নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জন্মিলে মরিতে হইবে

জ্যাকেল

ব্যাথার প্রকাশ শুধু কান্নাতেই যে হয় তা নহে। হাসিতেও ব্যাথা লুকিয়ে থাকিতে পারে। - ! ২০০৮

জ্যাকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

=p~ =p~ বুইড়া গাধার গান গাইবার গল্প

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:১৩


ফটোঃ এডবি স্টক

অনেক কাল আগের কথা। তখন গ্রাম আর শহর বলতে তেমন তফাৎ ছিল না। ধোপাগিরি তেমন চালু না থাকলেও চলছিল। তো এক ধোপা বাস করত সেইরকম এক গ্রামে।
ধোপার রোজগার ভাল ছিল, লোকেরা তার কাপড় ধোয়ার প্রশংসা না করে পারত না। আর ধোপাও ছিল খানিকটা পয়সা লোভী।
ধোপার কাজে সাহায্য করতো এক বুড়ো গাধা। গাধাটি ছিল অন্য পাঁচটা গাধা থেকে আলাদা। সে এক চামচ বেশি বুঝতো। ঘোলা জল পছন্দ করতো না। আর এই গাধাটির সাথে কেমন করে যেন ধোপা কথাও বলে ফেলত। অবশ্য তা গ্রামের লোকেরা খেয়াল করত না তেমন একটা।

তো, এক ভরদুপুরে সেই গাধা দেখল তার মালিক বেশ আরাম করে রুটি খাইতেছে। সে আহ্লাদ করে মালিককে বললো- আমারো খুব খিদে পেয়েছে।
- তো আমি কি করবো?
- এক খানা রুটি
মালিক তো রেগে একেবারে আগুন। বললো, আমার রুটির ওপরেও নজর রাখিস? গাধা কোথাকার? মালিক ধপাস ধপাস করে বাড়ি কয়েক দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দিল মাঠের ঘাস আর নদীর জল খেতে।
গাধা বিড়বিড় করে মাঠের দিকে পথ চলতে লাগল।
- আমার মনে হচ্ছে গাধা হইয়া জন্ম নেওয়াটাই পাপ। পাজী মালিক? আমাকে এত খাঁটান দেয় আর এক টুকরো রুটিও আমার কপালে জুটতে দেয় না? আর আজকাল মানুষেরাও একজন আরেকজনকে গাধা বলে গালাগাল দেয়! ছিহঃ
গাধা নিজকে প্রবোধ দিতে ব্যর্থ হয়। শেষমেষ নিজেকে গাধা হিসাবে মানতে পারে না। ঘাষ খেয়ে কেবলমাত্র নদীর জলে সে মুখ দিতে যাবে এমন সময় শোনা গেল মালিকের হাঁক- এই গাধা গেলি কোথায়?
গাধা ইচ্ছে মত শাপ দিতে দিতে যেই পানি খেতে গেল তো দেখল স্থির পানিতে কাপড় ধোয়ার পানি এখনো যায় নি। কেমন যেন ময়লা গন্ধ তার নাকে লাগছে। সে আবার মালিককে অভিশাপ দিতে লাগল আহাঃ দু ফোটা জলও আমার কপালে জুটবে না?

