![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পথভোলা এক পথিক এসেছি ... ফাগুন প্রাতের উতলা গো চৈত্র রাতের উদাসী
আগে।
*************************************************************
- নানা, সাবধানে ঢুকো। চারদিকে আমার রঙ ছিটানো, পিছলে যেতে পারো।
হাসান সাহেব থমকে দাঁড়ালেন। সারা দুপুরটা বাইরে নানা জায়গায় ঘুরে ঘরে ফিরছিলেন। আসলেই নাওমি সারা ঘরে তার রঙের সামগ্রী ছড়িয়ে রেখেছে। একমনে রঙ মিশিয়ে তুলি দিয়ে ক্যানভাসে এঁকে যাচ্ছে। কিন্তু কি আঁকছে হাসান তা দেখতে পারছেন না; উল্টো দিকে মুখ করে বসেছে মেয়ে। জানালা দিয়ে শেষ বিকেলের সোনালি রোদ এসে পড়েছে নাওমির মুখে। ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছে। ওর মুখে আসলেই ওর নানীর মুখের একটা আদল আছে। কিন্তু ও সব সময় বলে নানীর কাছে ও কিসসু না। হাসানের বুকটা হঠাৎ কেমন মোচড় দিয়ে উঠল। কত বছর হলো, খুব বেশি না, কিন্তু গুণতে ভালো লাগে না।
- কি খবর বুবুজান।
দার্শনিকের মত মাথা ঝাঁকালো নাওমি। ওর হাল্কা বাদামী রঙ দেয়া চুল রোদে ঝিলিক দিয়ে উঠল।
- খবর কি থেমে থাকে, হতেই থাকে। যাও, হাতমুখ ধুয়ে এসো। আমি তোমার নাস্তা এনে দিচ্ছি।
হাসান সাহেব ফিরে এসে ইজি চেয়ারটায় বসলেন। কিন্তু এতদূর থেকে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না, ও কি আঁকছে। সাধারণত বারান্দায় আঁকে, আজ কি মনে করে খেয়ালী মেয়ে তাঁর ঘরেই কাজ করছে। দারুণ ভালো আঁকে। ফেসবুকে ওর কাজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা দেখেছেন । অনেকেই অনুরোধ করে - আমার একটা পোরট্রেট এঁকে দে, পয়সা দেব, কমিশন্ড ওয়ার্ক। না, ওর প্রফেশনাল আর্টিস্ট হওয়ার কোন শখ নেই। মাঝে মাঝে শুধু একটু রিল্যাকসেশনের জন্য আঁকে। নাওমি ফিজিক্সের ছাত্রী । তাতে একটা সুবিধে হয়েছে । রঙ মেশানোর ব্যাপারটা ও ভালো বোঝে , আর পারস্পেক্টিভ। অবশ্য পোরট্রেট আঁকতে পরেরটা তেমন কাজে লাগে না।
- নানা, আমার মেজাজ খারাপ।
- কি হলো আবার।
- এক ইরানী মেয়ে নাকি ফীল্ডস মেডেল পেয়েছে এ বছর।
- মেয়ে বলছ কেন? ও তো হার্ভার্ড থেকে পি, এইচ ডি করে এখন স্ট্যানফোর্ডের ফুল প্রফেসর।
- বলছি, কারণ ওর বয়স এখনো তিরিশের ঘরে। আর ছবিতে আরো কম মনে হয়।
- হিংসে হচ্ছে?
- হ্যাঁ।
- তাই রাগ করে তার বিচ্ছিরি একটা কার্টুন আঁকছ?
