নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটি মুখোশ

শেরিফ আল সায়ার

মানুষ। বড় আজব এই মানুষ। মানুষ নাকি ফানুষ তাও এখন আর বোঝার ক্ষমতা আমি রাখি না। সব ক্ষমতা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে দিন যাচ্ছে নির্জনে। নির্জনে থাকি নিজের সাথে। ধীরে ধীরে নির্জনতা প্রিয় মানুষে রুপান্তরিত হচ্ছি। হয়তো হয়েও গেছি। ইদানিং চলাফেরা করতেও ভয় হয়। চারিপাশে মানুষ দেখি না। দেখি শুধু মুখোশ। মুখোশে-মুখোশে ছেয়ে গেছে গোটা পৃথিবী। নিজের বিভৎস চেহারা সামনে একটি মসৃন আবরন। সেটাই মুখোশ। নিজেকে লুকিয়ে রেখে ভালো মানুষি মুখোশটাকে ইদানিং দেখা যায় বেশী। স্বার্থ এমনই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। স্বার্থ ফুরালেই সব শেষ। মুখোশটা ঠিক তখনই উন্মোচন হয়। বিভৎস সেই চেহারা দেখে বমি চলে আসে। থুথু ছিটিয়ে প্রতিবাদ করতেও উদ্ধত হই। কিন্তু তাও পারি না। এত কাছের মানুষকে তাও করা সম্ভব হয় না। তাইতো নির্জনে চলে গেছি। একদম নির্জনে। হাজার অবিশ্বাস নিয়ে এখন আমিও মুখোশধারীদের মতো হয়ে গেছি। মুখোশটাই হয়ে গেছে জীবনের মূলমন্ত্র। কারণ, জীবন একটি মুখোশ।

শেরিফ আল সায়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রমণ ডায়েরি শেষ পর্ব: রঙিন শহর ব্যাংকক

১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৩৯



ভ্রমণ ডায়েরি পর্ব ১: থাইল্যান্ডের পরিকল্পনা কীভাবে হলো?

ভ্রমণ ডায়েরি পর্ব ২: ‘সেক্স সিটি’ পাতায়া

পাতায়া থেকে ব্যাংকক আমরা রওনা দেই ২ জানুয়ারি। বেলা ১২ টার দিকে পাতায়ার হোটেল থেকে চেক-আউট হয়ে গাড়িতে বসি। এর আগে সুবর্ণভূমি এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি আমরা পাতায়া যাই। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসায় হাইওয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে এবার ব্যাংকক যাত্রা দিনে হওয়ায় হাইওয়ে দেখা সুযোগ হলো।

তাদের হাইওয়ে অসাধারণ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় যানজটের কোনো সম্ভবনাই নেই। এত চওড়া রাস্তার সঙ্গে পৃথক পৃথক লেনও করা আছে। যেমন, বাসের জন্য একটি লেন, হাল্কা গাড়ির জন্য আলাদা লেন এভাবে। রাস্তা থেকে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজের সমারহ, মনে হবে যেন বাংলাদেশ। কিন্তু রাস্তায় তাকালে বুঝবেন এটা বিদেশ। গাড়িও যথেষ্ট আধুনিক। বিশেষ করে বাসগুলোর দিকে তাকালে মনে হবে একদম নতুন। রঙ ওঠানো, গ্লাস ভাঙা এমন কোনো বাস কিংবা গাড়ি চোখেই পড়েনি।

এমনকি রাস্তার কোল ঘেঁষে যেসব বিল্ডিং চোখে পড়েছে সবগুলোই রঙিন রঙে সাজানো। আদর্শ হাইওয়ে হয়তো এটাকেই বলে। গাড়ির গতিও একটি সীমিত কাটার মধ্যে। অর্থাৎ দুর্ঘটনা ঘটলে হবে দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের দেশে প্রতিদিন যে হারে দুর্ঘটনা ঘটে এটা ভয়ঙ্কর। এ নিয়ে দীর্ঘদিন আমাদের দেশের একজন নায়ক, ইলিয়াস কাঞ্চন কাজ করে যাচ্ছেন। যৌবন থেকে কাজ শুরু করেছেন। এখন তো বয়সও হয়েছে লোকটার। তবুও আন্দোলন থেকে এক পাও নড়েনি। এই দেশ একদিন তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবে।

যাইহোক, ব্যাংককে আমরা উঠবো অম্বাসেডর হোটেলে। ইউটিউবে দেখেছি হোটেলটি খুবই সুন্দর। আমাদের আগ্রহও ছিল হোটেলটিকে ঘিরে। বেলা দুইটার মধ্যে অ্যাম্বাসেডর হোটেলে পৌঁছে যাই। যেটা ধারণা ছিল তেমনই হলো। সত্যিই হোটেলটি অসাধারণ সুন্দর। রিসিপশনে দেখলাম, তাদের রুমগুলো ২৫০০-৩০০০ বাথের মধ্যে। আমাদের যেহেতু কসমস হলিডে থেকে হোটেল বুকিং দেওয়া হয়েছে সেহেতু বুঝতে পারছি না কত পড়েছে। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখলে মনে হয় ভালো। সেটা হলো, কেন যেন মনে হলো, স্থানীয় কোনো এজেন্টের মাধ্যমে বুকিং করালে খরচ অনেক কমে আসে। ২৫০০ বাথ থেকেও কম খরচে পাবেন। এর অনেক প্রমাণ আমরা বেশ কিছু বিষয়ে পেয়েছি।