গাধাটি কাপড় বহন করতে করতে মালিকের দিকে আঁড়চোখে দেখল। মালিক কেমন যেন বে-খেয়ালী হয়ে আছেন দেখে কোমর দুলিয়ে দিল কয়েক গাঁট কাপড় ফেলে। সাথে সাথে মালিক তাকে ধপাস ধপাস করে লাটি দিয়ে দিল গদাম। মনে মনে অপারগ গাধা আবারো মালিককে ইচ্ছেমত গালি দিতে থাকল যতক্ষণ সে বাড়ি পর্যন্ত না পৌছল।
ধোপা মালিকটি কাপড়ের গাট্টি নামাতে নামাতে গাধাকে তিরস্কার করে বলল- আজ রাতে তোকে আর খাবার দেব না গাধার বাচ্চা গাধা। যাঃ ভাগ এখান থেকে।
গাধা কাকুতি মিনতি করে বলল- মালিক দয়া করুন আমাকে। আমাকে না খাইয়ে মারবেন না। একটু দয়া করুন।
- না তোকে আজ কোন খাবার দেওয়া যাবে না। ভাগ আমার সামনে থেকে।
গাধা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল। আর মালিক কাপড়গুলি নিয়ে ঘরে চলে গেল। এইদিকে বুড়ো গাধার মাথায় অন্য বুদ্ধি চলে আসল। সে হাঁটতে হাঁটতে পাশের বাড়ি চলে গেল। সেখানে এক বাচ্চা গান শিখছিল। ওস্তাদ প্রতিবেশি বাচ্চাকে শেখাচ্ছিলেন গান।
পুর্ণিমা রাতে এই গান গাইবে-
"পুর্ণিমা রাতে, গগনে উঠিল চাঁদা"
বুড়ো গাধার কাছে গান জিনিসটা খুব ভাল লাগে। সেও বলে ওঠলো "পুর্ণিমা রাতে, গগনে উঠিল চাঁদা"। এইদিকে শিষ্যকে শেখাতে শেখাতে বিরক্ত হইয়া ওস্তাদ বলে ওঠলেন-
তোর চাইতে এই গাধাটাও ভাল গাইতে পারে।
সে কথা শুনিয়া ছাত্র ঘর থেকে বের হইয়া গাধার পাছায় দিল এক লাত্থি। গাধাটি দুঃখে ক্ষোভে আবার হাটা শুরু করল।

উপর্যুপরি অপমানিত বোধ করায় আজকে আর বাড়িতে না ফিরতে মনস্থির করল অসহায় বুড়ো গাধা। সে ঐ ছেলেকে একশোবার অভিশাপ দিতে দিতে মাঠ পেরিয়ে বনের দিকে পথ চলল।
ধীরে ধীরে পথ চলতে চলতে গিয়ে সন্ধার দিকে যখন বনে পৌছল তখন সে দেখল এক শেয়াল ধীরে ধীরে বন থেকে বেরুচ্ছে। শেয়ালের সামনে পড়াতে সে জানতে চাইল বনে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া যায় কি-না।
হাসতে হাসতে শেয়াল বলল তবে আমি গ্রামের দিকে ছুটছি কেন?
- না মানে বলছিলাম বনে তো আর পাজি মনুষ্য থাকে না। হয়ত ওখানে ইচ্ছেমত খাবার খাওয়া যাবে।
- আরে নাহঃ গাধা মিয়া। বনে কিচ্ছু নাই উল্টা বাঘের পেটে ক্ষিদে থাকলে তোমারেও খাইয়া ফেলবে।
হায়ঃ হায়ঃ বলিস কি-রে? তাইলে তো ঐদিকে আর যাওয়া যাবে না। ভাবছিলাম গ্রামে বেগার খাটতে খাটতে যে জীবন পার করতেছি উহা বনে গেলে ভাল হইয়া যাইবে। কিন্তু একি?
- শুনো মিয়া, তোমারে আমি ভাল করে চিনি। তোমার পতিবেশি আছে না? ওর ক্ষিরাই ক্ষেত আছে। চলো, ওখানে গিয়া ইচ্ছামত খাওয়া যাবে।হু।
গাধার মাথায় কোনদিনই এই বুদ্ধি আসেনি যে কৃষকের শস্য, সবজি এইগুলা খাওয়া যায়। শেয়ালের কথায় গাধা যেন রীতিমত নাচতে শুরু করে আরকি।
শেয়াল তাকে নিয়ে চলল ক্ষিরাই ক্ষেতে। মনের সুখে দুজন শস্য খেতে লাগল। বিশেষত গাধা গোগ্রাসে যেন গিলতে লাগল। যখন দুজনেরই পেট মোটামুটি ভরপুর তখন গাধা ডাকল-
- ও শেয়াল ভাই। খাওয়া কি শেষ হয় নাই?
- নাঃ আরো কয়েক আইটেম চেক করে নি।
- ভাল। এই সুযোগে আমি গানটি গেয়ে নিই।
- না না না,গাধা ভাই। কোন গান চলবে না। ক্ষেতের কোনায় যে ছোট্ট ঘর দেখা যায় ওখানে চৌকিদার থাকে। সে জেনে ফেললে দুই জনেই মাইরপিট খাওয়া লাগবে।
- না ভাই, আমি অতো শত বুঝি না। আমার গান গাওয়া শুনে সে দেখবি আরো কয়েকখানা শস্য উপহার দিবে। স্বয়ং ওস্তাদ আমার গানের প্রশংসা করে আর এই চামচা চৌকিদার আর কি? হেঃ
শেয়াল বহুত বুঝিয়ে সুজিয়ে গাধার গান গাওয়া থামাতে চেস্টা করল। কিন্তু গাধার এক কথা, আমি প্রমাণ পাইয়াছি আমার গানের গলা ভাল। তুই বনে থাকা শেয়াল উহার বুঝবি কি?
অগত্যা শেয়াল তার লেজ গুটিয়ে পলায়ন শুরু করল আর এইদিকে গাধা ঢোল হয়ে বসে ক্ষিরাই ক্ষেতের মাঝে হেঁড়ে গলায় চেঁচানো শুরু করল।
গ্রামের বহু লোকের ঘুম গেল ভেঙে। এর মধ্যে আবার ক্ষিরাই চুরি করে খাওয়া। চৌকিদার থেকে শুরু করে গ্রামের বেশ কয়েকজন যুবক লাটি দিয়ে গদাম দিতে দিতে তাকে নিয়ে এল ধোপার বাড়িতে।
ধোপা দেখল গাধা মহাশয় খুব বেশি করে পিটানি খেয়ে ফেলেছে আর এর কান্ড কুকীর্তি শুনে ধোপা মহাশয়ের মেজাজ গেল আরো চরমে। মনে স্থির করলেন আজ এই গাধাটাকে জ্যান্ত মাটি চাপাই দেওয়াই হবে উচিত শাস্তি। উহার বয়স বেশি হইয়া গেছে, আর কাম দিব না। খালি উল্টাপাল্টা করতে থাকবই। এই জম্মে উহার আর শিক্ষে হবে না।

