নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সায়েমা খাতুনঃ নৃবিজ্ঞানী, এথনোগ্রাফার এবং গল্পকার

সায়েমার ব্লগ

সায়েমা খাতুনঃ নৃবিজ্ঞানী, গবেষক ও লেখক

সায়েমার ব্লগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গেঞ্জিরা দেশের মালিকের মত আচরণ করছে ক্যান?

১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

বিধাতার মত নির্ভয় কথাটা কবি কাহাকে উদ্দেশ্য করিয়া লিখিয়াছেন, এখন বোঝা যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী তরুণ শিক্ষার্থীদের হাব-ভাব আচার-আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, যেন উনারা দেশের মালিক।স্কুলে কি কেউ ইনাদের সংবিধান পড়াইসিলেন? বিরাট ভুল করছেন!সংবিধানে লেখা ছিল, পরিষ্কার লেখা ছিল, "ক্ষমতার মালিক জনসাধারণ"। তো হয়েই গেল, বেশ পড়ুয়া লক্ষ্মী ছেলে-মেয়ের মত ওইটা মুখস্ত করে ফেলসেন।আর গোটা দেশকেও সবক দিতেছেন। বাধ্য হইয়া আমিও সংবিধানখানি খুইলা দেখলাম, কথা সত্য।

২০১৮ এর সড়ক আন্দোলনের বাচ্চাদের মুখে এই কথা শুনছিলাম।পুলিস, আমলা, আদালত- সবাই রাষ্ট্রের কর্মচারী।মালিক জনগণ।
দেখা যাচ্ছে, "সংবিধানের প্রাধান্য" অনুচ্ছেদের ৭ এর ১ অ ২ ধারাকে বাস্তবে পরিণত করতে এনারা বদ্ধপরিকর।

৭৷ (১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে৷
(২) জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসামঞ্জস্য হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে৷

এখন কি বিপদ দেখেন, যারে পছন্দ করতেসেন না, সেই প্রধানমন্ত্রীরে পার্মানেন্ট সরকারী চাকরী থেকে এক কথায় বরখাস্ত করে দিল।প্যারিস অলিম্পিক থেকে ধরে নিয়ে অনিচ্ছুক অধ্যাপক ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা পদে বহাল করলেন।এঁরা কিভাবে চিন্তা করে সেইটা জুলাইয়ের ১৬ তারিখ আবু সাঈদদের মৃত্যুকে দুই হাত প্রসার করে অনায়াসে বরণ করার দৃশ্য থেকেই বোঝার চেষ্টা করতে পারেন, কোন কূল কিনারা পাবেন না।মৃত্যুকে কে বা কাহারা এইভাবে বরন করতে পারে? এঁদের আত্মমর্যাদা বোধ এতটাই প্রখর যে আমাদের প্রজন্মের মত বছরের বছর জ্বি হুজুর দাসত্বের জীবনকে আর এক মুহূর্তও বরদাস্ত করতে রাজী না।তারা যে দেশের মালিক, সেটা তারা পরিষ্কারভাবে জানে। আর যারা জানে না, বা জেনেও না জানার ভান করে প্রতারণা করে যাচ্ছিল, তাদের খোলাখুলি জানায়ে দিসে!

