নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।
বাজারে জিনিসপত্র কেনার সময় দামাদামি করা বিরাট ঝামেলার কাজ। এই কাজে আমি ঠকতে বড়ই পটু। বিগত দুই বছর যাবৎ ঢাকা শহরে আছি। কখনো আনন্দ নিয়ে বলতে পারবো না যে, আজকে এই জিনিসটা কিনে জিতেছি। নাই বা জিতলাম, সঠিক দামে কিনতে পেরেছি এই আত্নতৃপ্তিটুকু পাবার মতো কোন ব্যাপারও আজতক ঘটেনি।
সে যাই হোক। বাজারে গিয়ে মুরগী দরদাম করার কঠিন পার্ট দিয়েছি। একটা মুরগীর দোকান খুঁজে বের করেছি । লোকটাকে আমার ভালো লেগেছে। হয়তো সেও ঠকায়। তবে তার অমায়িক আচরণের কারণে আমি ধরেই নিয়েছি – সে আমাকে অন্ততঃ খুব বেশী ঠকাবে না।
মোঃপুর থানার পাশ দিয়ে নজরুল ইসলাম রোড ধরে হেঁটে গেলে আসাদ এভিনিউতে যুক্ত হবার সামান্য আগে ডানপাশে দোকানটি। দোকানের কোন নাম নেই। দোকানীর নাম মোঃ গোলাপ মিয়া। তাঁর দোকানে মুরগী কাটাকাটি করার জন্য এক জন হেলপার থাকে। তবে বেশী দিন থাকে। প্রায় প্রতি সপ্তাহে দেখি নতুন হেল্পার। হেল্পারদের বয়স হয় আনুমানিক ৭/৮ বছরের খুব বেশী বলে মনে হয়নি। তবে তারা দুর্দান্ত চালু। খুব দ্রুত মুরগী কেটে ধুয়ে প্যাকেট করে দেয়। দিন শেষে বেতন মাত্র ১০০ টাকা। সাথে সকালে নাস্তার রুটি ভাজি ও দুপুরে ডালভাত ।
সে যাই হোক। কয়েক দিন আগে বাসায় মুরগী নেই। ছুটলাম মোঃ গোলাপ মিয়ার দোকানে। যথারীতি ২খানা মুরগীর ওজন দিয়ে বাকি কাজের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তাকিয়ে দেখি দোকানে যেখানে গোলাপ মিয়া বসেন সেখানে এক ভদ্রলোক বসে আনমনে বিড়ি ফুঁকছেন। আমাকে সামনে পেয়ে সমসাময়িক বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করলেন। উনার হাতে গাড়ীর চাবি দেখে বুঝলাম সুখেই আছেন। ঢাকার বুকে যিনি গাড়ী হাকাতে পারেন তিনি তো দিন এনে দিন খাওয়া পাবলিক নন।
সেই যা হোক । দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে উনি আলোচনার সূত্রপাত করলেন। উনি যেই উচ্চমার্গের আলোচনা করছিলেন তাতে আমার চুপ করে থাকা ছাড়া অংশ করার তেমন সুযোগ পেলাম না। তারপরও উনার কোন এক বক্তব্যের রেশ ধরে আমি বললামঃ দেশের জনসংখ্যা মনে হয় একটু বেশী হয়ে গেছে।
উনি আমার মন্তব্যের গলা চেপে ধরলেন। বললেন- আরে না আপনি জানেন না। জনসংখ্যা এখন দেশে সম্পদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বিদেশ থেকে দেশে কি পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে আপনার ধারণাই নাই।
আসলেই রেমিট্যান্স নিয়ে আমার কোন ধারণা নাই। তবে আমার যে ধারণা আছে সেই ধারণা উনার মতো আরো কয়েক কোটি বাংলাদেশীর নাই।
উনি হয়তো জানেন না যে বিদেশ মানেই টাকার খনি না। ঘরবাড়ি সহায় সম্বল বিক্রি করে যারা মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য আর ভূমধ্যসাগর পারি দিয়ে ইতালি যায় তারাই জানে রেমিট্যান্স কি জিনিস। প্রবাসে আধাপেটা , পোয়া পেটা খেয়ে না খেয়ে যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জানের উপর খেটে মাসের বেতনের টাকা জমিয়ে ধার দেনা করে দেশে টাকা পাঠায় তারা জানে রেমিট্যান্স কি জিনিস।
ভাইরে, আপনারা রেমিট্যান্স দেখেন মানুষের কাঁন্না দেখেন না? ব্যাংকের হিসাব খাতা দেখেন মানুষের আর্তনাদ দেখেন না!
