নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন বাজেট ট্রাভেলার।

সারাফাত রাজ

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থান হচ্ছে বান্দরবান আর আমি একজন পরিব্রাজক।

সারাফাত রাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কম খরচে আবার ভারত পর্ব-১৪ ( লাদাখের পথে, রোথাং পাসঃ আধিক্য মানালি থেকে কিলং -১)

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৮



আগের পর্ব
পরের পর্ব
অন্য পর্বগুলি

২৪শে সেপ্টেম্বর’১৫
ভোর পাচটায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে গোসল করে নিলাম, অবশ্যই ঠান্ডা পানি দিয়ে। কারণ শরীরে একবার গরম পানি ঢালা শুরু করলে তা থেকে বের হয়ে আসা খুবই মুশকিল। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি তখনো সূর্য ওঠেনি আর বাইরে কোন লোকজনও নেই। খুবই ঠান্ডা , শরীরে দুটো সোয়েটার চাপিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।









কয়েকবার পুরো ম্যাল চত্ত্বর চক্কর দিলাম। মানালিতে সবুজের পরিমাণ অনেক বেশি। তারপরও আমার কাছে মনে হচ্ছে মানালির চেয়ে সিমলা অনেক বেশি সুন্দর ছিল।







প্রচন্ড গর্জন শুনে ছুটে গেলাম সে ধারার দিকে। মানালির বিপাশা দেখতে সত্যিই খুব সুন্দর। সাদা পাহাড়ের পানি সবুজ পাহাড়কে ডিঙিয়ে প্রবল বেগে ধেয়ে চলেছে। আর তার গর্জনে কান পাতা দায়।















কিছুক্ষণ বিপাশার খেলা দেখে চললাম বাসস্ট্যান্ডের দিকে। ভাবলাম লাদাখের রাজধানী লেহ যাবার খোজখবর নিয়ে মানালির অন্যান্য দ্রষ্টব্য স্থান ঘুরে দেখব। বিশেষ করে হিড়িম্বা দেবির মন্দিরটা দেখার আমার খুবই ইচ্ছা।



ম্যালের সঙ্গেই বাসস্ট্যান্ড। এখানেও দেখি যাত্রীদের জন্য ভালো ব্যাবস্থা। এমনকি লাগেজপত্র জমা রাখার জন্য ক্লক রুমও আছে। তো সেই বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে আমার মাথায় বাজ পড়লো। সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখের পর থেকে নাকি মানালি থেকে লেহ যাবার সব বাস বন্ধ হয়ে যায়। তখন নাকি লেহ যাবার উপায় হচ্ছে মানালি থেকে চণ্ডীগড় গিয়ে সেখান থেকে প্লেনে করে লেহ যাওয়া।

আমি একজন গরিব মানুষ। আমি কিভাবে প্লেনে উঠবো! তাছাড়া কষ্ট মষ্ট করে প্লেনে উঠলেওতো আশেপাশের কিছু দেখা যাবে না। আমার তো লেহ শহর দেখার ইচ্ছা নেই। আমার ইচ্ছা মানালি থেকে লেহ যাবার পথটা দেখার। কিন্তু এখন সেটি সম্ভব নয় শুনে খুবই মন খারাপ হয়ে গেল।

আল্লাহর উপর ভরসা করে আশেপাশে খোঁজ নেয়া শুরু করলাম। উপরওয়ালার অসীম করুনায় জানতে পারলাম কিছুক্ষণের মধ্যে কিলং এর উদ্দেশ্যে একটা লোকাল বাস ছেড়ে যাবে। কিলং হচ্ছে লাদাখের রাজধানী লেহ শহরে যাবার পথে পড়ে লাহুল এন্ড স্পিতি জেলার ছোট্ট একটা শহর। ভাবলাম লেহ পর্যন্ত যেহেতু যাওয়া হচ্ছে না, তাহলে তার অর্ধেক পথ কিলং থেকেই ঘুরে আসি।
দৌড়ে গেলাম নাস্তা করতে ম্যালের দিকে। দুটো ডিমের অমলেট আর চার পিস পাউরুটি। গরম গরম খাবারটা অমৃত মনে হল। খেয়ে হোটেলের রুমে ফিরে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে আবার দৌড় দিলাম বাসস্ট্যান্ডের দিকে। স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি তখনো কিলং এর বাস আসেনি।

