![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে মানুষের অন্ধ চোখে দৃষ্টি ফেরাতে ‘বায়োনিক চোখ’ প্রতিস্থাপন চিন্তাটি এখন আর মৌলিক কোন বিষয় নয়, বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কিন্তু প্রত্যাশিত সাফল্য ছিল অধরা। কিন্তু গত মাসে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শল্যচিকিৎসক (সার্জন) মাহি মোহাম্মদ মুকিত এর তত্ত্ববাধানে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অন্ধ এক ব্যক্তির চোখে ‘আইরিস টু’ নামে নতুন এক বায়োনিক চোখ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে তার দৃষ্টিশক্তি অনেকখানি ফিরে আসায় নতুন আশার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ডাঃ মাহির পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশের হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় হলেও তার জন্ম স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে, বর্তমানে থাকছেন লন্ডনের উইম্বলডনে। বাবা মোহাম্মদ আব্দুল মুকিত ও মা মমতাজ বেগম দুজনই ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, তারা উভয়েই যুক্তরাজ্যে নিয়োজিত ছিলেন চিকিৎসা পেশায়। এই চিকিৎসক দম্পতির তৃতীয় সন্তান মাহি যুক্তরাজ্যের প্রথম সারির চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও শল্যবিদ, কর্মরত আছেন যুক্তরাজ্যের শীর্ষ চক্ষু হাসপাতাল লন্ডনের ‘মুরফিল্ড আই হসপিটালে’। ফ্রান্সভিত্তিক চক্ষু চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পিক্সিয়াম ভিশন’ উদ্ভাবিত আইরিস টু নামের নতুন এই প্রযুক্তিটির আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে এর প্রতিস্থাপনের দায়িত্ব দেয়া হয় তাঁকে। ফ্রান্স, জার্মানি ও অস্ট্রিয়ায় তিনজন চিকিৎসক ইতোমধ্যে আইরিস টু প্রতিস্থাপন করেছেন। আর বিশ্বের চতুর্থ শল্যবিদ হিসেবে গত ১২ অক্টোবর মুরফিল্ড হাসপাতালে ৭৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তির চোখে আইরিস টু প্রতিস্থাপন করেন ডাঃ মাহি। ‘আইরিস টু’ প্রযুক্তিতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোগীর চোখের রেটিনাতে একটি বৈদ্যুতিক চিপ লাগিয়ে তাকে ক্যামেরা-সম্বলিত একটি চশমা পরিধানের জন্য দেয়া হয়। এই চশমার সঙ্গে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে যুক্ত থাকে মোবাইল ফোনের সমান একটি বিশেষ যন্ত্র। চোখে চশমা লাগানোর পর কোমরে ঐ যন্ত্র আটকে রাখার ব্যবস্থা আছে। চশমায় লাগানো ক্যামেরা রোগীর সামনের চিত্রগুলোকে ধারণ করে আর কোমরে লাগানো যন্ত্র তারহীন তরঙ্গের মাধ্যমে (ব্লুটুথ) চোখের চিপে সংকেত পাঠায়। চোখের ভেতরের চিপ ক্ষতিগ্রস্ত রেটিনাকে জাগ্রত করার মাধ্যমে মস্তিষ্কে সেসব ছবি পাঠায়। এর মাধ্যমে অন্ধ ব্যক্তি তাঁর আশপাশের দৃশ্য অনুধাবন করতে সক্ষম হন। অন্ধ চোখে দৃষ্টি ফেরাতে ‘অ্যার্গাস টু’, আলফা আইএমএস, ‘এএমএস’সহ বিভিন্ন বায়োনিক চোখ নিয়ে বেশ আগে থেকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তবে আইরিস টু দ্বিতীয় প্রজন্মের বায়োনিক চোখ, যা অন্য যেকোন প্রযুক্তির তুলনায় অধিকতর কার্যকর। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী আন্তর্জাতিক সংগঠন হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনালের উপদেষ্টা হিসেবে গত ছয়-সাত বছর ধরে কাজ করা ডাঃ মাহিকে প্রতিবছর কয়েকবার বাংলাদেশে যাতায়াত করতে হয়।তিনি বাংলাদেশে মূলতঃ ডায়াবেটিসজনিত কারণে সৃষ্ট অন্ধত্ব নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করছেন। যুক্তরাজ্যে চক্ষু চিকিৎসার অন্যতম পথিকৃত এই বঙ্গ সন্তান ‘বায়োনিক চোখ’ প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি উজ্জল করতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। ধন্যবাদ, ডাঃ মাহি। আপনার মতো কৃতি সন্তানের সাফল্যে দেশমাতৃকা তথা জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৯
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ডাঃ মাহির জন্য অনেক শুভেচ্ছা।