটাতে পারবেন? আর মেয়েটি কি তাঁকে ভালোবাসতে পারবে? হয় তো বিয়ের প্রস্তাব গেলে মেনে নেবে ওর পরিবারের চাপে। কিন্তু ওর মনে কি আছে, তা তিনি তো জানেন না, জানবার সুযোগই হয় নি। আসলেই এটা কি পাগলামি, তিনি একাই এগুচ্ছেন? হয় তো ওর পছন্দের মানুষও আছে। সবাই হয়তো একারণেই হাসাহাসি করে।

- নানা, তুমি কি এতো ভাবছ বলো তো, নানুর কথা? বাব্বা, এমন কখনো দেখি নি। তোমাদের আমলের এই সব একনিষ্ঠ প্রেম দেখলে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়। এক জনের সাথে বেশি দিন ঘোরাঘুরি করলে বোরিং লাগে না?

- আপামনি, আমি তোমার সব কথাই জানি। তোমার কোন বিএফ নেই। তুমি তোমার বান্ধবীদের সাথেই চলাফেরা কর।

- বাহ, তুমি ঘরে শুয়ে বসেই দুনিয়ার সব দেখতে পাও, না?

হাসানের নাতনী নাওমি মুখটা খুব রাগি রাগি করার চেষ্টা করে।

- আমি তোমার ফেসবুকে অনেক ভক্তের কমেন্ট দেখি, কিন্তু তুমি কাউকেই পাত্তা দাও না, খুনসুটি শুধু বান্ধবীদের সাথে।

চোখ গোল করে ফেলে নাওমি।

- তুমি আমার ফেসবুক খুঁজে বের করেছ। ভীষণ পাজি তো।

- সবই তো পাব্লিক। হ্যাক করি নি।

ব্যাজার মুখে কিছুক্ষণ বসে থাকে মেয়ে। হাসান সান্ত্বনা দেয়।

- লজ্জা পাওয়ার কিছুই নেই। তোমার বান্ধবীরা অনেক আজে-বাজে কথা লেখে অনেকের সম্বন্ধে। তুমি তো তা করো না। অনেক ছেলে অনেক ইশারায় মনের ভাষা বলতে চায়। তুমি পাত্তা দাও না। তুমি ঘন্টায় ঘন্টায় নতুন ছবি আপলোড করো না, তবু অনেকের প্রিয়, কারণ তোমার স্ট্যাটাসগুলো ইন্টারেস্টিং। বুদ্ধিদীপ্ত বলা যায়।

- আমি তোমার সাথে তিন দিন কথা বলব না।

চলে গেল মেয়ে।



মফস্বলের বাড়ি থেকে সঞ্জীবিত হয়ে ফিরেছিল মিশা। প্রথম দিনেই প্রায় দৌড়াতে দৌড়াতে এল হাসানের কাছে।

- হাসান ভাই, আপনি নাকি আমায় খুঁজতেছিলেন?

একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গিয়েছিলেন হাসান। বন্ধবীদের দুষ্টুমী।

- না, মানে হ্যাঁ, অনেক দিন আসো নি, তাই ভাবছিলাম কেমন আছ, তোমার বন্ধুদের জিজ্ঞেস করেছিলাম।

- রুবি বলল, আমার ঠিকানা চাইছিলেন। দিব?

কি বদমাস মেয়ে। কিন্তু একে তা বলা যাবে না।

- না, ঠিক তা না, আমি তোমার বান্ধবীদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমার সাথে যোগাযোগ আছে কি না।

- হাসান ভাই, আমাদের ওখানে ঢাকা থেকে চিঠি যাইতে তিন দিন লাগে। যদি লিখতেনও উত্তর পাইতে এক সপ্তা লাগত। আসলে পরীক্ষার রেজাল্ট এত খারাপ হওয়ায় মন এত খারাপ ছিল, কিছুদিন বাবা-মার সাথে কাটালাম। এখন ইনশাল্লাহ আর অত বাজে লাগতেছে না। এবার নিশ্চয়ই পাশ করে যাব।

