নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সহি বুখারি শরীফের হাদিসকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে একজনে একটা পোস্ট দিয়েছেন কয়েকদিন আগে।ইমাম বুখারি কি বললেন আর গবেষণায় কি প্রমান হোল ওখানে আমি কিছু মন্তব্য করেছিলাম। আরও কয়েকজন ব্লগার আমাকে উদ্দেশ্য করে কয়েকটি মন্তব্য করেছেন। তাদের প্রশ্নের জবাব কিছু দিয়েছি ঐ পোস্টে। বাকিটা দেয়ার জন্য একটা পোস্ট প্রয়োজন। একারনেই এই পোস্ট। শুরুতেই আমাদের মহানবীর (সা) অনুসরণ সংক্রান্ত একটা হাদিস দিয়ে শুরু করছি।
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমার সব উম্মত জান্নাতে যাবে; কিন্তু সে ব্যক্তি নয়, যে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসুল! কে অস্বীকার করেছে? তিনি বলেন, যে আমার আনুগত্য করে, সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার নাফরমানি করে, সে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে।’ (বুখারি : ৭২৮০ )
প্রশ্ন এসেছে কোরআনে না থাকলে কিভাবে ওয়াজিব বা ফরয হয়। তার উত্তরে বলছি -
নীচে কিছু ইসলামী রীতিনীতির উদাহরণ দেয়া হোল যেগুলির ব্যাপারে কোরআনে স্পষ্ট কিছু বলা নাই কিন্তু এগুলি ফরজ, ওয়াজিব বা হারাম করা হয়েছে রসূলের (সা) নির্দেশনার মাধ্যমে।
১। দাড়ি রাখা- দাড়ি রাখাকে ফরজ বা ওয়াজিব বলা হয়। দাড়ি রাখার ব্যাপারে কোরআনে কোন নির্দেশনা নেই। কিন্তু রসুল (সা) এর নির্দেশনার ( হাদিস) মাধ্যমে দাড়ি রাখাকে ফরজ বা ওয়াজিব করা হয়েছে। অনেক আলেম এটাকে ফরজ বলেছেন আবার অনেকে এটাকে ওয়াজিব বলেছেন। দাড়ি না রাখলেও চলবে একথা কোন আলেম বলেনি।
২। নামাজের কয়েকটি ফরজ -
নামাজের আদেশ কোরআনে থাকলেও নিয়ত করা, শুরুতে আল্লাহু আকবার বলা, সুরা ফাতেহা পড়া, তাশাহুদ পড়া, সালাম ফেরানো ইত্যাদি ফরজগুলি আমরা হাদিস থেকে জানতে পারি। শুধু কোরআন পরে কিভাবে তাহলে নামাজ আদায় করা যাবে।
তোমরা সেইভাবে সালাত আদায় কর, যেভাবে আমাকে আদায় করতে দেখ। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০০৮
কোরআনে সালাতের ব্যাপারে সব বলা থাকলে রসুল (সা) এভাবে তাকে অনুসরণ করতে বলতেন না।
৩। হজের কয়েকটি ফরজ –
হজ্জের আদেশ কোরআনে আছে। ইহরাম বাঁধা, আরাফায় অবস্থান করা, সাফা মারওয়া সাই করা, মিনায় অবস্থান করা, মুজদালিফায় রাত কাটানো, জামারাতে পাথর নিক্ষেপ, চুল কাটা, বিদায়ি তওয়াফ ইত্যাদি কাজকে হাদিসের মাধ্যমে ফরজ করা হয়েছে। কোরআনে এই বাপারগুলির উপর কিছু বর্ণনা পাওয়া গেলেও এই আমল গুলি ফরজ কি না তা জানতে হলে আমাদের হাদিস পড়তে হবে। শুধু কোরআন পরে কিভাবে তাহলে হজ্জ আদায় করা যাবে।
তোমরা (আমার কাছ থেকে) হজ্বের নিয়ম-কানুন শিখে নাও। কারণ আমি জানি না, এই হজ্বের পর আমি আর হজ্ব করতে পারব কি না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২৭৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৯৭০
৪। সালামের জবাব দেয়া ওয়াজিব। ( আল বুখারি – ১২৪০)
৫। অসুস্থ লোককে দেখতে যাওয়া ফরজে কিফায়া (অন্তত একজন আত্মীয়,পড়শি বা পরিচিত মানুষ অবশ্যই দেখতে যাবে। তা না হলে সবার গুনাহ হবে ) – মুসলিম শরীফ, ২১৬২। বেশী অসুস্থদের জন্যই এভাবে বলা হয়েছে।
৬। জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া (সমাজের অন্তত একজনকে পড়তে হবে। তা না হলে সবার গুনাহ হবে) – বুখারি – ২৪৪৫, মুসলিম -২০৬৬
৭। ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব বা ফরজ। আল বুখারি ৩২৪
৮। আজান দেয়া ফরজে কিফায়া। বুখারি – ৬০২
৯। ঈদের ফিতরা ফরজ বা ওয়াজিব। বুখারি – ১৪৩৭
রসূলের ( সা) নির্দেশে যা হারাম করা হয়েছে ( কিছু উদাহরণ)
১। প্রাণীর ছবি আঁকা ( সহি বুখারি – ২৮৪)
২। গৃহপালিত গাধার মাংস খাওয়া হারাম এবং বন্য গাধার মাংস হালাল। ( সহি বুখারি ৫৫২০)
৩। কোন মুসলমান কাফিরের ওয়ারিশ হতে পারে না এবং কোন কাফির কোন মুসলমানের ওয়ারিশ হতে পারে না। ৪২৮৩ – সহি বুখারি
৪। হত্যাকারী নিহত ব্যক্তির ওয়ারিশ হতে পারবে না। যেখানে নিহত ব্যক্তি হত্যাকারীর আত্মীয়। (আহমদ, হাদীস নম্বর ৩৪৬, ইবনু মাজাহ্, হাদীস নম্বর ২৬৪৫)
৫। একই সাথে স্ত্রী ও স্ত্রীর খালাকে/ ফুফুকে বিয়ে করা হারাম। বুখারি ৫১০৯
৬। দুধ বোনের মেয়েকে বিয়ে করা হারাম। বুখারি ২৬৪৫
৭। পুরুষের জন্য স্বর্ণ ও রেশম কাপড় হারাম করা হয়েছে। (সুনানে তিরমিযী, হা- ১৩/১৭৩৭)
৮। ড্রাগ হারাম। মুসলিম – ২০০৩
৯। দাঁত দ্বারা শিকার করে এরকম সকল হিংস্র পশু হারাম। আর থাবা দিয়ে শিকার করে এমন প্রত্যেক পাখি হারাম। মুসলিম - ১৯৩৪
যে সব নির্দেশনা কোরআনে নেই কিন্তু রসূলের (সা) নির্ধারণ করে দিয়েছেন-
১। কাবা তওয়াফের ও সাফা মারওয়া সাই করার সংখ্যা ও পদ্ধতি।
২। যাকাতের পরিমান কিভাবে নির্ধারণ করতে হবে। কে কাকে জাকাত দিবে।
৩। হজের বিস্তারিত নিয়ম কানুন
৪। রোজার নিয়ম কানুন।
৫। ফরজ সালাতের রাকাত, ওয়াক্ত কখন শুরু কখন শেষ এবং সালাতের কিছু ফরজ, ওয়াজিব সমুহ।
শুধু কোরআন প’ড়ে উপরের এবাদত গুলা করা সম্ভব না।
I have been given the Quran and something like it, yet a time will come when a man will say: “ We only need the Quran.” ( Sunan Abu Dawood No. 4587 – Sahih by Albani)
Something like it হোল রসূলের নির্দেশনা যা তিনি জিব্রাইলের (আ) মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে পেয়েছেন। কোরআনে যাকে হেকমত বলা হয়েছে কয়েক জায়গায় (লেখার পরবর্তী অংশে উল্লেখ আছে) । রসূলের কথা ও কর্ম জানতে হলে হাদিস থেকে জানতে হবে। কোরআনে তার বিস্তারিত বর্ণনা নাই।
অনেকে শুধু কোরানকে গুরুত্ব দেন কিন্তু জাল বা বিকৃত হবার কারণে হাদিসকে অগ্রহণযোগ্য মনে করে। তারা মনে করে কোরআনই যথেষ্ট। মনে হয় যেন রাসূলের দায়িত্ব ছিল কেবল কুরআন পৌঁছে দেওয়া। তিনি পৌঁছে দিয়েছেন; ব্যস, তাঁর কাজ শেষ। এখন কুরআন বোঝা, তদনুযায়ী কুরআনী ও ঈমানী জীবনের রূপরেখা তৈরি করা, তা থেকে আল্লাহর নির্দেশনাবলি ও বিধানাবলি উদ্ঘাটন করা, তাতে ফরযকৃত ইবাদতসমূহ আদায়ের পদ্ধতি নির্ধারণ করা- এই সব কাজ আমাদের। কিন্তু কোরআনেই বহু আয়াতে রসুলের (সা) অনুসরণ ও আনুগত্য করতে বলা হয়েছে। রসুলকে (সা) অনুসরণ ও আনুগত্য করতে হলে হাদিসের মাধ্যমে ওনার আদেশ নিষেধ সমুহ জানতে হবে।
আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে; রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর আর তোমাদেরকে যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় করে চল। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। -সূরা হাশর (৫৯) : ০৭
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, আল্লাহর লানত ঐসমস্ত নারীর প্রতি, যারা অন্যের শরীরে উল্কি অংকন করে ও নিজ শরীরে উল্কি অংকন করায় এবং যারা সৌন্দর্যের জন্য ভ্রু-চুল উপড়িয়ে ফেলে ও দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে। এসব নারী আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি সাধনকারী। তাঁর এ কথা আসাদ গোত্রের উম্মে ইয়াকুব নাম্নী এক মহিলার কাছে পৌঁছল। সে এসে বলল, আমি জানতে পেরেছি, আপনি এ ধরনের মহিলাদের প্রতি লানত করেন। ইবনে মাসউদ রা. বললেন, আমি কেন এমন লোকদের প্রতি লানত করব না, যাদের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন এবং যাদের কথা আল্লাহর কিতাবে আছে? মহিলাটি বলল, আমি তো দুই ফলকের মাঝে যা আছে (অর্থাৎ সম্পূর্ণ কুরআন) পড়েছি; কিন্তু আপনি যা বলছেন সেটা তো পাইনি। তিনি বললেন, তুমি যদি (ভালোভাবে বুঝে-শুনে) পড়তে তবে অবশ্যই পেতে। তুমি কি পড়নি-
রাসূল যা দিয়েছেন তা গ্রহণ কর আর যা বারণ করেছেন তা থেকে বিরত থাক।
মহিলাটি বলল, হাঁ। তিনিই তো নিষেধ করেছেন এ থেকে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৮৮৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১২৫
যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহকে ‘কুরআনে নেই’ বলে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের জন্য এই ঘটনায় শিক্ষা রয়েছে। রসূলের (সা) আদেশ, নিষেধ মানার কথা এভাবেই কোরআনে বলা আছে। রসূলের (সা) আদেশ, নিষেধ জানার উৎস হোল হাদিস।
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে - (হে নবী!) আমি আপনার প্রতি ‘আযযিকর’ নাযিল করেছি, যাতে আপনি মানুষের সামনে সেইসব বিষয়ের ব্যাখ্যা করে দেন, যা তাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে এবং যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। -সূরা নাহল, আয়াত – ৪৪
