নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মুক্তির জন্যে [email protected]

লড়াকু জনতার পাশে....

সৈয়দ আমিরুজ্জামান

জীবন মানুষের সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। এই জীবন মানুষ পায় মাত্র একটি বার। তাই, এমন ভাবে বাঁচতে হবে যাতে বছরের পর বছর লক্ষ্যহীন জীবন যাপন করার যন্ত্রণা ভরা অনুশোচনায় ভুগতে না হয়, যাতে বিগত জীবনের গ্লানিভরা হীনতার লজ্জার দগ্ধানি সইতে না হয়, এমন ভাবে বাঁচতে হবে যাতে মৃত্যুর মুহুর্তে মানুষ বলতে পারে; আমার সমগ্র জীবন, সমগ্র শক্তি আমি ব্যয় করেছি এই দুনিয়ার সবচেয়ে বড়ো আর্দশের জন্যে - মানুষের মুক্তির জন্যে সংগ্রামে।

সৈয়দ আমিরুজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৮৭২ সালের চুক্তি আইন অনুযায়ী সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানির সাথে সম্পাদিত জাতীয়স্বার্থ বিরোধী সকল 'পিএসসি' চুক্তি বাতিল করা সম্ভব

২৩ শে জুন, ২০০৮ সকাল ১০:৩৯

১৪ই জুন মাগুরছড়া দিবস

মাগুরছড়া ব্লো-আউটের ১১ বছর পূর্ণ

ক্ষতিপূরণ আদায়ে কিছু সুপারিশ

(ধারাবাহিক-৮)

---সৈয়দ আমিরুজ্জামান



১৮৭২ সালের চুক্তি আইন অনুযায়ী সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানির সাথে সম্পাদিত জাতীয়স্বার্থ বিরোধী সকল 'পিএসসি' চুক্তি বাতিল করা সম্ভবঃ

দেশের জনগণের ও জাতীয়স্বার্থ পরিপন্থী জ্বালানি প্রকল্পের বিরুদ্ধে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবস্থান নিতে হবে। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে এ ব্যাপারে সজাগ হতে হবে। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা প্রজাতন্ত্রের তথা জনগণের সম্পত্তি। সংবিধানের ১৪৩ (১)নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- 'ক. বাংলাদেশের যে কোনো ভূমির অন্তঃস্থ সব খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী; খ. বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় জলসীমার অন্তর্বর্তী মহাসাগরের অন্তঃস্থ কিংবা বাংলাদেশের মহীসোপানের উপরিস্থ মহাসাগরের অন্তঃস্থ সকল ভূমি, খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী; ···', প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি- প্রকৃত অর্থে জনগণ এর মালিক। কাজেই তথাকথিত রয়ালটির নামে জনগণের সম্পত্তি কোনো বিদেশি কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তার স্বার্থে গ্যাস ও কয়লা বা গ্যাস-কয়লাজাত কোনো পদার্থ বিদেশে রফতানি করা যাবে না। যদি করা হয়, তবে জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

অতীতের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন মহল জ্বালানি খাতের প্রস্তাবগুলোতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থির সময় বেছে নেয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০১ সালে গ্যাস রফতানি প্রস্তাব, একই বছরে আগে আবিস্কৃত ও কিছুকাল উৎপাদনরত টেংরাটিলা-ছাতক গ্যাসক্ষেত্র, ২০০৫ সালে টাটার বিতর্কিত বিনিয়োগ প্রস্তাব এবং এশিয়া এনার্জি কোম্পানির ফুলবাড়ী কয়লাখনি প্রস্তাবগুলো। এগুলো তো নেহাত কাকতালীয় ব্যাপার না। হিসাব করা ঝুঁকি দেশের জন্য। বিগত সরকার কি একবারও ভেবেছিল, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশে জ্বালানি নিরাপত্তাহীনতা কি চরম আকার ধারণ করতে পারে? একটা কথা সাম্রাজ্যবাদী ও বহুজাতিক কোম্পানীর তথাকথিত বিনিয়োগ প্রস্তাবকারীরা ভালোভাবেই প্রচার করে থাকে যে, যেনতেন প্রকারে একটি চুক্তি হয়ে গেলেই- সম্পাদিত চুক্তির শর্ত যতই দেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী হোক না কেন তা নাকি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মেনে নিতে সরকার বাধ্য থাকবে। সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমানও ফুলবাড়ী কয়লা খনি সংক্রান্ত এশিয়া এনার্জির সঙ্গে চুক্তিকে দেশের··· স্বার্থবিরোধী আখ্যা দিয়েও চুক্তি বাতিল করা যাবে না বলে বক্তব্য দিয়েছিলেন! আসলে দেশের স্বার্থবিরোধী হলে চুক্তি বাতিল করা যাবে না কথাটা ঠিক নয়। কারণ ১৮৭২ সনের চুক্তি আইনে চুক্তির সংজ্ঞা, চুক্তি গঠন বা সম্পাদনে অত্যাবশ্যকীয় যেসব উপাদানের কথা বলা হয়েছে, বিদেশী কোম্পানীগুলো সেইসবের অনুসরণ করতে দেয় নি বলে সম্পাদিত চুক্তিই তার প্রমাণ।