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:৪৮

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গল্পটা বেশ ভালই এগুচ্ছিলো তবে শেষটায় ঠিক জমলো না।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১২

জ্যাকেল বলেছেন: গল্পটা আবার পড়ার নেমন্তন্ন রইল।

২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:৫৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হু হাহাহাহাহা হাসতে হাসতে শেষ আউজকা :D

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৪

জ্যাকেল বলেছেন: =p~ =p~ হেঃ হেঃ হেঃ আপা।

৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:০০

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: গাধা খুবই নিরীহ একটি প্রাণী যদিও তার আওয়াজ (ডাক) কিছুটা কর্কশ এবং আমাদের দেশে গাধা এখন নেই বললেও চলে । যদিও পাশের দেশের সরকার প্রধান আমাদের দেশকে কিছু গাধা উপহার দিয়ে গাধার বংশ বৃদ্ধি ও তাদের টিকিয়ে রাখার প্রয়াস চালিয়েছেন সভ্যতার অগ্রগতিতে যদিও গাধার প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমে গেছে তবে কেন যে গাধা খালি বার বার ফিরে আলোচনায় চলে আসে তাই বুঝিনা।

তার পরও জয়তু গাধা ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৫

জ্যাকেল বলেছেন: গাধার জয় হইয়া গিয়াছে অলরেডি ভাইসাহেব। তাই জয়তু গাধা! সে মন জয় করে ফেলেছে সকলের।

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:২১

জিকোব্লগ বলেছেন:



পোস্ট পড়ে অনেক হাসি পেল। কিন্তু শেষের দিকে গাধার চোখ দিয়ে পানি
বেরুচ্ছে, পড়ে কষ্ট পেলাম। জ্যান্ত মাটি চাপা দেওয়া আরো কষ্টদায়ক।
আপনি তার চেয়ে উহাকে খোঁয়াড়ে ভরে দিয়ে সমাপ্তি টানতে পারতেন।

পোস্টের শেষে ভালোই বলেছেন, এই জম্মে উহার আর শিক্ষে হবে না।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৬

জ্যাকেল বলেছেন: শিক্ষা কোন বয়েস নাই অনেক শুনেছি কিন্তু উহার বেলায় তাহা প্রযোজ্য নহে।

৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:২৪

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: নিজেদের ভবিষ্বৎ জেনেও ,
কিছুই শিখবোনা।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৬

জ্যাকেল বলেছেন: উহাদের ভবিষ্যৎ সম্ভবত আঁধারেই ভরপুর ভাইজান।

৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:৩৭

জটিল ভাই বলেছেন:
গল্প হিসেবে ঠিক আছে। কিন্তু অনেকেতো গল্পের চেয়ে বেশিকিছু আশা করে =p~

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৮

জ্যাকেল বলেছেন: =p~ =p~

৭| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:১৬

সোবুজ বলেছেন: বোকারা তিন বার হাসে।কি কি কারনে হাসে এখন আর মনে নেই।তাই হাসি পায় না।

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ৯:০০

জ্যাকেল বলেছেন: পেত্থম বার হাসে হুদাহুদি
দিত্তবার হাসে অন্যের হাসি দেখে
তিত্তবার হাসে কৌতুক বুঝতে পেরে

এমনই শুনিয়াছিলাম।

৮| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১০:৪৬

শায়মা বলেছেন: গরু আর গাধার মজার গল্প

এক কৃষকের ছিল একটি গাধা ও একটি গরু। কৃষক বোঝা আনা-নেওয়া ও চলাচলের বাহন হিসেবে গাধাকে ব্যবহার করতো আর গরু দিয়ে হালচাষ করতো। গম ও ধান মাড়াইয়ের কাজেও গরুকে ব্যবহার করা হতো।
একদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একনাগাড়ে কাজ করে গরু যখন ঘরে ফিরলো তখন অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে ক্লান্ত হয়ে একা একাই বিড়বিড় করে কী যেন বলছিল। গরুকে বিড়বিড় করতে দেখে গাধা বললো :
গাধা : আরে বাবা, হয়েছে কী? বিড়বিড় করে কি বলছো?
গরু : তোরা গাধার দল আমাদের দুঃখ-কষ্টের কি বুঝবি ? আমাদের দুঃখ-কষ্ট কেউ বুঝেনারে, কেউ বুঝে না।
গাধা : বুঝবো না কেন, অবশ্যই বুঝবো। তাছাড়া তুই যেমন বোঝা টানিস আমরাও তেমনি বোঝা টানি। আমাদের মধ্যে তফাৎটা কোথায় দেখলি!
গরু : তফাৎ অবশ্যই আছে। গাধাকে বোঝা টানা ছাড়া আর কোনো কাছে ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু জমি চাষ করা, ফসল মাড়াই করা, কলুর ঘানি টানা এসব কষ্টের কাজ আমাদের করতে হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর ব্যথা-বেদনায় সারারাত চোখে ঘুম আসে না। তোদের কি এত কষ্ট করতে হয়?