উপরের আয়াতে রসুলকে (সা) নাজিলকৃত বিষয়ের ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রসূলের (সা) ব্যাখ্যা এসেছে তার কথা ও কাজের মাধ্যমে যা হাদিস হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে; কিতাবীদের মধ্যে যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে না এবং পরকালেও নয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তাকে হারাম মনে করে না এবং সত্য দ্বীনকে নিজের দ্বীন বলে স্বীকার করে না, তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না তারা হেয় হয়ে নিজ হাতে জিযিয়া আদায় করে। -সূরা তাওবা (৯) : ২৯
এই আয়াতে বলা হয়েছে যে কোন কিছু হারাম করার এখতিয়ার আল্লাহ ও তার রসূলের (সা)।
রসুল (সা) বলেছেন - শুনে রাখ! শীঘ্রই এমন ব্যক্তির উদ্ভব হবে যে, সে তার সুসজ্জিত আসনে ঠেস দিয়ে বসে থাকবে; তখন তার কাছে আমার কোনো হাদীস পৌঁছলে সে বলে উঠবে, আমাদের মাঝে এবং তোমাদের মাঝে তো আল্লাহর কিতাবই আছে। এতে আমরা যা হালাল হিসেবে পাব তা হালাল হিসেবে গ্রহণ করব আর যা হারাম হিসেবে পাব তা হারাম মনে করব। অথচ (প্রকৃত অবস্থা হল এই যে,) রাসূলুল্লাহ যা হারাম করেছেন তা আল্লাহ তাআলা কর্তৃক হারামকৃত বস্তুর মতই হারাম। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৬৬৪; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১২; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৬০৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১২
আমি প্রত্যেক রাসূলকে কেবল এ লক্ষ্যেই পাঠিয়েছি, আল্লাহর হুকুমে তাঁর আনুগত্য করা হবে। -সূরা নিসা (৪) : ৬৪
রসুলকে ( সা) আনুগত্য করতে হবে। হাদিস অনুসরণের মাধ্যমে আমরা রসূলের (সা) আনুগত্য করি। কোরআন ও দ্বীনের বিধি বিধানের ব্যাখ্যা রসুল (সা) করেছেন যা হাদিস গ্রন্থ সমুহে উল্লেখ আছে।
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে ; (হে নবী!) আপনি বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবেসে থাক, তবে আমার অনুসরণ কর; তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ৩১
রসুলকে (সা) অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। রসুলকে (সা) অনুসরণ করতে হলে জানতে হবে উনি কি বলেছেন ও করেছেন। হাদিসের মাধ্যমে আমরা তা জানতে পারি।
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে; বস্তুত রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ- এমন ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ ও আখেরাত দিবসের আশা রাখে এবং অধিক পরিমাণে আল্লাহকে স্মরণ করে। -সূরা আহযাব (৩৩) : ২১
যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যারা (তাঁর আনুগত্য থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, আমি (হে নবী!) আপনাকে তাদের তত্ত্বাবধায়ক বানিয়ে পাঠাইনি (যে, তাদের কাজের দায়-দায়িত্ব আপনার উপর বর্তাবে।) -সূরা নিসা (৪) : ৮০
যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করবে, তারা সেইসকল লোকের সঙ্গে থাকবে, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন, অর্থাৎ নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ ও সালিহগণের সঙ্গে। কত উত্তম সঙ্গী তাঁরা! এটা কেবলই আল্লাহ প্রদত্ত শ্রেষ্ঠত্ব। আর (মানুষের অবস্থাদি সম্পর্কে) ওয়াকিবহাল হওয়ার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। -সূরা নিসা (৪) : ৬৯-৭০
‘তাঁকে শিক্ষা দান করে শক্তিশালী প্রজ্ঞাবান—সে নিজ আকৃতিতে স্থির হয়েছিল। ’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৫-৬)
এখানে শক্তিশালী প্রজ্ঞাবান বলতে জিব্রাইলকে (আ) বুঝানো হয়েছে। জিব্রাইল (আ) আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ীই রসুলকে (সা) শিক্ষা দিয়েছেন। রসুল (সা) সেই প্রজ্ঞাময় শিক্ষা তার উম্মতকে শিখিয়েছেন তার কথা ও কাজের মাধ্যমে। তার (সা) কথা ও কাজ জানতে হাদিস পড়তে হবে।
‘আপনি তো কেবল সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। ’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ৫২)
‘নিশ্চয়ই আপনি মহান আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ’ (সুরা : কলাম, আয়াত : ৪)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত ২১)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী, আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। আর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারী ও আলোকদীপ্ত প্রদীপ হিসেবে।’ (আহজাব, আয়াত : ৭১)
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে; যেমন আমরা তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে রাসূল পাঠিয়েছি (১) যিনি তোমাদের কাছে আমাদের আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করেন, তোমাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দেন। আর তা শিক্ষা দেন যা তোমরা জানতে না। সুরা বাকারা, আয়াত ১৫১
উপরে কিতাব হোল কোরআন আর হেকমত হোল রসূলের সুন্নাহ ও ইসলামী বিধি বিধান যা হাদিসের মাধ্যমে আমরা শিক্ষা লাভ করি। রসুল ( সা) এই হেকমত পেয়েছেন আল্লাহর কাছ থেকে জিব্রাইলের (আ) মাধ্যমে।
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে; এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামত ও কিতাব এবং হেকমত যা তোমাদের প্রতি নাযিল করেছেন, যা দ্বারা তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, তা স্মরণ কর। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ। সুরা বাকারা, আয়াত ২৩১ ( শেষাংশ)
উপরের আয়াতে বলা হচ্ছে কোরানের সাথে হেকমতও আল্লাহ নাজিল করেছেন। আর এই হেকমত হোল রসূলের সুন্নাহ ও ইসলামী বিধি বিধান যা হাদিসের মাধ্যমে আমরা শিক্ষা লাভ করি।
উপরে উল্লেখিত আয়াতসমূহের দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দায়িত্ব কেবল আল্লাহর নাজিলকৃত কোরআন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া নয়, বরং তাঁর মৌলিক দায়িত্ব চারটি : কোরআনের পাঠ শোনানো, মানবজাতির চরিত্র ও আমল পরিশুদ্ধ করা এবং তাদের কোরআনের ব্যাখ্যা ও হিকমাহ শিক্ষা দেওয়া। যে ব্যক্তি কথা ও কাজের মাধ্যমে আমল পরিশুদ্ধ করবে, ব্যাখ্যা ও হিকমাহ শিক্ষা দেবে, তাঁর সব কথা ও কাজ দলিলযোগ্য হতে হবে, নচেৎ তাঁর দায়িত্ব কিভাবে আদায় হবে? এ জন্যই কোরআনে কারিমের প্রায় অর্ধশত আয়াতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্যের নির্দেশ এবং তাঁর অবাধ্যতার প্রতি নিষেধ করা হয়েছে। অতএব যারা বলবে যে কোরআন মানি কিন্তু হাদিস মানি না, তারা কোরআনে কারিমের প্রায় অর্ধশত সুস্পষ্ট আয়াতের অস্বীকারকারী।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি বলে দিন, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৩২)
একটি আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো, যদি তোমরা মুমিন হও।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ১)
আরো ইরশাদ হচ্ছে, ‘বলে দিন, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসুলের আনুগত্য করো। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে সে শুধু তার ওপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য দায়ী এবং তোমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য করো, তবে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৫৪)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নাফরমানি করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে জ্বালাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্য রয়েছে অপমানজনক আজাব।’ (সুরা : নিসা, আয়াত ১৪)
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুল কোনো নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজেদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩৬)
আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে তার জন্য হিদায়াত প্রকাশ পাওয়ার পর এবং মুমিনদের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে ফেরাব যেদিকে সে ফিরে এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে। আর তা খুবই মন্দ আবাস।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১১৫)
‘আর তিনি মনগড়া কথা বলেন না। তা তো কেবল ওহি, যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৩-৪)
