নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজ্জাদ হোসেন

সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ

জানতে ও জানাতে আমার খুব ভাল লাগে।

সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসা ও সমুদ্র

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২০

ভালবাসা ও সমুদ্র

সাজ্জাদ হোসেন



_______________________________________________________



: এই কি খবর?

: না কোন খবর নেই; খাবার দাও, তারপর খবর ! [এখনো ৮ টা বাজে নাই; খবর দিয়া কি কবর দিবো?]

: সমস্যা কি?

: কোন সমস্যা নেই ! চলো সমুদ্র দেখি, কুয়োয় থাকতে ভাল লাগে না !



এটা একটা মিষ্টি ভালবাসার খানিকটা তিতা স্বাদের বহি:প্রকাশ ! [ চিরতাও তিতা; চিরতা খাবার পর পানি খেয়ে দেখুন; মিষ্টিই লাগবে ! ]



ভালবাসা একটা চর্চার ব্যাপার, আপনি চাইলেই কাউকে ভালবাসতে পারবেন না। আবার ঠিক তেমনি ঘৃণাও করতে পারবেন না। কারণ সেটা নেতিবাচক ভালবাসারই অন্যনাম মাত্র। যাদের দেখবেন অনেক বেশি পরিমাণ রুক্ষ মেজাজের, অনেক পাষাণ, এটা বুঝে নিন, তার থেকে মমতা খুব কমেরই আছে, কিন্তু সেটা যার জন্য রাখা সে কোথায় বা তিনি আদৌ তাকে তা দিতে পেরেছেন কিনা সেটায় সন্দেহের অবকাশ বিরাজমান। এজন্য বলা হয়, ভালবাসা চর্চা ও অধ্যয়নের ফল।





কি আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না? আমায় পাগল মনে হচ্ছে? তবে আসুন, আপনার প্রাত্যহিক জীবনের কয়েকটা স্থিরচিত্র আপনাকেই আঙুল দিয়ে দেখানোর প্রয়াশ বা ব্যর্থ চেষ্টায় রত হবার প্রয়াশ চালিয়ে দেখি !



ঘটনা চিত্র ১:



আপনি রেস্টুরেন্টে বসে আছেন। আপনার প্রিয় কাউকে নিয়ে। ধরুন আপনি মেয়ে হলে যাকে নিয়ে বসে আছেন সে আপনার ভাই/বাবা/স্বামী/প্রেমিক; অথবা আপনি ছেলে; তবে আপনি যাকে নিয়ে বসে আছেন তার পরিচয়টা আগের মেয়ের পরিচয় থেকে আপনার ক্ষেত্রে যেটা হয় তা ভাবুন। একটা গুন্ডা টাইপের ছেলে তার প্রেমিকাকে নিয়ে খেতে আসল ও যথারীতি ওয়েটারকে সেইরকম অকথ্য ভাষায় ঝাড়ি দিয়ে ডাকল ও অর্ডার দিল, বাকীরা সবে ঐ ছেলেটার দিকে তাকিয়ে। আর ছেলেটা "জানু", "জানু" করতে করতে অস্থির।



এবার আসুন আরেকটু পিছনে যাই। ছেলেটার প্রেমিকাকে খাওয়াতে নিয়ে আসার টাকাটা ধরে নিলাম তার আব্বু বা আম্মুর নিকট হতেই নিয়েছে। সেখানে তার আচরণটা কেমন ছিল? কি আপনার চোখে ভাসছে তা?

ঠিক আছে আমিই একটা ছবি আপনাকে দিয়ে দিচ্ছি: সে তার আম্মু বা আব্বুকে "সেইরকম" একটা ঝাড়ি বা কোন কিছু একটা বলে টাকাটা নিয়েছে। কেন উনারা দিলেন?

সোজা উত্তর: হাজার হলেও নিজেরই তো সন্তান; সন্তান অখুশিতে থাকবে ‌‌‌ ‌‌-- সেটা পৃথিবীর কোন পিতা-মাতাই চান না। তা সন্তান যেমনই হোক না কেন !





এবার বলুন: এইছেলেটার এই "জানু", “জানু" কি কোন অর্থ বহন করে?????

নিশ্চয়ই নয় ! সে এই মেয়েটার জন্য যে এত্ত এত্ত ভালবাসা দেখাচ্ছে তাতে কি রেস্টুরেন্টের বাকীরা কি খুব খুশি? নাকি বিরক্ত?