হাসান দূর থেকে খেয়াল রাখতেন মিশা সব ক্লাসে নিয়মিত আসছে কি না। বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে হৈ-হল্লাও করছে। মাঝে মাঝেই হাসানের কাছে এসে আবদার করত ।

- হাসান ভাই , চা খাওয়ান।

হাসান নিজে ঐ চা খেতে পারত না। এত বাজে দুধ। তবু নিত নিজের জন্যও। এক চুমুক দিয়ে রেখে দিত। মিশার চোখে তা পড়ত না। ও এক মনে শুধু কথাই বলে যেত। মিশারা দু বোন এক ভাই। ওর ভাই আর বোন ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র। বোঝাই যায় ওর বাবা আদর দিয়ে দিয়ে ছোটটির স্বভাব ছোটবেলাতেই নষ্ট করে দিয়েছিলেন। লেখাপড়ায় মন নেই, শুধু আড্ডাবাজি।



সুতরাং এবারেও ফেল করল। আবার কিছুদিনের জন্য অদৃশ্য। হাসান এবার তাকে সত্যিই ডাকলেন।

- তোমার ওপর একটু খবরদারি করা দরকার। তুমি সপ্তাহে তিন দিন আমার সাথে এক ঘন্টার জন্য দেখা করবে এবং সারা সপ্তাহে কি করেছ জানাবে, যা বোঝ নি বুঝে নেবে, আর আমার দেয়া প্রব্লেম করবে।

ভয় পেয়েছে মেয়ে। এটা তার শেষ সুযোগ। নষ্ট করা যাবে না। ঘাড় নাড়ল। আসবে।



কিন্তু এলো না। এক মাস। তার পরে এক দিন এসে দেখা করল। সঙ্গে এক প্রবীন ভদ্রলোক।

- আমার আব্বা।

এলেগ্যান্ট চেহারা, কিন্তু ভদ্রলোককে দেখে হাসানের একটু বিরক্তি হলো। মেয়েটার জীবন নষ্টে এঁর ভূমিকাই সব চেয়ে বেশি। বেশ তো, হাসানকে নিয়ে ভয় থাকলে অন্য একজন টিউটরও তো রাখতে পারতেন। এ মেয়ে একা একা কি পড়বে।



- নানা, নাশ্তা খাও। নাওমি এখনো রাগ রাগ। কিন্তু এটা কপট বোঝা যায়।

হাসান কখনো বেশি খেতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর মেয়ে বাবাকে প্লেট ভর্তি করে না দিলে শান্তি পায় না। বেশির ভাগই ফেরত যায়।

- কি খবর নাওমি বেগম, এখনো তো তিন দিন যায় নি।

- আমার নামে বেগম লাগাবে না, অসহ্য লাগে। নানীর নামও অনেক মডার্ন ছিল সেযুগের তুলনায়। তোমার হাসান নাম তো চৌদ্দ শ বছর আগের অথচ এখনো ভালোই চলছে। একেবারে ক্লাসিকাল। বেগমের ব্যাপ্তি ঘসেটি বেগম থেকে পাকিস্তানী যুগ পর্‍্যন্ত। তুমি কি হাঁটতে যাবে আজকে?

- হ্যাঁ যাবো। তুমিও চলো আমার সাথে।

- নাহ আমার অনেক হোম ওয়ার্ক আছে। নাহলে যেতাম।

হাসান একটু সুজির হালুয়া আর হালকা চা খেলেন। বাইরে এলেন। ঢাকায় কোথাও বাইরে গিয়ে বসার জায়গা নেই। ঐ এক রাঊন্ড হেঁটে এসে আবার ঘরে আশ্রয় নিলেন।



পরীক্ষার আগেই মিশা হঠাৎ একদিন হাজির।

- হাসান ভাই, আসেন একটু হাঁটি।

হাসান একটু অবাক হলো। কিন্তু ওর সাথে সাথে বাইরের মাঠে এসে কিছুক্ষণ চুপ চাপ হাঁটল। মিশা মুখ খুলল এতক্ষণে।

- ঠিক আছে, এইখানে একটু বসি।

কথা আছে নিশ্চয়ই। পরীক্ষা দেবে না এবারও?

