নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যভুবন

তবু সে তো স্বপ্ন নয়, সব-চেয়ে সত্য মোর, সেই মৃত্যুঞ্জয়

সাপিয়েন্স

আমি পথভোলা এক পথিক এসেছি ... ফাগুন প্রাতের উতলা গো চৈত্র রাতের উদাসী

সাপিয়েন্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

আন্তর্জাতিক চুদুরবুদুর দিবসের চিন্তা

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪২


শিরিন শরমিন সেই স্বল্পসংখ্যক সাংসদদের একজন যাঁর জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তায় অধিকাংশের আস্থা আছে। এই মেধাবী ছাত্রীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করেন নি, কারণ এই অনুষদটি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি সদা অনুগত, যেটা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাবদলের ওপরে নির্ভরশীল নয়। ভিন্ন দলের নতুন লোক না ঢুকতে দিলেই তো হলো, সংখ্যাধিক্য চলবে নিরন্তর। এখন মানননীয় প্রধান মন্ত্রী, যিনি আসলেই কিছু কিছু যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ করতে পারেন, নিজেও খালি মাঠে গোল করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন এবং পার্লামেন্টে নিজ দলের একচ্ছত্র ক্ষমতার দাপট অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য পিতার বাকশালের চেয়ে মোক্ষম অস্ত্র খুঁজে পেয়েছেন, তিনি সুযোগ ছাড়বেন কেন? আর তোফায়েল, নাসিম, সুরঞ্জিৎ দলের এইসব বুড়োদের তো লুটের এটাই সম্ভবত শেষ সুযোগ। তাঁরা রিস্কে যাবেন কেন? খায়রুল হক ব্যারিস্টার মানুষ স্কাইপ ছাড়াই গায়েবী আওয়াজে ধোঁয়াটে রায়ের বাণী পেয়ে গেলেন এবং লিপিবদ্ধ করলেন। পরিণামটি হয়তো নিজেরই পুরো জানা ছিল না। যতই লোভী হন না কেন (সিনিয়রিটিহীন প্রমোশন, প্রধান মন্ত্রীর রিলিফ ফান্ড থেকে সাহায্য, পে কমিশনে চাকরী, দু একটা সরকারী প্লটও কি?)), দেশের জন্য একটু আধটু মায়া আছে নিশ্চয়ই। হয়তো অবসর মুহূর্তে নিজের কৃতকর্মের জন্য একটু অনুশোচনা হতেও পারে। ওসব থিওরেটিকাল ব্যাপার। 'আমি তো নিমিত্ত মাত্র' আকাশবাণীতে শোনেন 'মাভৈ'। দেশ ধংস হয়ে গেলেও দুই দস্যু দলের গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থার গভীরতায় দেশবাসী অভিভূত। কখনো কখনো বোমা-আগুণ-ক্রস্ফায়ারে আসলেই ভূত।

আমার বন্ধুরা বলে আমি সুশীল। এটা শব্দটির বর্তমান প্রয়োগের বহু আগে থেকে। কারণ আমার বংশের সনাতন আবাস সেই বিশেষ জেলাতে হলেও জন্ম কোলকাতায় এবং অনেক বন্ধু আমার মুখে কোলকাতার বাচনভঙ্গীর বিজাতীয় গন্ধ পেয়ে টিটকারী হিসাবে এটি ব্যবহার করতেন। অবশ্য আমি কখনোই চারজন অতিথি এলে সেই অঞ্চলের সংস্কৃতি অনুযায়ী তিনটি সন্দেশ দিয়ে শেয়ার করে নিতে বলি নি। মমতা এসে তো সুশীল বাণী উচ্চারণ করছেন - আমার ওপর আস্থা রাখুন, আমাদের অনুকূল স্থলচুক্তি হয়ে গেলে দেখা যাবে, তিস্তায় কত জল আর কত বাষ্পীয় বাতচিত। সেই কবে বিচ্ছু মহিলা সত্যিকার সুশীল মুখ্য মন্ত্রী জ্যোতি বসুর সচিবালয়ে ঘরের সামনে ধর্ণা দিয়েছিলেন, আর বসু পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়েছিলেন।

মমতাকে কেউ সুশীল বলবে না, মোদীকেও না। আমাদের কোন নেতা-নেত্রীকেও না। আমরা নগন্য ক্ষমতাহীন মানুষেরা সুশীল হই।

সুশীল হওয়াতে কেউ আমার সামনে খারাপ শব্দ উচ্চারণ করত না। সেই শব্দগুলির অর্থ আমি অনেক বেশি বয়সে বায়োলজী পড়ার পরে অনুমান করে বুঝেছি। দুয়েকটা হয়তো এখনো জানিই না, বা ভুল জানি।

ছেলেবেলায় আমার বাবা নির্বাচনে দাঁড়ালে গ্রামে গিয়েছিলাম তিন মাস স্কুল ফাঁকি দিয়ে। সেখানেও আমি সুশীল, সুতরাং আমার বয়সীরাই যখন বড়দের বিষয় আলোচনা করত, আমার কাছ থেকে একটু দূরে সরে যেত আর খ্যাক খ্যাক করে হাসত। দু একটা আজব শব্দ আমি কানে শুনলেও তাদের মানে কোনদিন বুঝতে পারি নি, তাই সেগুলো কোন শ্রেণীভুক্ত কোনদিন জানতে পারি নি। সাম্প্রতিক কালে এমনি একটি শব্দ পার্লামেন্টে উচ্চারিত হলে ছোটখাটো একটা ঝড় ওঠে। কিন্তু শিরিন শারমিন বলেছেন এটা সুশীল। সুতরাং আমাকে তাই বিশ্বাস করতে হয়। আমার মাতৃভাষার জ্ঞান তাঁর চাইতে অনেক দুর্বল স্বীকার করে নিচ্ছি। একদিন সুযোগ পেলে ওঁকেই "চুদুরবুদুর" শব্দটার অর্থ জিজ্ঞেস করে নেব। যেহেতু ক্ষমতাশীলদলের কেউই সুশীল আখ্যা চাইছেন না, অথচ এই শব্দটি
নিয়ে তাঁরাই ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন (শিরিন শরমিন ছাড়া), ৯/১১ এর পরে বুশের
"You are either for us or against us", নীতি অনুযায়ী কোন দিকে যাবো বুঝতে পারছি না। যারা ক্ষমতায় নেই, কোন দিন ক্ষমতায় ছিলনা, কখনো ক্ষমতায় যেতে পারবে না, এমন কি একটি সন্দেশের ৩/৪ অংশও আশা করে না, সে কোন শ্রেণীতে পড়ে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.