গরুর কষ্টের কথা শুনে গাধার মনটা খারাপ হয়ে গেল। গরুকে কষ্ট থেকে রেহাই দেয়ার জন্য সে একটা বুদ্ধি বের করলো। এরপর গরুকে উদ্দেশ্য করে বললো :
গাধা : তুই যদি চাস তাহলে আমি এমন একটা বুদ্ধি দিতে পারি যাতে তোকে আর মাঠে যেতে হবে না।
গরু : গাধার মাথায় আবার বুদ্ধি আছে নাকি ? না না তোর বুদ্ধি অনুযায়ী চলতে গেলে আমার বিপদ আরো বাড়বে।
গাধা :শোন্ ! মানুষ আমাদেরকে যত গাধা মনে করে আমরা কিন্তু আসলে তত গাধা নই। আর এ জন্যইতো আমাদেরকে হালচাষ ও ঘানি টানার কাছে কেউ লাগাতে পারে না। তুই একবার আমার কথা অনুযায়ী কাজ কর,তাহলে দেখবি তুইও আমার মতো সুখে আছিস।
গরু : ঠিকাছে বল দেখি, তোর বুদ্ধিটা কি ?
এরপর গাধা গরুকে অসুস্থ হবার ভান করতে পরামর্শ দিলো। গরু নিজেকে বাঁচানোর জন্য গাধার পরামর্শ অনুযায়ী হাত-পা সোজা করে ঘরে শুয়ে রইল এবং হাম্বা হাম্বা রবে ‘উহ্‌ আহ্‌’ করতে লাগলো। কৃষক এসে উঠানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো। তখন বাধ্য হয়ে গোয়াল থেকে বের এলো এবং অন্য কোন উপায় বের করার জন্য চিন্তা করতে লাগলো।
কৃষক চলে যাওয়ার পর গরু গাধাকে ধন্যবাদ দিল। ধন্যবাদ পেয়ে গাধাও খুশীতে নেচে উঠলো। কিন্তু গাধার খুশী বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। কিছুক্ষণ পরই কৃষক গোয়াল ঘরে ফিরে এলো এবং গরুর বদলে গাধাকেই মাঠে নিয়ে গেল। গাধার কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল বেঁধে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা জমি চাষ করার পর কৃষক কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেয়ার জন্য একটি গাছের ছায়ায় বসলো। এ সময় গাধা মনে মনে ভাবতে লাগলো :
গাধা : গরুকে বাঁচাতে গিয়ে আমি নিজেই বিপদে পড়ে গেলাম! সত্যি সত্যিই আমি একটা গাধা। তা না হলে এমন বোকামী কেউ করে?
এসব ভাবার পর নিজেকে বাঁচানোর জন্য গাধা চিন্তা করতে লাগলো। হঠাৎ সে গরুকে দেয়া বুদ্ধিটিই কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল। সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী গাধা জমিতে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো এবং কান ফাটা চিৎকার দিয়ে আকাশ-বাতাস ভারী করে তুললো চিৎকার শুনে কৃষক গাধার কাছে এলো। এরপর তাকে মাটি থেকে উঠানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু কিছুতেই উঠাতে পারলো না। এরপর কৃষক তার লাঠি দিয়ে গাধাকে বেদম পেটাতে শুরু করলো। পেটাতে পেটাতে কৃষক বললো :
কৃষক : মুর্খ কোথাকার! দেখতেই পাচ্ছিস, গরুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এরপরও সব জেনে শুনে তুই কুড়েমি শুরু করেছিস!তোর দুধ কোন কাজে আসে না, গোশতেও কোন ফায়দা নেই। তারপরও ভেবেছিস তোকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবো? আজ যদি কাজ না করিস তাহলে তোকে মেরেই ফেলব।
গাধা দেখল অবস্থা বিপজ্জনক। তাই সোজা হয়ে দাঁড়ালো। প্রথম দিকে বিরক্তির সাথে এবং ধীরে ধীরে মনোযোগ দিয়ে কাজে লেগে গেল। কাজ করার সময় গাধা বিড়বিড় করে বলতে লাগলো- যেভাবেই হোক আজ রাতে গরুকে কৌশলে পটাতে হবে যাতে কাল সকালে মাঠে যায়।
যাই হোক, সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে বাড়ীতে ফিরল গাধা। বাড়ী ফিরেই সোজা গিয়ে ঢুকলো গোয়াল ঘরে। গাধাকে দেখেই গরু নড়েচড়ে বসল। এরপর বললো:
গরু: মাঠ থেকে এলি নাকি? এবার নিশ্চয়ই দেখেছিস, কি কঠিন কাজইনা আমাদের করতে হয়!
গাধা : না না, মোটেই কঠিন নয়। আমার তো মনে হয়, খুবই আরামদায়ক এবং সোজা কাজ এটি। কিন্তু অন্য একটি বিষয়ে আমার মনটা ভীষণ খারাপ। তোকে বললে তুইও কষ্ট পাবি।
গরু : হাল চাষের চেয়েও কষ্টের কিছু আছে নাকি? ঠিকাছে খুলেই বল, কষ্ট পাবো না।
গাধা : ব্যাপারটা তেমন কিছু না। আজ দুপুরে যখন মাঠে কাজ করছিলাম, তখন মালিক তার এক বন্ধুকে বলছিল, আমার গরুটা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে । মনে হয় বাঁচবে না। তাই ঠিক করলাম, কাল যদি ভাল না হয় তাহলে জবাই করে ফেলবো।
এ কথা শুনে গরু ভয়ে কাঁপতে লাগলো। তারপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল :
গরু : তুই সত্যি বলছিস তো! যদি তাই হয় তাহলে কাল থেকেই কাজে লেগে পরতে হবে। মরার চেয়ে কাজ করে খাওয়া অনেক ভাল। তোর মত গাধার বুদ্ধিতে চলতে গিয়েই তো আমার সামনে বিপদ এসে হাজির হয়েছে। আর কোনদিন আমি তোর কথা শুনবো না।
গাধা: তোরে বুদ্ধি দিয়ে তো আমিও কম শাস্তি পেলাম না। আমি তোর উপকার করতে গেলাম আর তুই কিনা আমাকে দোষ দিচ্ছিস! গরুর দল বড়ই অকৃতজ্ঞ।
এভাবে কথা কাটাকাটির মধ্যদিয়ে রাত পোহালো। পরদিন সকালে কৃষক এসে গরুকে ধাক্কা দিতেই সে লাফিয়ে উঠলো। তখন গরু আর গাধাকে নিয়ে সে মাঠের দিকে রওনা হলো। যাওয়ার সময় কৃষক তার ছেলেকে ডেকে বললো :
কৃষক : তুই আরেকটি লাঙ্গল জোয়াল নিয়ে আয়। গাধাকেও আজ থেকে গরুর পিছু পিছু হাল চাষে কাজে লাগাবি! আর শোন, আরেকটা মোটা লাঠিও নিয়ে আসিস। গাধা আবার ছংবং করতে পারে।