- আমি খুব বাজে মেয়ে। একেবারে ইউজলেস। কিসসু পারি না। অনেকে চিঠি লেখে, ভালোবাসার কথা বলে, কিন্তু আমি যখন বিয়ের কথা বলি, অমনি পিছলায়া যায়। আমার বাবা এখন এক পাত্র ঠিক করছেন, অনেক বড় লোকের ছেলে, বাপের ব্য্যবসা চালায়। কণে দেখার দিন মনে হইল আমাকে অনেক পছন্দ।

হাসান হাসল মনে মনে । যাক, এ মেয়ের সমস্যা শেষ।

- কিন্তু লোকটা আমার চেয়ে পনেরো বছরের বড়। আব্বা বলছেন এটা কোন ব্যাপার না। হযরত আর বিবি আয়েষার মধ্যে বয়সের পার্থক্য ছিল পঁয়তাল্লিশ। কিন্তু তাঁরা তো সুখী ছিলেন।

হাসান একটু চিন্তায় পড়লেন। তাঁর নিজের বাবা-মার বয়সের পার্থক্য ছিল দশ। কিন্তু সুখীই তো ছিলেন। কিন্তু এখন কি এটা সম্ভব।

- হাসান ভাই, কিছু মনে করবেন না, শুধু একটা কথার কথা বলি, রাগ করবেন না। জাস্ট হাইপোথেটিকাল। আপনার মত একজন ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র যখন কাউকে বিয়ে করবেন, কি দেখতে চাইবেন আপনি তার মধ্যে? নিশ্চয়ই অনেক হাই আই কিউ, অনেক বুদ্ধি, ভালো রেকর্ড, অনেক রকম গুণ – গান, বিতর্ক, অভিনয়, কত কি মানুষকে এট্রাক্ট করে। আমার শুধু একটা শরীর আছে, আর কিছুই নাই। দশ বছরে এটাতে আস্তে আস্তে বয়স ধরবে। সব আকর্ষণ শেষ। ঐ লোকটার বয়স আমার চাইতে পনেরো বছর বেশি। তার তুলনায় বাচ্চাই থাকব। কিন্তু বিশ্বাস কি?



হাসানের মনে হলো তিনি ঠিক বুঝতে পারছেন না। এ সব তো বস্তাপচা পুরোনো আমলের সিনেমার গল্প। ওর বাবা কেন এ কাজটা করছেন?

- আমার বাবার ধারণা আপনার প্রতি আমার উইকনেস আছে। যখন বাড়িতে বললাম আপনার কাছে আমি পড়তে চাই, তিনি আপনার সম্বন্ধে অনেক কথা জিজ্ঞাসা করলেন। তারপরে বললেন।

- ঐ ছেলে তোকে বিয়ে করবে না। কিছুদিন মজা করে পালাবে বিদেশে। আচ্ছা বলেন তো, আপনি যখন ওই পড়ানোর অফারটা দিলেন, আপনি তো আমাকে শুধু হেল্প করতে চাইছিলেন, তাই না?

হাসান খুব শান্তভাবে বলেছিলেন।

- না, মিশা। আমি শুধু হেল্প করতে ওটা বলি নি। তোমার প্রতি আমার একটা উইকনেস ছিল এবং আছে। তুমি যদি চাও আমি তোমার বাবার কাছে প্রস্তাব পাঠাতে পারি।

মিশা চমকে উঠল।

- আগে বলো নাই কেন?

তারপর আবার চুপ হয়ে গেল।

- নো, ইট ওন্ট ওয়ার্ক আউট। তুমি আমার হবু বরেরও আগে আমার উপরে বিরক্ত হয়ে যাবে। এনার কাছ আমার একটা জেনুইন চাহিদা আছে। সেটা ফুরাইয়া গেলেও তিনি সামাজিক কারণে আমাকে ফালায়া দিবেন না। তুমিও আমাকে কখনো ফালায়া দিবা না, কিন্তু তোমার অবহেলা তো আমি সহ্য করতে পারুম না।



