নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমরাই গড়তে পারি একটি সুন্দর পৃথিবী যদি না আমরা ইচ্ছা করি।

নাজমুস সাকিব অর্ক

নাজমুস সাকিব অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাজহাব ও ইসলাম।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৪৪

ইসলামে মাজহাবের সৃষ্টি এবং বিকাশ.................. এবং গোঁড়া মাজহাবিদের জন্ম...

মহানবী(সঃ) মারা গেলেন ৬৩২ সালের দিকে। উনার পরে খলিফা হলে ৪ জন ন্যায় নিষ্ঠ সাহাবী। উনারা ৪ জন মিলিত ভাবে মুসলিম উম্মাকে শাসন করে প্রায় ৬৬১ সাল পর্যন্ত। এই পর্যন্ত মাজহাব নামের কিছু পৃথিবীতে ছিলোনা বা ভাল ভাবে বললে মাজহাবের দরকার হয়নি। তবে এই সময় যেটা হত সেটাকে বলে ইজতেহাদ বা সাহাবীদের মিলিত সিধান্ত। সিধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে উনারা এতটা বিনয়ী ছিলেন যে কোন সাহাবী প্রচলিত মতের বিপরীতে কোন হাদিস বললে সাথে সাথে সবাই তা মেনে নিতো...............

৬৬১ সালের দিকে আলি(রাঃ) এর মৃত্যুর সাথে সাথে ক্ষমতা চলে যায় উমাইয়া বংশের মানুষের হাতে। এই সময়টাতেই শিয়া, খারিজী সহ নানা নতুন মতের দল তৈরি হওয়া শুরু করে। তখন কিন্তু অনেক সাহাবী জীবিত। শাসন ক্ষমতার এমন হযবরল অবস্থা দেখে উনাদের মন ভেঙ্গে গেলো। অনেকেই মক্কা-মদিনা ছেড়ে প্রতান্ত অঞ্চলে চলে গেলো, ফলে চার খলীফার সময়ের মত ইজতেহাদ করার সুযোগ কমে গেলো। উমাইয়া শাসকরা নতুন বিজিত অঞ্চল যেমন হিন্দুস্তান, আফ্রিকা থেকে নানা অনৈসলামিক রীতিনীতি গ্রহন করা শুরু হল। সেই সময়টাতে আলেমরা ২টি প্রধান শহর ১. মদিনা,২. কুফা কে কেন্দ্র করে জ্ঞানের চর্চা করা শুরু করলো। তখন তো আর হাদিসের সংকলিত বই ছিলোনা, তাই সাহাবীদের মুখ থেকে হাদিস শুনে শুনেই কোন ব্যাপারে সিধান্ত দিতে হত। রাজধানী মদিনা থেকে সরিয়ে ফেলা হলেও অনেক সাহাবী মদিনার আশে পাশেই থাকতো তাই উনাদের কাছে থেকে মদিনার আলেমরা হাদিস সংগ্রহ করতে পারতো। অন্য দিকে যোগাযোগ আর বেশি সংখ্যক সাহাবী না থাকায় কুফার আলেমদের হাদিসের ভাণ্ডার ছিলো কম। মদিনার আলেমরা সরাসরি বেশি কোরআন হাদিসের উপর নির্ভর করতো বলে সেই সব আলেমদের বলা হত " আহলুল হাদিস" অন্য দিকে কুফার আলেমদের বলা হত " আহলুল রা'ই"। কারন তাদের কাছে হাদিস ছিলো কম, তাদের বেশি নির্ভর করতে হত জুক্তি-বুদ্ধির উপর। তারা কোন একটা বিষয় নিয়ে তা থেকে কি কি সমস্যা হতে পারে সে বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করতো। তারপর তাদের কাছে থাকা হাদিস দিয়ে সেটার সমাধান করার চেষ্টা করতো বা হাদিসকে বিশ্লেষণ করে সমস্যার সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করতো। এই সময়টাতে প্রথমবারের মত কিছু মানুষ ভুয়া হাদিস বলা শুরু করে। অন্যদিকে এই সময়টাতেই আবার তাবীঈরা সাহাবীদের ইজতেহাদের সমাধান গুলো লিখে রাখা শুরু করেন...