অ্যাম্বাসেডর হোটেল বাঙালি ও ভারতীয়দের কাছে বেশি বিখ্যাত। এই হোটেলের নিচে বাংলাদেশি দোকানও রয়েছে। যেমন, কাপড়ের একটা দোকান চোখে পড়েছে। এছাড়াও অ্যাকটিভিটিজের জন্যও একটা দোকান আছে। সেটাও দেখলাম বাংলাদেশিরা চালায়। বোঝা গেলো প্রচুর বাংলাদেশি ব্যাংককে ব্যবসা কিংবা চাকরি করছে। এবং এটা দৃশ্যমান।

হোটেল রুমটাও খুব পছন্দ হলো। সিজন পাতায়া হোটেল থেকে হাজারগুণ ভালো রুম। এটাকে বলা হয়, ফোর স্টার হোটেল। সুতরাং ভালো হওয়া ছাড়া গতিও নেই।

তবে আমার অভিজ্ঞতা বলে, বাংলাদেশের কক্সবাজার, বান্দরবান, সিলেটে যে হোটেল কিংবা রিসোর্টগুলো আছে সেগুলোর খরচ অস্বাভাবিক বেশি। এরা দিনে-দুপুরে মানুষের পকেট কেটে টাকা নিয়ে যায়। ব্যাংককের মতো শহরে একটা ফোর স্টার হোটেলের রুম খরচ বাংলাদেশি টাকা আসে ৭৫০০ টাকার মতো। আর সেখানে আমাদের দেশের এমন রুমের খরচ ১০ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকা পর্যন্ত যাবে, এর সঙ্গে আবার যুক্ত হবে ভ্যাট-ট্যাক্স-সার্ভিস চার্জ। খুবই দুঃখজনক বিষয়টা। আমার মনে হয় পর্যটনখাতকে নিয়ে সরকারকে সুদূরপ্রসারী ভাবতে হবে। এর মধ্যে হোটেল ও রিসোর্টগুলোর খরচাপাতি নিয়েও ভাবা উচিত।
দুপুরবেলা হোটেলে ফ্রেশ হয়ে ঠিক করলাম লাঞ্চ করবো। তারপর মার্কেটে ঘুরতে বের হবো। শপিং-ই নাকি ব্যাংককের প্রধান আকর্ষণ। সবার কাছে শুনে আমরাও ইউটিউবে দেখে ঠিক করে রেখেছিলাম প্লাটিনাম, প্রাতুনাম ও নিয়ন মার্কেট ঘুরবো। ব্যাংককে থাকবো ২ থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। সময়টা লম্বাই মনে হয়েছিল। ধারণা ছিল ব্যাংককে হয়তো বোরিং সময় কাটবে। এই ধারণাও ভুল ছিল, সেটাও বলবো।

যাইহোক, অ্যাম্বাসেডর হোটেলের মূল গেট থেকে বের হয়ে ডানে একটু এগুলেই একটা বাঙলা রেস্টুরেন্ট আছে। সেটায় না গিয়ে অ্যাম্বাসেডরের পেছনের আরেকটি বাংলাদেশি হোটেলে গেলাম। ভাবলাম, বড় ছেলেকে ভাত খাওয়াতে হবে। কারণ প্রচণ্ড গরমে ফাস্ট ফুড খেয়ে বিপদ হতে পারে। ফাহিম-নদী গেলো একটা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে। বাংলা খাবার খেতে গেলাম যেই রেস্টুরেন্টে সেটা খুব ফাঁকাই পেলাম। কাস্টমার ছিলই না বলতে গেলে। তবে খাবার মন্দ না। মুরগির মাংস, ডাল, ভাত ও আলু ভর্তা নিলাম। খরচ আসলো ৪৬০ বাথ। মন্দ লাগেনি। এত কমে বাংলা খাবার খাবো ভেবেই পাচ্ছিলাম না। যেখানে শুনেছি পার হেডই ৪০০-৫০০ বাথ খরচ পড়তে পারে। সুতরাং এটাও ভুল প্রমাণিত হলো। বাংলা খাবার খেয়েও দিব্যি চলাফেরা করা যাবে। তবে মনে রাখতে হবে, আমরা কিন্তু একটা বাটি মাংশই নিয়েছি। চার পিস ছিল। আমাদের তিনজনের হয়ে গেছে। ডাল ও আলু ভর্তাও এক বাটিই নিয়েছি।

খাওয়া শেষ করে গুগল থেকে দেখলাম প্লাটিনাম মার্কেট বিকাল ছয়টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য দ্রুত বেগে আমরা প্লাটিনাম রওনা দিলাম।
ব্যাংককের টুকটুক আমাদের সিএনজির মতোই। মিটার ছাড়া। এরাও মানুষ ঠকানোর ধান্দায় থাকে। আমরা গুগল করে দেখলাম ব্যাংকক শহরে উবার নেই। তবে গ্র্যাব আছে। এটা উবারের মতোই আরেকটা সার্ভিস। অধিকাংশ সময় গ্র্যাবই ব্যবহার করেছি। এরা অত্যন্ত ভালো। অতিরিক্ত ভাড়া চার্জ করবে না। কিলোমিটার হিসেবে সিস্টেম যেটা দেখাবে সেটাই নেবে। আমরা অ্যাম্বাসেডর থেকে যতবার প্লাটিনাম মার্কেটে গিয়েছি ১০০-১২০ বাথ বিল এসেছে। কিন্তু টুকটুকে যতবার জিজ্ঞেস করেছি, এরা ২০০-২৫০ বাথের নিচে কথাই বলতে চায় না। পৃথিবীর সব অটোরিক্সা চালকদের স্বভাব কি একরকম? শ্রীলঙ্কা ও ভারতেও একই অবস্থা দেখেছি। এখানেও একই চিত্র। আশ্চর্য বিষয়!