- নানা, টিভি দেখবে? আমরা সবাই বাংলাদেশ দলকে চিয়ার করছি।

হাসান মৃদু হাসলেন।

- না, আমার গলার জোর কম, তোমরাই চেঁচাও।

- ঠিক আছে, চেঁচিয়ো না, শুধু দেখ।

হাসানকে টানতে টানতে নিয়ে এলো। কিছুক্ষণ দেখার পরেই হাসানের মনে হল একটা মুখ চেনা।

- এই ছেলেকে একটা নাটকে দেখেছিলাম মনে হয়।

সবাই এর ওর মুখে তাকায় কয়েক সেকেন্ড। তারপর সবার মনে পড়ে। ঠিক, আশরাফুল তো আসলেই এক নাটকে অভিনয় করেছিল।

- আর ওই নাটকের অভিনেত্রীর মুখটা ভারী মিষ্টি ছিল।

নাওমি প্রায় চিৎকার করে ওঠে-

- নানা, ও মেয়েকে ভুলে যাও। শুধু সুন্দর মুখ থাকলে চলে না।



একটু পরেই খেলায় বৃষ্টি। হাসান ঘরে চলে এলেন। ঠিক, ঠিক, শুধু সুন্দর মুখ থাকলেই চলে না। কিন্তু সুন্দর মুখ আকর্ষণ করে। সেই আকর্ষণ কতটুকু গভীর? সভ্যতার শুরু থেকে আজ পর্‍্যন্ত যত গান কবিতা নাটক রচনা হয়েছে, কটাতে নায়িকা অসুন্দর? আবার বাস্তব জীবনে কতভাগ স্ত্রী সাঙ্ঘাতিক সুন্দরী, অথচ সুখেই জীবন কাটাচ্ছে? সেদিন হাসান সাহেব জিনমিক্স ও বিবর্তনের ওপরে একটা লেখা দেখছিলেন, পৃথিবীর সব দেশের সব গোষ্ঠির মধ্যে পার্টনারের মধ্যে যে গুণটি সব চেয়ে বেশি বাঞ্ছনীয় বলে ধরা হয়, তা মোটেই শরীরের ব্যাপার নয়। অবশ্য একেক কালচারে সৌন্দর্‍্যের সংজ্ঞাও একেক রকম। মানুষের জাতভাই বেবুনদের মধ্যে বয়স্কা মহিলার চাহিদা বেশি। বিবর্তন সম্ভবত এ পছন্দ ঠিক করে দিয়েছে, কারণ একটু বয়সী মহিলা সন্তান পালনে বেশি দক্ষ। আর মানুষের মধ্যে?



চাটগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নিয়ে ঢাকা ফেরার পথে বাসে ভিডিওতে একটা নাটক দেখাচ্ছিল। চঞ্চল প্রধান চরিত্র, কিন্তু ঠিক নায়ক নয়, বোঝা গেল কিছুক্ষণের মধ্যেই। একের পর এক শুধু কণে দেখে চলেছে, আশে-পাশের কিছু মেয়ের আগ্রহ আছে, কিন্তু চঞ্চল বাবু তাদেরকে মানুষই মনে করে না। দিন চলে যায়, চঞ্চলের বিয়ে আর হয় না। একেবারে শেষে রাস্তায় এক কিশোরী মেয়েকে দেখে প্রৌঢ় চঞ্চলের খুব পছন্দ হয়ে গেল। পেছনেই তার মা। ভাবল কথা বলবে। তখনই টের পেল এই মা'টি সেই মেয়েদের একজন যাকে সে অপমান করে বাদ দিয়েছিল কত বছর আগে। নাটকের শেষ সংলাপ মায়ের – যদি তুমি সময়মতো বিয়ে করতে, আজ তোমার এ রকম একটা মেয়ে থাকত।



- নানা, তোমার রাতের খাবার খেয়ে নাও।

হাসান রাতে খুব কম খান আজকাল। তবে ভাগ্য ভালো কখনো ডায়াবিটিসে ধরে নি। মাঝে মাঝে বাচ্চাদের জন্মদিনে কেক খাওয়া যায়।