এবার নাওমি হিহি করে হেসে উঠল।
- তাই তো করা উচিত। বেসিক হিউম্যান রি-একশন। কিন্তু আমার পিউর ম্যাথ করার কোন ইচ্ছা নেই। নো ক্ল্যাশ অব ইন্টারেস্ট । রীমান সারফেসের মডিউলি জেনে দুনিয়াতে কার কি লাভ।
-বুবুজান, গণিতের সব চেয়ে এবস্ট্রাক্ট জিনিসও এক সময় কাজে লেগে যায়। আর তুমি মনে হচ্ছে ঠিকই গুগল করে বের করেছ ও কি করেছে । এটাও নিশ্চয়ই জেনেছ ওর বেসিক অংক শেখা ইরানেই হয়েছে । দু বার ম্যাথ অলিম্পিয়াডে সোনার পদক পেয়েছে, দ্বিতীয়বার একেবারে ফুল মার্ক্স।
- জানি। আমি আলসেমি করে ম্যাথ অলিম্পিয়াডে নাম দেই নি । না হলে আমিও দু'একটা প্রাইজ পেতাম নিশ্চয়ই।
এ ব্যাপারে হাসানও নিশ্চিত। মেয়েটা খুব খেয়ালী । মা অনেক স্বাধীনতা দিয়েছে । লেখাপড়ায় কোনদিন কোন চাপ দেয় নি । যা পারে, এমনি পারে। অনেক প্রব্লেম হাসানের আগেই করে ফেলে । হাসানের তখন অনেক গর্ব হয়।
আজকেও তাঁর মনে হয় ঠিকভাবে ট্রেনিং পেলে নাওমিও ম্যাথ অলিম্পিয়াডে সোনার পদক পেতে পারত, এবং হয়তো সেই উৎসাহে একদিন ফীল্ডস মেডেল পর্যন্ত। হঠাৎ হাসান সাহেবের হাসি পেল। স্কুলে থাকতে তাঁর অঙ্ক শিক্ষকও অনেক আশা পোষণ করতেন হাসান সাহেব সম্পর্কে । কিন্তু দেশে ফিরে এসে বিরাট ভুলটা করে ফেলেছিলেন। তিনি যেহেতু কোন দল করতেন না শিক্ষক রাজনীতির, দু দলই তাঁর ঘাড়ে কাঁঠাল ভেঙে খেয়েছে।সপ্তাহে আঠারো ঊনিশ ঘন্টা ক্লাস লোড দিয়েছে । আর দলের নেতা/কর্মীরা বারো ঘন্টা ক্লাস নিয়েছে, বার বার কিভাবে যেন বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে । এই ফীল্ড মেডেল জেতা মেয়ে হার্ভার্ডে ডিগ্রীর পরে আর ইরানে ফিরে যায় নি । সত্যি বুদ্ধিমতী । থাক, হাসান আর অতীত ঘাটবেন না।
নাওমি চা নাশতা নিয়ে এল। তারপর আবার ছবি আঁকায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল। মনে হলো ও মোটেই তাড়াহুড়ো করছে না । যা আঁকছে, খুব যত্ন করেই আঁকছে। হাসানের কৌতূহল হলো দেখার। কিন্তু দু পা অনেক শ্রান্ত বাইরে থেকে হেঁটে আসায়। ভাবলেন শেষ হলে মেয়ে নিজেই দেখাবে। কিন্তু ক্লান্ত শরীরে ঘুম চলে আসে । স্বপ্ন দেখেন আবোল তাবোল । কখনো নাওমি তুলিটাকে তলোয়ার বানিয়ে তাঁর দিকে ছুটে আসছে । কখনো ও তার এক ছেলে বন্ধুর সাথে তাঁর দিকে তাকিয়ে কি জানি ফিস ফিস করে বলছে । কখনো হালকা ভূমিকম্প হচ্ছে, তিনি নামার চেষ্টা করতেই সিঁড়ি ভেঙে যাচ্ছে। বিরক্তিকর। এক সময় ঘুম ভেঙে গেল, তিনি স্বস্তি অনুভব করলেন। দেখলেন নাওমি এক মনে তখনো এঁকেই যাচ্ছে । ঘড়িতে তাকিয়ে বুঝলেন মাত্র আধঘন্টা ঘুমিয়েছিলেন। এর মধ্যে এত কাণ্ড! হাসান মনে করার চেষ্টা করলেন তিনি জীবনে একবারো কোন সুখের স্বপ্ন দেখেছেন কি না। মনে করতে পারলেন না । স্বপ্ন জিনিসটা তো মস্তিষ্কের এক ধরণের রিসেটিং, কিছু কিছু অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দেয়ার ব্যবস্থা। কিন্তু এগুলো এত অর্থহীণ বিরক্তিকর কেন? হাসান ভাবলেন এক সময় ইন্টারনেটে ভালো করে স্বপ্নের আধুনিকতম তত্ত্ব পড়ে দেখতে হবে।
- ঘুম ভাঙল?