আমার সাথে আপনিও বলবেন: “আছাড়ি, ফাজিল পোলা, তোকে একটা পিটামি দেওয়া উচিৎ; ছ্যাবলামির একটা সীমা থাকা উচিৎ। তোর জানুকে বাসায় রেখে আয়, এখানের পরিবেশটাতে কেন নষ্ট করছিস?”

এই যদি হয় অবস্থা, আপনার মনে কি দাগ কাটছে না আসলে ব্যাপারগুলো কোথা থেকে ও কিসের সাথে আসলে সম্পর্কিত?



ঘটনা ২:



কেন্টিনে খাচ্ছেন, অথবা ধরুন আগের ঘটনাটাই। এখন আরেক জোড়া জুটি আসলো।

ছেলেটা এসে পছন্দমত একটা সিট নিয়ে তার প্রেমিকাসহ বসলো ও ওয়েটারকে ভদ্রভাবে ডেকে সুন্দর করে অর্ডার দিলো।

এ ঘটনাটা আপনার খেয়ালে কেন আসলো? কারণ একটু আগেই এমন একটা ঘটনা দেখেছেন আপনি; এখন তারই পুন:প্রচার হয় কি না তা নিশ্চিত হবার জন্য আপনি খেয়াল করছেন; কিন্তু আপনি আশাহত ! পুন:প্রচার হয়নি !

ছেলেটা তার প্রেমিকাকে "জান" “টান" বলছে না, “তুমি" ই বলছে। এবং কথার স্বরও অনেক নিচু।

কেন? কারণ সে চায় না তার কথা তার প্রিয়তমা ছাড়া আর কেউ শুনুক, এবং ছেলেটার রাজকন্যাও খুব খুশি !

আগের ঘটনায় মেয়েটা হয়ত ভীত, কখন কি ঝামেলায় পড়ে যায় !!

এখানে রাজকন্যা অনেক নিরাপদ ও সন্তুষ্ট !





কি মনে হচ্ছে ? আর কোন দৃশ্যের কি দৃশ্যায়নের প্রয়োজন আছে?

মনে হয় নেই।





ঘটনা ৩:



বাসের জন্য অপেক্ষমান। বাস আসলো, উঠলেন; বাসের কন্টারটর নিয়ম না মেনে স্টপেজের বাইরেও লোক উঠালো, এমনিই দাঁড়ানোর স্থান নেই সেখানে গরমের মধ্যে ঠেসাঠেসিতে অবস্থা খারাপ। আপনি কি করবেন? ধরে নিচ্ছি; আপনি ঘটনা ২ এর সেই ছেলেটা !

কি করবে সে?

সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বলবে: “মামা, এমনিই ঠাসাঠাসি, এরপরেও এমন করলে কেমনে হয়? তোমরাও মানুষ, আমরাও মানুষ, এমনভাবে যদি কর তবে নিজেদেরতো গরু ছাগল মনে হয়। সেটা কি ঠিক?”

এতে করে হয়তো কিছুই হবে না; কিন্তু ঐ বাস কন্টাকটর হয়ত এ কাজের পুনরাবৃত্তি করবে না। কিন্তু তাকে গালি দিলে সেটা গালিই থাকতো, গালি ভিন্ন অন্য কিছু হতো না। এখানে কিন্তু সামান্য একটা কথায় অনেক গুণগত পরিবর্ত হয়ে গেলো ! সেটা কি গালি দিয়ে সম্ভব হতো?







এবার আসুন আমাদের আসল কথায় ফিরে আসি। ভালবাসা ঠিক চর্চা ও অধ্যয়নের ফল।

কিভাবে সেটা একটু উপরের উদাহরণে ফিরে গিয়ে ছোট্ট একটা উদাহরণ দিই।

প্রথম ছেলেটা তার সারাদিনে তার প্রেমিকা ছাড়া আর কারও সাথে ইতিবাচক ভালবাসার প্রকাশ করে না। ফলে তার ইতিবাচক ভালবাসাটাকেও আপনার কাছে নেতিবাচক ও মেকি মনে হল !

দ্বিতীয় জনের প্রাত্যহিক জীবনের সাথে ইতিবাচক ভালবাসায় পূর্ণ, ফলে তার পুরোটাইই আপনার কাছে ভালবাসার মিষ্টি প্রকাশ বলে মনে হলো। নয় কি?



এজন্যই বলা হয়: “ভালবাসা ঠিক যেন বহমান নদী।" আপনি আপনার পুরো দৈনন্দিন জীবনটাকে ছোট ছোট ভালবাসায় পূর্ণ করে ফেলুন, দেখবে সেগুলো আপনার পুরো জীবটাকেই মিষ্টি ভালবাসায় টৈটম্বুর করে দিবে !