সেদিন মিশার সাথে হাসানের কথাবার্তায় যেন রোল রিভার্সাল হয়ে গিয়েছিল। হাসানের নিজেকে খুব বোকা মনে হচ্ছিল, আর মিশাই সব একের পর এক যুক্তি দেখাচ্ছিল কেন তাদের বিয়ে হওয়া উচিত না। শেষে হাসান হেসে বলেছিলেন।

- মিশা, আমার মনে হচ্ছে আসলে তুমি এই ভদ্রলোককে খুব পছন্দ করে ফেলেছ। আমার কোন আপত্তি নেই। বয়সের তফাতের জন্য আমার মনে একটু খুঁতখুঁত ছিল, কিন্তু এতক্ষণে মনে হচ্ছে এটা কোন সিরিয়াস বাধা হয়ে দাঁড়াবে না, এটা তোমারও বিশ্বাস। তোমার বাবার ওপরে আমার যে রাগ ছিল, সেটা আর এখন নেই। লেট আস সেলেব্রেট। চলো স্টেক হাউজে স্টেক খাই।



হঠাৎ মিশা চুপ করে গিয়েছিল। তারপরে কি অঝোর কান্না। হাসান অবাক হয়ে তাকিয়েছিল। দু মিনিট পরে একটু শান্ত হয়ে মিশা বলেছিল।

- চলি। তুমি একাই সেলেব্রেট কর। আমারই তোমাকে বুঝতে ভুল হয়েছে।

হাসান সাহেবের মনে হলো তাঁর চোখের সমস্যাটা আবার বেড়ে উঠেছে। বিছানার পাশের টেবিল থেকে টিসু নিয়ে পরিষ্কার করলেন। তখনকার দিনে টিসুর এত প্রচলন ছিল না। ঝাপসা চোখেই হাসানকে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল। কি নির্বোধ সে। এ মেয়েটা এত কথা বলল শুধু তার কাছ থেকে এটা শোনার জন্য যে হাসান তাকে ভালোবাসেন, এবং কোন অজুহাতেই তাকে ছাড়বেন না, কিন্তু তার ভাব দেখে নিশ্চয়ই মিশার মনে হয়েছে যে আসলে হাসান শুধু একটা অসম বয়সের বিয়ে ঠেকানোর জন্য দয়া করে তাকে উদ্ধার করতে রাজি হওয়ার ভাব দেখিয়েছেন!



পরদিনই শুনল মিশা আবার অসুস্থ হয়ে দেশে চলে গেছে। একবার ভাবল সেখানে গিয়ে ফয়সলা করে আসে। যাওয়া ঠিক হবে কি হবে না এই দোটানার মধ্যেই একদিন শুনতে পেলো সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে গেছে, এবং স্বামীটি ওকে নিউ ইয়র্ক নিয়ে গেছে ভালো চিকিৎসার জন্য।



হাসান টের পায় তার পাশে এসে শুয়ে আছে নাওমি।

- নানা।

- কি বুবু?

- তোমার কি ফিজিক্স এখনো মনে আছে?

- কিছু কিছু।

- আমাদের এক নতুন টিচার এসেছে। বিদেশ থেকে পি, এইচ, ডি শেষ করেছে। ক্লাসিকাল মেকানিক্স পড়ায়।

- তোমার চাইতে কত বড়?

নাওমি ক্ষেপে যায়।

- বয়সের কথা উঠছে কেন? তুমি আজেবাজে কি ভাবছ? তুমি জানো আমার রোল মডেল কে। সে রকম কাউকে পেলে বাড়িতে নিয়ে এসো। আমি বয়সের দিকে তাকাবো না। সেটা কথা না। উনি আজ আমাকে ক্লাসে একটা খুব সহজ প্রশ্ন করলেন, আমি উত্তর দিতে পারলাম না, উনি আমাকে বোঝালেন। তবু পুরো বুঝলাম না। তাই ভাবলাম তোমাকেই জিজ্ঞেস করি।

হাসান মনে মনে হাসলেন। রোল মডেল কাকে বলে? একজন ভীতু কাপুরুষ লোক কোন অর্থে রোল মডেল হতে পারে?