হাসান খেয়াল করে দেখলেন, তিনি ঘুমিয়ে উঠলেই নাওমি যে নানীর কথা বলে তাঁকে সাধারণত টীজ করে, আজ তা করলো না।
- তা ছবি আঁকা শেষ হলো?
- হুম, প্রায়। একটু পরেই তোমাকে দেখাবো।
- কোন রাজপুত্রের?
নাওমি গম্ভীরভাবে ঘাড় নাড়ল।
- রাজপুত্র আর কোথায় পাবো। তবে এক সুন্দর মানুষের।
হাসান একটু চমকিত হলেন। ব্যাপার কি? প্রথমত তাঁর ঘরে এসে আঁকছে। অনেক যত্ন নিয়ে আস্তে আস্তে আঁকছে। তার পরে এই হেঁয়ালিভরা উত্তর।
হাসান টিভিটা অন করলেন। খালি বিজ্ঞাপন আর বিজ্ঞাপন। এক চ্যানেলে রাজনৈতিক প্যাচাল। এক চ্যানেলে পল্লিগীতি, যা হাসানের ভালো লাগল না। অবশেষে এক জায়গায় একটা আলোচনা পাওয়া গেল বাংলাদেশের নিউক্লিয়ার জ্বালানী ব্যবহারের সমস্যার ওপর । অচেনা অতিথি। হাসান এখানে রাখলেন। এসময় কাজের বুয়া এলো ঘরে কাপ পিরিচ নিয়ে যেতে। নাওমিই সাধারণত নিয়ে যায়, কিন্তু আজ সে আঁকায় ব্যস্ত। দেরী দেখে মা পাঠিয়েছে । বুয়া টিভির দিকে তাকিয়ে চমকে উঠল।
- অ মা, এই সাহেবই তো আজকে আমাদের বাড়িতে আইছিল বিকালে, তার মারে নিয়া। আপনারে চাইছিল। খালি নাওমি আপা বাড়িতে ছিল। আপার সাথে কথা বইলা মা-ব্যাটা চইলা গেছে।
নাওমি খুব শান্তভাবে বুয়াকে বলল।
- আপনি যান। আমি নানাকে বলছি ।
হাসান এই সুদর্শন স্মার্ট পোশাকের লোকটাকে কোথাও আগে দেখেছে কি না মনে করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো। বয়স নাওমির চেয়ে দশ/বারো বেশি হবে। অর্থাৎ এখনো তরুণই বলা চলে, কিন্তু সে-ই এই আন্তর্জাতিক দলের নেতা।
- বুবুজান, আমি তো বুঝতে পারছি না। এনারা কে? এই মা - ছেলের কাহিনী কি?
নাওমি এবার তার আঁকা ছবিটা হাতে করে কাছে নিয়ে এল।
- ছেলেকে বোধ হয় চেনো না। দেখো, মাকে চেনো কি না।
হাসান চশমাটা আগে ভালো করে লাগিয়ে নিলেন। কত বছর পেরিয়ে গেছে। তবু চশমার দরকার ছিল না । মিশা । উত্তর দিতে একটু সময় লাগল।
- এর সাথে আমার পরিচয় ছিল ইউনিভার্সিটিতে।আমাদের চার বছর জুনিয়র ছিল।
নাওমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
- এতদিন লজ্জা পেয়েছি এই ভেবে যে শুধু আমারই একটা ছ্যাঁকের অভিজ্ঞতা হয়েছে এই পরিবারে। এখন দেখছি এটা হেরেডিটারি ব্যারাম। তবে মাম বেঁচে গেছে।
হ্যাঁ, সত্যি কথা। নাওমির মা ইনিউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারে যাকে পছন্দ করেছিল, তাকেই বিয়ে করেছে। কোন জটিলতা ঘটে নি তার জীবনে ।
হাসান অনুভব করলেন মানুষ মৃত্যুর সময় নিজের পুরো জীবনের একটা ফ্ল্যাশব্যাক দেখতে পায় যেমন, অন্তত কারো কারো মতে, তিনিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দুটি বছর এক মুহূর্তে চোখের সামনে দ্রুত চলে যেতে দেখতে পেলেন। কিন্তু একটু পরেই সম্বিৎ ফিরে পেলেন।
- তা কিভাবে বোঝা গেল এঁর সাথে আমার তেমন গভীর সম্পর্ক ছিল?
