![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিগত কয়েক বছর আগে এ দেশের চিত্রপট ছিল গ্রামের পথে দেখা যেত কিছু বালক হাফপ্যান্ট বা ময়লা পায়জামা-শার্ট পরে স্কুলে যাচ্ছে, তাদের বই-খাতা দড়ি দিয়ে বাঁধা। সেই স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে দেখা যেত একজন কি দুজন বালিকা। আজ কোনো প্রত্যন্ত পল্লিতে গেলে দেখা যায়, শত শত ছেলেমেয়ে একসঙ্গে কোলাহল করতে করতে স্কুলে যাচ্ছে। তাদের গায়ের কাপড় ময়লা বা ছেঁড়া-ফাটা নয়। পরিষ্কার স্কুলের পোশাক। বই-খাতা মায়ের শাড়ির ছেঁড়া পাড় বা দড়ি দিয়ে বাঁধা নয়। প্রায় সবারই পিঠে রেক্সিনের স্কুলব্যাগ। সম্প্রতি সীমান্ত এলাকার দূরবর্তী গ্রামে গিয়েও এই দৃশ্য দেখা যায়। এতে বুকটা ভরে যায়। চোখে পানি আসে, যখন দেখি দরিদ্র পরিবারের বাচ্চা মেয়েদের স্কুলে গিয়ে পড়ার আগ্রহ দেখা যায়। কিন্তু বছরখানেক যাবৎ সন্ত্রাসের যেসব দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে, তাতে শুধু উদ্বেগ নয়, আতঙ্কগ্রস্ত আজ সমগ্র জাতি। এখন এই অবস্থার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বাংলাদেশ বসবাসের জন্য অনুপযুক্ত হয়ে পড়বে। বলতে গেলে আংশিক অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছেও। জনগণের উদ্বেগের অন্ত নেই। মা-বাবা সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে উদ্বেগে থাকেন। কেউ কর্মস্থলে গেলে বাড়ির লোক উদ্বেগে থাকে, যতক্ষণ না ঘরে সে ফিরে আসে। মসজিদ, মন্দির, বিহার, গির্জায় যাচ্ছে মানুষ ভয়ে ভয়ে। সুপারমার্কেটে ঢোকার সময় মানুষ দেখে নেয় বেরোনোর দরজা কোন দিকে। বিয়ের বরযাত্রী অথবা বউভাতের অনুষ্ঠানে ভয়, সভা-সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা বাদই দিলাম। যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠান এবং মাওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভায় বোমা হামলার পর থেকে সভা-সমাবেশ আর নিরাপদ মনে করে না কেউ। আমরা দোষ না করে আক্রান্ত। পুরো পৃথিবীই আজ জঙ্গিবাদ দ্বারা আক্রান্ত। এখন সেই রোগের প্রতিষেধক কী? আমাদের বাঁচার জন্য প্রতিষেধক আমাদেরই খুঁজে বের করতে হবে। প্রতিষেধকের জন্য পশ্চিমের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকলে চলবে না। সমাজকে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদমুক্ত করা না গেলে আর্থসামাজিক উন্নতির গতি থেমে যাবে। বিশেষ করে, নারী প্রগতি থেমে যাবে। সেটা এই যুগে খুব বড় ক্ষতি। ভবিষ্যৎ হবে তমসাচ্ছন্ন। যে মেয়ে আজ মাধ্যমিক পাস করল, তার মেয়ে বা ছেলেকে সে অন্তত বিএ, বিএসসি, বিকম পাস করানোর স্বপ্ন দেখবে। মেয়েদের উন্নতির পথে যেসব বাধা আছে, তা অপসারণের ব্যবস্থা করলে তারা নির্বিঘ্নে নিজেরাই পথ চলতে পারবে। সমাজ থেকে সন্ত্রাসবাদী ভয় দূর করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। কখনো সেটা করতে গেলে লাঠির সদ্ব্যবহারের প্রয়োজন হবে, কিন্তু লাঠিই সব সমস্যার সমাধান নয়। রাষ্ট্রে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও সমাজে উচ্চতর নৈতিক মান প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমেই নির্ভর করছে জাতির ভবিষ্যৎ। অতীতের পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব নয়, কিন্তু অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে প্রয়োজনমতো গড়ে তোলা সম্ভব।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
"সম্প্রতি সীমান্ত এলাকার দূরবর্তী গ্রামে গিয়েও এই দৃশ্য দেখা যায়। এতে বুকটা ভরে যায়। চোখে পানি আসে, যখন দেখি দরিদ্র পরিবারের বাচ্চা মেয়েদের স্কুলে গিয়ে পড়ার আগ্রহ দেখা যায়। "
-ওপার থেকে হয়তো গরু বেশী আসতেছে? বিএসএফ'এর গুলিতে সীমান্তে প্রতি সপ্তাহে কারো না কারো চোখে পানি আসে।