- কি সমস্যা বলো, দেখি বুঝি কি না।

- হাসবে না কিন্তু। উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন নিউটনের থার্ড ল'এর একটা উদাহরণ দাও তো। আমার মাথায় চট করে এলো না কিছু। আসলে তো পড়েছিলাম অনেক আগে - সেই যে ঘোড়া গাড়ি টানে, আবার গাড়িও ঘোড়াকে টানে, তাহলে গাড়ি সামনে চলে কিভাবে? এ রকম কি জানি ছিল না? তো উনি বললেন এই যে আমার টেবিলে একটা বই আছে। মহাকর্ষ ওটাকে নিচে টানছে, কিন্তু টেবিল ঠেকিয়ে রেখেছে, তাই বই নড়ছে না। প্রতিটি ক্রিয়ার সমান বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে, বুঝেছ। এটা তো ক্লাস এইটেই পড়ে আসা উচিত।

- উনি এ কথা বললেন!

- হ্যাঁ, কি অপমানজনক, আমি সব চেয়ে ভালো ছাত্রী, পারলাম না। এত সোজা একটা উদাহরণ। লজ্জার ব্যাপার।

- উনি কি তুমি যা বললে সেটাই বলেছেন, না, আরো কিছু বলেছেন।

- নানা, আমার স্মরণ শক্তি এমনিতে খুব ভালো তুমি জানো।

- তিনি মহাকর্ষের প্রতিক্রিয়া হিসেবে টেবিলের ঠেকিয়ে রাখা উল্লেখ করেছিলেন, এভাবে?

- হ্যাঁ। এই সোজা বিষয়টা বুঝতে পারছ না কেন?

- একটা হাতুড়ি আনো তো।

- হাতুড়ি দিয়ে কি হবে, অন্য উদাহরণ দেখাবে?

- না, হাতুড়ি টা তুমি কাল নিয়ে যাবে এবং তোমার স্যারের মাথায় মেরে দেখবে ভেতরে ঘিলুজাতীয় কিছু আছে কি না।

- এসব কি বলছ?

- বইটা পৃথিবীকে টানে, পৃথিবীও একই সমান বলে বইটাকে টানে, এটাই হলো তৃতীয় সূত্র। মাঝখানে টেবিল না থাকলে দুটোই সচল হতো যতক্ষণ না বইটা মাটির ওপরে এসে পড়ত। টেবিলে যে বল তৈরী হয়েছে তা বইটার ইলেক্ট্রনগুলোর সাথে টেবিলের ইলেকট্রনগুলোর বিকর্ষণী ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া। সুতরাং এখানে দু রকম বলের আলাদা দুটো উদাহরণ আছে। এখানে দুই বলের ব্যালেন্স দেখছি স্থিতিস্থাপকতার কারণে, ভারী জিনিস হলে টেবিল ভেঙে নিচে চলে যাবে।

নাওমি একটু চুপ করে বলল।

- কি উজবুক! তাও পিএইচডি করা।

- এবার বলো তো বুবুজান, ক খ-কে ভালোবাসে, অর্থাৎ খ-এর প্রতি আকৃষ্ট। এখন তৃতীয় সুত্র অনুসারে খ-ও একই পরিমাণে ক-এর প্রতি আকৃষ্ট হওয়া উচিত ছিল । কিন্তু সচরাচর তা হয় না। কারণটা কি?

- বাহ, মানুষ কি জড়পদার্থ নাকি, তার মন আছে না? মন কি ফিজিক্সের নিয়ম মেনে চলে?

- মানুষের মাথার সব নিউরন সেই একই ইলেক্ট্রন প্রোটন নিউট্রনের সমষ্টি। যোগ করলে নিয়ম বদলাবে কেন? মনেও তো ঐ আকর্ষণ বিকর্ষণই কাজ করে।

- কি উদ্ভট চিন্তা তোমার। বেশ, উত্তর কি বলো।

- তোমার মা যখন স্ট্যানফোর্ডে ফ্রেশম্যান, আমাকে একদিন একটা প্রব্লেম পাঠালো। মহাশূন্যে তিনটা বল, তাদের মধ্যে শুধু মহাকর্ষ কাজ করছে। তাদের গতিপথ কম্পিউটার দিয়ে সিমিউলেট করার জন্য প্রোগ্রাম লিখে গ্রাফ এনিমেটেড এঁকে দেখতে হবে।

- তারা সবাই এক বিন্দুতে এসে মিলে যাবে, জানা কথা।

- না। দেখে তো আমি অবাক হয়ে গেলাম। দুটো একসাথে রইল, অন্যটা ছিটকে চলে গেল।

- এই গল্পের প্রাসঙ্গিকতা কি?