নাওমি কপট হতাশা দেখালো কপালে হাত রেখে।
- বাব্বা । আমাকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরলেন, যেন, যেন, আর কিছুতেই ছাড়বেন না। আমার চোখের দিকে এমনভাবে তাকালেন, যেন তিনি তোমাকেই আমার মধ্যে আবিষ্কার করতে চাইছিলেন।
হাসানের খেয়াল হলো তাঁর দুটো মুঠিও চেয়ারের হাতল শক্ত করে ধরে আছে, যেন তিনি এক মানুষের হাত আঁকড়ে ধরে আছেন, আর ছাড়বেন না। কিন্তু একটু পরেই আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলেন।
- বুবুজান, এই মহিলাকে আমার পছন্দ হয়েছিল ঠিকই, তবে মেয়েটা আমাকে ছ্যাঁক দেয় নি। ওর বাবা আমাকে পছন্দ করেন নি বলে তাড়াতাড়ি অনেক বয়সে বড় এক পাত্রের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন।
নাওমি একটু অবাক হলো।
- তোমার মত একজন সুবোধ ভালো ছাত্র পাত্র পেয়েও ভদ্রলোক পছন্দ করলেন না?
হাসান চুপ করে রইল অনেকক্ষণ। কি করে নাওমিকে বোঝাবেন এ-সব কথা? মানুষের মনের গহীনে কত অদ্ভুত খেলা চলে।
- আপামণি, ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি দুই সমকোণ, না?
নাওমি মাথা নাড়ল।
- আমি জানি, স্পেসে বক্রতা থাকলে তা হয় না।
- ঠিক। সোজা ইউক্লিডিয়ান স্পেসের জায়গায় বাঁকা স্পেস হলে এই কোণ বেশি বা কম হতে পারে । রীমানের জ্যামিতিতে বাঁকা স্পেস থাকে । আইন্সটাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব রীমান জ্যামিতি নিয়ে।
নাওমি সায় দিল।
- জানি। স্পেস-টাইম কারভেচার থেকে মহাকর্ষ তত্ত্ব পাওয়া যায়।
হাসান একটা একটু চুপ করে থাকলেন।
- মানুষের মগজে কত ভাঁজ নিশ্চয়ই ছবি দেখেছ। কিছুই সরল নেই। আর নিউরনগুলোর মধ্যে যোগাযোগ আরো জটিল। একটা গড় অনুভূতি বুঝতে পারি । কিন্তু ভেতরে ভেতরে কি হচ্ছে তা তো কম্পিউটার দিয়েও বিশ্লেষণ করে হদিশ পাবে না।
- বুঝলাম, তোমার সম্ভাব্য শ্বশুর সাহেব মেয়েকে তোমার হাতে দিতে চান নি, কারণ তিনি ভেবেছিলেন সেই মেয়ে তোমাকে তাঁর চেয়ে বেশি ভালোবাসবে।এই চিন্তাটা তিনি সহ্য করতে পারেন নি । কেমন জানি ঈদিপাস/ইলেক্ট্রা জাতীয় গন্ধ আছে ব্যাপারটায়। বাদ দাও। যা হওয়ার হয়ে গেছে । নানী এই মহিলার থেকে বেশি সুন্দর না হলেও কম ছিলেন না । তুমি যদি ওনাকে বিয়ে করতে তাহলে আমি হতাম কি করে বলো । আমি কোথায় থাকতাম ?
নাওমির গলার স্বরে বিপন্নতার আভাস। হাসান অভয় দেন।
- হাহা, তুমি হয়তো ওই ছেলেটা হয়ে জন্মাতে।ভালোই তো - স্মার্ট, সুদর্শন, সফল।
মুহূর্তে ক্ষেপে গেল নাওমি।
- মেইল শভিনিস্ট পিগ! আমার ছেলে হওয়ার কোন শখ নেই। ভালোই আছি । কোনটা কম পারি? আচ্ছা, এই লোকটাকে কি আমার মামা ডাকা উচিত?