ব্যাংককে শপিং:

শপিংয়ে নিতু ও নদীর ধারণা ছিল ১০০-২০০ বাথের মধ্যে ব্যাগ জুতা কিনে ভাসিয়ে দেবে। কিন্তু হায়! প্লাটিনাম গিয়ে তাদের মাথায় হাত। ৬০০-৭০০ বাথের নিচে কোনো ব্যাগ নেই। এমনকি জুতাও নেই ৭০০-৮০০ বাথের নিচে। প্লাটিনাম মার্কেটে ব্লক আছে- এ ব্লক, বি ব্লক, সি ব্লক এভাবে। সবগুলো ব্লক ঘুরে দেখে তাদের সবার মন খারাপ হয়ে গেলো। শপিংয়ে গুড়েবালি। সবাই মন খারাপ করে রাতে হোটেলে ফিরে এসে আফসোস আর আফসোস।

যারা এর আগে ব্যাংককের শপিং নিয়ে নানান গল্প শুনিয়েছে তাদেরও ফোন দিয়ে দেখলাম। সবাই বলছে, সবই পাওয়া যাবে তবে খুঁজতে হবে। দামাদামি করতে হবে। প্লাটিনামে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো অধিকাংশ দোকানদার ফিক্সড প্রাইজ চাচ্ছিল। এটাতেই সবাই ভড়কে গেছে। এরইমধ্যে রাতে আমি ফোন দিলাম আরিফ সাহেবকে, তাকে জিজ্ঞেস করলাম মার্কেটে দাম অনেক বেশি। তিনি একটি যথার্থ উত্তর দিলেন। বললেন, ব্যাংককে কম দামে পাবেন, দামাদামি করে। তবে মনে রাখতে হবে, দাম যেমন, কোয়ালিটিও তেমন। বেশি দামের প্রডাক্টগুলোর কোয়ালিটি ভালো। কম দামে যা পাবেন সেগুলো এক মাস ব্যবহার করলেই দেখবেন অবস্থা খারাপ।

আরিফ সাহেবকে বললাম, সাফারি পার্কের টিকিট ব্যবস্থা করে দিতে। তিনি বললেন, ১১০০ বাথ করে পড়বে। আর রীভেরটা পড়বে ৯০০ বাথ। আমরা গ্রুপের সঙ্গে না নিয়ে আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে বললাম। আমি যেই মূল্যটি দিয়েছি এটা কিন্তু গাড়ির খরচ সহ। সুতরাং খুব যে বেশি তা নয়।
যাইহোক, যেসব জায়গায় গিয়েছি সেগুলো নিয়ে অল্প কিছু বলবো পরে। যেমন, সাফারি ওয়ার্ল্ড, সী ওয়ার্ল্ড, মাদাম তুসো এবং থ্রিডি গ্যালারি। শপিংয়ের পর্বটা শেষ করে নিই। কারণ এই বিষয়ে অনেকেই কিছু জানতে পারবেন বলে আশা রাখি।

শপিংয়ে প্রথমদিন মন খারাপ হলেও পরেরদিন আমরা প্রাতুনামে যাই। এটা প্লাটিনাম মার্কেটের ঠিক উল্টো দিকে। সেখানে ওইদিন আবার ছুটি ছিল। এজন্য অধিকাংশ দোকান বন্ধ। এজন্য যে কয়টি দোকান খোলা পেয়েছি ঘুরে ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছে। প্রাতুনামে দাম কিছুটা কম। সেখানে বাচ্চাদের জন্য জামা-কাপড় কেনা হয়েছে। প্রাতুনামের ফুটপাতেও প্রচুর পণ্য বিক্রি হয়। সেখান থেকে বেশ কয়েকটি মেয়েদের ব্যাগ কিনলো নিতু ও নদী। সম্ভবত ৩০০-৫০০ বাথের মধ্যেই ব্যাগগুলো কিনেছে। আমিও আপনাদের বলবো, ব্যাগের জন্য প্লাটিনামের থেকে প্রাতুনামই ভালো হবে। কোয়ালিটিও খুব খারাপ বলে মনে হলো না। কিছু কিছু ব্যাগ অবশ্য ৭০০-৮০০ বাথেরও আছে।