- যদি শুধু দুটো কণা থাকত, তাহলে তৃতীয় সুত্র অনুযায়ী পরস্পরকে সমান আকর্ষণ করত। তৃতীয় জনের আগমনে সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ফিজিক্সে থ্রী বডি প্রব্লেমের কোন সমাধান হয় নি এখনো। যদি পৃথিবীতে শুধু আদম আর হাওয়া থাকত, তাহলে তারা সমস্যা ছাড়াই একে অন্যকে এপ্রোচ করত। এখন এই ৩০০ কোটি জোড়া মানুষের ভীড়ে কার সাথে কার কি সম্পর্ক হবে আগে থেকে কে বলবে বল?

কিছুক্ষণ চুপ থেকে নাওমি আস্তে আস্তে বলল।

- আমি তোমাকে মিথ্যা বলেছি। মাস্টার্সের একটা ছেলেকে আমার ভালোই লাগত। ইন্টেলিজেন্ট, কাইন্ড – তোমার মত। আমাদের বন্ধুত্ব গাঢ় হচ্ছিল। কিন্ত ফার্স্ট ইয়ারে এক আগুণের শিখা এসে উপস্থিত। লেখাপড়ায় লাড্ডু , কিন্তু ছেলেটার আকর্ষণ দেখলাম ওর দিকেই বেশি। আমি তো নানীর মত সুন্দরী নই, সরে গেলাম।

নাওমি অন্যদিকে ঘুরে গেল। ওর শরীর কেঁপে কেঁপে উঠতে লাগল। হাসান আবার টিসুর বাক্সের দিকে হাত বাড়ালেন।



















মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:২১

সোহাগ সকাল বলেছেন: কিছুক্ষণ পর মোবাইল থেকে পড়বো। তখন আর মন্তব্য করতে পারবোনা। :(

২| ১৭ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:১৫

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: +++++++

ভাল লাগলো

৩| ১৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:৩৮

রফিক মাহমুদ বলেছেন:
স্যার, আপনার সব গল্পের প্রধান চরিত্রদুটি মনে হয় এক, শুধু কিছু প্যারামিটার বদলে যায়!

৪| ১৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:১৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: অন্যরকম ভালোবাসার গল্প। আপনার স্টাইলটাই আলাদা!

৫| ১৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:০৯

বৃতি বলেছেন: গল্পটা খুব ভালো লেগেছে ।

৬| ১৮ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫৪

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: পঞ্চম ভালো লাগা। বেশ ভালো লেগেছে!

৭| ১৯ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৮:১২

বিচ্ছিন্ন আবেগ বলেছেন: মানুষের বিপরীত লিঙ্গের (ক্ষেত্রবিশেষে সমলিঙ্গের) প্রতি আকর্ষন বা বিকর্ষনের যে ব্যাখ্যাটি আপনি লিখেছেন এই ব্যাখ্যাটি নিয়ে আমিও মাঝে মাঝে চিন্তা করি, আমার কাছে ব্যাপারটি যথেষ্ট যুক্তিসংগতই মনে হয়। হয়ত বিষয়টি নিয়ে গবেষনা করে প্রমান করার মত প্রযুক্তি এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। আপনি কি এই ব্যাখ্যাটিতে বিশ্বাস করেন?

৮| ১৯ শে জুন, ২০১৩ সকাল ৮:৫৫

আরমিন বলেছেন: মানুষের ক্ষেত্রে তৃতীয় সূত্রের ব্যাখ্যাটি দারুন লাগলো!

পোস্টে ৬ষ্ট প্লাস।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.