উপরের আয়াতদ্বয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কথাকে ওহি বলা হয়েছে। আর রাসুলুল্লাহ (সা.) নবুয়তি জীবনে ধর্ম সংক্রান্ত দুই ধরনের কথা বলেছেন : এক. কোরআনের আয়াতসমূহ ( যা প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর কথা কিন্তু রসুলের (সা) ঠোটের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে) , দুই. কোরআনের আয়াত ছাড়া অন্য নির্দেশনা। এখানে শুধু কোরআনের আয়াতসমূহকে ওহি বলা হয়নি, বরং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সব কথাকেই ওহি বলা হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় যে ওহি দুই প্রকার : এক. কোরআনের আয়াতসমূহ, দুই. কোরআনের আয়াত ছাড়া রাসুলুল্লাহর (সা.) ধর্মীয় অন্য কথা। আর এই দ্বিতীয় প্রকারের ওহিকেই হাদিস, সুন্নাহ বা হেকমত বলা হয়েছে, যা আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর ঈমান আনয়নকারী সবার জন্য বিনা দ্বিধায় অনুসরণ করা অপরিহার্য।
বস্তুত কুরআন কারীমের ব্যাখ্যা ও বাস্তব প্রয়োগই হাদীস বা সুন্নাত। কুরআনের পাশাপাশি অতিরিক্ত যে ওহীর জ্ঞান বা প্রজ্ঞা আল্লাহ রাসূলুল্লাহকে (সা) প্রদান করেছিলেন জিবরীল ফেরেশতার মাধ্যমে , তার ভিত্তিতে তিনি কুরআনের বিভিন্ন বক্তব্য ব্যাখ্যা করেছেন এবং বাস্তব জীবনের সকল ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করেছেন। কুরআন ও হাদীসই আমাদের সকল জ্ঞানের ও কর্মের মূল উৎস। ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন :
রাসূলুল্লাহ বিদায় হজ্বের ভাষণে বলেন :
“আমি তোমাদের মধ্যে যা রেখে যাচ্ছি তা যদি তোমরা আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না, তা হলো আল্লাহর কিতাব ও
তাঁর নবীর সুন্নাত।” (হাকিম, আল-মুস্তাদরাক ১/১৭১, নং ৩১৮/৩১। হাকিম ও যাহাবী হাদীসটিকে ‘সহীহ’ বলেছেন। আরো দেখুন: আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/৯৩।)
তাই পূর্ণ মুসলমান হতে হলে কোরআন এবং হাদিস দুইটাকেই মানতে হবে।
১৮ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:২৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দাড়ি রাখা অত্যাবশ্যক। এটা ঐচ্ছিক বিষয় না। দাড়ি রাখা ঐচ্ছিক এমন ফতওয়া পাবেন না। অধিকাংশ আলেমের মতে ঘোড়ার মাংস খাওয়া হালাল। ইমাম আবু হানিফা এবং আরও কয়েক জন আলেমের মতে মাকরুহ।
২| ১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:১৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ইদানিং এক শ্রেনীর লোক বেড়িয়েছে যারা বলছে শুধু কোরআনে যা বলা আছে তাই মানবে হাদিসের কথা নয়। কিন্তু কোরআনে অনেক বিষয় সরাসরি বলা নেই তখন হাদিসের প্রয়োজন। হাদিসেও না পেলে ইজমার প্রয়োজন হয় , ইজমা দ্বারা কোন বিষয়ে ফয়সালা না হলে কিয়াস দ্বারা ফয়সালা করতে হয়।
হাসীস না মানলে তো অনেক জিনিসই মানা হবেনা আর এটা করে তারা ইসলামে বিভ্রান্তি করতে চায়। পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। +++++++
আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুন।
১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:২৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি যাদের কথা বলেছেন এই গোষ্ঠীকে কোরানিউন বলে। এই দল মুসলমানদের জন্য একটা বিরাট ফেতনা। শুধু কোরান মানবে এরা। রসূলের ( সা) আদেশ, নিষেধ মানা যে জরুরী এটা এরা মানতে চায় না। শুধু দেশের সংবিধান দিয়ে তো দেশ চালানো যায় না। সংবিধানের আলোকে আইন-কানুন প্রনয়ন করতে হয়। সংবিধানেতো খুঁটিনাটি সব কিছু থাকে না।
ইসলামে যে ইজমা, কিয়াস প্রয়োজন এটাও অনেকে বুঝতে চায় না।
৩| ১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:৩১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
এই নব্য কোরানিউন থেকে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:৩৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমিন। তবে হেফাজত পেতে হলে আমাদের সাধারণ মুসলমানদের ইসলাম সম্পর্কে আরও পড়াশুনা করতে হবে। আমরা অল্প জ্ঞানের কারণে সহজেই বিভ্রান্তিতে পড়ে যাই। বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে ইসলাম সম্পর্কে জানা ও যাচাই করা আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। বিশ/ পঁচিশ বছর আগে এমনটা ছিল না।
৪| ১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:০৪
শেরজা তপন বলেছেন: ধীরে সুস্থ্যে পুরোটা পড়ে মন্তব্য করছি...
১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:০৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি ধীরে সুস্থে পড়বেন শুনে ভালো লাগলো। সবাই ভালো মত পড়ে না।
৫| ১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: ফাবিআইয়্যিআ লায়ি রাব্বিকু মা তুকাজ্জিবান!
১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:১৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: "এবং তোমরা তার কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে? " এই আয়াতটি কোরআনে ৩১ বার এসেছে সুরা আর- রাহমানে। এতো অধিকবার একই বাক্য কোরআনে আর কোথাও পাওয়া যায় না। কোন ক্ষমতাশালী লোকের কক্ষে প্রবেশ করার আগে এই আয়াত পাঠ করলে পরিস্থিতি অনুকুল হয়।
৬| ১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:২২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: কোরআনে অবশ্যই বসটা ব্যাখ্যা করা নাই। নবীর আদর্শে মুসলিমদের জীবন চালানোর চেষ্টা করতে হবে এটাই সহী।
তবে যদি কোনো হাদিস কোরআনের বিপক্ষে যায় সেটা মানাটা যৌক্তিক হবে না। কারণ যতই সহী বলা হোক সেটি মানুষ সংগ্রহ করেছে অনেক বছর পরে, তাতে ভুল (ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃত) থাকতেই পারে।
১৮ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:৪৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোনটা সহি আর কোনটা সহি না এটা নির্ণয়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে না নিয়ে হাদিস বিশারদদের উপর ছেড়ে দেয়া উচিত। অনেক দুর্বল হাদিস আছে, অনেক জাল হাদিস আছে। আমাদেরকে সহি হাদিস অনুসরণ করতে হবে। হাদিস বিশারদরা যখন কোন হাদিসকে সহি বলেছেন তখন তারা অবশ্যই পরীক্ষা করেছেন যে এটা কোরআনের কোন আয়াতের পরিপন্থি কি না। এই পরীক্ষায় পাসের পরই কোন হাদিসকে সহি বলা হয়েছে। তারপরও কোনও হাদিসের সহি হওয়ার ব্যাপারে অনেক ক্ষেত্রে আলেমদের মধ্যে মতভেদ আছে। এই সীমাবদ্ধ থাকলেও যে হাদিসগুলি অকাট্যভাবে সহি বলে প্রমাণিত সেগুলি আমাদের মানা উচিত। নিজেদের মন মত কোন হাদিসকে বাতিল বলা ঠিক না। এই কাজ আমাদের না এর জন্য বিশেষজ্ঞ আছেন। কোরআনের আয়াতও নিজেদের মন মত ব্যাখ্যা দেয়া ঠিক না। তফসির গ্রন্থ থেকে নিশ্চিত হতে হবে। কোরআন বা হাদিস দুইটা বিষয় নিয়েই প্রচুর গবেষক আছেন। তাই নিজেদের মন মত ব্যাখ্যা কোনটার ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য না। বুখারি শরীফ সকল হাদিস গ্রন্থের মধ্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। কেউ যদি এটার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করে তাহলে বুঝতে হবে বাকি হাদিসের ব্যাপারেও সে সন্দেও প্রকাশ করে। আমভাবে হাদিসের উপর সন্দেহ করা ঠিক না। কোন বিশেষ হাদিস সহি কি না এটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। যারা হাদিস বিশেষজ্ঞ তাদের মতামতকে নিজেদের মতামতের উপর প্রাধান্য দিতে হবে। কোরআন বা হাদিসের গবেষণার জন্য যে জ্ঞানের প্রয়োজন সেটা আমাদের মত সাধারণ মানুষের নাই।
৭| ১৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:০৫
আমি সাজিদ বলেছেন: কোরআনের বাইরে যেকোন নিয়ম বানানো ( যেটা দিয়ে আবার পাপ পুন্যের বিচার করা হবে!) তা মানতে বাধ্যতা কতোটুকু? এইটা একটু বুঝিয়ে বলেন।
১৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:২৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি এই লেখাতেই অনেকগুলি কোরআনের আয়াত উল্লেখ করেছি যেখানে বলা হয়েছে যে রসুলের ( সা) আনুগত্য করার জন্য। তার অর্থ হোল ওনার (সা) আদেশ ও নিষেধ মান্য করা।
যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যারা (তাঁর আনুগত্য থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেয়, আমি (হে নবী!) আপনাকে তাদের তত্ত্বাবধায়ক বানিয়ে পাঠাইনি (যে, তাদের কাজের দায়-দায়িত্ব আপনার উপর বর্তাবে।) -সূরা নিসা (৪) : ৮০
আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে; রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর আর তোমাদেরকে যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় করে চল। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। -সূরা হাশর (৫৯) : ০৭
আমি প্রত্যেক রাসূলকে কেবল এ লক্ষ্যেই পাঠিয়েছি, আল্লাহর হুকুমে তাঁর আনুগত্য করা হবে। -সূরা নিসা (৪) : ৬৪
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে ; (হে নবী!) আপনি বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবেসে থাক, তবে আমার অনুসরণ কর; তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ৩১
আপনি যদি হজ্জ করতে যান তাহলে কোরআন দেখে আপনি হজ্জ করতে পারবেন না। কারণ হজ্জের ফরয কাজ সমুহের ব্যাপারে কোরআনে উল্লেখ নেই। কিভাবে হজ্জের বিভিন্ন কাজগুলি করবেন সেগুলিও কোরআনে নেই। আপনি তাহলে কিভাবে হজ্জ করবেন। কোরবানি যে দিচ্ছেন এটা কি কোরআনে বলা আছে। ফেতরা দিচ্ছেন, এটা কি কোরআনে বলা আছে।
৮| ১৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:৫৫
আমি সাজিদ বলেছেন: তবে অনেক হাদীস আমার কাছে বিতর্কিত মনে হয়।
১৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৫:০৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার কথা হয়তো ঠিক। কিন্তু কোনটা জাল বা দুর্বল হাদিস আর কোনটা সহি হাদিস এইটা আমাদের ঠিক করা উচিত না বরং হাদিস বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেয়া উচিত। এন্তিবায়ওটিক যেমন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া ঠিক না তেমনি বিশেষায়িত জ্ঞান নিয়ে নিজে সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক না। কয়েক লক্ষ জাল হাদিস ছিল। সেগুলি বাদ দিয়ে কয়েক হাজার মাত্র সহি হাদিস লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। কোরআনের অনেক আয়াত আছে যেগুলি হঠাৎ কেউ পড়লে সঠিক অর্থ বুঝতে পারবে না। সেইজন্য যারা মুফাসসিরে কোরআন তাদের সাহায্য নেয়া উচিত। নিজের মত করে কোরআনের অপব্যাখ্যা করা ঠিক না। ইসলামে আকিদা ছাড়া অনেক বিষয়ে একাধিক মত আছে। এটা কোন সমস্যা না। একাধিক মত ইসলামে গ্রহণযোগ্য যদি মত দানকারীরা কোরআন ও সুন্নার আলোকে মতামত দিয়ে থাকেন ও তারা যোগ্য হন। বিভিন্ন মাজহাব আসলে দলাদলি না। দলাদলি হোল যখন ইসলামের মূল আকিদাগত ( বিশ্বাস) বিষয়ে কেউ আল্লাহর ও রসূলের বিপরীত বলে। যার ফলে ইমানহানির সম্ভবনা দেখা দেয়। বর্তমান যুগে সহি হাদিসগুলি পৃথক করা যায়। তাই আমাদের সহি হাদিসের উপর বিশ্বাস রাখা উচিত।
৯| ১৮ ই মে, ২০২১ বিকাল ৫:৫১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: কোরানের বাহিরে হবে কেনো।
১৮ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোরআনে রাসুলের (সা) আদেশ মানার কোথাও বলা আছে। রসুল ( সা) কিছু আদেশ করলে সেটা পালন করা ওয়াজিব বা ফরজ। রসুল (সা) অনেক কিছু নিষেধ করেছেন যেগুলির ব্যাপারে কোরআনে কিছু বলা নাই। কোরআনের নির্দেশ আর রসূলের (সা) নির্দেশ একই সবই আল্লাহর তরফ থেকে।
১০| ১৯ শে মে, ২০২১ রাত ৩:২৪
অনল চৌধুরী বলেছেন: গান শোনা, ছবি আকা, নাটক যাত্রা-টিভি,চলচ্চিত্র দেখা-এসব ব্যাপারে নির্দেশনা কি?
১৯ শে মে, ২০২১ সকাল ৮:১৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রসূলের (সা) বা কোরআনের বাণীর ব্যাখ্যা করার সময় আলেমদের মধ্যে মত বিরোধ হয় অনেক সময়। কারণ বাণীটা কোন প্রেক্ষাপটে, কাদের উদ্দেশ্যে, কোন সময় বলা হয়েছে ইত্যাদি আরও অনেক বিষয়ের আলোকে বিচার বিশ্লেষণ করার সময় ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা অনেক সময় বিভিন্ন মতামত দিয়ে থাকেন। ইসলামে এই ধরণের মত পার্থক্য বড় কোন সমস্যা না কারণ এগুলি আকিদাগত না এবং মত পার্থক্যের উপযুক্ত কারণ আছে। সমস্যা হোল এক মতের অনুসারিদের অন্য মতের প্রতি সহনশীলতার অভাব। গান- বাজনার ব্যাপারে এই ধরণের মত বিরোধ আছে। দফ বাজানোর অনুমতি আছে। মদিনায় রসুলকে (সা) বরণ করার সময় মদিনাবাসীরা দফ বাজিয়ে ছিল। অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপারে পক্ষে- বিপক্ষে দুই ধরণের মতই আছে। খালি গলায় গানের উপর নিষেধাজ্ঞা নাই। প্রাণীর ছবি ছাড়া ছবি আঁকার উপর নিষেধাজ্ঞা নাই। নাটক, যাত্রা, টিভি, চলচ্চিত্র ইত্যাদির বিষয়বস্তু যদি শরিয়াত বিরোধী না হয় তাহলে নিষেধাজ্ঞা নাই। কবিতা অনেক সাহাবীই চর্চা করতেন এবং রসুলও (সা) কবিতা পছন্দ করতেন। The Message নামে হলিউডের একটি সিনেমা আছে যেখানে রসূলের ( সা) নবুওত থেকে বিদায় হজ্জ পর্যন্ত ঘটনা আছে। সম্ভবত একজন মিশরি এই সিনামা নির্মাণ করেছেন। Anthony Quinn হজরত হামজার (রা) ভুমিকায় অভিনয় করেছেন। আমি ১৯৮৯ সালে দেখেছি। সিনেমাটা আরও আগের। খুবই ভালো মানের সিনেমা।
১১| ১৯ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:৩৭
নতুন নকিব বলেছেন:
অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখেছেন। আমারও ইচ্ছে ছিল এই ব্যাপারে কলম ধরতে। কিন্তু সময় করে কুলিয়ে উঠতে পারিনি। আপনি সেটা করে কৃতজ্ঞতাভাজন হলেন।
এক নজর চোখ বুলিয়ে গেলাম মাত্র। সময় নিয়ে পরে আবার দেখার ইচ্ছে থাকলো। আপাততঃ + দিয়ে গেলাম। আপনার প্রজ্ঞা এবং জ্ঞানে আল্লাহ তাআ'লা বারাকাহ দান করুন।
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:০৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই যুগে অনেকে ঢালাওভাবে বলতে চাচ্ছে যে হাদিস নির্ভরযোগ্য না। তাই শুধু কোরআন মানবো। অনেক হাদিস আছে ৭০ জনের অধিক সাহাবী বর্ণনা করেছেন আলাদা আলাদাভাবে। এই ধরণের হাদিসে যেগুলি কমপক্ষে ৪ জন থেকে উপরে ৭০ জন্য পর্যন্ত সাহাবী বর্ণনা করেছেন আলাদাভাবে তাকে মুতাওয়াতির হাদিস বলে। বহু মুতাওয়াতির হাদিস আছে। এই ধরণের হাদিসের উপরও যদি কারও সন্দেহ হয় তাহলে সমস্যা। কোরআনে পরিষ্কারভাবে প্রায় ৮০ জায়গায় রসূলের (সা) নির্দেশ পালন ও তাকে আদর্শ বলা হয়েছে। তারপরও যদি মানুষ বলে যে আমরা শুধু কোরআন মানবো তাহলেও সমস্যা। আল্লাহর আদশ আর রসূলের (সা) আদেশের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই কারণ উভয় আদেশই প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর তরফ থেকে।
১২| ১৯ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:৩৭
তারেক ফাহিম বলেছেন: পোস্ট, মন্তব্য-প্রতিত্ত্যরে অনেক কিছুই জানা হল।
পোস্টে ৫ নাম্বারের ভালোলাগা।
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:১০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য। আল্লাহ আপনাকে ইসলামকে বোঝার তৌফিক দিয়েছেন।
১৩| ১৯ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:৪৬
ইনদোজ বলেছেন: বাদ্যযন্ত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা আছে - এটা কোন হাদীস দিয়েই প্রমাণ করতে পারবেন না। বাদ্যযন্ত্র যদি হারাম হয়, তাহলে তালি দেয়া, শিষ বাজানো এমনকি কথা বলাও হারাম হয়ে যাবে। বাতাস বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে যাবার সময় যে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার শব্দ উৎপন্ন করে, তাই বাদ্য বা মিউজিক। ধর্মীয় বা বিজ্ঞান কোন প্রেক্ষাপটেই মিউজিক নিষদ্ধ করার কোন যুক্তি নেই।
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:১২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভাই বাদ্যযন্ত্রের পক্ষে বিপক্ষে দুই রকম মতই আছে। এটা আমার কোন মতামত না। আমি ধর্মের ব্যাপারে নিজের কোন মতামত দেয়ার যোগ্যতা রাখি না।
১৪| ১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১২:০১
আহলান বলেছেন: কোরান পেলাম কিভাবে? কোরান বুঝব কিভাবে? পড়বো কিভাবে? মানবো কিভাবে? যদি না হাদিস অনুসরণ করি..... ! আসলে ভাই ইবলিশের ধোঁকার শেষ নেই .... যারা বলেন শুধু কোরান মানেন, হাদিস মানেন না, তারা পুরাই ভ্রান্তির মধ্যে আছেন।
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:১৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আল্লাহতালা আপনাকে দ্বীন বোঝার তৌফিক দিয়েছেন। আল্লাহ যেন সবাইকেই এই তৌফিক দেন।
১৫| ১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১২:২১
নতুন নকিব বলেছেন:
গান ও বাদ্যযন্ত্র বিষয়ে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি জানতে নিচের পোস্টটি দেখা যেতে পারে-
ইসলামে গান বাজনা কি হারাম ? কেন !
