![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বছর ঘুরে বছর আসে। এটাই কালের পরিক্রমা। সময়ের পিঠে ভর করে চলতে থাকা বছর ফুরোয়। নতুন আশার আলোয় আসে আরেকটি নতুন বছর। এই নতুন আর পুরনোর মাঝে রয়ে যায় কিছু হিসাব-নিকাশ। সেই হিসাব-নিকাশ মেটানোর সৌহার্দ্য-সম্প্রীতিময় আয়োজনটির নাম হচ্ছে হালখাতা। ১৪২৩ বঙ্গাব্দ বিদায় নিয়ে এসেছে নতুন বঙ্গাব্দ ১৪২৪। সেই সুবাদে উঠে এসেছে ব্যবসায়ীদের সারাবছরের দেনা-পাওনা মিটিয়ে হিসাবের খতিয়ান আঁকা হালখাতার কথা। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় হালখাতার সেই রমরমা দিনটি এখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ। তাই বলে হারিয়ে যায়নি। পারিবারিক পরম্পরায় কিংবা ঐতিহ্যের অনুসরণে এখনও টিকে আছে আদ্দিকালের ব্যবসানির্ভর প্রথাটি। যতই কম্পিউটার কিংবা অন্য কোন আধুনিক হিসাবযন্ত্র আসুক না কেন, সারা বছরের হিসাবটি এখনও হালখাতার মাধ্যমেই সম্পন্ন করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এটি তারা বংশপরম্পরায় পালন করে আসছে। তাই তারা নববর্ষের দিনে ক্রেতাকে আমন্ত্রণ জানান। সেদিন ক্রেতা বা খদ্দেররা বিগত বছরের হিসাবটি মিটিয়ে দেন। লাল রঙের নতুন খাতায় শুরু হয় নতুন বছরের নতুন হিসাব। দেনা-পাওনার হিসাব শেষে খদ্দেরকে মিষ্টি-নিমকিসহ নানা কিছু দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। হিন্দু ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউবা আবার হালখাতাটি নিয়ে উপস্থিত হন মন্দিরে। সেই খাতা নিয়ে প্রার্থনা করা হয় নতুন বছরটি যেন ভাল কাটে। এর বাইরে নতুন বাংলা বছরের অলঙ্কার গড়তে স্বর্ণকারের হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন সোনা। দিনের যে কোন সময় দোকানের সামনে এসে ঢাকের বোল তোলে ঢাকি। সেই বোলের তালে নাচ করে মহাদেবরূপী কোন মানব। ছোটরাও এসে জড়ো হয় দোকানে। বড়দের প্রণাম শেষ করার পর ছোটদের বখশিশ দেয়া হয়। হিন্দু ব্যবসায়ীরা যেমন হালখাতাটি নিয়ে মন্দিরে যান কল্যাণ কামনায় তেমনি নতুন বছরের দোয়া চেয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন মুসলিম ব্যবসায়ীরা। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখ ছাড়াও হালখাতা এখন বিভিন্ন দিনে করা হয়। অনেকেই ইংরেজী বছরের হিসাব কষে হালখাতা করে থাকেন। তবে হালখাতার অনুষ্ঠানটি পহেলা বৈশাখেই শুধুমাত্র সামঞ্জস্য। সেদিন যে নতুন খাতার সূচনা হয়, তা অন্যদিনে চলে না। হালখাতা মূলত সারাবছরের লেনদেনের হিসাব রাখার বিষয় বলে বাধ্য হয়েই নির্দিষ্ট দিনে করা হয়ে থাকে। হালখাতা বিষয়টির সঙ্গে ধর্মীয় কোন আনুষ্ঠানিকতা নেই। হালখাতার উপরে অবশ্যই স্বস্তি বচন লেখা থাকতে হবে। ইসলাম ধর্মানুসারীরা ‘এলাহি ভরসা’ আর হিন্দু ব্যবসায়ীরা ‘গণেশায় নমঃ’ লিখেই হালখাতার সূচনা করে থাকেন। এতে বাংলা নববর্ষের এই অনুষ্ঠানটিকে ধর্মপ্রভাবান্বিত বলা চলে না। এটা ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাসের অভিব্যক্তি মাত্র, হালখাতার মূল লক্ষ্য হিসাব-নিকাশের অঙ্গ নয়। এই স্বস্তি বচন লিখলেও হালখাতা হিসাবের খাতায় থেকে যায়। এ বছর সরকারীভাবেও হবে হালখাতা। কর আদায় নয়, বকেয়া পরিশোধ স্লোগানে বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে হালখাতা করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নববর্ষে এবার হালখাতা করা হবে। কর আদায় নয়, সম্মানজনক বকেয়া কর পরিশোধের সুযোগ দেয়া হবে ব্যবসায়ীদের। দেশের সব আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) কমিশনারদের কার্যালয়ে হালখাতা চলবে বৈশাখজুড়ে। মানুষ এখন কর দিতে আগ্রহী এবং সারাদেশে রাজস্ব সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:০৮
ইয়াসিরআরাফাত বলেছেন: বাঙ্গালীর সংষ্কৃতি বর্তমান বিশ্বে নন্দিত।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:১৫
আবু মুছা আল আজাদ বলেছেন: ভাববার বিষয়