![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘ছোট ছোট বালু কণা, বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল’ – বিষয়টি আমাদের সকলেরই জানা। ঠিক এ ভাবেই ছোট ছোট ভালো কাজ যখন একত্র হয় তখন তা বড় কল্যাণ বয়ে আনে। আর একদিন না একদিন সে ভালো কাজের স্বীকৃতিও মিলে। এমনই কিছু ছোট ছোট অথচ ভালো কাজের বড় স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর কানাডার রায়ারসন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট গ্র্যান্ট ও সম্মাননা জিতে নিয়েছেন নেসার আহমেদ নামের এক বাংলাদেশি কানাডীয়। ২০১২ সালে স্ত্রী ও এক সন্তানসহ উন্নত জীবনের আশায় অভিবাসী হিসেবে কানাডায় স্থায়ী হওয়া নেসার রায়ারসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের স্নাতক প্রোগ্রামের চতুর্থ বর্ষের একজন ছাত্র। অন্য দশজন অভিবাসীর মতো শুরুতে তাঁকেও নানা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। নতুন দেশের আবহাওয়া, কর্মপরিবেশ, সংস্কৃতি ইত্যাদির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়ানো, উপার্জন করে সংসার চালানো, সম্মানজনক পেশায় ঢোকার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা—সবই ছিল তাঁর নতুন জীবনের জন্য একেকটি যুদ্ধ। তবে এতো কিছুর মাঝেও বাংলাদেশ থেকে যারা তাঁর মতো অভিবাসী হয়ে কানাডায় গিয়েছে তাদের দুঃখ-কষ্ট তাঁকে প্রতিনিয়ত কাঁদিয়েছে। অনেকের চাকরি নেই, সংসারে অশান্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে চোখের সামনে - মানবিক বিপর্যয় রোধে এসব মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ তাকে প্রতিনিয়ত তাড়িত করেছে। তিনি তাঁর বেকার প্রতিবেশীদের চাকরি পেতে সহায়তা, ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে কর্মশালা, চিনি আর অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার খেয়ে ছোট বাচ্চাদের স্থূলতার বিষয়ে মা-বাবাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করেন, বিনা পয়সায় বা স্বল্প দামে কোথায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়া যায় প্রতিবেশীদের তা জানানো ইত্যাদি পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেন। এ ছাড়াও শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থ্যতার জন্য বিনা পয়সার সরকারি অনুশীলন ও বিনোদন কেন্দ্রের তথ্যও মানুষকে জানাতে শুরু করেন। যেহেতু বাঙালি কমিউনিটির অনেকেই ইংরেজি পুরোপুরি বুঝতে পারেন না, সে জন্য তথ্যগুলো তিনি বাংলায় অনুবাদ করে মানুষের মাঝে বিলি করেন। নিজ উদ্যোগে স্থানীয় পৌরসভার কাছে আবেদন করে অর্থের সংস্থান করে এবং টরন্টোর বাঙালি কমিউনিটির জন্য তথ্য ও কর্মসংস্থান নিয়ে কাজ করা ‘বায়েস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় তিনি এসব কাজ করতে থাকেন। এ বছর রায়ারসন বিশ্ববিদ্যালয় টরন্টোতে সমাজকল্যাণমূলক ছোট ছোট ভালো কাজের স্বীকৃতি ও পুরস্কার দেয়ার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মনোনয়ন আহ্বান করলে বাংলাদেশের নেসার তাঁর অসাধারণ ছোট ছোট ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ শ্রেষ্ঠ মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তি হিসেব রায়ারসন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট গ্র্যান্ট ও সম্মাননা পুরস্কার জিতে নেন। এ সম্মাননা একজন বাঙালির অনন্য মানবিকতাবোধ আর স্বদেশপ্রেমের স্বীকৃতি। এ ধরনের সম্মাননাই আরো অনেক নেসারকে মানুষের জন্য কাজ করার প্রেরণা জোগাবে। প্রবাসী বাঙালিরা প্রত্যেকেই যদি তাদের নিজের নিজের অবস্থান থেকে একে অপরকে সহযোগিতা করতে উজ্জীবিত হয় তাহলে তারা সবাই মিলে ভালো থাকতে পারবে। বিশ্ব পরিমন্ডলে যেখানেই বাংলাদেশী কমিউনিটির আছে সবখানে ক্রমশঃ বাংলাদেশের গৌরব ও সম্মান আরও বৃদ্ধি পাবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
"‘ছোট ছোট বালু কণা, বিন্দু বিন্দু জল গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল’ – বিষয়টি আমাদের সকলেরই জানা। "
-তাই নাকি, এটা জানা ছিলো না।