Under Section 2 (h) of the Contract Act, 1872, 'An agreement enforceable by Law is a Contract'. According to Sir Salmond, 'A Contract is an agreement creating and defining obligations between the parties'. Sir Frederic Pullock defines, 'Every agreement and promise enforceable at Law is a Contract.' According to Sir Anson, 'A Contract is an agreement enforceable at Law made between two or more persons by which rights are acquired by one or more to act or forbearance on the part of the other.' Essential elements necessary for the formation of a valid Contract: '1. Offer and Acceptance, 2. Agreement, 3. Legal Relationship, 4. Lawful Consideration, 5. Capacity to Contract, 6. Legality of the Object, 7. Free Consent, 8. Certainty, 9. Possibility of Performance, 10. Must not be in abuse of Legal Process, 11. Contract not expressly declared void by Law, 12.Writing and Registration.'

এ ছাড়া ১৮৭২ সনের চুক্তি আইন অনুযায়ী চুক্তি গঠনের অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে বিষয়বস্তুর বৈধতা। কোন চুক্তিকে বৈধ হতে হলে এর উদ্দেশ্য ও প্রতিদান অবশ্যই বৈধ হতে হবে। অবৈধ, নীতি-বিগর্হিত, জনস্বার্থ বিরোধী, জাতীয়স্বার্থ বিরোধী ইত্যাদি সম্মতি অবৈধ উদ্দেশ্য বিবেচনায় চুক্তি হিসেবে বিবেচিত হয় না বিধায় উহা আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য হয় না। কোন চুক্তির বিষয়বস্তু বা এর উদ্দেশ্য যদি প্রচলিত আইনের বা জন-নীতির পরিপন্থী হয়, কিংবা তা নৈতিকতা-বিরোধী হয়, তবে সংশ্লিষ্ট চুক্তিটি বৈধ হতে পারে না। ১৮৭২ সনের চুক্তি আইনের ২৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, নিম্নলিখিত অবস্থায় সম্মতির উদ্দেশ্য ও প্রতিদান অবৈধ বলে গণ্য হয়ে থাকে। যেমনঃ- (ঘ) গণনীতি বিরুদ্ধ সম্মতি (Agreement against Public Policy), 'যে সম্মতি বলবৎ করলে জনস্বার্থ ক্ষুন্ন হয়, সেই সম্মতিকে গণনীতি বিরুদ্ধ সম্মতি বলা হয়। যে সম্মতির উদ্দেশ্য বা প্রতিদান গণনীতির পরিপন্থী, সেই সম্মতি বাতিল বলে গণ্য হবে।' যেমন জাতীয়স্বার্থ বিরোধী 'উৎপাদন অংশীদারী চুক্তি'(Production Sharing Contract’-PSC)-পিএসসি চুক্তি, JVA, (Supplemental Agreement) বা সম্পূরক চুক্তি, দেশের জনস্বার্থ বিরোধী অসম বাণিজ্য চুক্তি ইত্যাদি।