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
জীবন বড় কঠিন।
কেউ বুঝতে চায় না।
২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:০৪
ডার্ক ম্যান বলেছেন: আমার এক আত্মীয় অনেক বছর প্রবাসী ছিলেন। ভালোই রেমিট্যান্স পাঠাতেন।
কয়েক বছর থেকে বাংলাদেশে আছেন। কিন্তু কোন কুল কিনারা করতে পারছেন না। তার সংসারও ছোট না। এখন আবার বাইরে যাবার চেষ্টা করতেছেন।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জীবন খুবই কঠিন। দেশে যারা তাদের প্রশংসা করে ভাষণ দেন তারা হয়তো তাদের কষ্টটা উপলব্ধি করতে পারেন না।
৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:০৭
বিষাদ সময় বলেছেন: এই এলাকাটিতে কিশোর বয়সের একটা সময় পার করেছি। এখনও ওখানে প্রায়ই যাওয়া পড়ে....
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এই এলাকাটি খারাপ নয়।
রাস্তাঘাট নিদারুণ নোংরা ।
তারপরও এখানে পড়ে আছি অনেক দিন হয়।
৪| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:০৮
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: মন সরল হলে তো চলবে না ,
বাস্তবতা অনেক কঠিন ।
...........................................................
আমরা আবেগ প্রবণ জাতি,
রেমিট্যান্স বুঝি না ,
দু বেলা খেতে পারলে ,
এদেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে চায় ।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ঠিক!
আপনি সঠিক বলেছেন।
৫| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশের মানুষ সবাই সবাইকে ঠকাচ্ছে।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এই দেশের ৮৫% ব্যবসায়ী চরম পাপী।
দেশের ও দশের সাড়ে ১২ টা বাজিয়ে এরা করে খাচ্ছে।
৬| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৮
কামাল১৮ বলেছেন: বিদেশের টাকায় দেশে যারা চলে তাদের কারনে বাজারে দামাদামির সিস্টেম বন্ধ হয়ে গেছে।এটা দেশের অনেক ক্ষতি করেছে।উপরন্ত পরজীবী একটা শ্রেনী গড়ে উঠেছে।
২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৩৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
দেশের অনেক মানুষের হাতেই এখন কাঁচা টাকা আছে।
অনেকেই টাকার গরমে ঘেমে নেয়ে একাকার। তাদের কারণে প্রচুর পরিমাণে এসি বিক্রি হচ্ছে।
৭| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫১
আঁধারের যুবরাজ বলেছেন: @প্রবাসে আধাপেটা , পোয়া পেটা খেয়ে না খেয়ে যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে জানের উপর খেটে মাসের বেতনের টাকা জমিয়ে ধার দেনা করে দেশে টাকা পাঠায় তারা জানে রেমিট্যান্স কি জিনিস।
এবং পরে দেখা যায় ,এতো কষ্ট করে টাকা পাঠিয়ে যা কিছু দেশে করেছে। পরিবারের কেউ না কেউ সেই সব দখল করে বসে আছে। " আসবেন ,খাবেন বেড়াবেন & বিদেশে ফিরে যাবেন। সম্পত্তি দাবি করতে পারবেন না " সম্প্রতি আমার পরিচিত একজন দেশ থেকে ঘুরে এসে জানালো। তার ছোট দেবর এই কথা বলে হুমকি দিয়েছে।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:২৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
সবই কপালের লিখন।
কপালে থাকলে এমনটা হয়।
অনেক ছোট্ট বেলায় আমি তখন সিক্সে পড়তাম।
এক লোক ব্রিজের উপর তেকে হেঁটে হেঁটে নেমে আসছিল। তার হাতে গামছায় বাঁধা চাল আর আটা।
উপর থেকে একটা রিক্সা এসে তার গামছার পুটলি ধরে দিল টান।
তার চাল আর আটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লো রাস্তার অজস্র বালির উপর।
সেই চাল উঠানো গেলেও আটা উঠানোর উপায় রইলো না।
আফসোস!