মানালির বাসস্ট্যান্ড খুবই ছোট। খুবই খারাপ লাগছে যে মানালির কিছুই দেখা হলো না। আসলে সেতুদের জন্য সিমলাতে আমার পুরো একটা দিন নষ্ট হয়ে গেছে। সিমলাতেও আমি ঠিকমতো কিছু দেখতে পারিনি আবার মানালিতেও কিছু দেখা হলো না। একটা দিন এখানে স্টে করতে পারলে আমি পুরো মানালি কভার করতে পারতাম। তবে বেশি খারাপ লাগছে কাল রাতে মানালির মিষ্টি খায়নি বলে। এখন এই সকালে কোথাও সেই মিষ্টি খুঁজে পেলাম না।

কিছুক্ষণের মধ্যেই কিলং এর বাস চলে এলো। আমি ঝাপিয়ে আগে উঠে পড়লাম। বাসের বাম সারিতে দুটো করে আর ডান সারিতে তিনটে করে সিট। এতো ভালো লোকাল বাস আমি জীবনেও দেখিনি। আমাদের ঢাকার লোকাল বাসের কথা ভেবে প্রায় কান্না চলে এলো। আস্তে আস্তে দু-চারজন যাত্রী এলো। তাদের মধ্যে গেরুয়া পোশাক পড়া বৌদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। দেখলাম এক সাদা চামড়ার ফিরিঙ্গিও উঠলো। তার বিশাল ব্যাগপ্যাক আমার পায়ের কাছে রেখে পিছনের সিটে গিয়ে বসলো। তার এই ব্যাগপ্যাক দেখে আমি হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরতে লাগলাম!










আমি কিন্তু আগেই বাসে উঠে সামনে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসে পড়েছি। একদম সামনের সিটটা অবশ্য কন্ট্রাকটারের। তার পিছনের দুই সিটে আমি একা। আমার বামপাশে জানালা আর সামনে বাসের সামনের বিশাল কাঁচ। মনে হচ্ছে আমি 3D সিনেমা দেখছি।



ঠিক সাড়ে সাতটায় বাস ছেড়ে দিলো। বাস তখন অর্ধেকও ভরেনি। কন্ট্রাকটার বাসের দরজা বন্ধ করে বাঁশি বাজালো আর ড্রাইভার গাড়ি ছেড়ে দিলো। বাস প্রথমেই বিপাশা নদী পার হলো আর তারপর ছুটে চললো বরফের পাহাড়গুলোর দিকে। কন্ট্রাকটার এসে ছোট হাত মেশিন থেকে টিকিট বের করে দিল আর আমিও ভাড়া চুকিয়ে দিলাম। টিকিটে ছাপানো অক্ষরে লেখা রয়েছে মানালি থেকে কিলং এর দূরত্ব ১১৫কিঃমিঃ, ভাড়া ১৭০ রুপি।


এবার কিছু জ্ঞান দান করা যাক। মানালি থেকে কিলং যাবার রুটটি হচ্ছেঃ-
মানালি—মারি—রোথাং পাস—গ্রামফু—খোকশার—শিশু—টান্ডি—কিলং।
এদের উচ্চতাগুলি হচ্ছেঃ-
মানালি ৬,৪০০ফিট
মারি ১০,৮০০ফিট
রোথাং পাস ১৩,০৬০ফিট
গ্রামফু ১০,৫০০ফিট
খোকশার ১০,২৭০ফিট
শিশু ৮,৪৩০ফিট
টান্ডি ১০,১০০ফিট
কিলং ১০,০০০ফিটের উপরে।

*** আমার তথ্যে কিছুটা ভুল থাকতে পারে। তবে মোটামুটি উচ্চতাগুলি এরকমই। বরফের কারণে কিছুটা কমবেশি হয়।


বাস চলা শুরুর কিছুক্ষণ পর আমি যেন মারা গেলাম। ও আল্লাহ! এত্তো সুন্দর জায়গা! গাদা গাদা পাহাড়ি ঝরনা আর প্রত্যেক বাড়িতে আপেল গাছ। গাছে গাছে লাল টসটসে আপেল ধরে আছে।