হা হা এই গল্পটা পড়ো ভাইয়ামনি..... শুধু গাধার গল্প পড়ে পড়ে আমরা টায়ার্ড হয়ে গেছি।

গরু আর গাধা দুইটার গল্পই পড়ো :) :P

https://golperjhuri.com/story.php?id=5698

১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১১:১৫

জ্যাকেল বলেছেন: =p~ =p~ হাঃহাঃহাঃ সেই গল্প তো আরও মজার ঠেকতেছে! তবে ইহা পোস্ট করে দিতে পারতেন, সবাই পড়তে পারতো।

৯| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১১:২২

শায়মা বলেছেন: এইটা পোস্ট করে আর কি হবে?

দুনিয়ায় কি গরু গাধার অভাব আছে?

যেমনই গরু গাধার অভাব নেই তেমনই তাদের নিত্য নতুন গল্পেরও অভাব নেই।

শুধু শুধু পুরান গল্প পড়ায় কি হবে??

নতুন গুলায় সবাই পড়ুক। :)

১৮ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:২৮

জ্যাকেল বলেছেন: হা:হা:হা: নতনু গল্প খুইজ্জা বাইর করতে হইব। তবে আমি এইটা খুইজা পাইলাম।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:২৯

জ্যাকেল বলেছেন: Click This Link

১০| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:০৯

জটিল ভাই বলেছেন:
@নানিশাশুড়ি
হুঁ! ব্যাপার কি? তুমি দেখছি গাঁধাকে বুদ্ধিমান প্রাণীর কাতারে নিতে উঠে পরে লেগেছো? তবে তোমার গপ্পোটা জব্বর হয়েছে। আমি অবশ্য পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম শেষে না গাধাকে গরু মনে করে দুধ দোহন করতে গিয়ে বেইজ্জতির সৃষ্টি হয় =p~

১৮ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:৩১

জ্যাকেল বলেছেন: উটুবে এইটা পাইলামঃ Click This Link

এই ভিডুর গাধা'কে দেখে ব্লগের কোথাকার কোন এক গাধার কথাই বারবার মনে হয়।

১১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১২:৩৪

জুল ভার্ন বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ আপনি আসলে একটা চীজ!

১৮ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:৪১

জ্যাকেল বলেছেন: =p~ =p~ চীজ ফ্যাক্টরি দিয়াম ভাবতাছি।

১২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:২৪

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: শায়মা এবং আপনার গল্প দুটোই ভালো হয়েছে; পুরনো গল্প তারপরও ভালো লেগেছে।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:৪২

জ্যাকেল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইসাহেব, গল্পটি ভাল লাগাতে সার্থকতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.