প্রায় ৭৫০ সালের দিকে নবি(সঃ) এর চাচার বংশ আব্বাসিয়রা উমাইয়াদের হারিয়ে ক্ষমতা দখল করে। নবির বংশ হওয়ার কারনে উনারা আবার হাদিস চর্চার পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। হইহই করে আবার হাদিস চর্চা শুরু হয়। এই সময়টাতে বিভিন্ন মাজহাবের উৎপত্তি হয়। কারন নতুন নতুন শিক্ষাকেন্দ্র হওয়াতে অনেক জ্ঞানি শিক্ষক রিচার্স করা শুরু করে যেমন, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফি, ইমাম মালেকি আর তাদের ছাত্ররা তাদের শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে থাকে। কিন্তু তারা সব সময় তাদের ছাত্রদের বলতো যে সহি হাদিস পেলে আমার মত ত্যাগ করবে মানে আমার রিচার্সের সিধান্ত ত্যাগ করবে। উনার ছাত্ররা সেই আদেশ মনে প্রানে মেনে চলতেন। ইমামরা জানতেন তারা সব হাদিস জানেন না। তাদের সিধান্ত ভুলও হতে পারে। আব্বাসিয় শাসনের শেষের দিকে আব্বাসিয় কিছু খলিফা দরবারে ১ মাজহাবের আলেমের সাথে আরেক মাজহাবের আলেমের তর্ক লাগিয়ে দিতো। মজা দেখার জন্য অনেক মানুষ সেখানে ভিড় করতো। দরবারের বিতর্ক টিকার জন্য বা নিজের মাজহাবের মান-সম্মান রক্ষার জন্য প্রথম বারের মত আলেমরা কট্টরপন্থী হতে থাকলো। তাদের মাঝে দলাদলি দেখা দিতে থাকলো। যে সময় মাজহাব নিয়ে আব্বাসিয় কিছু খলিফা এমন করছে, তখন কিন্তু মাজহাবের বড় ইমামরা প্রায় সবাই মারা গেছেন, মারা গেছেন তাদের অনেক প্রধান ছাত্ররাও।১২৫৮ সালে শেষ আব্বাসিয় খলিফা মস্তাসিম মঙ্গোলীয়দের হাতে নিহত হওয়ার মধ্যদিয়ে আব্বাসিয় খেলাফত শেষ হয়। ১২৯৯ সালে তুর্কি নেতা উসমান মঙ্গোলীয়দের হাত থেকে আবার ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে উসমানীয় সম্রাজ্য গঠন করেন যা চলে ইউরোপিয়ানরা তুরস্ক দখল করার আগ পর্যন্ত।

এইদিকে আব্বাসিয় কিছু রাজাদের কারনে সৃষ্টি মাজহাবি দলাদলি চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। মুসলিমরা ১ ইসলাম ছেড়ে ৪ প্রধান মাজহাবে বিভক্ত হয়ে গেলো। অনেক মাজহাবের আলেমগন ফতোয়া দেওয়া শুরু করেন যে ১ মাজহাবের সাথে আরেক মাজহাবের বিয়ে নিষিদ্ধ। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই চার মাজহাবের অন্ধ অনুসারীরা মক্কা শরিফেও নামাজের ব্যাপারে বিভক্ত হয়ে পড়েছিলো। ১৯২৪ সাল পর্যন্ত তারা মক্কা শরীফের ৪ পাশে ৪ ভাগে ভাগ হয়ে তাদের নিজনিজ মাজহাবের ইমামের পিছনে নামাজ পড়তো। আব্দুল আজিজ সউদ ১৯২৪ সালে ৪ ভাগে আলাদা নামাজ পড়া বাদ দিয়ে একেই ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার নিয়মজারি করেন...........................

তাহলে বুঝা গেলো যে, হাদিস বা সাহাবীদের অপ্রতুলতা, যাতায়াত এবং শাসন ব্যাবস্থার দুর্বলতার কারনেই মাজহাবের সৃষ্টি। মাজহাবের প্রধান ইমামরা এবং তাদের প্রধান ছাত্ররা মাজহাব মানার ব্যাপারে খুব কট্টর ছিলেননা, বরং কট্টর ছিলেন সহি হাদিস মানাতে। এখন তো আমাদের কাছে পূর্ণ কোরআন আছে, সব হাদিস আছে। প্রায় সবার ঘরে ঘরেই আছে। এখন কি আমরা ইমামদের মতই সহি হাদিসের পথ ধরতে পারিনা?????? আমাদের আলেমরা কি মাজহাবের বাহিরে এসে কোরআন হাদিসের উপর ভর করে রিসার্চ করতে পারেনা????

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:২৩

আহলান বলেছেন: প্রথমেই যে বল্লেন রাসুল (সাঃ) মারা যাওয়ার পর ... এই কথাটাই তো আপত্তিজনক। দ্বিতীয়ত আপনি যদি ইজতেহাদি জ্ঞ্যান রাখেন তবে অবশ্যই তা করতে পারেন, সবাই তো সেই জ্ঞ্যান রাখে না

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:০৮

সুলতানা সালমা বলেছেন: এখন তো আমাদের কাছে পূর্ণ কোরআন আছে, সব হাদিস আছে। প্রায় সবার ঘরে ঘরেই আছে।
বাট চর্চা তো নেই। :(

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৫৯

বিবেক ও সত্য বলেছেন: আমি ’ইসলাম’ নামক ধর্ম খুজছি, এখনো পায়নি। কেউ কি পেয়েছেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.