পাহাড়ি ঝরনার পরিমান এতো বেশি যে আমার মনে হচ্ছে প্রত্যেক বাড়িতে কমপক্ষে একটি করে প্রাইভেট পাহাড়ি ঝরনা আছে।











পাহাড়ের গা পেচিয়ে পেচিয়ে রাস্তা চলে গেছে। বাস সেই রাস্তা ধরে উঠে চলেছে। চারপাশে শুধু সবুজ আর সবুজ। তার মাঝে ভেড়া চড়ে বেড়াচ্ছে। একটা ইয়ক দেখতে পেলাম।





বরফের চুড়াগুলো যেন আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আর আকাশটা ভয়ঙ্কর ঘন নীল।



মাঝে মাঝে দেখছি রাস্তায় ধ্বস নেমেছে। খুব সাবধানে বাস সেখানে পার হচ্ছে।



সোয়া আটটার দিকে দেখি সোলং ভ্যালিতে যাবার রাস্তা। সেদিকে না গিয়ে বাসটা ডানদিকে রোথাং পাসের দিকে ঘুরে গেল।






যতোই সামনে যাচ্ছে অপরুপ দৃশ্যের পরিমান ততোই বেড়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে।























































ঠিক নটার দিকে বাস পাচ-ছটা দোকান আছে এমন জায়গায় এসে থামলো। এখানে বিশ মিনিটের জন্য বিরতি। এটি রোথাং পাসের নিচের অংশ।








বাস থেকে নেমে দেখি ভয়ঙ্কর বাতাসে প্রায় উড়ে যাচ্ছি। আশেপাশে যে কয়টা দোকান আছে সবগুলিই খাবারের দোকান। আর সেগুলোতে সব সাদা চামড়ার ট্যুরিস্টে ভরা। পাশেই দেখি একটা মন্দির। উঠে পড়লাম সেটাতে। মন্দিরটিতে দেখি লাল হলুদ নীল সবুজ সহ বিভিন্ন রঙের ছোট ছোট কাপড় ঝুলানো রয়েছে। কোনরকমে কয়েকটা ছবি তুলে দৌড়ে বাসে উঠে পড়লাম। ভয়ঙ্কর ঠান্ডা বাতাসে বাইরে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। অথচ কি ঝকঝকে রোদ চারিদিকে। বাসে বসেই সবকিছু দেখছি। সব ট্যুরিস্টরা জীপ গাড়ি রিজার্ভ করে এসেছে। খাবারের দোকানগুলিতে দেখলাম টয়লেটের ভালো ব্যাবস্থা রয়েছে, এবং অবশ্যই তা ঐ দোকানের কাস্টমারের জন্য বরাদ্দ।










২০মিনিট বিরতির পর বাস আবার চলা শুরু করলো। পেচিয়ে পেচিয়ে উঠে যাওয়া পথ বেয়ে রোথাং পাসে পৌছালো।






জায়গাটা ১৩,০৬০ ফিট উঁচু। রোথাং পাসের বাংলা মানে হচ্ছে মৃতদেহের স্তুপ। মানালি থেকে লেহ পর্যন্ত যেতে হলে যে কয়টি ভয়ঙ্কর পাস পার হতে হয় তার মধ্যে সর্বপ্রথমটি হচ্ছে রোথাং পাস। বাস যখন পাহাড়টা পার হচ্ছে তখন দেখলাম চূড়ার শীর্ষে বরফ জমে আছে। এতো কাছ থেকে এতো বরফ দেখা আমার জীবনে এই প্রথম। খুব অল্প পরিমানে ট্যুরিস্ট রয়েছে সেখানে। কিন্তু আফসোস আয়ত্তের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও আমাকে চলন্ত অবস্থায় শুধুমাত্র বরফের চূড়া দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো।













এই পোস্টে ছবি বেশি হয়ে গেছে। আপনারা কেউ বিরক্তি প্রকাশ করলে পরের পর্ব থেকে ছবি কম দেব।

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৯

তার আর পর নেই… বলেছেন: কিছু কিছু ছবি চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো!+++

