![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যাবার আগে পদচিহ্ণ রেখে যাব। [email protected]
ভুল বানানে লেখা সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন দেখে এখন আর কেউ অবাক হন বলে মনে হয় না। ইদানীং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্লগ, ফেসবুক, অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ বিভিন্ন ওয়েব সাইট। অবস্থা দেখে মনে হয়, এসব স্থানে যা খুশি তা লেখাটাই যেন রীতি! কিংবা এ ক্ষেত্রে বানান নিয়ে ভাবার কোনো দরকার নেই। শুধু তাদের কথাই-বা বলি কেন, প্রতিদিন যত পত্রিকা প্রকাশ হচ্ছে তার ক’টার মধ্যে শুদ্ধ বাংলা বানান প্রয়োগের চেষ্টা থাকে?
সর্বত্র বাংলা প্রচলনে আইন আছে। আর, সর্বত্র প্রয়োগ করার মতো বানান রীতি তথা প্রমিত বানানের নিয়মও ঠিক করা আছে। কিন্তু তার প্রয়োগ যে কতটা হচ্ছে সেটা বোঝা যায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে যখন ‘মন্ত্রনালয়’ লেখা দেখা যায়। প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম প্রণয়ন করেছে বাংলা একাডেমি। সেই বাংলা একাডেমির মাসিক পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’ মাঘ ১৪১৮ সংখ্যার একটি ছোট গল্প পড়তে গিয়ে দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম। ‘অন্ধকারে বসে থাকেন আমার বাবা’ শিরোনামের গল্পটির কয়েকটি বাক্য-
১. ‘বাবা, তুমি সবসময় এত কি ভাব?’ ২. ‘কি হয়েছে তোমার?’ ৩. ‘কি নিয়ে ভাবছ এত?’ ৪. ‘কিন্তু তুমি কি নিয়ে ভাব, বাবা?’ ৫. ‘বিষয়টি কি?’ ৬. ‘কি করছ বাবা?’
প্রমিত রীতি অনুযায়ী এখানে প্রতিটি বাক্যে ‘কি’ এর স্থলে ‘কী’ হওয়ার কথা। কিন্তু হয় নি।
বাংলা একাডেমি এবার একটি অসাধারণ কাজ করেছে। প্রকাশ করেছে বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধান। তিন হাজারের বেশি পৃষ্ঠা সংবলিত অভিধানটি তিন খণ্ডে বিভক্ত। প্রথম খণ্ডের ফ্ল্যাপে লেখা হয়েছে, ‘বাংলা ভাষার সব শব্দ একই সময়ে জন্ম হয়নি অথবা একই সময়ে সেসব শব্দ ভাষায় ব্যবহৃত হয়নি। কোন শব্দ প্রথম কখন ব্যবহৃত হলো, এবং তারপর ধীরে ধীরে তার অর্থ কিভাবে বদলে গেলো, এ অভিধানে প্রধানত তা-ই দেখা যাবে। কেবল অর্থের বিবর্তন নয়, শব্দের বানান কিভাবে বদলে গেলো, সে ইতিহাসও জানা যাবে এই অভিধান থেকে।’ প্রমিত রীতি অনুযায়ী হওয়ার কথা ‘হয় নি’ এখানে লেখা হয়েছে ‘হয়নি’, তেমনি ‘কিভাবে’ না হয়ে ‘কীভাবে’ লেখা প্রয়োজন ছিল।
কণ্ঠশীলন-এর প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাগুরু ওয়াহিদুল হক এক মান ভাষার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেগেছেন জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত। তাঁর সেই চেষ্টার ফসল ‘কণ্ঠশীলন’ ৩০ বছর পূর্ণ করছে। সম্পন্ন করেছে ৭৯টি আবর্তন কোর্স। ৮০তম আবর্তনে অংশ নিয়ে আমিও আজ কণ্ঠশীলনের গর্বিত অংশীদার। ভাষার বাচিক রূপ নিয়ে কাজ করে কণ্ঠশীলন। কিন্তু লিখিত রূপের স্পর্শ বাঁচিয়ে চলা কণ্ঠশীলনের পক্ষে সম্ভব হয় নি। পাঠ্যপুস্তকসহ নানা কারণেই কণ্ঠশীলনকে লিখিত রূপের সহায়তা নিতে হয়। তাই বাংলা বানান নিয়ে ভাবনা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