আমিও সেখান থেকে ১০০ বাথ দিয়ে মানিব্যাগ ও বেল্ট কিনেছি। কোয়ালিটি খুব ভালো না।

এরপর রাতের মার্কেটের জন্য নিয়ন মার্কেট যথেষ্ট ভালোই। দাম দস্তুর করে সেখান থেকে বেশ অনেক কিছু আত্মীয়-স্বজনের জন্য কিনতে পারবেন। সবই পাওয়া যায়। ওষুধ থেকে শুরু করে সাবান, গেঞ্জি, শার্ট, জুতা, কসমিটিক্স সবই আছে। তবে নিয়ন থেকে আমি এক জোড়া কেডস কিনেছি ৫০০ বাথ দিয়ে। যদিও মনে হচ্ছিল ঠকেছি। সত্যিই সত্যিই তাই। এরপর দিন ফাহিম কোন মার্কেট থেকে জানি একই জুতা ২০০ বাথ দিয়ে কিনে এনেছিল। মার্কেটটার নাম মনে নেই।
প্লাটিনাম মার্কেট থেকে আমি জুতা কিনেছি। ৭০০ বাথ দিয়ে। রীভেরটা নিয়ে সম্ভবত ৫০০ বাথ। নিতুও কয়েক জোড়া কিনেছে ৩০০-৬০০ বাথের মধ্যে। শপিংয়ে মনে হয়েছে প্রচুর ঘুরতে হবে। ধৈর্য্য থাকতে হবে। পাজেলড হওয়া চলবে না। লাগেজও কিনেছি বড় সাইজের। ১৫০০ বাথ দিয়ে। এটা বাংলাদেশে হলে ৫-৬ হাজার টাকা পড়তো।

শপিং নিয়ে আপাতত এর বেশি কিছু বলার নেই। মোদ্দাকথা হলো, আপনাকে প্রচুর ঘুরতে হবে। মার্কেট বুঝতে হবে তারপর দামাদামি করে কিনে নিতে পারবেন।

সাফারি ওয়ার্ল্ড ও অন্যান্য:

সাফারি ওয়ার্ল্ড যেতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। সকাল সকাল রওনা দেয়া ভাল। এতে করে ব্যাংককের ট্রাফিক জ্যাম এড়ানো সম্ভব। ভেবেছিলাম ওখানে শোগুলো খুব মজা পাবো না, যেটা পাবো সেটা হলো সাফারি পার্কে। যেখানে খোলা জায়গায় প্রাণিরা রয়েছে। আর মাঝ পথ ধরে গাড়ি যাবে। এই দৃশ্যটাই রোমাঞ্চকর হবে বলে ধরে নিয়েছিলাম সবাই।

থাইল্যান্ডে আমাদের সবার পূর্বধারণাই ভুল হয়েছে। কোনো কিছুই ভেবে যাওয়া বিষয়ের সঙ্গে মিলেনি। বরং উল্টোটাই ঘটেছে। যেমন, সাফারি ওয়ার্ল্ডে আমরা সবচাইতে বেশি উপভোগ করেছি শোগুলো। সেখানে হাতির শো, ডলফিন সহ আরো দুই তিনটা শো দেখা হয়েছে। প্রত্যেকটাই চমৎকার। আরেকটা বিষয় আগেই বলেছি, থাইল্যান্ডের টুরিস্টস্পটগুলোতে ভারতীয়দের ব্যাপকভাবে খাতিরদারি করে। যেমন, ডলফিন শো-তে দেখলাম থাই উপস্থাপিকা বান্দে মাতারাম বলছে আর তালি দিচ্ছে। দর্শক সারিতে শত শত লোকও বান্দে মাতারাম বলে চিৎকার করে উঠলো। বুঝা গেলো আসলেই ভারতীয়দের আনাগোণা এখানে সবচাইতে বেশি।

একেকটা শো শেষ করে পরের শো’র রাস্তাটা কিছুটা দূরে। পুরোটা পথ হাঁটতে হবে। তাদের ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না। জায়গায় টয়লেটের ব্যবস্থা আছে, আছে খাবারের ছোট ছোট দোকান। এছাড়াও উপরে পাইপের মাধ্যমে হালকা পানির ছিটা পড়তে থাকে। এতে করে গরমেও কেউ অস্থির হবে না।
থাইল্যান্ডের আবহাওয়ার কথাটাও এই সময়ে বলা উচিত। সেখানে কিন্তু প্রচণ্ড গরম ছিল। প্রায় ৩০/৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এই গরমে ঘাম হয় না। ক্লান্তিও আসে না খুব। এই যে এত হাঁটাহাঁটি করতে হচ্ছে তাতে বিন্দুমাত্র ক্লান্তি ভর করেনি। পরিবেশের প্রভাবটা খুব স্পষ্ট টের পাবেন।

যাইহোক, সাফারি ওয়ার্ল্ডের প্যাকেজের সঙ্গে লাঞ্চও থাকে। টিকিটেই লেখা থাকে কোন রেস্টুরেন্টে আপনাকে লাঞ্চ করতে হবে। সেই অনুযায়ী খুঁজে বের করে নিতে পারবেন সহজেই। আমরা যেটাতে গিয়েছিলাম ওটা ছিল ভারতীয় একটা রেস্টুরেন্ট। সেখানে ভাত, ডাল, মুরগির মাংশ, ফ্রুটস সবই আছে। খাওয়াও মন্দ না।