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আমি আসলে ছবি তুলতে পারিনা। কিন্তু প্রকৃতির সৌন্দর্যে এরকম ছবি এসেছে। পরে ছবিগুলো দেখে আমিও মুগ্ধ। তবে ছবির চাইতেও জায়গাটা সুন্দর ছিলো।

২| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৬

কল্লোল পথিক বলেছেন: বাহ!ছবি ব্লগ।। আপনার চোখে লাদাখ দেখলাম।
ধন্যবাদ শুভ কামনা জানবেন।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: ধন্যবাদ।

আমি আসলে ছবি ব্লগ করতে চাইনি, কিন্তু পোস্ট করার পর দেখি ছবি বেশি হয়ে গেছে।

আমি কিন্তু এ পর্বে লাদাখ যেতে পারিনি, তবে পরের পর্বগুলোতে সেখানে নিয়ে যাবার চেষ্টা করবো।

আপনিও শুভকামনা জানবেন, ভালো থাকবেন সবসময়।
ধন্যবাদ।

৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫২

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: প্রকৃতি যে কত সুন্দর হতে পারে তারই প্রমান এই ছবি গুলো!! +++++++++

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। তবে গহীন বান্দরবান কিন্তু আরো সুন্দর।

৪| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৯

রঞ্জন সরকার জন বলেছেন: আপনি একজন ব্যতিক্রমি ট্রাভেলার। মানালিতে ঘুরতে পারলেন না বলে মনটা আমারই খারাপ হয়ে গেল। হিমাচল-কাশ্মীর জায়গাটা আসলেই স্বর্গীয়।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: নারে ভাই, মানালিতে ঘুরতে না পারার দুঃখ আমার নেই। সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখের পর মানালি থেকে লাদাখ যাবার সরাসরি বাস বন্ধ হয়ে যায়। তখন মানালি থেকে কিলং পর্যন্ত কিছু লোকাল বাস চলে। আমি যদি সেদিনেরই লোকাল বাসটা না ধরতাম তাহলে হয়তো আমার আর জীবনেও লাদাখের পানে যাওয়া হতো না। মানালিতে বছরের যেকোন সময় যাওয়া সম্ভব কিন্তু লাদাখের রাস্তা বছরে ৭ মাসের বেশি বন্ধ থাকে। আমি গিয়েছিলাম আর আমার পিছে পিছে রাস্তা বন্ধ হতে শুরু করেছিল। আমি খুবই ভাগ্যবান যে আমি ঐ বছরের লাদাখের শেষ পর্যটকদের একজন।

আর জায়গাগুলো সত্যিই স্বর্গীয়।
ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন সবসময়।

৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৮

জ্বি হুজুর বলেছেন: এই রকম পোষ্টই তো চাইছিলাম। অামারে নিবেন অাপনার সাথে ?

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: আমার সাথে যেতে হবে কেন? :D একা ঘুরে আসেন, ;) মজা পাবেন। :-P আমিও পেয়েছিলাম। B-))

৬| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২০

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: জায়গাটা আসলেই ভয়ন্কর সুন্দর। বাংলাদেশি মানুষ টাকা পাচার কইরা কানাডা আমেরিকা নিয়া আসে; আমি ভাবতাছি টাকা পয়সা হইলে কানাডা থাইকা টাকা নিয়া ঝিরি ঝিরি শব্দ করে এগিয়ে চলা পাহাড়ী ঐ নদী গুলোর পাশে একটা বাড়ি কিনা ফেলামু। ঘুমানোর রুমের জানালাটা থাকবে ঠিক নদির পাশে। সেই সাথে নদীর পাশে একটা উঠান।


আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর জায়গা গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আপনি বাংলাদেশী, সে হিসাবে ইন্ডিয়াতে জমি কিনতে পারবেন কিনা জানি না। তবে কানাডা থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে এসে বান্দরবানে শঙ্খ নদীর ধারে একটা বাড়ি বানাতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় সেটা যদি তিন্দুতে হয়। কল্লোলিনী শঙ্খের ধারে তিন্দুর আদিবাসীদের মমতার মাঝে গড়ে ওঠা আপনার পর্ণ কুটিরে আমি কিন্তু মাঝে মাঝে বেড়াতে যাবো, আপনি কিন্তু না বলতে পারবেন না।