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:১৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: নতুন নকিব ভাই সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ।
১৬| ১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:০৮
নতুন বলেছেন: আগে এই রকমের প্রশ্ন মানুষ করতো না। করতে সাহস পেত না। করার মতন পযাপ্ত তথ্য মানুষের হাতে ছিলো না।
যদি হাদিস এতোই গুরুত্বপূর্ন হয় তবে তা রাসুল সা: এর মারা যাবার ২০০ বছর পরে সংকলন করতে হবে কেন?
সব চেয়ে বেশি হাদিস বলেছিলেন আবু হুরায়রা ( বেড়ালের বাবা বলে ডাকা হয়, তার আসল নাম নিয়েও বিতর্ক আছে) তিনি ৫৩৭৪ হাদিস বলেছেন কিন্তু তিনি রাসুল সা: এর সাথে ছিলেন ২ বছর ৩ মাস মানে দিনে ৭০টার মতন হাদিস তিনি বলেছেন।
তাহলে রাসুল সা: এর সব চেয়ে কাছের সাহাবী, আবু বকর রা: আলী রা: ওসমান রা, ওমর রা:, ফাতেমা রা: হাসান ও হোসেন রা: এবং রাসুল সা: ওর অন্য স্ত্রী যারা আবু হুরায়রা চেয়েও বেশি সময় রাসুলের কাছে থেকেও তার চেয়ে কম হাদিস বলেছনে?
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:০৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনাকে যুগটা বুঝতে হবে। তখন শিক্ষিত মানুষ অনেক কম ছিল। তাই মানুষ স্মরণ শক্তির উপর নির্ভর করতো বেশী। আরবের লোকেরা বিরাট বিরাট কবিতা ও তাদের বংশ তালিকা মুখস্ত বলতে পারতো। নিরক্ষর লোকের স্মরণ শক্তিও বেশী হয় অভ্যাসের কারণে।
অনেক হাদিস ৭০ জন সাহাবী আলাদা আলাদাভাবে বর্ণনা করেছেন। এরকম অনেক হাদিস আছে। সেটা বিশ্বাস করতে কি সমস্যা আমি বুঝি না। অকাট্যভাবে প্রমাণিত হাদিস মানা উচিত। রসুল (সা) এর সব সময়ের সঙ্গী ছিলেন যারা আসহাবে সুফফায় থাকতেন। সুফফা হোল রসূলের মসজিদের ঠিক পাশে একটা আবাসস্থল যেখানে নিতান্ত দরিদ্র অসহায়, অবিবাহিত, দুর্বল কিছু সাহাবী থাকতেন। রসূলের (সা) সাথে থাকাই এদের জীবনের লক্ষ্য ছিল। আয় রোজগারের জন্যও এরা বাইরে তেমন যেতেন না। তাই প্রায়ই তাদের না খেয়ে থাকতে হতো। রসুল (সা) কোন হাদিয়া পেলে এদের দিতেন। আবু হুরাইরা (রা) এই আসহাবে সুফফার সদস্য ছিলেন। ফলে তিনি অল্প সময়ে অনেক হাদিস বর্ণনা করেছেন। ধর্ম পালন ছাড়া ওনারা আর কিছু বুঝতেন না। হজরত আবু বকর ( রা) বা অন্যান্য যে সাহাবীদের কথা বলেছেন তাঁরা নিজেদের ব্যবসা ও সাংসারিক কাজে সময় দিতেন। অনেক সময় মক্কার বাইরেও যেতেন। ফলে ওনারা রসূলের (সা) ঘনিষ্ঠ হলেও কম পরিমান হাদিস বলেছেন। আর তাছাড়া সবার স্মরণ শক্তিও এক রকম ছিল না। হাদিস বিশারদরা যখন দেখতেন যে বর্ণনাকারীর স্মরণ শক্তি কম তখন সেই হাদিস ওনারা লিখতেন না। আবার অনেক সাহাবী হাদিস বলতে চাইতেন না। কারণ তাদের ভয় ছিল যে কোন কিছু ভুল বললে গুনাহ হবে। তাই হাজার হাজার সাহাবীর মধ্যে হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবীর সংখ্যা কম। কিছু হাদিসে ভুল থাকতে পারে কিন্তু তাই বলে আমভাবে হাদিস মানতে না চাওয়া কোরআনের আয়াতের বিপরীত। কারণ কোরআনে ৮০ অধিক আয়াতের রসুল (সা) কে মান্য করার ও তাকে আদর্শ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
১৭| ১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:০৯
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আমি একটু প্রথমে বলে রাখি, আমি কোনভাবেই আপনার পোস্টের বিপক্ষে নই বা আমি হাদীস মানতে আগ্রহী নই- এই কথাটি বললে নিজের সাথে অন্যায় হবে। আমার কিছু যৌক্তিক পর্যবেক্ষন আছে, আমার সেই সকল বিষয়ে সঠিক জবাব চাই।
আমাদের রাসুল (সাঃ) যা বলেছেন সেটা নিয়ে আমি অবিশ্বাস করছি না, সেটা মানার ব্যাপারেও কোন আপত্তি নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে প্রিয় নবী মোহাম্মদ (সাঃ) এর ওফাতের পর ইসলামে তৎকালীন অনেক সাহাবা বা ক্ষমতাসীদের মাধ্যমে ইসলামে বেশ কিছু নিয়ম যুক্ত হয়। এছাড়া তো ইহুদীদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারটি তো আছেই। ইসলামের বিভিন্ন মতের ধারা এবং সুন্নি, শিয়া এই সব সংঘাত, গ্রুপ তো আমাদের মহানবী সাঃ এর সময়ে হয় নি, হয়েছে তাঁর মৃত্যূর পর। তার মৃত্যূর এত অল্প সময়ের মধ্যে এই দ্বিধা, দন্দ এত সমস্যা তৈরী হয়েছিলো।
সাহাবীরা অবশ্যই প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁর অনেক বানী ও কাজ লিপিবদ্ধ করেছেন। সেই লিপিবদ্ধ গ্রন্থটি বা হাদীসগুলো যদি নিশ্চিতভাবে সংরক্ষিত হতো, তাহলে অনেক অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক কমে যেত। কিন্তু হাদীস সংরক্ষেরন কাজ পরে শুরু হওয়াতে কিছু জটিলতা দেখা দেয়। এটা নিয়ে সবাই অযাচিত ত্যানা পেচায়।
হাদীস দীর্ঘ সময় পরে লিপিবদ্ধ করার কারনটি খুবই সাধারন। এই কারনটি সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করলেই অনেক প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়। কোরান শরীফের সাথে যেন হাদীসের কোন সংমিশ্রন না ঘটে না, কোরান শরীফ লিপিবদ্ধ হবার কাজ শেষ হবার পর হাদীস লিপিবদ্ধ হবার কাজ শুরু করে। কোরানের সাথে হাদীস মিশে যাওয়ার ভয়ে এই কাজটি কেউ করে নাই।
প্রায় সবাই যে কাজটি করে তা হচ্ছে - কারো কোন প্রশ্নের উত্তর সঠিক দিতে না পারলে ইনিয়ে বিনিয়ে তাঁকে ইসলাম বিরোধী বানানোর চেষ্টা করে, কোরান হাদীসের মুখোমুখি দাঁড় করারনো চেষ্টা করে সেটা খুবই দুঃখজনক। আল্লাহ তো কোরানে বলেছেন পড়তে, জ্ঞান অর্জন করতে। যতক্ষন পর্যন্ত কোন বিষয়ে সন্দেহ থাকবে, সেই বিষয়ে পড়াশোনা করতে আপত্তি আছে বলে আমার জানা নেই। সমস্যা হচ্ছে, পাঠক বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু দ্বীনের বুঝ সবার মধ্যে নেই। এটা কথাটি আমার নয়, এটা একটী হাদীস!