সাফারি ওয়ার্ল্ডে আকর্ষণীয় আরেকটা বিষয় হলো বাঘের সঙ্গে ছবি তোলা। যতদূর মনে পড়ে ফাহিম-নদীর বাঘের সঙ্গে ছবি তুলতে লেগেছিল ৭০০ কি ৯০০ বাথ। একে তো বাঘকে ধরতে হবে, আরেকটা হলো খরচটাকেও বেশ বেশি মনে হওয়ায় আমার আগ্রহ ছিল না। যদিও ফাহিম-নদী বেশ করে অনুরোধ করছিল ছবিটা তুলার। কারণ আবার কখন আসা হয়, তার তো ঠিক নেই। আমি রীভকে জিজ্ঞেস করলাম, দেখি তারও আগ্রহ নেই। এজন্য বাঘের সঙ্গে ছবি তোলা হলো না। তবে সেখানে টিয়ে পাখির সঙ্গে ছবি তোলার ব্যবস্থা আছে ৫০০ বাথ করে পড়বে।

এরপর সাফারি ওয়ার্ল্ড থেকে বের হয়ে সাফারি পার্কে গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়লাম। সত্যি কথা বলতে আমার কাছে সাফারি পার্ক ভালো লাগেনি।



মাদামতুসো ও সী ওয়ার্ল্ড:

মাদামতুসো মিউজিয়াম পৃথিবী বিখ্যাত। মাদাম তুসো ও সী ওয়ার্ল্ড মিলিয়ে টিকেট খরচ পড়েছে ১২০০ বাথ প্রতিজন। রীভের জন্য পড়েছে ১১০০ বাথ। মাদামতুসোতে ঢুকতেই মজার বিষয় লক্ষ্য করলাম। তাদের ওখান থেকে টিকিট কাটলে পড়তো ৮০০ বাথ। সেখানে আমরা দুটোই পাচ্ছি ১২০০ বাথে।
এখানে একটা বিষয় খেয়াল করা প্রয়োজন। এটা হলো, নিজের দেশের পর্যটনখাতের পরিসর বাড়াতে তারা এজেন্টদের নানান ধরনের অফার দিয়ে থাকে। এই এজেন্টদের কাছ থেকে টিকিট কাটলে আপনার খরচ কমে যাবে। অথচ সরাসরি গেলে দেখবেন টিকিট খরচ বেশি। এই ব্যবসায়ীক পলিসিটা খুবই আকর্ষণীয়। মনে হলো, এজেন্টরা যখন দেখবে অফারগুলোতে তাদের লাভ হবে ভালো তখন তারা যার যার দেশ থেকে পর্যটক বেশি বেশি আনার চেষ্টা করবে।
আরেকটা বিষয় হলো, যখন মাদামতুসোতে প্রবেশ করবো তার আগে আমরা কোন দেশ থেকে এসেছি এটাও তারা অনলাইনে ইনপুট দিয়ে নিল। এর থেকে তাদের একটা বিশাল ডাটাবেজও তৈরি হচ্ছে। কোন দেশ থেকে কী পরিমাণ পর্যটক তাদের দেশে আসছে এটাও তারাও ট্র্যাক করে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে পারে।

মাদামতুসোর ভেতরে বিখ্যাত ব্যক্তিদের মূর্তি। এত নিখুঁত কারুকাজ দেখলে বিশ্বাসই করা যায় না। আমার মনে হয় এটা নিয়ে খুব বেশি কথা বলেও লাভ নেই।
সী ওয়ার্ল্ড একটা একুরিয়াম। বলা হয়, এশিয়ার সবচাইতে বড় একুরিয়াম এটা। এক নিলাভ একুরিয়াম। কী যে এক অনুভূতি হবে সেটা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। এজন্য ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন।



থ্রিডি আর্ট গ্যালারি:

থ্রিডি আর্ট গ্যালারি হলো ছবি তোলার জন্য উত্তম জায়গায়। এর বর্ণনা না দিয়ে কিছু ছবি যুক্ত করে দিলাম। টিকিট খরচ পড়েছে ৬০০ বাথ করে।







ব্যাংককের মানুষ:

একটা দেশে গেলে তার সংস্কৃতি, শিক্ষা, ভাষা, ব্যবহার থেকে অনেক কিছু জানা ও বোঝা যায়। এমনকি তাদের রাজনৈতিক চেতনাও কখনও কখনও ফুটে ওঠে। ব্যাংককে রাস্তায় রাস্তায় একা একা এক দুইদিন ঘুরলে কিংবা মানুষের সঙ্গে কথা বললে অনেক কিছু জানা যেত বোধ হয়। কিন্তু সেই সুযোগ তো মেলেনি। আমার মনে হয়, একটা দেশ তার পর্যটনখাতকে সবচাইতে গুরুত্ব দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। হাজার হাজার পর্যটক এই দেশের শহরে হেঁটে বেড়াচ্ছে। কারো কোনো বিরক্তি নেই। কেউ বিরক্তও করছে না। কেউ ক্ষতি করার চেষ্টা করছে না। বরং নিরাপদ রাখার সর্বাত্মক চেষ্টাই সকলে করেন। আমরা এমনও হয়েছে ব্যাংককে রাত দুই কিংবা আড়াইটাতেও হোটেলে ফিরেছি। তখন মনে হয় সন্ধ্যা। পুরো রাত যেন ব্যাংকক জেগে থাকে। এর সব আলো যেন রাতেই, সমস্ত রঙ যেন রাতেই। রাস্তা পার হতে গেলে কমপক্ষে ২০-৩০ কদম দূরেই গাড়ি থামিয়ে ফেলে। হাত দিয়ে ইশারা দেয় রাস্তা পার হওয়ার জন্য। এই যে মানুষের মানসিকতা এটাই তো জরুরি। কেউ দৌড়ে রাস্তাও পার হয় না। প্রত্যেকেই ওভার ব্রিজ ব্যবহার করছে।