আপনাকেও ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবসময়।

৭| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: পরিচিত মানুষদের বান্দর বনের এত সুন্দর সুন্দর ছবি দেখেছি যে ঐ এলাকায় একটা বাড়ি কিনতে না পারলেও একটা মাচা ঘর ভাড়া নিয়ে পুরো একটা বর্ষা কাল থাকার ইচ্ছে আছে। বান্দরবনটা অনেক সুন্দর এলাকা তবে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পিত নিতির অভাবে সেখানে পর্যটন বিস্তার করে না। পর্যটন বিস্তার করলেই ঐ এলাকার মানুষের কাজে সুযোগ হবে, তাদের উৎপাদিত পণ্য বিশেষ করে ফল-মুল ও তাতে বুনা কাপড় এর ক্রেতা পাবে পরিশেষে দারিদ্রতা কমে যাবে। দারিদ্রতা কমে গেলে ঐ এলাকার মানুষ সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত হবে না।


আবারও আপনাকে ধন্যবাদ ভাল কিছু জায়গার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫২

সারাফাত রাজ বলেছেন: প্রথমেই আপনার একটা ভুল সংশোধন করে দিই। ''বান্দর বন'' নয়, শব্দটা হবে "বান্দরবান"।


আশা করি কোন একদিন আপনি বান্দরবানের কোন আদিবাসী এলাকায় মাচা ঘর ভাড়া নিয়ে পুরো এক বর্ষাকাল থাকতে পারবেন। ( সহকারী হিসাবে আমাকেও নিয়েন :-B )।

আমি যতোদূর জানি, বাঙালিদের বোধহয় বান্দরবানে জমি কেনার ব্যাপারে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে।

শুধু বান্দরবান নয়, পুরো বাংলাদেশ নিয়েই বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পিত নীতির অভাব আছে। বাংলাদেশ ভারতের তুলনায় একেবারেই পর্যটন বান্ধব নয়। আমি সত্যিকার ভাবেই আশা করি শুধু বাংলাদেশ সরকার নয় আমরা সমস্ত জনগন পুরোপুরি পর্যটন মনষ্ক হবো।

তবে এ একদিকে ভালো যে, সরকার বান্দরবানের পর্যটন উন্নয়নে সেভাবে এখনো নজর দেয়নি। বান্দরবান এখনো পর্যন্ত তার আদিম সৌন্দর্যের কিছুটা ধরে রাখতে পেরেছে। সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়ন সেগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে। এমনিতেই আমরা জনসাধারন বান্দরবান অনেকখানি ধ্বংস করে ফেলেছি। ৫ বছর আগে যে বগা লেকের নাম লোকে জানতো না, সেটা এখন দিনে দিনে ময়লার ভাগাড় হয়ে যাচ্ছে।

বান্দরবানের আদিবাসীদের উন্নয়ন অবশ্যই চাই, তবে সেটা অপরিকল্পিত পর্যটন উন্নয়নের মাধ্যমে নয়। তাদের জীবন মান উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে।

বান্দরবানের আদিবাসীরা দরিদ্র, কিন্তু তারা অর্থলোলুপ নয়। তাদের সহজ-সরল হাঁসি আপনাকে পৃথিবীর সব পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি দেবে। এই আদিবাসীরা একেবারেই সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত নয়। তারা খুবই কষ্ট আর পরিশ্রম করে তাদের জীবন অতিবাহিত করে। এরা খুবই সহজ সরল।

তবে তাদের কারো কারো মধ্যে অবশ্যই কিছুটা ক্ষোভ থাকতে পারে। আর এই ক্ষোভ থাকাটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। আমার তো মনে হয় জানোয়ার পাকিস্তানিরা আমাদের সাথে যেমন আচরণ করতো আমরা বাঙ্গালীরাও ঠিক একই আচরণ এইসব আদিবাসীদের সাথে করছি। তবু তারা মুখ বুজে এইসব অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে কতো আদিবাসী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আর বাঙালীদের হাতে নির্যাতিত আর নিহত হয়েছে তার সংখ্যা কি আমরা জানি? এমনকি আমরা এখন তাদের আদিবাসী পরিচয় অগ্রাহ্য করে উপজাতি বলে ডাকছি!

