নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমিই মেঘদূত

আমিই মেঘদূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের এক অনন্য মাইলফলক

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:২৬

একপাশে উঁচু পাহাড়ে সবুজের হাতছানি। অপরপাশে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আঁছড়ে পড়ছে বালিয়াড়ির বুকে। এই দুইয়ের বুকচিরে মাঝখান দিয়ে এগিয়ে গেছে পথ। পথের পাশে নানা প্রজাতির গুল্মলতা, ঝাউয়ের সারি মাতিয়ে তুলে মন। স্বপ্নের মতো এই চিত্র বাস্তবে দেখা দেয় সমুদ্র সৈকতের কোলঘেঁষে নির্মাণাধীন কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে। কক্সবাজার জেলা শহরের কলাতলী থেকে সীমান্তবর্তী টেকনাফ উপজেলার সাবরাংয়ে প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)। বর্তমানে নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। বিশ্ব পর্যটনের দুয়ার খুলতে চলেছে সড়কটি। এটি পুরোদমে চালু হলে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যাওয়ার ক্ষেত্রে পর্যটকদের সময়ের অনেক সাশ্রয় হবে। তিন ঘণ্টার পথ পৌঁছে যাবেন মাত্র এক ঘণ্টায়। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সরকারের আমলে ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। তখন প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। বর্তমানে সড়কটির দৈর্ঘ্য বেড়ে ৪৮ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে, নির্মাণকাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় সেনাবাহিনীর প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নকে। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী। তিন ধাপে নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে কলাতলী থেকে ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ইনানী থেকে শীলখালী ২৪ কিলোমিটার ও তৃতীয় ধাপে শীলখালী থেকে টেকনাফের সাবরাং পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। তৃতীয় ধাপের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে জুন মাসের মধ্যে। সড়কটি নির্মাণে মোট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪৫৬ কোটি টাকা।
মেরিন ড্র্রাইভ সড়কটির দুইপাশে থাকবে ওয়াকওয়ে। পর্যটকদের সুবিধার্থে থাকবে সড়কজুড়ে ফেক্সিবল পেভমেন্ট, শেড, গাড়িপার্কিং ও চেঞ্জিং রুমের ব্যবস্থা। ৮০ কিলোমিটার সড়কে তিনটি বড় আরসিসি সেতু, ৪২টি কালভার্ট, তিন হাজার মিটার সসার ড্রেন ও ৫০ হাজার মিটার সিসি ব্লক ও জিও টেক্সটাইল ব্যাগ। ইতোমধ্যেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে সড়কটি। পথ চলতে চলতে পাহাড় ও সমুদ্রের অপরূপ মেলবন্ধন দেখে মোহিত হচ্ছেন পর্যটকেরা। সবুজ পাহাড়ের ঝরনা, পথের পাশে ঝাউবন, জেলেদের মাছ ধরা, পাখির ঝাঁক দেখতে দেখতে পর্যটকেরা ঘুরতে যেতে পারছেন ইনানীর পাথুরে সৈকতে। এই সড়ক ঘিরে ইতোমধ্যে উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলাতে শুরু করেছে। হু হু করে বাড়ছে সড়কের আশপাশের জমির দাম। দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, রাজনৈতিক, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও জমি কিনছেন। গড়ে তুলছেন বহুতল স্থাপনা। এক কথায় সড়কটি ঘিরে অফুরন্ত পর্যটন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগামীতে পিছিয়ে থাকা এই জনপদ সমৃদ্ধ হবে অর্থনৈতিকভাবে। এখন সড়কটি শুধু কক্সবাজার বা গোটা দেশের নয় বরং বিশ্বের অন্যতম দর্শণীয় ও নান্দনিক একটি সড়কে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে এই সড়ক সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে – আগামীতে যা হয়ে উঠবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের এক অনন্য মাইলফলক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.