তাদের ওভারব্রিজগুলোরও প্রশংসা করতে হয়। কিছু কিছু ওভারব্রিজে এক্সেলেটর সিড়ি তো আছেই সঙ্গে লিফটও আছে। অনেক ওভারব্রিজে দেখলাম নানা ধরনের দোকানও খুলে রেখেছে। এটাতে লাভ হলো ব্রিজগুলো নিরাপদও হয়। এছাড়া সব লোক তো সিড়ি বেয়ে উঠতে পারে না। এজন্য এক্সলেটরের পাশাপাশি তারা লিফটও করে রেখেছে।

স্থানীয় মানুষগুলোও যথেষ্ট সহযোগিতা করে। যখন গ্র্যাবের ড্রাইভারকে লোকেশন বোঝানো যায় না তখন থাই কাউকে মোবাইল ধরিয়ে দিলে তিনি তাদের ভাষায় লোকেশন বুঝিয়ে দেন। কখনো কোনো অসুবিধা হয়নি এসব নিয়ে। থাইল্যান্ড দেশটাই পর্যটনখাতের উপর দাঁড়িয়ে অথচ তাদের ইংরেজি বলার প্রতি আগ্রহ খুবই কম। তারা নিজের ভাষাতেই কথা বলে। অনেক সময় এটা নিয়ে বিপাকেও পড়তে হয়। আমরা যেদিন থ্রিডি গ্যালারি যাবো সেদিনের গ্র্যাব ড্রাইভার ইংরেজি বোঝেন না। বলতেও পারেন না। এটা একটা মহা বিপদ হয়ে পড়লো। এমনকি সে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করছে কিন্তু আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তখন ফাহিম বুদ্ধি করে গুগল ভয়েস ট্রান্সলেটর অন করে ছেড়ে দিল। সে থাই ভাষায় বলল। তখন আমরা বুঝলাম সে জিজ্ঞেস করছে, আমরা কোথায় যাবো।
এটা নিয়ে হাসাহাসিও হলো। বললাম, লোকেশনেই তো দেওয়া আছে কোথায় যাবো। পরে ফাহিম ট্রান্সলেটরে বলল, ফলো দ্য ম্যাপ। এটা থাই ভাষায় শুনে ড্রাইভার মাথা নাড়ালো।

আমি খুবই অবাক হই, যে দেশে পর্যটক বেশি সেখানে ইংরেজি ভাষারই চলন হওয়ার কথা। অথচ তারা নিজের ভাষাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। আমাদের দেশেই মনে হয় ইংরেজিকে আলাদা গুরুত্ব দেয়। ইংরেজি যে পারে না কিংবা দুর্বল তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেও ছাড়া হয় না। আর চাকরির ক্ষেত্রে তো ইংরেজি জানাদের আলাদা কদর। আমরা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি অথচ আমরাই সবচাইতে বেশি অবজ্ঞার চোখে দেখি নিজের ভাষাকে। এটা আমার মতামত। আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বললাম।

আপনারা অনেকেই জানেন থাইল্যান্ড হলো যৌন ব্যবসার স্বর্গভূমি। প্রচুর মানুষ শুধুমাত্র যৌনতা উপভোগের জন্য ওই দেশে পর্যটক হিসেবে যায়। আমি যতটা পর্যবেক্ষণ করেছি সেখান বলতে পারি, এখানে যৌন ব্যবসায় জড়িত নারীরা সন্ধ্যার দিকে রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। এরা কাঙ্ক্ষিত খদ্দেরের সন্ধানে থাকে। আমি তাদের সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে দামাদামি করতেও অনেককে দেখেছি। তাদের এই ব্যবসাটাকেও যথেষ্ট নিয়মতান্ত্রিকতার মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। কেউ চাইলে তাদের হোটেল রুমেও নিয়ে যেতে পারে।

অ্যাম্বাসেডর হোটেলে দেখলাম এরা যখন খদ্দেরের সঙ্গে প্রবেশ করে তখন তাদের একটা আইডিকার্ড রিসিপশনে জমা দিতে হয়। এ কাজের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্তই একজন থাকেন। এমনকি যখন তারা হোটেল থেকে বের হয় তখন রিসিপশন থেকে রুমে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করা হয় তার কোনো ক্ষতি করা হয়েছে কিনা কিংবা কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা। একটা যৌন ব্যবসাকে পর্যন্ত তারা নিরাপদ করে ফেলেছে। আমি হোটেলে একজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম সব হোটেলে নাকি এই নিয়ম ফলো করা হয় না। ফোর স্টার, ফাইভ স্টার এবং কিছু থ্রি স্টার হোটেলে অতিথির নিরাপত্তার খাতিরে এই নিয়ম রয়েছে। এমনকি সব নারীর নাকি আইডি কার্ডও থাকে না। যাদের আইডি কার্ড নেই এরা আবার এসব হোটেলে ঢোকার অনুমতি পায় না।