‘ওয়াহিদুল হক স্মারণিক মিলনোৎসব ২০১২’ শিরোনামে প্রকাশিত স্মারণিকে গুণীজনদের অনেক লেখা ছাপা হয়েছে। ওয়াহিদুল হক রচিত ‘গুরু, আমার উপায় করো না : পিপাসার্ত এক যোগ্যতাহীনের কথা’ শিরোনামের লেখাটি পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। ব্যক্তি ওয়াহিদুল হক নিজের বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে তাঁর চেতনা ও অনুপ্রেরণার অনুষঙ্গগুলো তুলে ধরেছেন সাবলীলভাবে। এমন একটি চমৎকার লেখা পড়তে গিয়েও মাঝে মাঝে হোঁচট খেতে হয়েছে মুদ্রণপ্রমাদের চোখরাঙানি দেখে।
বানান ভুল হয় নানা কারণে। এর মধ্যে অসতর্কতা অন্যতম। আর ছাপাখানার ভূত তো আছেই। বাচিক মান ভাষা প্রতিষ্ঠায় যেমন শুদ্ধ উচ্চারণ শেখার বিকল্প নেই, তেমনি লিখিত মান ভাষার জন্য প্রয়োজন শুদ্ধ বানান। এর কোনটা বাদ দিয়ে শুদ্ধ বাংলা তথা মান বাংলা ভাষার কথা ভাবা যায় না। তাই, আমাদের শুদ্ধ উচ্চারণ শেখার স্কুলের পাশাপাশি প্রয়োজন শুদ্ধ বানান শেখার স্কুলেরও। কিংবা একই প্রতিষ্ঠানে সমন্বয় করা যেতে পারে দুটি বিষয়কেই।
১৭ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩
সৈয়দ ইবনে রহমত বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৪৪
মনিরুল হাসান বলেছেন: বানান ভুল হওয়াটা খুব বেশি অস্বাভাবিক না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, কেউ যদি সেই বানান ভুলটা দেখিয়ে সঠিক করতে বলে, যারা ভুল করে তারা কেন জানি সংশোধন করতে চায়না। বরং ভুলটাই রেখে দেয়। বানান ভুলটা বেড়ে যায়।
১৮ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৮:৪৮
সৈয়দ ইবনে রহমত বলেছেন: হুম, ঠিকই বলেছেন। কিন্তু তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। আমরা প্রত্যেকে নিজে যেটুকু জানি, সেটুকু অন্তত শুদ্ধ করে লিখতে থাকলেই সচেতনতা বাড়তে থাকবে।
৩| ১৮ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:২৯
অপু তানভীর বলেছেন: বাংলা বানানে আমার অনেক সমস্যা ! সেই ছোট বেলা থেকেই
২২ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:০৩
সৈয়দ ইবনে রহমত বলেছেন: হুম, একই রোগে আমিও আক্রান্ত। আর এই রোগ সারানোর জন্য বাসা আর অফিসের দুইটা অভিধানের চেহারাই পাল্টে দিয়েছি পাতা উল্টাতে উল্টাতে।
তারপরও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না...
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৪১
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। ভাষা সুন্দর সঠিক করে লিখতে পারা ও বলতে পারা মানুষের একটি বিশেষ গুণ যা তার ব্যক্তিত্বে অনন্য এক মাত্রা যোগ করে। এটা দেশ ও ভাষার প্রতি মানুষের মমত্বের পরিচয়ও বহন করে।