আপনি ভালবাসা অন্যের থেকে পাবেন, আবার তাদেরকে ভালবাসা দিবেন – এতে করেই চর্চাটা হয়ে উঠবে। এটা গড়ে উঠে ব্যক্তির চেনা‌-জানা আপনার আপন পরিবেশ ও প্রতিবেশ থেকেই। মানুষ যেমন তেলা মাথায় তেল দেয়, ঠিক তেমনই, আপনার দৈনন্দিন জীবনে একটু একটু ভালবাসা আপনার ভালবাসার পাত্রটাকে পূর্ণ করে দিবে। আপনার ভালবাসার সমুদ্রতে স্নান করতে অনেকেই চলে আসবে বিভিন্ন নামে, পরিচয়ে। আপনার ভালবাসার ও ভালবাসার মানুষের অভাব হবে না। আপনি হতাশায় ভুগবেন না !! বিশ্বাস না হয় একবার চেষ্টা করেই দেখুন !!!



তেমনি করেই বাইরের কাউকে ভালবাসতে গেলে আপনার ভালবাসার সমুদ্রটার গভীরতা ও ব্যাপ্তির পরিব্যাপ্তি পরিমাপিত হয়ে যায়। বেশিরভাগ সময়ই আপনার সমুদ্রের গভীরতা ও প্রশস্ত অঢেল পরিমাণ বড় হলে সেথায় নিশ্চিন্তে ডুব দিয়ে পরিশ্রুত হতেই একটা মেয়ে আপনার ডাকে সাড়া দেয়। কেননা, মেয়েরা অনেক আদরে ও ভালবাসায় বড় হয়, তাই সে যে পরিবেশে বড় হলো, তেমন একটা পরিবেশই সে খুঁজে নিবে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দিতে। অন্য আরও কারণ আছে, ধরে নিলাম সেগুলোর থেকে আপনি এটাতেই মনোযোগী !

যদি আপনার সাগর বা সমুদ্র না হলে নদী বা কুয়ো হয় তবে কি হবে? আপনার প্রত্যাখাত ও দেবদাস হবার মানে দেবদাসের প্রতিমূর্তি হবার পথ প্রশস্ত হয় বৈকি ! উল্টোভাবে, একটা মেয়ে একটা ছেলের পিছনে ঘুরলে বেশি দেরি হয় বা সেটার পরিণতি সুখকর হয়না এই কারণেই যে, অনেক ছেলেরই সমুদ্র না থেকে একটা কুয়ো থাকে। কুয়ো হলে কি হয় তার জ্বলন্ত উদাহরণ উপরের ঘটনা ১ এ পাবেন !

আসল কথা হলো, আপনি যদি শুধু পেতেই চান তবে কিভাবে পাবেন? যদি কেউ না দেয়?

দিতে থাকুন, পাবার চিন্তা না করে, কেননা তখন আপনাকেও কেউ না কেউ দিবে দিবে ! রাজার পুকুর এজন্যই পানিতে পূর্ণ হয়েছিল, কেননা সবাইই ভেবেছিল, সবাই তো দুধই দিবে, আমি পানি দিলে কেউ ধরতে পারবে না ! আসলে কি তাই হয়েছিল? মোটেই না !

তাই নিজে দিন। পান বা না পান ! দিলে কোন না কোনভাবে পেয়ে যাবেন। ইনশাআল্লাহ্ !



[আসল লিখাটি পিডিএফ এ পড়ার লিংক: Click This Link ]

_____________________________________________



লিখাটা প্রথম লিখেছিলাম ৬.৯.২০১৩

সেপ্টেম্বর ৬,২০১৩ তে; সকাল ৬:২০ এ!

আর আজ অক্টোবর ১৩, ২০১৩

বিকাল ৩:২৩ এ পুন:রায় কাটছাট করে লিখে ফেললাম।



_______________________________________________

সাজ্জাদ হোসেন

বিবিএ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। [হিসাববিজ্ঞানী]





_______________________________________________________











মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:১৬

শ্যামল জাহির বলেছেন: চমৎকার উপমা দেয়া লিখা।
ভাল লাগলো অনেক।

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:২৩

সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ বলেছেন: ধন্যবাদ !

২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬

সুমন কর বলেছেন: পড়লাম, তেমন ভাল লাগল না!!

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০২

সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ বলেছেন: ভাল লাগার জন্য লিখা না !

তবে জানানোর জন্য ধন্যবাদ !
বাস্তবতা প্রকাশের প্রয়াশ মাত্র।

৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৩

সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ বলেছেন: অনেক কমেই এটা পড়েছে। :/

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.