যাই হোক, অনেক কথা বলে ফেললাম। আসলে বান্দরবান আর তার সন্তানদের ভালোবাসিতো এজন্য।
আপনি ভালো থাকবেন সবসময়। শুভকামনা রইলো।

৮| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০০

প্রামানিক বলেছেন: ছবি বর্ণনা ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।

৯| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ছবিগুলো সুন্দর। আপনি ভাগ্যবান, লাদাখের রাস্তা খোলা পেয়েছিলেন। আমি গিয়েছিলাম অক্টোবরে, তাই আমার যাত্রা রোহটাং পাস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। চালিয়ে যান, লাদাখের অপেক্ষায় রইলাম।

০৩ রা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪০

সারাফাত রাজ বলেছেন:
লাদাখ পর্যন্ত যাবার অপেক্ষায় আমিও আছি। টাইপ করা এতো কষ্ট। :-/

তবে খুব শীঘ্রই পাবেন আশা করি।

আপনি রোথাং পাস পর্যন্ত কিসে গেছিলেন? কারণ কোন ধরনের বাহনে যাচ্ছেন তার উপরেও দৃশ্য উপভোগের অনেক কিছু নিরভর করে। আমি একবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে শেয়ার জীপে করে দার্জিলিং গেছিলাম, মনে হয়েছিল মুড়ির কৌটায় করে যাচ্ছি। যাত্রাপথের কিচ্ছু দেখতে পাইনি। এরপর থেকে সাবধান হয়ে গেছি। এজন্য কোথাও যেতে হলে আমি আগে ট্রেন অথবা বাস খুঁজি। জীপের চাইতে বাসের বড় জানালা দিয়ে অনেক আরাম করে অনেক কিছু দেখা যায়। আর জীপের তুলনায় আস্তে চলে বলে একটু সময় নিয়ে উপভোগ করা যায়।

আপনি যখন রোথাং পাস গেছিলেন তখন এই রাস্তার কি অবস্থা ছিলো? বরফ? রোথাং পাসের কি অবস্থা ছিলো? সেখানে কি কি করলেন? কতক্ষণ ছিলেন? সোলাং ভ্যালিতে গেছিলেন? অনেক প্রশ্ন করে ফেলালাম!

তবে আমি অবশ্যই আপনার চেয়ে ভাগ্যবান, কারণ আমি রোথাং পাস টপকে যেতে পেরেছিলাম।
সবশেষে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

১০| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: মাথা খারাপ করা সব ছবি
সুন্দর বর্ণনা খুব ভাল লেগেছে :)

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপু আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

"মাথা খারাপ করা সব ছবি" দেখার পর কি এখন সুস্থ আছেন? B-)) নাহলে আমাকে বলতে পারেন। :#) আমি কিন্তু একজন মনোবিজ্ঞানী :-P

১১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৩

দাড়ঁ কাক বলেছেন: আপনার লেখনী চমৎকার, বাহুল্যবর্জিত ও আন্তরিক। খুব ভালো লাগলো আপনার লেখাগুলো পড়ে। আরো ঘুরে বেড়ান, আরো লিখুন।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২০

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আমি এমনিতেই নাচুনে বুড়ি তার উপর আপনি আবার ঢোলের বাড়ি দিচ্ছেন? :-<

বেড়ানোর কথা শুনলেই আমার মাথা খারাপ হয়ে যায়। আমার পরিবারের সবাই আমার উপর প্রচন্ড বিরক্ত। তারা আমার প্রতি কোন আশা করেন না। আমি শুধুই ঘুরে বেড়াই। আপনি আমাকে আরো উৎসাহ দিচ্ছেন? আমার পরিবারের কেউ জানতে পারলে আপনার খবর আছে :P

হা :P হা :P । আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১২| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:১৬

আলিফ ১২৭৭ বলেছেন: তারমানে আপনি রোথাং পাস ঘুরতে পারেননি?

