নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কখনো নিজের নাম লুকোই না। আকাইমা শব্দ দিয়ে বানানো ছন্ম নাম আমার পছন্দ নয়। মা-বাবা\'র দেয়া নাম দিয়েই প্রোফাইল খুলেছি।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন

আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নতুন বইয়ের ঘ্রাণ! *********************************************

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:২৬

আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন স্কুলগুলোতে বিনা মূল্যে বই দেয়া হতো না। যাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল তারা নতুন বই কিনে পড়তে পারতো আর যাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিল তারা পরিচিত/অপরিচিত জনের কাছ থেকে পুরাতন বই কিনতো। ফলে আমাদের অনেকেই জানতো না যে, নতুন বইয়ের কি যে সুঘ্রান। এই রহস্যময় ব্যাপারটি আমিও জানতে পারিনি। জানতে পারলাম তখনই যখন আমি চতুর্থ শ্রেণীতে উঠলাম।

চতুর্থ শ্রেণীতে উঠার পর কোন কারণে পুরাতন বই যোগাড় করা সম্ভব না হওয়ায় নতুন বই ক্রয় করা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠে। সেই বছর কোন এক কারণে বোর্ডের বই বিক্রি করা হয়েছিল পোস্ট অফিস থেকে।

ব্রিজের সাথে জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি টিনশেড ঘর ছিল। সেখানে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস হতো। অবশ্য ক্লাস সিক্সের খ শাখার ক্লাসও এই ভবনে নেয়া হতো। এই ভবনের প্রথম কক্ষটিই ছিল জয়পাড়ার পোস্ট অফিস। তখন পোস্ট অফিসে নাম ছিল মুজিবে ডাকঘর। মেইনে রোডের পাশে জানালা দিয়ে বই কেনার ব্যবস্থা ছিল।

যথাসময়ে টাকা নিয়ে হাজির হলাম পোস্ট অফিসের বই বিক্রির নির্ধারিত কাউন্টারে। টাকা পরিশোধ করে অনেকগুলো ঝকঝকে বই হাতে পেলাম। অসাধারণ সুন্দর বই। আকর্ষণীয় ঝকঝকে প্রচ্ছদের বই। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। মন ভরে যায়। আর বইয়ের সে যে কি সুবাস। প্রতিটি পাতা উল্টালেই ঘ্রাণে মন ভরে যায়।

বই হাতে পাওয়ার পর প্রথম যে কাজটি করলাম তা হলো বইয়ের মলাট লাগানো। পুরাতন ক্যালেন্ডার, সোভিয়েত মৈত্রী, সোভিয়েত নারী এই সব ম্যাগাজিনের সুন্দর সুন্দর পৃষ্ঠা দিয়ে বইয়ের আসল প্রচ্ছদ ঢেকে দেয়া যাতে উহা ময়লা হয়ে না যায়। আসল প্রচ্ছদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারতাম না। কৃত্রিম মলাতেই ১ বছর পার করে দিতাম।

এখন তো সব স্কুলেই সরকারীভাবে বিনামূল্যে বই দেয়া হয়। এখন কেউ আর কৃত্রিম মলাট লাগায় না। কেননা, প্রতি বছরই নতুন নতুন বই দেয়া হয়। অনেকটা ওয়ানটাইম কলমের মতো ওয়ানটাইম বই পড়ে এখনকার শিক্ষার্থীরা। কাউকে পুরাতন বই পড়তে হয় না। নতুন বইয়ের সুবাস পায় তারা প্রতি বছর। তারা যে কি ভাগ্যবান।

এখন প্রতি বছর পহেলা জানুয়ারি বাংলাদেশে বই উৎসব হয়।
এই বই উৎসব দেখতে খুবই ভালো লাগে ।
কল্পনায় নিজেকে আবার ছোটবেলায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছা করে ।

ইচ্ছা করে নতুন বইগুলো হাতে নিয়ে সারাটা গ্রাম জুড়ে প্রচন্ড জোরে একটি ম্যারাথন দৌড় দিই। যার হাতে ঝকঝকে তকতকে নতুন এক সেট সুবাসিত বই আছে বিশ্বজয়ী আলেকজান্ডার এর তরবারির চেয়ে ও শক্তিশালী অস্ত্র তাঁর কাছে।

চাইলে সে বিশ্ব জয় করতে পারে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

মায়াস্পর্শ বলেছেন: গতকাল আমার ভাতিজির বইগুলো মলাট করে দিয়েছি। সুন্দর করে লিখেছেন। তবে এখনকার বইয়ের পাতার কাগজের মান একেবারেই নিম্নমানের। আগের মত সেই ঘ্রাণও আর নেই।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


আপনার কথা সঠিক।
তবে আমার মনে হয় বইগুলো যত্ন করে পড়া উচিত।
এক বছরের বই পরের বছরও অন্য কেউ যাতে পড়তে পারে সেই ব্যবস্থা করা খুবই দরকার।
ওয়ানটাইম কলমের মতো বই যেন ওয়ান টাইম না হয়।

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:০৬

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: নস্টালজিক হয়ে গেলাম...