৮| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৩৫
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমার এক কাকা খেয়ে না খেয়ে মালয়েশিয়া থেকে টাকা পাঠান, তার ১৩-১৪ বছরের ছেলে ৭৫ হাজার টাকার মোবাইল চালায়। কাকিও রাজকীয় জীবনযাপন করেন। ব্যাটা বছরের পর বছর বিদেশে থেকে শেষ বয়সে খেতে-পরতে পারে কি না সন্দেহ হয়। সন্তান মানুষ হয় না, চেষ্টাও নেই কারও।
২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এটা একটা ট্রাজেডি বটে। মানুষ তার ভাগ্যকে এড়িয়ে যেতে পারছে না।
বাংলাদেশের ভাগ্যচক্র বেশী সক্রিয় থাকে।
৯| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: কোথায় আপনি?
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৩০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
শরীর ভালো না, ভাইয়া।
হাসপাতালে গিয়েছিলাম।
ডাক্তার আবার অষুধ দিয়েছিন।
কিন্তু উন্নতির কোন লক্ষণ নেই।
আফসোস!
১০| ২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ২:০৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
অতি ধ্রব সত্য কথাগুলিই উঠে এসেছে লেখাটিতে ।
রেমিটেন্স যারা প্রেরণ করেন তারাই বুঝেন সে যে
কত কষ্টের কামাই । তারা যে শুধু রেমিটেন্সই পাঠান
তাতো নয় , যাদের কাছে তা প্রেরণ করা হয় তাদের
সার্বিক দায়িত্ব ও পালন করেন নিষ্ঠার সাথে ।
অর্থ প্রেরণের পর অনেককে বার বার ফোন করে
জানতে হয় পাঠানো অর্থ সময়মত তারা পেয়েছেন
কিনা । অথচ দুর্ভাগ্য কি জানেন তারা অনেক সময়
দিনের পর দিন পার হয়ে যায় একটি মিসকল দিয়েও
জানান না খবরটা । কল দিলে পরে বলেন এইমাত্র
জানাব বলে মনে করেছিলাম । তবে এটা সকলের
জন্য অবশ্য প্রযোয্য নয় ।
যাহোক ভাল একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ ।
শুভেচ্ছা রইল
২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৪৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমার মালয়েশিয়া প্রবাস জীবনে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের দুঃখ-কষ্টগুলো খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি।
একটি তথ্য দিই স্যার। এব্যাপারে শ্রদ্ধেয় খায়রুল আহসান স্যার বেশী ভালো বলতে পারবেন। কেননা, উনি কোন এক দেশে বাংলাদেশের লেবার কাউন্সেলর হিসাবে কাজ করেছেন।
তথ্যটি হলোঃ মালয়েশিয়াতে প্রতি দিন রাউন্ড ফিগারে ৩ জন বাংলাদেশ শ্রমিক মারা যায় যাদের গড় বয়স ৩০ বছরের নীচ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:০০
ডার্ক ম্যান বলেছেন: মানুষ এখন শুধু টাকা বুঝে। মন বুঝে না।