০৩ রা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: এটি হচ্ছে রোথাং পাসের একটু নীচের একটা অংশ। মানালি থেকে ট্যুরিস্ট বহনকারী সব গাড়ী এখানে এসে থামে। মানে যারা মানালি থেকে রোথাং পাসে হুটোপুটি করতে আসে তাদের ট্যাক্সি এই পর্যন্ত আসে। এরপর সেইসব ট্যুরিস্টরা মানালি থেকে ভাড়া করে নিয়ে আসা গরম জামাকাপড় নিয়ে গাড়ি থেকে নামে, আর তারপর ঘোড়া ভাড়া করে বা পায়ে হেটে বা অন্যকোন ভাবে রোথাং পাসের চূড়ায় ওঠে। সেখানে তারা কিছুক্ষণ লাফালাফি করে। তারপর আবার একইভাবে নীচের স্ট্যান্ড পর্যন্ত নেমে এসে যার যার ট্যাক্সি চেপে মানালির দিকে ফিরে যায়।


আমি যে লোকাল বাসে গিয়েছিলাম সেটিও রোথাং পাসের চুড়ার কিছুটা নীচের স্ট্যান্ডে ২০ মিনিট থেমেছিল। আমিও কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করেছিলাম। তারপর আবার বাসে যাত্রা শুরু করেছিলাম। এই রাস্তাটা রোথাং পাসের চুড়ার উপর দিয়ে গেছে। আমার বাস এই রাস্তা ধরে চলেছিলো। কিন্তু যারা শুধু রোথাং পাসের ট্যুরিস্ট তারা তাদের ট্যাক্সিতে করে এই পর্যন্ত আসতে পারেনি। তাদেরকে নীচের স্ট্যান্ড থেকে ঘোড়া ভাড়া করে আসতে হয়েছিলো। কারণ এখানে একটা সিন্ডিকেট আছে।

আমি লোকাল বাসে করেই রোথাং পাসের শীর্ষ চূড়া পার হয়েছিলাম। শীর্ষ চূড়ায় বাস থেকে নেমে বরফের মধ্যে হুটোপুটি করিনি। আপনি এই পোস্টের শেষের যে ছবিগুলো দেখতে পাচ্ছেন সেগুলো সবই রোথাং পাসের শীর্ষ চুড়ার ছবি। এগুলো সবই বাসে বসে তোলা। যখন রোথাং এর চুড়া পার হচ্ছিলাম তখন এর বরফে মোড়া ছবিগুলো তোলা।


এই ছবিটা রোথাং পাসের চূড়ার একটু নীচে যেখানে বাস থেমেছিলো সেখানকার একটা মন্দির থেকে তোলা।

১৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৪৭

মো:ফয়সাল আবেদিন বলেছেন: ভাই আমার এখনি চলে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে। কি আর করা দুধের সাধ ঘোলে মিঠাচ্ছি আপনার পোষ্ট এর মাধ্যমে। তবে একবার না একবার হিমাচল প্রদেশ ঘুরে আসবই।

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ ভোর ৬:৫৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: হিমাচল প্রদেশে সারা বছরই যাওয়া যায়। আপনি এখনই যেতে পারেন, কোন সমস্যা নেই।

১৪| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আমাদের ঐ যাত্রার রুট প্ল্যান ছিল রোহটাং পাস পর্যন্তই। তাই মিস করার কিছু ছিল না। দিল্লী এয়ারপোর্ট থেকে আটদিনের জন্য আমাদের সাথে রিজার্ভ প্রাইভেট কার ছিল, ফলে সাইট সিয়িং হয়েছে সেইরকম। যখন ইচ্ছে, যেখানে ইচ্ছে গাড়ী দাড় করিয়েছি, ছবি তুলেছি, ঘুরে দেখেছি। দিল্লী-সিমলা, সিমলা-কুফরি-ফাগু, সিমলা-মানালি, মানালি-কুলু-মানিকারান, মানালি-রোহটাং পাস। আশা করি খুব শীঘ্রই সেই ভ্রমণের গল্প নিয়ে পোস্ট দিতে পারব। দুঃখ একটাই, গাড়ীর ফ্রন্ট সিটে বসে করা দারুণ সব ভিডিও, আমার চুরি যাওয়া মোবাইলের সাথে হারিয়ে গেছে। নাহলে অন্তত কিছু শেয়ার দিতাম্‌, কি অপূর্ব সাইট সিয়িং ছিল টানা আটদিন। এখন শুধু দুঃখ আর স্মৃতি, সাথে ক্যামেরায় তোলা কিছু ছবি সম্বল।

ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.