একদিন হোটেলের নিচে স্মোকিং জোনে এক ভদ্র লোকের সঙ্গে পরিচয় হলো। তিনি নাকি ২০১০ সাল থেকে নিয়মিত ব্যাংকক আসেন। বাংলাদেশি। তিনি বললেন, এখানে যৌন ব্যবসাটাকে পেট্রোনাইজ করা হয়। সরকারই সব সুযোগ সুবিধা এদের দিয়ে রাখে। কারণ তাদের কারণে প্রচুর পর্যটক দেশে আসে। শুধু তাই নয়, এখানকার লোকজনও একটা স্বাভাবিক চোখেই দেখে। তারা মনে করে এটাই তাদের ব্যবসা। এটার সঙ্গে দারিদ্রর নাকি কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের দেশে যেমন দারিদ্র্য যৌন ব্যবসার অন্যতম একটা কারণ হিসেবে অনেকেই চিহ্নিত করে। তাদের দেশে নাকি বিষয়টা ওমন নয়। যদিও কেন যেন বিশ্বাস হলো না। দারিদ্র্যও নিশ্চয়ই একটা বড় কারণ। হয়তো শুরুর দিকে ছিল

ব্যাংককের আরেকটা বিষয়ও নজরে এসেছে- কিছুদূর পর পর হলো সেভেন-ইলেভেনের সুপারশপ। এবং এরা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। যখন তখন আপনার প্রয়োজনীয় সব কিছু এখানে পাবেন। এইসব স্টোরে ফ্রিজিং ভাত-মাংশও আমি দেখেছি। আপনি ওভেনে গরম করে খেতে পারবেন। দামও খুব বেশি না, ১০০-১২০ বাথের মধ্যে। এই ফুডটা আমি শেষদিন দেখেছি বলে ট্রাই করা হয়নি।

ব্যাংককে আমার গ্র্যান্ড প্যালেসে যাওয়ার বড় ইচ্ছে ছিল। ইতিহাসের প্রতি আমার তীব্র আগ্রহ। সেই আগ্রহ থেকেই যাওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু সময়ে কুলাতে পারিনি। শুনেছি ব্যাংককের সবচাইতে আকর্ষণীয় হলো এই গ্র্যান্ড প্যালেস। পরে কখনও গেলে অবশ্যই ঘুরে আসবো।
থাইল্যান্ড নিজে যাবেন নাকি ট্র্যাভেল এজেন্সির সহযোগিতা নেবেন?

এই প্রশ্নের উত্তরে কী বলবো বুঝে উঠতে পারছি না। আমার মনে হয় ফুল প্যাকেজ না নিয়ে আপনি কিছু কিছু সাপোর্ট ট্র্যাভেল এজেন্সি থেকে নিলে ভালো। কারণ প্রথমবার থাইল্যান্ড গেলে অনেক কিছু সম্পর্কে আপনার জানা থাকবে না। সেক্ষেত্রে এজেন্সি কিছু সুফল তো দেবেই। আরেকটা বিষয় হলো, যদি পরিবার নিয়ে যান তাহলে বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিজের জন্যে এদিক-সেদিক দৌড়াতে হবে। কোথায় টিকিট করবেন, কীভাবে যাবেন, কী করবেন এসব ঝক্কি না পোহানই ভালো। এজন্য ওখানকার এজেন্টদের সঙ্গেও কথা বলে দেখতে পারেন। এছাড়া আমার বন্ধুর কসমস হলিডের মাধ্যমেও যেতে পারেন। আমার লেখা পড়ে যদি কেউ প্রথমবারের মতো থাইল্যান্ড যেতে চান তাহলে কসমসের সিইও সাব্বির আহমেদকে আমার কথা বলতে পারেন। আমি আশা রাখি আমার বন্ধু যথেষ্ট যত্ন নিয়েই আপনাদের প্যাকেজ করে দিতে পারবে।

ব্যাংককের কিছু টিপস:
১. ডলার ভাঙানোর সময় আপনার পাসপোর্ট লাগবে। সুতরাং ওই সময়ে পাসপোর্ট সঙ্গে রাখবেন।
২. অবশ্যই গ্র্যাব অ্যাপ নামিয়ে নেবেন। টুকটুক ব্যবহার না করে গ্র্যাবে যাতায়াত করবেন।
৩. প্রচুর হাঁটতে হবে। সুতরাং এটা মাথায় রাখুন।
৪. শপিংয়ে গিয়ে পাজেলড না হয়ে ধৈর্য্য রাখতে হবে।
৫. ব্যাংককে সময় খুব দ্রুত দৌড়ায়। এখন আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি শুধু শপিং করবেন নাকি অ্যাকটিভিটিজও করবেন। দুইটা একসঙ্গে করলে শুধু একদিন শপিংয়ের জন্য রাখবেন।
৬. খাওয়াদাওয়া খুবই রিজেনেবল মনে হয়েছে। খুব বেশি না, কমও না। তবে খাবার খুব ফ্রেশ। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।


মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশের উন্নত মানের হোটেল গুলোর খরচ অনেক বেশি। তার কারন এক শ্রেনীর লোক এসব হোটেলে নিয়মিত যায়। রুম ভাড়া কম হলে তাদের পোষায় না। তারা মনে করে বেশি টাকা হলেই বুঝি ভালো রুম। সেরা কিছু। এই শ্রেনীই মূলত দূর্নীতিবাজ।

১২ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৮

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: তাই কী? আমার তো মনে হয় ভ্রমণ পিয়াসু মানুষদের লুটে নেওয়ার সুযোগটা তারা নিয়ে নেয়।

২| ১১ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


কি পরিমাণ বাংগালী পর্যটক দেখলেন?

