![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পথভোলা এক পথিক এসেছি ... ফাগুন প্রাতের উতলা গো চৈত্র রাতের উদাসী
- নানা, তোমার চোখ ভেজা মনে হচ্ছে।
- তাই নাকি। সকালে ঘুম থেকে উঠলে কিছুক্ষণ ভেজা থাকে। এটা এ বয়সে স্বাভাবিক।
- ডাক্তার দেখিয়ে নাও। আমি বিকেলে নিয়ে যাবো। কিন্তু এটা আবার ওই পশুটার জন্য সহানুভূতির চিহ্ন হলে আমি রাগ করব। ও তো তার যোগ্য শাস্তিই পেয়েছে।
- বোধ হয় তাই ,আমি সে সময় দেশে ছিলাম না। কে কি করেছে আমার জানা নেই। নিশ্চয়ই খারাপ লোক দেশে ছিল যারা মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দিয়েছে, হয়তো মেরে ফেলেছে। শাস্তি তো হওয়া উচিত।
- কিন্তু তুমি তো আবার প্রাণদন্ড সমর্থন কর না। তুমি সুশীল।
- এটা আজকাল একটা আধুনিকতম গাল হয়ে গেছে দেখছি।
- হুম, সুশীলরা সব কিছুতে ব্যালেন্স খোঁজে। বলো তো এক সের তূলার ভর বেশি, না এক সের লোহার ভর বেশি?
- আমার মাটি লাগায় মোরে মাটি, রাজ্যে মোর একি অনাছিষ্টি। এই প্রব্লেমটা তো আমিই তোমাকে কয়েক বছর আগে বলেছিলাম।
- আমি তো তোমার বুদ্ধি পরীক্ষা করতে বলি নি। এটা স্মারক মাত্র। বেশি বাতাস সরিয়ে রাখাতে তূলার ওজন থেকে বেশি কমে যাবে। তোমরা সুশীলরা সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকো তূলার মত, তাই তোমাদের কথার ওজন কম। ধারও কম। যারা একমুখী ছুরির মত শানিত বক্তব্য দেয় তাদের কথা বেশী কাটে। নাসিম, তোফায়েল, ইনু, হানিফ, শাজাহান ধমক ছাড়া কথাই বলতে পারে না। এরাই আমাদের আসল নেতা।
- হে, হে, তোফায়েল ১/১১ এর পরে একটু দুনম্বরী করতে গিয়ে মন্ত্রীত্ব হারিয়ে টিভিতে ভেউ ভেউ করে কেঁদেছিল, এখনো চোখে ভাসছে। এখন সে প্রমাণ করছে সে পোপের চেয়ে বড় খ্রিস্টান। নাসিম, আমু, সেলিম সবার একই অবস্থা।
- তুমি সেই ভদ্রলোককে একদম সহ্য করতে পারো না। কিন্তু মাম বলেছেন উনি নাকি তোমাকে বেশ স্নেহ করতেন, পাগল জামাইটার চেয়েও। চাইতেন তুমি ওনার দলে আস। অনেকবার নাকি তোমাকে দেখা করতে ডেকেছিলেন, তুমি যাও নি। তুমি তো সব সময়ই উন্নাসিক ছিলে। বলতে, যে লোক লাখ আর মিলিয়নের তফাৎ জানে না, তার নেতৃত্ব মানতে আমি রাজি না।
- এটা ঠিক না। ওই আত্মীয়তন্ত্রের মধ্যে আমি ঢুকলেও কিছু করার সুযোগ পেতাম না। আসলে আমি তো দেখতাম ভাগ্নে আর অন্যান্য রুশবাদী আত্মীয়রা ওনাকে কোণঠাসা করে নিজেরাই দেশ চালাতো আর উনি লেইকের পাড়ে বসে উদাসভাবে চেয়ে থাকতেন। খুশী, কিন্তু পুরো খুশী নন। আসলে সুহরাওয়ার্দীর সাথে থাকার সময় উনিও মার্কিনপন্থী ছিলেন। হারামী কিসিঞ্জারই সব জট পাকিয়ে দেয়। ১৯৭৫ এর ঘটনাতেও ওই বেটারা ছিল মনে হয়।
- নানা, তুমি ভীষণ লজিকাল। সত্যি সব কিছু ভাবো। এবার বলো জীবনে কটা মেয়ের প্রেমে পড়েছিলে। বায়াস না থাকলে তো কয়েক ডজন হওয়া উচিত।
- হি হি, কোন মেয়েকে দেখলেই ছেলেরা প্রেমে পড়ে যায় না কি? পাশের বাড়ীতে থাকত বকুল, কাছের বন্ধুর বোন ছিল কুসুম, গ্রামের বাড়িতে দূর সম্পর্কের বোন ছিল রেণু, যে আশেপাশে ঘোরাঘুরি করত, ক্লাসমেইটদের মধ্যে সব চেয়ে আকর্ষণীয় ছিল গুলশান, ছাত্রীদের মধ্যে বেশি মনে পড়ত শেফালী আর কেয়ার কথা।
- হাউ বোরিং । তুমি আবার নিউট্রাল সুশীল ছিলে কবে? সব ফুলের নামে নাম। কাদম্বরী, মৃণালিনী না হোক- জলি, হাসি, মাহমুদা, হাসিনা, খালেদা এসব তো তোমাদের যুগে চলত।
- হুম, ব্যাপারটা খেয়াল করি নি তো এতদিন।
- কিন্তু নানীর নামে যে ছিল অপু?
- শ্বশুর সাহেব অনেক লম্বা নাম রেখেছিলেন, ছোট হয়ে অপু।
- লম্বা নামটা কি?
- অপরাজিতা।
- তোমার চোখ আবার ভিজে যাচ্ছে।
©somewhere in net ltd.