হাদীস না মানার জন্য কেউ হাদীস নিয়ে প্রশ্ন তুলছে না বরং অনেকে নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য অনেক ভুয়া হাদীস ব্যবহার করে।
হাদীসে ভুল থাকতেই পারে, এটা কোন অসম্ভব বা অবাস্তব কিছু নয়।
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:৪৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি যে হাদিসের প্রতি বিশ্বাসী সেটা আমি জানি। কিন্তু এই পোস্টের ব্যাপারে কয়েক জনের কথায় ও পাল্টা পোস্টে মনে হয়েছে যে কোরআন দ্বারা প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কোন আমল করা যাবে না। তাদের কাছে রসূলের (সা) আদেশ নিষেধ গুরুত্বপূর্ণ না। তাদের কথা আলোচনা করতে গিয়েই এই কোরআন পন্থিদের প্রসঙ্গ এসেছে। এই পোস্টে মোঃ মাইদুল সরকার ভাই এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। সেই কারনেও এই কোরআনপন্থিদের আলোচনা এসেছে। আপনার ইসলাম সম্পর্কে জানার যে অনেক আগ্রহ আছে এটা আমি আগে থেকেই জানি। আসলে হাদিসের অনেক ধরণ আছে। অনেক হাদিস আছে ৭০ জনের অধিক সাহাবী বর্ণনা করেছেন আলাদা আলাদাভাবে। এই ধরণের হাদিসে যেগুলি কমপক্ষে ৪ জন থেকে উপরে ৭০ জন্য পর্যন্ত সাহাবী বর্ণনা করেছেন আলাদাভাবে তাকে মুতাওয়াতির হাদিস বলে। বহু মুতাওয়াতির হাদিস আছে। এই ধরণের হাদিসের উপরও যদি কারও সন্দেহ হয় তাহলে সমস্যা। কোরআনে পরিষ্কারভাবে প্রায় ৮০ জায়গায় রসূলের (সা) নির্দেশ পালন ও তাকে আদর্শ বলা হয়েছে। তারপরও যদি মানুষ বলে যে আমরা শুধু কোরআন মানবো তাহলেও সমস্যা। আল্লাহর আদেশ আর রসূলের (সা) আদেশের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই কারণ উভয় আদেশই প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর তরফ থেকে। হাদিস বিশেষজ্ঞরা বলেন যে সাধারণ মানুষ কোন একটা হাদিস দেখলেই তার উপর আমল করবে না। তাকে বিষয়টা কোন হাদিসবেত্তার কাছ থেকে পরিষ্কারভাবে জেনে নিতে হবে যে হাদিসের প্রকৃত বক্তব্য কি এবং কিভাবে আমল করতে হবে অথবা আমল করা যাবে কি না।
আমার মনে হয় সকল হাদিস থেকে ১০% বা তারও কম গ্রহণ করা হয়েছে। বাকি সব বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ সেগুলি নির্ভরযোগ্য না। আপনি রসুল (সা) পরবর্তী জমানার রাজনৈতিক সংকটের কথা বলেছেন। এটা সত্যি। রাফিদি, খারিজিরা হাজারে হাজারে জাল হাদিস ইচ্ছাকৃতভাবে প্রচার করেছে। কিন্তু খেয়াল করবেন বড় বড় ইমামরা যখন হাদিস পরীক্ষা করেছেন তখন তারা বর্ণনাকারীর চরিত্র, সত্যবাদিতা, দলাদলি ইত্যাদির ব্যাপারে কোন ঝামেলা পেলে সেটাকে বাদ দিয়েছেন। ঐ সময় শিয়ারা বা খারিজিরা কখনও শাসন ক্ষমতা পায়নি। খোলাফা রাশেদিনের পরে যারা এসেছেন তাদের সাথে অন্যদের রাজনৈতিক বিরোধ থাকলেও কোরআন বা হাদিস মানার ব্যাপারে তারা একমত ছিল। সর্বোপরি বলতে হয় যে হাদিসকে আমভাবে অগ্রাহ্য করা ঠিক না। কোন বিশেষ হাদিসের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। মতভেদও থাকতে পারে। এই ব্যাপারে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে আমাদের উচিত ব্যাপারটা বিশেষজ্ঞদের উপর ছেড়ে দেয়া। আপনার বাকি কথার সাথে আমি একমত।
১৮| ১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:২৩
ইনদোজ বলেছেন: হাদীসে ভুল থাকতেই পারে। এটা অসম্ভব বা অবাস্তব কিছু নয়। খুবই সত্যি কথা।
কিন্তু ইসলামের জ্ঞান বিজ্ঞানের স্বর্ণযুগে হাদীস নিয়ে এত পরিমাণে গবেষণা হয়েছে, যে এটা নিয়ে কোন সন্দেহ করলে স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্ন আসে - সন্দেহকারী জ্ঞানের মাপকাঠিতে ঐসব গবেষণাকারীদের তুলনায় কতটুকু? সন্দেহ সবকিছু নিয়েই করা যায়, খুব সহজে করা যায়। কিন্তু সন্দেহ দূর করতে বা কমাতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। হাদীস সংকলকেরা সেরকম পরিশ্রম ও সাধনা করেছেন বলেই হাদীসগুলোর উপর আমরা আস্থা করতে পারছি।
আসলে হাদীস বিশ্বাস করার মাপকাঠি হচ্ছে বিবেক। রাসূল (স) কে সৃষ্টি না করা হলে বিশ্বজগত সৃষ্টি করা হতনা, অথবা রাসূল (স) মাটির নয়, নূরের তৈরি - এ ধরণের হাদীস সরাসরি কুরআনের বক্তব্যের সাথে সাঙ্ঘর্ষিক বলে প্রাথমিকভাবেই বাতিল। এরকম অনেক হাদীস আছে, যা কুরআন হাদীস এবং ফিকহের জ্ঞান অনুযায়ী বাতিলের খাতায় ফেলে দেয়াই যায়।
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:২২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অনেক হাদিসে ভুল ছিল বলেই কয়েক লক্ষ হাদিস বাদ দিয়ে কয়েক হাজার হাদিস লেখা হয়েছে। এগুলিও মধ্যেও অনেক গুলির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। ব্যাপারটা হাদিস বিশারদদের উপর ছেড়ে দেয়া উচিত। নিজেরা অল্প জ্ঞানে কোন হাদিসকে দুর্বল বা জাল বলা ঠিক না। আর আমভাবে হাদিস অগ্রাহ্য করা ঠিক না।
ধর্ম জিনিসটাই তো বিশ্বাস। আল্লাহকে কেউ কি দেখেছে। রাসুলের( সা) মুখের কথায় আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি। তাই আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তোলে। কোরআনের সাথে সাঙ্ঘরশিক কোন বর্ণনা শুরুতেই বাতিল বলে গণ্য হয়। এছাড়াও হাদিসের গ্রহণযোগ্যতা নির্ণয়ের আরও অনেক পদ্ধতি আছে। হাদিস শাস্ত্র একটা পৃথক বিশেষায়িত শাস্ত্র এটা আমাদের বুঝতে হবে। হেলাফেলাভাবে হাদিস নিয়ে গবেষণা হয়নি।
১৯| ১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:৩৭
নতুন বলেছেন: হাদীস দীর্ঘ সময় পরে লিপিবদ্ধ করার কারনটি খুবই সাধারন। এই কারনটি সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করলেই অনেক প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়। কোরান শরীফের সাথে যেন হাদীসের কোন সংমিশ্রন না ঘটে না, কোরান শরীফ লিপিবদ্ধ হবার কাজ শেষ হবার পর হাদীস লিপিবদ্ধ হবার কাজ শুরু করে। কোরানের সাথে হাদীস মিশে যাওয়ার ভয়ে এই কাজটি কেউ করে নাই।
কাভা ভাই আসল কারনটা বলেছেন।
রাসুল সা: হাদিস লিখে রাখতে বলেন নাই। এবং তিনি আসলে কোরনাই সংকলন করার উদ্দোগ নেয়নি তার সময়ে।
আবু বকর রা: তার সবচেয়ে কাছের মানুষদের একজন.... তার বর্ণনা করা হাদিস কয়টা?
মুসলিম সমাজে মোল্যাতন্ত্র কায়েমের জন্য হাদিস ব্যবহার হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাই ঐ শ্রেনীরা হাদিস বেশি পছন্দ করে এবং নানান নিষেধ খুজে বের করে সমাজকে পিছিয়ে দিচ্ছে।
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:৩৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি মোল্লাদের কাছে কেন যান। ভালো বিশেষজ্ঞ চোখে পরে না। নিজেদেরও একটু জানার চেষ্টা করা উচিত। ইন্টারনেটের যুগে জ্ঞান আহরনের সুযোগ আগের চেয়ে বেশী। ফলে যাচাই বাছাই করা সহজ হয়েছে। ধর্মের ব্যাপারে উপযুক্ত লোকের কাছে যাওয়া উচিত। হজরত আবু বকর (রা) ও অন্যান্য ঘনিষ্ঠ সাহাবীরা কেন কম হাদিস বলেছেন তা আপনার আগের মন্তব্যের জবাবে বলেছি। যার মনে সন্দেহ সে কোরআন নিয়েও সন্দেহ করতে পারে। অনেকে করেও। আল্লাহকে কেউ কি দেখেছে। রাসুলের (সা) কথায় আমরা বিশ্বাস করি। ধর্মের শুরুই তো বিশ্বাস দিয়ে। তাই এতো অবিশ্বাস করলে কারও পক্ষে ধর্ম পালন করা সম্ভব না। তবে আল্লাহর অস্তিত্ব একজন প্রকৃত বিশ্বাসী অনুভব করতে পারে। সেটা না পারলে কেউ ধর্ম পালন করতো না। রাসুলের (সা) সময় হাদিস লিখতে নিষেধ করা হয়েছিল আবার শেষের দিকে কয়েকজন সাহাবিকে হাদিস লেখার অনুমতিও দেয়া হয়েছিল। একারনে ঐ সময়ের কিছু লিখিত হাদিস পাওয়া যায়। মূল আকিদা ছাড়া ছোট খাটো বিষয়ে মাসলা মাসাএলের ক্ষেত্রে একাধিক মতামত ইসলামে অনুমোদিত। রসুল (সা) অনেক সময় একই ব্যাপারে একাধিক মতকে সম্মতি দিয়েছেন।
২০| ১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:৩৭
নতুন বলেছেন: হজরত আবু বকর ( রা) বা অন্যান্য যে সাহাবীদের কথা বলেছেন তাঁরা নিজেদের ব্যবসা ও সাংসারিক কাজে সময় দিতেন। অনেক সময় মক্কার বাইরেও যেতেন। ফলে ওনারা রসূলের (সা) ঘনিষ্ঠ হলেও কম পরিমান হাদিস বলেছেন। আর তাছাড়া সবার স্মরণ শক্তিও এক রকম ছিল না।
আবু বকর রা: হাদিস লিখে রাখার পক্ষে ছিলেন না।
১৯ শে মে, ২০২১ দুপুর ২:৪৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রসুলও (সা) হাদিস লেখার পক্ষে ছিলেন না। তবে কয়েকজনকে তিনি পরবর্তীতে লেখার অনুমতি দিয়েছিলেন। কোরআনকে বই আকারে সঙ্কলন করার ইচ্ছা কেন সাহাবীদের মধ্যে এলো সেটাও আমরা দেখতে পারি। এক সময় ইয়ামামার যুদ্ধে ৭০ জন হাফিজ শহিদ হন। তখন ওমর (রা) পরামর্শে কোরআন সংকলন করেন হজরত আবু বকর (রা)। ঐ ধরণের যুদ্ধ না হলে কোরআন হয়তো আরও অনেক পরে সঙ্কলিত হতো। অনেক মনে করে ইমাম বুখারি প্রথম হাদিস সংগ্রহ করেন। এটা ঠিক না। হাদিস আরও আগে থেকেই সংগ্রহ শুরু হয়। উনি সহি হাদিসগুলি বিশ্লেষণ করে পৃথক বইয়ে সমাবেশ ঘটান।
২১| ১৯ শে মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫০
অনল চৌধুরী বলেছেন: বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ডিশ এ্যান্টেনার মাধ্যমে যে ধরণে নাচ-গান -চলচ্চিত্র দেখা হয়, সেগুলি সম্পূর্ণভাবে ধর্মবিরোধী। কিন্ত কিছূ লোক আবার বিরাট বিজ্ঞ সেজে চঞ্চল প্রসঙ্গে নিজেরাই বলছে যে এই কাজ এক ধর্মের লোক করলে ঠিক, অন্যরা করলে অন্যায় !