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

অনেক সাধারণ গরীব মানুষের জীবন।
অথচ কতই না মজার ছিল।
এখনো মনে হয় আবার যদি আগের জীবনে কোনভাবে ফিরে যেতে পারতাম।

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫

নাহল তরকারি বলেছেন: সুন্দর।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

বই খুব অসাধারণ একটা জিনিস।
এই জিনিসের নেশা সবাইকে ধরিয়ে দেয়া দরকার।

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:০২

সোনাগাজী বলেছেন:



মলাটের উপর বই'এর মালিকের নাম লিখতো অনেকে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আমাদের ক্লাসের বেশীর ভাগই লিখতো।
আমাদের বই বহন করার কোন ব্যাগ ছিল না।
আমরা হাতে করেই নিতাম।
অনেকে আবার রুমাল দিয়ে বই বেধে নিত।
আমরা হাই স্কুলে যেতাম লুঙ্গি পরে। প্যান্ট পরা শুরু হয়েছিল এইট/ নাইনে উঠার পরে।

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:১৩

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সেই ছোট বেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। যখন নতুন বই হাতে পেতাম, তখন বার বার ঘ্রান নিতাম। বাড়ি ফিরে চলতো মলাটের কাজ।
কত যতন করে নতুন বইতে মলাট দিতাম। আমার বড় ভাই মলাটের উপরে আমার নামটা সুন্দর করে লিখে দিত।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আমি আমার নতুন বইয়ে একটা দাগও দিইনি।
পুরো বছর জুড়েই বইগুলো চকচকে, ঝকঝকে রেখেছিলাম।
সেই বইগুলোকে খুব মিস করি।

৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩৪

শেরজা তপন বলেছেন: আহা আমার মনে পড়ে ইউনিসেফের সেই নীল রঙের ঝকঝকে খাতাগুলোর কথা কি সুন্দর ঘ্রান ছিল।
নতুন বইয়ের ঘ্রান আর মলাট দেয়া সে এক উৎসবের আমেজ!!!!

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৪৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


সেগুলো ছিল জীবনের মধুভরা দিন।
শিশুদের জীবনকে আনন্দময় করার জন্য বড়দেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে।

৭| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


আপনার মত সুন্দর খুব কম ব্লগারই লিখতে পারেন ।
আপনার যথেষ্ট মেধা ছিল ।
আপনি কাজে লাগাচ্ছেন না।
আপনার মনটা অনেকটাই প্রশস্ত।
দুই একটু ঝামেলা বাদ দিলে...।

৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৪০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: একেবারে এক ধাক্কায় শৈশবে নিয়ে গেলেন। আপনার বর্ণনা একেবারে খাপে খাপ মিলে গিয়েছে আমার সাথে, শুধু পোষ্ট অফিসেরটা বাদে। আর নতুন বইয়ের সুঘ্রান.......আহা!!! এখন কোন দামী পারফিউমেও সেই সুঘ্রান পাই না।

দেশের আরেকটা সুঘ্রান মিস করি। বৈশাখ মাসের প্রথম বৃষ্টির পর মাটি থেকে যে একটা সোদা সোদা গন্ধ উঠে আসে, সেইটা। বিশ বছর আগে শেষবার এই গন্ধ নিয়েছিলাম। এরপর প্রতিবারই শীতে দেশে গিয়েছি। :(

২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৩৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:



আপনার কথা শুনে বড়ই আনন্দ লাগল।

৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৮

বিজন রয় বলেছেন: ১লা জানয়ারি ছোটদের নতুন বই দেওয়া হয়েছে। ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন বইয়ের বইমেলা।

চারিদিকে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ।

বড়ই আনন্দের!!

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:০১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


পৃথিবীতে বই এর চেয়ে ভালো জিনিস খুব কমই আছে ।
বই যারা ভালবাসে তারা অবশ্যই খুব ভালো মানুষ ।
তাদেরকে আমি পছন্দ করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.