১২ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১২:০৮

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: প্রচুর বাঙালি পর্যটক ভাই।

৩| ১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫

ডি মুন বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট।
অনেককিছু জানা হলো।

ধন্যবাদ

১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:১১

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৪| ১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০২

ইসিয়াক বলেছেন: পোস্টে ভালো লাগা।অনেক কিছু জানলাম।

১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৩

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: কষ্ট করে পড়েছেন। এজন্য কৃতজ্ঞতা

৫| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪০

জুন বলেছেন: আপনার চোখে আমার অতি পরিচিত থাইল্যান্ডকে আবার দেখে নিলাম। আপনার শপিং নিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা সত্যি দুঃখজনক। এর চেয়ে প্লাটিনামের উল্টো দিকে ইন্দ্র রিজেন্টের পাশে ইন্দ্র স্কয়ারে গেলে পারতেন। ভাবী অন্ততপক্ষে মনের স্বাদ মিটিয়ে ব্যাগ স্যান্ডেল কিন্তে পারতো। আপনারা তো নানা বিটিএস স্কাই স্টেশনের পাশে ছিলেন সেখান থেকে পরের স্টেশন অশোকাতে রবিনসন ছিল ওখানে মাঝারি থেকে ব্রান্ডের সব ধরনের ব্যাগ জুতা কাপড় পেতেন। ন্যাশনাল স্টেডিয়ামের পাশে বিখ্যাত mbk r tokyo শপিং মল পাশাপাশি। নানা থেকে স্কাই ট্রেনে সরাসরি যেতে পারতেন। ওখানে সব আমাদের উপমহাদেশ সহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রচুর ট্যুরিস্ট দেখতেন শপিং করছে বাজেটের মধ্যে। আরিফ সাহেব সত্যি বলেছেন সস্তার জিনিস নিয়ে। এগুলো বেশিরভাগ চাইনীজ পন্য।
রাস্তা ঘাট নিয়ে যা বলেছেন তা সত্যি।
আর ওই যে গাড়ি চালকরা ইশারায় রাস্তা পার হতে বলে, অযথা হর্ন দেয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। ওদের ভাষায় এটা চুড়ান্ত ইমপোলাইটনেসের লক্ষন। আমি একবার ইতালি ঘুরতে গিয়ে রোমে খালি রাস্তা পার হচ্ছিলাম। হঠাৎ ডান দিক থেকে দ্রুত গতিতে এক গাড়ি এসে ব্রেক করলো জোরে। তারপর জানালা খুলে আমাকে ঝাড়া দুই তিন মিনিট ধরে গালিগালাজ করে গেলো।
তবে যৌন ব্যবসায় জড়িত নারীরা উত্তরের অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। মাতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে সংসার চালানোর দায়িত্ব কিন্ত মেয়েদের হাতেই। বৃদ্ধ বাবা মাকে দেখার দায়িত্ব মেয়েদের।
গ্রান্ড প্যালেস ছাড়াও আপনারা বাচ্চাদের নিয়ে ব্যাংককেই মুয়াং বোরান যেতে পারতেন। সেখানে পুরো থাইল্যান্ডকে বিশাল জায়গায় তুলে ধরেছে। দেখার মত। আশাকরি আমার অযাচিত কথায় আপনি কিছু মনে করবেন না বলেই মনে করি।
যাই হোক পরের বার আশাকরি সব কিছু দেখে আসবেন। ব্যাংকক একবারে দেখা হয় না কিছুই। শুভকামনা রইলো।

১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৯

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন। আমি পরবর্তীতে কখনও গেলে এসব জায়গায় অবশ্যই যাবো। ব্যাংকক এমন একটা শহর ৫ দিন থেকেও আমরা সবটা ঘুরে শেষ করে পারি না। আরো কিছু থাকলে জানাবেন। আমি পরের বার সব ঘুরে দেখবো।

৬| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৮

জুন বলেছেন: আমার ব্লগে থাইল্যান্ড এর মোটামুটি উল্লেখযোগ্য সমস্ত পর্যটন এলাকায় ভ্রমণ নিয়ে প্রচুর পোস্ট আছে। এগুলো সবই আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা। আপনি কষ্ট করে একটু দেখলেই সব পাবেন।

৭| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৬

মিরোরডডল বলেছেন:



ব্যাংককের মানুষ এই অংশটুকু বেশী ভালো লাগলো পড়তে । একটা জায়গায় গেলে সেখানে মানুষগুলো কেমন ওদের,
লাইফস্টাইল কেমন এগুলো জানতেই বেশী ভালো লাগে ।

সেইম এজ ব্যাংকক, ইতালি ফ্রান্স এসব দেশেও তারা নিজেদের ভাষায় কথা বলে পর্যটকদের সাথেও, ইভেন তারা ইংলিশ জানলেও বলেনা ।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৮

শেরিফ আল সায়ার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.