হাসান আবার হাসলেন।
- তোমরা এ যুগের মানুষ দেখছি সব বন্ধু বন্ধুকে এমনিতেই মামা ডাকো। কখন যে বর-বৌ একে অন্যজনকে আদর করে মামা ডাকা শুরু করবে, আমি সেই ভয়ে আছি।
- পাজি, তুমি বাচ্চাদের ফেসবুক পড় কেন? আচ্ছা মরিয়ম বিবির কাজে যে মডিউলার জ্যামিতির কথা আছে, সেটা কি?
- তোমার নানীর বংশও কিন্তু মির্জা বংশ। ইরানী শিয়া ছিল আগে । ইনি মির্জাখানী । হয় তো ইস্পাহানের মত মির্জাখান বলে কোন জায়গা আছে। আমি এলজেব্রাইক জ্যামিতি ভালো জানি না । তবে মডিউলার সাধারণত বীজগণিতে ভাগের সাথে ব্যবহার হয়। কোন জিনিসে একই প্যাটার্ন যদি বার বার আসে, হয় তো সেটাকে কমন নেয়ার ব্যাপার আছে। পরে গুগল করে দেখে নিও।
- নানা, আরেকটা ব্যাপার আছে। ভদ্রলোক আমাকে একটা নতুন আইপ্যাড দিয়েছেন। কি করব। বললেন ওনার নাকি ডুপ্লিকেট হয়ে গেছে ।
হাসান একটু চুপ করে রইলেন। তারপর আস্তে আস্তে বললেন।
- এটা তোমার ইচ্ছা। হয় তো তোমার জানা আছে, ২০০৬ সালে ফীল্ডস মেডেল পাওয়া গ্রিগরি পেরেলমান পদক নেন নি। কেউ জানে না কেন। তাঁর পোয়াঙ্কারে কঞ্জেকচারের আবিষ্কারটা আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জিনিয়াস, কিন্তু পুরো পাগল। আমার নাতনীও জিনিয়াস, কিন্তু আমি তার মধ্যে পাগলামি দেখতে চাই না।
- নানা, আমার তো একটা স্যামসাং ট্যাব্লেট আছে। আমার এক বান্ধবীর একটা ট্যাবলেটের অনেক শখ। এটা ওকে দিয়ে দিলে কি পাগলামি হবে?
হাসান হাসলেন। তিনি জানতেন, নাওমি এ ধরণেরই কোন সিদ্ধান্ত নেবে। কিছু বললেন না।
- নানা।
- কি?
অনেক কুন্ঠায় গলার ওড়নাটা সরিয়ে নাওমি একটা সোনার হার দেখালো। দেড় দু ভরি ওজনের হবে, পুরোনো আমলের ডিজাইন, যা আজকাল আবার ফিরে আসছে।
- এটা উনি দিলেন। যদি তুমি ওনাকে দিয়ে থাকো, আমি রেখে দিই?
না, হাসান মিশাকে কোনদিন কিছুই দেন নি। মিশা এটা মাঝে মাঝে পরে ক্লাসে আসত।
- এটা তুমি রেখেই দাও, যে-ই দিক না কেন। তোমার মাকে বলো, নানা পুরোনো জিনিস ঘাটতে গিয়ে হঠাৎ খুঁজে পেয়েছেন; তোমার নানীরই, তবে ডিজাইন পছন্দ না হওয়ায় নানাকে ফেরত দিয়েছেন, কখনো পরেন নি। কিন্তু আপামণি, তুমি যে এত সময় ধরে এই ছবিটা আঁকলে এটা আমি কি করব?
- সেটা আমি আগেই ভেবে রেখেছি। নানীর ছবির ফ্রেমের অন্যদিকে লাগিয়ে ব্রাউন পেপার দিয়ে ঢেকে দেব। যদি কখনো ইচ্ছে করে সেটা সরিয়ে দেখতে পারো।
২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:০৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খুব আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। কিন্তু হঠাৎ শেষ হয়ে গেলো কেন, তা দেখতে গিয়ে উপরে দেখলাম আগের পোস্টের লিংক। এটা দীর্ঘ ১ বছর পর ২য় পর্ব? পরের পর্ব কি আরও এক বছর পর? তাহলে তো এ গল্প ভুলে যাবও
শুভ কামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৮
রফিক মাহমুদ বলেছেন: বিশুদ্ধ গণিত ভীষণ কঠিন বিষয়। আমি অনেক আগেই ফিরিয়ে দিয়েছি।