ইউনুসকে মেধা কোটায় তারা নিয়োগ দিলেন। ইউনুস কেন শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ, তার পেছনে ভীষণ রকম প্রখর বাস্তব বুদ্ধি দেখা জাইতেসে।উনারা ইন্টারন্যাশনাল গেইমে ইউনুসকে নিয়ে নামছেন, যাতে তাঁরা একজন সেই রকম প্রোফাইলওয়ালা এক মেধারে সামনে রাইখা দেশের অর্থনীতি, রাজনীতির পুনরুদ্ধার কাজ চালাইতে পারেন।উনার কয়েক মাইল লম্বা সিভি গেঞ্জিদের বড়ই পছন্দ হইছে।আন্তর্জাতিক পরিচয়, যোগাযোগ, নোবেল প্রাইজ - সব কিছু নিজের মনে কইরা দুনিয়ার সামনে হাজির করলেন, যে, হ্যাঁ, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের অন্তরবর্তীকালীন সময়ে যোগ্য মেধার হাতে রাষ্ট্র মেরামতের কাজ দিসি। বাদবাকি উপদেষ্টাদের হায়ার এবং ফায়ার প্রক্রিয়াও চলমান দেখা যাচ্ছে।পার্লামেন্ট বন্ধ, পুলিশ বাহিনী বরখাস্ত, বিচারপতি নিয়োগ দিসেন, একটার পর একটা নষ্ট প্রতিষ্ঠান ধরতেসেন আর বিদ্যুৎ গতিতে চাকরী নট কইরা দিসেন।গেঞ্জিদের সামান্য সরকারী চাকরী কৈরে খাওয়ার "পেটি বুর্জোয়া" আশা-আকাঙ্ক্ষা যে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়া কাঁপায়ে দিবে, তা আপনার- আমার কল্পনা শক্তিতেও কুলায় নাই রে, ভাই।পাশের বৃহৎ প্রতিবেশী রাইজিং সুপার পাওয়ারও অগাস্টের ৫ তারিখ থেকে এত বেশী বাংলাদেশ নিয়া মুখে ফেনা তুইলা মূর্ছা জাইতেসে, যে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা কি ছিল ভুইলা যাওয়ার উপক্রম।জুলাই গণহত্যা এবং অগাস্টের অভুত্থ্যানের এই মাত্র তিন সপ্তাহ সময়টা আমাদের বহু যুগ ধরে পড়তে হবে। আমারদের জীবদ্দশায় এমন একটা বৈপ্লবিক সময় দেখতে পাবো, স্বপ্নেও ভাবি নাই। গেঞ্জিরা আমাদের দেশের মালিক হইতে শিখাইতেসে!

আমরা সবাই এখন গেঞ্জিদের ছাত্রছাত্রী!

মঙ্গলবার
অগাস্ট ১৩, ২০২৪
উইস্কন্সিন, যুক্তরাষ্ট্র

#Gen-Z #QuotaReformMovement #secondindependencebangladesh

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:৪১

বাউন্ডেলে বলেছেন: গেন্জিরা দেশের সবগুলো সেক্টর এর পদে আসিন হতে চাচ্ছে। আমরা অচিরেই সমস্ত অফিসে মুধু গেন্জি আর গেন্জি দেখতে যাচ্ছি। =p~

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

নয়া পাঠক বলেছেন: গেন্জিরা যদি ভাল কাজ করতে পারে তবে অবশ্যই তারা টিকে থাকবে। ইতমিধ্যে অবশ্যই তারা তাদের ক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছে, ১৭ বছরের স্বৈরাচারী ফ্যাসীবাদী সন্ত্রাসী সরকারের পতন ঘটিয়েছেন। এখন সবাই মিলে দেশে যদি সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, দেশ থেকে পরিবারতন্ত্র, অন্যায়, অবিচার, লুটতরাজ, দূর্ণীতি, সন্ত্রাস এসব দূর করতে পারি তবেই আমাদের এই জাতি খুব দ্রুতই মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবে, নতুবা ঘুরে ফিরে আবার দুই পরিবারের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে যাবো। দুই পরিবার আমাদের নিয়ে দিনের পর দিন খেলেই যাবে আর তাদের দোসসরা আমাদের সামনে গণতন্ত্রের মুলা ঝুলিয়ে রেখে উন্নয়নের নামে কেবল অর্থ-বিত্ত বৈভব আর অসীম ক্ষমতাই অর্জন করে যাবে। আমরা নির্যাতিত নিষ্পেষিত অবহেলিত রয়ে যাবো, আর কর্মচারী হয়ে তারা আমাদের মাথার উপর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ছড়ি ঘুরিয়ে মাতব্বরী করে যাবে।

৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:০৫

সোনাগাজী বলেছেন:



ড: ইউনুস না'এলে, এই কোমলমতি জল্লাদেরা দেশে রক্তগংগা বইয়ে দিতো।

৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৪০

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার এই রসপূর্ণ লেখাটা অতি উপভোগ্য হয়েছে।

আপনাকে বলেছিলাম ব্লগের গড়পড়তা বুদ্ধিবৃত্তি খুবই কম, সেটা বড় জোড় ক্লাস ফাইভ হতে পারে।

উপরের তিনটি মন্তব্য, বিশেষ করে বাউন্ডেলে আর সোনাগাজীর মন্তব্য দেখুন। তারা আপনার লেখাটার উল্টো মানে বুঝেছে! লেখার শিরোনাম নিজের মত করে ব্যাখ্যা করেই মন্তব্য জুড়ে দিয়েছে। তারা ভেবেছে গেঞ্জি শব্দটা আপনি উপহাস করে নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার করেছেন। আর আপনি তাদের মতই স্বৈরতন্ত্রের সেবাদাস !! :) :)

৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৪৯

ঊণকৌটী বলেছেন: ছোটবেলায় ইতিহাসের পাতায় একটা অধ্যায় ছিলো বাংলায় একটা অরাজকতা শুরু হয়েছিলো মোটামুটি এইভাবে ব্যাখ্যা হয়েছিল যে বড় মাছ ছোট মাছ দের খেয়ে ফেলেছিল মাতৎস্যনাই বলে সে অধ্যায় কে (বানান টা ভুল হতেপারে), আজ দেখতে পাচ্ছি ইতিহাস ফিরে আসে যুগে যুগে

৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:৫৮

ঊণকৌটী বলেছেন: ম্যাডাম একটু ভুল বলেছি, শুরুটা হয়েছিল 1947 শে তার রেশ চলছে এখনও শেষ কবে সেইটা দিনের শেষে বোঝা যাবে

৭| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১২:১৭

কামাল১৮ বলেছেন: @শ্রাবণধারা,আপনার মতো বুদ্ধিমান ব্লগে একজনও নাই।আপনি বস্তুবাদ সম্পর্কেও জানেন।

৮| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১:০৩

জটিল ভাই বলেছেন:
জেন-জেড কে গেঞ্জি শুনতে যেনো কেমন লাগেনা?

৯| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৪ ভোর ৫:০৪

কাঁউটাল বলেছেন: ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানোর জন্য জেন জি কে অভিনন্দন, রেসপেক্ট এবং ভালবাসা।

১০| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮

অরণি বলেছেন: দারুণ লিখেছেন। সোনাগাজী খুব কষ্টে আছে ওনার হাসিনা আপা নেই আহারেরেরেরেরেরেরে............

১১| ১৬ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:১০

সায়েমার ব্লগ বলেছেন: আপনাদের সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্যে অশেষ ধন্যবাদ! প্রত্যেককে আলাদা করে শীঘ্রই জবাব দেব!

১২| ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ৯:৫৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: সায়েমার ব্লগ,




আপনার এই লেখাটি রম্য ধাঁচের হলেও এই প্রজন্মকে " গেঞ্জি" বলাটা একটি নেগেটিভ ধারণা দেয়। সহ-ব্লগার জটিল ভাইও দেখলুম সেই কথাটিই বলেছেন।
বিশেষ করে শেষের আগের এই লাইনটি - গেঞ্জিরা আমাদের দেশের মালিক হইতে শিখাইতেছে! । বাক্যটির গঠনে যে শব্দ ব্যবহার করে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা একটা "পরিহাস" এর মতো লাগছে।
এটুকু বলার জন্যে সহ-ব্লগার শ্রাবণধারা র মতো আবার ভেবে বসবেন না যে, ক্লাশ ফাইবে পড়ি। আপনি নিজেও পাঠক হিসেবে আবার এটি পড়ে দেখতে পারেন যে, যা বলতে চেয়েছেন রম্যের ছলে তা প্রশ্নবিহীন ও নিরঙ্কুশ হয়েছে কিনা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.