এরা এই যুক্তিও দেয় যে লোক দেখানো ধর্মচর্চা করলে চুরি-ঘুষ-দুর্নীতি সব অপকর্ম বৈধ !!
The Message মিসরীয় পরিচালক মোস্তাফা আক্কাদ পরিচালিত ছবি। তার আরেকটা বিখ্যাত ছবি হলো ইতালীর ফ্যাসিষ্ট মুসোলিনীর বিরুদ্ধে লিবিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামী ওমর মুক্তার এর জীবনকাহিনী নিয়ে ১৯৮১ সালে বানানো দ্য লায়ন অফ দ্য ডেসার্ট , যেটাতেও এ্যান্থনী কুইন অভিনয় করেছেন।
ছবিটা দেখে মন্তব্য জানান।Lion of the Desert
১৯ শে মে, ২০২১ রাত ৯:৩৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এই যুগে চিত্ত বিনোদনের এতো রকম মাধ্যম এসেছে যে ধর্মের দিকে ঝোঁকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ধর্মের জন্য প্রয়োজন একান্ত সময় ও একাগ্রতা। এই যুগের হট্টগোলের মধ্যে এই একান্ত সময় ও একাগ্রতা পাওয়া দুষ্কর। নামাজ রোজা দ্বারা যদি খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত না রাখা যায় তাহলে ঐ নামাজ রোজা কি ফল দেবে।
মুভির নাম দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। সময় করে দেখবো।
২২| ২১ শে মে, ২০২১ সকাল ১০:০৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ পোস্টে অনেক চিন্তার খোরাক আছে। যুক্তিসহ অনেক কিছু ব্যাখ্যা করেছেন, অনেক বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করেছেন। এ কষ্টসাধ্য কাজটি করার জন্য ধন্যবাদ।
২১ শে মে, ২০২১ সকাল ১০:৫৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: খায়রুল আহসান ভাই অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ইসলাম সম্পর্কে বিভিন্ন ভুল ধারণা দূর করার জন্যই মুলত ধর্ম নিয়ে মাঝে মাঝে পোস্ট দিয়ে থাকি। দোয়া করবেন যেন সঠিকভাবে কাজটা করতে পারি।
২৩| ২১ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:৪১
ভুয়া মফিজ বলেছেন: নির্বাচিত পোষ্টগুলো দেখতে দেখতে আপনার এই পোষ্টটা নজরে আসলো। চমৎকার আলোচনা করেছেন। হাদিস নিয়ে আমার কিছু ভাবনা আমি ব্লগার বিদ্রোহী ভৃগু'র ''ভাস্কর্য - মূর্তি দ্বন্ধ : প্রকৃত সত্যের স্বরূপ সন্ধান'' পোষ্টে শেয়ার করেছিলাম। আপনি ওই পোষ্টটা আর মন্তব্যগুলি দেখেছিলেন কিনা জানি না। না দেখলে দেখতে পারেন। বিশাল আকারের আলোচনা হয়েছিল।
যাইহোক, আপনার এই পোষ্টটা অনেক ভাবনার দ্বার খুলে দিল। আমি যখনই একটু সময় পাই, এ'সম্পর্কিত কিছু জানার চেষ্টা করি। আপনার এই পোষ্টটা সেই চেষ্টাতে ভালো জ্বালানী যোগাবে নিঃসন্দেহে। পোষ্টটার জন্য মোবারকবাদ!!
২১ শে মে, ২০২১ রাত ৮:৪২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আগামীকাল আমি আপনার দেয়া পোস্টটা পড়বো ইনশাল্লাহ। মানুষ যেন ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয় এই কারণে মাঝে মাঝে ধর্মের উপর পোস্ট দিয়ে থাকি। এতে নিজেরও শেখা হয়। আপনার ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
২৪| ২১ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:০৮
ঈশ্বরকণা বলেছেন: আপনার লেখার শিরোনামটা কিন্তু একটু কনফিউশন তৈরী করেছে বলে আমি মনে করি । আপনার লেখার শিরোনাম থেকে এটা মনে করতেই পারে কেউ যে রাসূল (সাঃ)নিজের ইচ্ছে মতো কিছু বিষয় ফরজ বা ওয়াজিব হিসেবে বলেছেন। আসলে বিষয়টা সেরকম নয় মোটেই ।
হাদিস হলো কোরানের ব্যাখ্যা । কুরআনে দ্বীনের যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আদেশ দেয়া হয়েছে সেগুলো কিভাবে পরিপূর্ণ ভাবে পালন করা যায় হাদিস সেগুলোকেই ব্যাখ্যা করেছে মাত্র (অন্য আরো বিষয়ের সাথে)। দ্বীনের এমন কোনো বিষয় নেই যা কুরআনে আদেশ আকারে বলা হয়নি কিন্তু রাসূলের (সাঃ)হাদিস সেগুলোকে ফরজ বলেছে বা হারাম করেছে । যেমন আপনি বলেছেন নামাজের ফরজের কথা বা হজ্বের কথা । এগুলো কিন্তু ফরজ হিসেবে আদেশ করা হয়েছে কুরআনেই । কিভাবে এগুলো পালন করতে হবে তার একটা প্রাথমিক ধারণা কুরআনেই আছে আর যেহেতু এগুলো আগের কিতাবের লোকেরাও পালন করতো তাই তার একটা ধারণাও সমসাময়িক আরবের মানুষের ছিল । কিন্তু সেগুলো আরো পূর্ণাঙ্গ আর পরিশুদ্ধভাবে কেমন করে আদায় করা যাবে (যেহেতু সেগুলো করাপ্টেড হয়েছিল আরব ও ইহুদিদের দিয়ে )হাদিস ব্যাখ্যা করেছে সেগুলো রাসূল কিভাবে আদায় করেছেন সেগুলো বলার মধ্য দিয়েই ।
"রসূলের ( সা) নির্দেশে যা হারাম করা হয়েছে ( কিছু উদাহরণ)" অংশে আপনি যে পয়েন্টগুলো বলেছেন সেগুলোর ভিত্তি কিন্তু কুরআন । যেমন প্রথম চারটে পয়েন্ট সম্পর্কে বলি কুরআনে আল্লাহ বলেছেন তিনি মানুষকে নিখুঁত আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন (৮২:৬-৮)। সূরা ত্বীনে আল্লাহ বলেছেন তিনি মানুষকে বানিয়েছেন সুন্দরতম করে (৯৫:৪) । এই ব্যাখ্যা হিসেবেই পার্মানেন্টলি প্রয়োজনহীন কারণে শারীরিক কোনো পরিবর্তন করা বা সৌন্দর্য বৃদ্ধির চেষ্টা যে হারাম সেটাই হাদিসে ব্যাখ্যা করা হয়েছে আপনি যে পয়েন্টগুলো বলেছেন সেগুলোতে। কারণ সেই চেষ্টা করলে আল্লাহর সৃষ্টির নিপুণতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয় । এখানে হাদিসে আউট অফ ব্লু কিন্তু কোনো কথা বলা হয়নি । অন্য পয়েন্টগুলোর ব্যাপারেও একই কথা বলা যায় । এ'সম্পর্কিত হাদিসের ফরজ বা ওয়াজিব বলার ব্যাপারটা শুধুই কুরআনের আদেশ নির্দশেষগুলোর এক্সটেনশন বা ব্যাখ্যা আলাদা ভাবে কিছু নয় আর অবশ্যই এগুলোও আল্লাহর নির্দেশেই বলা । তাই সহীহ হাদিস মানতেই হবে ।
অন্য দিকে দ্বীনের সাথে সম্পর্কিত নয় এমন অনেক বিষয়েই রাসূল (সাঃ) তার সাজেশন নির্দেশনা সাহাবীরা মানতে পারে আবার নাও মানতে পারে সেটা নিজেই বলেছেন। তাই আমার মনে হয়েছে আপনার শিরোনামেরে কনফিউশন থেকেই অনেকেই প্রশ্ন বা মন্তব্য করেছেন হাদিস মানার বিষয় নিয়েই। তবে হাদিস সংকলনের সময় নিয়ে যারা প্রশ্ন করেছেন তাদের কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবেই এসব প্রশ্ন তুলে নোংরামি করছেন ব্লগ শুরুর দিন থেকেই । কেউ কেউ হতে পারে অজ্ঞতা থেকেও । আপনার লেখার মূল বক্তব্যের সাথে আমি একমত ।
২৫| ২১ শে মে, ২০২১ রাত ৮:৪৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোরআনের আয়াতের মধ্যে অনেক কিছু লুকিয়ে আছে যেটা অনেক সময় সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব না। এটা একমাত্র রসুল (সা) জানতেন। উনি এগুলি তখন ব্যাখ্যা করতেন। একারনেই এভাবে পোস্টের নাম করণ বলেছি। বেশী সমস্যা সৃষ্টি করলে নাম বদলে দিতে পারি।
২৬| ২৩ শে মে, ২০২১ সকাল ৮:২৪
ডাব্বা বলেছেন: অনেক কিছু জানা গেল। ধন্যবাদ আপনাকে।
২৪ শে মে, ২০২১ রাত ১২:২৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
২৭| ২৮ শে মে, ২০২১ সকাল ৮:৩৩
সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: কোরানে বার বার বলা হয়েছে আল্লাহ কোরান কে সহজ করে উপস্থাপন করেছেন তাহলে হাদিসের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারটা কি?
