![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিচার করে জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের হার নির্ধারণ করা হচ্ছে। বাজার মূল্যের চেয়ে দেড়গুণ, দ্বিগুণ এবং ক্ষেত্র বিশেষে তিনগুণ মূল্য ক্ষতি পূরণের বিধান রেখে ভূমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন করা হচ্ছে। পার্বত্য তিন জেলাকেও এর আওতাভুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ একটি আইন করা হচ্ছে। ইতোপূর্বে পার্বত্য ৩ জেলার ভূমি অধিগ্রহণের আওতামুক্ত রেখে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। পরে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে ওই তিন জেলার ভূমি অধিগ্রহণের বিধান আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখন থেকে অন্য ৬১ জেলার ন্যায় পাবর্ত্য তিন জেলার ভূমিও অধিগ্রহণ করা যাবে। এতে শুধু ভূমি অধিগ্রহণ করা যাবে। কোন স্থাপনা কিংবা উদ্যান, গাছ গাছালিসমৃদ্ধ কোন বনভূমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। দেশে স্থাবর সম্পত্তি হুকুম দখল ও অধিগ্রহণের জন্য পূর্ণাঙ্গ কোন আইন ছিল না। এতে সরকারী প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় এক একটি প্রকল্পের জন্য একটি করে নতুন আইন প্রণয়ন করতে হয়েছে। অধিগ্রহণের সময় ভূমি মালিকরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাজার মূল্যের চেয়ে দেড়গুণ, দ্বিগুণ এবং ক্ষেত্রবিশেষ তিনগুণ মূল্য পাবেন। যে স্থানে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে অধিগ্রহণের আগেই ওই এলাকার ভিডিওচিত্র সংরক্ষণ করা হবে। অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হবে। এ ধরণের নতুন নতুন বিভিন্ন বিধিবিধান সংযোজন করে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন, ২০১৭ প্রণয়ন করা হচ্ছে। ১৯৮২ সালে সামরিক সরকারের সময় জারি করা অধ্যাদেশ বলে অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কার্যাবলী সম্পাদন করা হত। একটি পূর্ণাঙ্গ আইন করা হচ্ছে বিধায় একই বিষয়ে একাধিক আইন প্রণয়ন করার প্রয়োজন হবে না। সে লক্ষ্য পূরণে আইনটি প্রণয়ন করা হচ্ছে। যে কোন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের সময় অসৎ উদ্দেশ্যে বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়। বেশি ক্ষতিপূরণ লাভের উদ্দেশ্যে একশ্রেণীর মানুষ এ ধরনের কাজ করেন। তাদের সঙ্গে প্রশাসনের অনেকের সখ্যতাও থাকে। এতে সরকারী অর্থের ব্যাপক অপচয় হয়। কেউ যাতে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রকল্প এলাকায় কোন ধরনের ঘরবাড়ি কিংবা অন্য কোন স্থাপনা তৈরি করতে না পারে, সে লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণের আগেই ওই এলাকার ভিডিওচিত্র ধারণ করে তা সরকারীভাবে সংরক্ষণ করা হবে। প্রকল্প এলাকার অবস্থা গাছপালা, উপরিস্থ অবকাঠামো সবই এতে সংরক্ষিত হবে। ভূমি মালিক ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ কাজ সম্পন্ন করবে। গত ৫ ডিসেম্বর যখন আইনটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয় তখন আইনটিতে পাবলিক পারপাস ও পাবলিক ইন্টারেস্ট দুইটি শব্দ যুক্ত করা হয়েছে। এখন আইনটিতে পাবলিক পারপাস ও পাবলিক ইন্টারেস্ট শব্দ দুইটির বিস্তারিত ব্যাখ্যা সংযুক্ত করা হয়েছে। অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের রেওয়াজ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। বাস্তবে অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশে এ বিষয়ে কোন কথা বলা নেই। সেই ক্ষেত্রে এখন থেকে সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের বিষয়টি আইনী কাঠামোর মর্যাদা পাবে। অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা ৩টি ক্ষেত্রে ৩ ধরনের বাড়তি মূল্য পাবেন। এ মূল্য ভূমির মৌজাভিত্তিক ১২ মাসের বাজার দরের গড় মূল্যের আলোকে নির্ধারিত হবে। সেই ক্ষেত্রে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য সরকারীভাবে ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে বাজার মূল্যের দ্বিগুণ মূল্য ভূমি মালিককে দেয়া হবে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক ১৫ দিনের সময় পাবেন। লাভজনক বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে ভূমি মালিককে বাজার দরের তিন গুণ মূল্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেয়া হবে। আর যে ক্ষেত্রে অধিগ্রহণ বাধতামূলক সেই ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভূমি মালিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাজার মূল্যের দেড়গুণ টাকা পাবেন। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হলে সরকারের কাছ থেকে আগেই অনুমোদন নিতে হবে।
©somewhere in net ltd.