১৯৯০-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলের নেতৃত্বে বিগত ৩টি সরকারের আমলে যেহেতু গ্যাস ও তেল উত্তোলন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিদেশী তেল কোম্পানির সঙ্গে সংগঠিত আলোচনা ও সম্পাদিত অসম, অযৌক্তিক, লুণ্ঠন ভিত্তিক, জাতীয় স্বার্থবিরোধী, দেশের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতিকর উৎপাদন অংশীদারী চুক্তিগুলো দুর্নীতিরই ফসল; সেহেতু সেইসব চুক্তি ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনে বাতিলযোগ্য। অবৈধ, নীতি-বিগর্হিত, জনস্বার্থ বিরোধী, জাতীয়স্বার্থ বিরোধী ইত্যাদি সম্মতি অবৈধ উদ্দেশ্য বিবেচনায় চুক্তি হিসেবে বিবেচিত হয় না বিধায় বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ প্রভাব ও দুর্নীতির কারণ দেখিয়ে সেইসব চুক্তি বাতিল বলে ঘোষণা করতে পারেন। এবং আমি মনে করি সরকারের উচিত এসব চুক্তি বাতিল ঘোষণা করা। একটি কথা মনে রাখা দরকার যে, বিদেশীরা যদি নগদ টু-পাইস, কমিশন ও নানা সুযোগ-সুবিধা প্রদানসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রভাব বলয় সৃষ্টি করা না হতো তাহলে কি আমাদের দেশের কোনো সরকার বিভিন্ন বিদেশী বহুজাতিক তেল কোম্পানির সঙ্গে অসম, অযৌক্তিক, লুণ্ঠন ভিত্তিক, জাতীয় স্বার্থবিরোধী, দেশের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতিকর উৎপাদন অংশীদারী চুক্তিগুলো সম্পাদন করতো? কেউ কি নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে পারে? একান্ত বাধ্য করা না হলে কোনো দেশপ্রেমিক সরকারের পক্ষে এই জাতীয় চুক্তি সম্পাদন করা সম্ভব নয়। অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বিদেশীরাই আমাদের দেশের সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত করেছে। পরিণামে উন্নয়ন বিরোধী এসব ভয়ংকর চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। যার দায়ভার বিদেশীরা এড়াতে পারে না। এর খেসারত আমাদের দেশীয় লুটেরা দুর্নীতিবাজদের পাশাপাশি বিদেশী বহুজাতিক লুটেরা দুর্নীতিবাজদেরকেও দিতে হবে। শাস্তি দেশী-বিদেশী সকল দুর্নীতিবাজকেই পেতে হবে। শাস্তির প্রাথমিক পদক্ষেপ হবে, বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানী সমূহের সাথে সম্পাদিত সকল অসম চুক্তি বাতিল করা।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৩/-৩

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৪৯

মনুমনু বলেছেন: আমার মনের কথা বলেছেন।আমিও চাই সমস্ত অসম চুক্তি বাদ করে নিজেরাই আমাদের মালিকানা বুঝে নেই।

২৩ শে জুন, ২০০৮ রাত ১১:২৯

সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে জুন, ২০০৮ দুপুর ১২:১৪

র‌্যাভেন বলেছেন: সৈয়দ বংশের সবাই বলেছেন: +

২৩ শে জুন, ২০০৮ রাত ১১:৪৯

সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেছেন: ১৯৯৭-২০০৬ সময়কালে বিগত দলীয় সরকারসমূহ মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ, পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংসের হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মার্কিন কোম্পানী অক্সিডেন্টাল-ইউনোকল-শেভরনের কাছ থেকে আদায়ে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

এসব দুর্নীতিবাজ দলসমূহকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষমা করবে না।

৩| ২৩ শে জুন, ২০০৮ রাত ১১:৫৬

বিস্মরণ বলেছেন: আপনি কি সম্প্রতি পবিত্র হজ্বে গিয়েছিলেন। ছবি দেখে মনে হল, তাই জিজ্ঞেস কর্লাম। মনে কিছু নেবেন না আশা করি।

২৪ শে জুন, ২০০৮ রাত ১২:০৮

সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেছেন: ১৯৯৭-২০০৬ সময়কালে বিগত দলীয় সরকারসমূহ মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ, পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংসের হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মার্কিন কোম্পানী অক্সিডেন্টাল-ইউনোকল-শেভরনের কাছ থেকে আদায়ে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

এসব দুর্নীতিবাজ দলসমূহকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষমা করবে না।

৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৯:০৯

হামীম বলেছেন: সমস্ত অসম চুক্তি বাতিল করা হোক

৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৯:০৯

হামীম বলেছেন: সমস্ত অসম চুক্তি বাতিল করা হোক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.