যা কোরানে নেই হাদিস দিয়ে তাকে ফরজ করার যৌক্তিকতা কি?
দুই দিন পর পর যেসব হাদিস পরিবর্তিত হয় তার গ্যারেন্টি কি?
যখন দুই হাদিস পরস্পরের বিপরীত কথা বলে তখন আপনি কোনটাকে গ্রহন করবেন?
আল্লাহর কথার উপরে কথা বলার অধিকার কি হাদিসের আছে?
কোরান যে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় এ ব্যপারে কি আপনি নিশ্চিত?
কোরানের বাইরের বিধিনিষেধ দিয়ে মানুষের জীবন অযথা জটিল করাকে কি আপনি যুক্তিযুক্ত মনে করেন?
মহানবী (সাঃ) এর নাম নিয়ে মিথ্যাচার করা কি পাপ নয়?
২৯ শে মে, ২০২১ রাত ৯:৩৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোরআনকে সহজ করে উপস্থাপন করেছেন তার মানে এই না যে হাদিসের প্রয়োজন নাই। কোরআনে অনেক ব্যাপারে শুধু মূল বিষয়টার উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আমল করার জন্য বিস্তারিত জানার প্রয়োজন হয়। তখনই হাদিসের সাহায্য নেয়া হয়। নামাজ, রোজা, হজ্জ, জাকাত ইত্যাদি বিভিন্ন ইবাদতের ক্ষেত্রেই এই কথা প্রযোজ্য। যেমন আমাদের দেশের সংবিধানে কিছু মূল বিষয়ের উল্লেখ আছে। কিন্তু দেশ পরিচালনার জন্য সংবিধানের আলোকে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করতে হয়। এই কারণে কেউ বলে না যে সংবিধান স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। একই কথা কোরআনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আবার অনেক ক্ষেত্রে কোরআনে ব্যাপক অর্থে কোন বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। হাদিসের মাধ্যমে এই ব্যাপক অর্থের বাইরে কিছু বিষয়কে ব্যতিক্রম হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যে ক্ষেত্রে এই ব্যাপক অর্থ প্রযোজ্য নয়। কোন কাজ হারাম করার ক্ষেত্রে এই ধরণের কিছু উদাহরণ আমি আমার পোস্টে উল্লেখ করেছি। আপনাকে সবার আগে মানতে হবে যে রসূল যে কথাগুলি ধর্মীয় উদ্দেশ্যে বলেছেন সেগুলি ওনার ব্যক্তিগত মতামত না। এগুলি উনি আল্লাহর নির্দেশে বলেছেন। তাই ওনার আদেশ, নিষেধ মুলত আল্লাহ্রই আদেশ, নিষেধ। এই কারণেই রসূলকে মান্য করার কথা বলা হয়েছে। আমি অনেকগুলি আয়াত এই ব্যাপারে উল্লেখ করেছি। 'যে রাসুলের আনুগত্য করে সে আল্লাহ্রই আনুগত্য করলো'। ( সুরা নিসা - আয়াত ৮০)। আমাদের মূল আকিদাগত বিষয়গুলি নিয়ে মতভেদ হয় না। জাল হাদিস অনেক আগেই সনাক্ত করা হয়েছে। কিছু হাদিসের নির্ভুলতা নিয়ে এখনও মতভেদ আছে। কিন্তু এই হাদিসগুলির কারণে আমাদের মূল আকিদাগত ধর্মীয় বিশ্বাস প্রভাবিত হয় না। বাদবাকি সহি হাদিসগুলি অনেক আগেই বই আকারে লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে। আবার অনেক ছোটখাটো বিষয় আছে যে ক্ষেত্রে ইসলামে একাধিক মত গ্রহণযোগ্য। রসূল (সা) অনেক বিষয়ে একাধিক মতামতকে গ্রহণ করেছেন। এই কারণে একই বিষয়ের উপর ৪ মাজহাবের ৪ মতই গ্রহণযোগ্য। মাজহাব কোন দলাদলি না। পরস্পর বিরোধী হাদিসের ক্ষেত্রে সঠিকটা রেখে বাকিটাকে বাদ দেয়া হয়। অথবা দুইটাই বাতিল বলে গণ্য হয়। দুইটা সহি হাদিস পরস্পর বিরোধী হয় না। আবার অনেক ক্ষেত্রে আপাত দৃষ্টিতে পরস্পর বিরোধী মনে হলেও উভয়ের মধ্যে সমন্বয় করা যায়। আল্লাহতালা রসুলকে কথা বলার অধিকার কোরআনে দিয়েছেন। এই কারণে বলেছেন "রাসুল তোমাদের যা দেন তা গ্রহন কর এবং যা নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক।" (সুরা হাশর, আয়াত ৭)। রসূলের ( সা) জমানায় কোন বিষয়ে মতভেদ হলে রসূল (সা) সমধান করে দিতেন। খলিফাদের সময় মতবিরোধ হলে কোরআনের সাহায্য নেয়া হত। যখন কোরআনে পরিষ্কারভাবে কিছু পাওয়া না যেত তখন রসূলের (সা) নির্দেশনা থেকে সাহায্য নেয়া হতো। যেমন এই যুগে মোবাইলে কোরআন পড়তে অজু করতে হবে কি না এই প্রশ্ন অনেকে করে। এই ব্যাপারে আপনি কোরআন বা হাদিসে স্পষ্ট কিছু পাবেন না। যারা ফকিহ তারা কোরআন বা হাদিসের অনুরুপ বা সামঞ্জস্যপূর্ণ কোন নির্দেশনার আলোকে মতামত দিয়ে থাকেন। তাই হুবহু অনেক কিছু অনেক সময় কোরআন বা হাদিসে পাওয়া যায় না। তবে এই বিষয়গুলি মৌলিক আকিদাগত কোন বিষয় নয় বরং কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেয়ামত পর্যন্ত এই ধরণের অনেক নতুন বিষয় আসবে যেগুলি হুবহু কোরআন হাদিসে নেই ( যেমন টেস্ট টিউব বেবি, ক্লোনিং, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দান করা ইত্যাদি বহু বিষয়)। তবে আলেমরা কোরআন বা হাদিসের আলোকে ফতওয়া দিয়ে থাকেন। কোরআন এই জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ কারণ কোরআনে বলা আছে রসূলকে ( সা) অনুসরণ করো। ফলে সব হাদিসের নির্দেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোরআনের নির্দেশ হয়ে যায়। কোরআনেই হাদিস মান্য করার কথা বলা হয়েছে কারণ রসূলের দিক নির্দেশনাই হাদিস। আর জাল ও দুর্বল হাদিস মানা যাবে না। সহি হাদিস মানতে হবে।
২৮| ২৮ শে মে, ২০২১ রাত ১১:০৯
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পোস্টে ধন্যবাদ জানবেন
২৯ শে মে, ২০২১ রাত ৯:৪০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
২৯| ২৯ শে মে, ২০২১ রাত ১২:১৪
অনেক কথা বলতে চাই বলেছেন: ইদানিং ই্উটিউবে এক আরবী ব্যাটা একটা চ্যানেল ফেদে বসেছে। আরবী দাড়ি, আরবী পোশাক, কিন্চিৎ আরবী টানে ইংরেজী। ইনিয়ে বিনিয়ে নবী (সাঃ) কে নিয়ে কিছু বলছিল। পরে একজন ওয়েস্টান গবেষক (!) কে নিয়ে বসে আলাপ চালিয়ে যাওয়ার এক সময়ে বলতে শুরু করলো আমাদের নবী (সাঃ) - এর কোন অস্তিত্বের প্রমাণ নেই, চার খলিফার কোন অস্তিত্বের প্রমাণ নেই!
শুরুতে সালাম না দিয়ে অনুষ্ঠান আরম্ভের পর থেকেই আমার খটকা লেগেছিল। পরে বুঝতে পারলাম আরব খ্রীস্টান। এসব লোক থেকেও সাবধান থাকতে হবে! কতদিক থেকেই না আক্রমণ আসে আজকাল ঈমানের উপর! ভেতর থেকে, বাহির থেকে! "নিজ" দল থেকে, "অন্য" দল থেকে!
২৯ শে মে, ২০২১ রাত ৯:৪৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ইসলামকে বিতর্কিত করার জন্য অনেক ব্যক্তি ও গোষ্ঠী দেশে এবং বিদেশে কোমর বেঁধে নেমেছে। বাহিরের আক্রমনের চেয়ে ভিতরের লুকানো অবিশ্বাসীদের আক্রমন আরও বিপদজনক। ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:১৯
রানার ব্লগ বলেছেন: এতো দিন জানতাম দাড়ি রাখা সুন্নাত !!!
যদি বন্য গাধা খাওয়া হালাল হয় তাহলে কি বন্য ঘোড়া খাওয়া হালাল? কারন গাধা ও ঘোড়া একই গত্রের প্রানী।