নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, চায়না এবং সাউথ আফ্রিকা হোল বর্তমান বিশ্বে দ্রুত বর্ধনশীল বৃহৎ অর্থনীতির দেশ যারা সম্মিলিতভাবে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্থনীতিতে আধিপত্য কায়েম করবে বলে মনে করা হয়। ২০০১ সালে জিম ও’নেইল নামক একজন প্রখ্যাত ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ এই ভবিষ্যৎ বাণী করেন। ও’নেইল নেতৃস্থানীয় বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাক্সের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাক্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের সময় ট্রেজারির কমার্শিয়াল সেক্রেটারি ছিলেন। উনিই ব্রিকস ইকোনমিক থিউরির প্রবক্তা।
উপরের পাঁচটা দেশের নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ব্রিকস নামক এই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মুলক সংগঠনের নামকরণ করা হয়েছে। ২০০৬ সালে ব্রিকস যাত্রা শুরু করে। এই ৫ টি দেশ ছাড়াও ইতিমধ্যে আরও প্রায় ২৫ টি দেশ ব্রিকসে যোগ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে বাংলাদেশও আছে। বাকি দেশগুলি হোল;
আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, বাহরাইন, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, আফগানিস্তান, বেলারুস, কাজাকিস্তান, মেক্সিকো, নিকারাগুয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, সেনেগাল, সুদান, সিরিয়া, থাইল্যান্ড, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, উরুগুয়ে, ভেনিজুয়েলা এবং জিম্বাবুয়ে।
ব্রিকস রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি হবে অন্যের ব্যাপারে নাক না গলানো, সমতা, উভয় পক্ষের মঙ্গল চিন্তা। আগামিতে জি-৭ এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে ব্রিকসকে দেখা হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে জি- ৭ এর চেয়ে ব্রিকস রাষ্ট্রগুলির হিস্যা এখন আকারে বড়। ইতিমধ্যে ২০১৪ সালে ব্রিকস নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক চালু করেছে যেটা বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের সাথে সামনের দিনগুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ব্রিকস তার সদস্য রাষ্ট্রগুলির বৈদেশিক মুদ্রার সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য একটা সঞ্ছিতি তৈরি করবে। এই সঞ্ছিতির সাহায্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলির মুদ্রাকে অনাকাঙ্ক্ষিত অবমূল্যায়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি থেকে রক্ষা করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়া ব্রিকস আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং যোগাযোগ এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে সুইফট (SWIFT) এর বিকল্প লেনদেন ব্যবস্থা তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশ ২০২১ সালে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সদস্য হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্রিকসের মূল সংগঠনে অংশ নেয়ারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এই বছরের আগস্টে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে ব্রিকসের সদস্য বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
নতুন সদস্য ছাড়াই উদ্যোক্তা ৫ টি ব্রিকস দেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৩২১ কোটি। অর্থাৎ বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ৪২%। জনসংখ্যা, আয়তন এবং জিডিপির ভিত্তিতে ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া এবং চায়না বিশ্বের প্রথম ১০ টি দেশের অন্তর্ভুক্ত। ব্রিকসের ৫ টি দেশই জি ২০ এর সদস্য রাষ্ট্র। প্রথম দিকে শুধু অর্থনীতি নিয়ে কাজ করলেও সামনের দিনগুলিতে বিশ্ব ভু-রাজনীতির ক্ষেত্রেও ব্রিকস ভুমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্রিকসের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক আশা ব্যঞ্জক কথা যেমন শোনা যায় তেমনই এই সংগঠনকে নিয়ে সমালোচনাও আছে। ২০০১ সালে ব্রিকসের ধারণা অর্থনীতিবিদ ও’ নীলের মাথায় আসার পরে বিশ্বের অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ব্রিকসের ধীর গতিও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রতি বছর সম্মেলন হলেও সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সময় বেশী লাগছে। এছাড়া এই গ্রুপের সদস্য রাষ্ট্র চীন এবং ভারতের মধ্যে বিরোধকে অনেকে ব্রিকসের জন্য হুমকি মনে করছেন। অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের চেয়ে চীনের অর্থনীতি আকারে অনেক বেশী বড় এটাও একটা সমস্যা হতে পারে। ফলে এই সংগঠন চীন দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সম্ভবনা আছে। এক দিকে চীন অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে আরেক দিকে ব্রাজিল অর্থনৈতিক মন্দায় পতিত হয়েছে ২০১৫ সালে। অর্থনৈতিকভাবে ভারতও খুব ভালো অবস্থানে আছে এই কথা বলা যাবে না। বরং নিজেদের অনেক অভ্যন্তরীণ সমস্যায় তারাও জর্জরিত। রাশিয়া আর ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে পুরো বিশ্ব একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া নিজেও আগের মত দৃঢ় অবস্থানে নাই। ব্রিকসের কর্ম তৎপরতায় এই বিষয়গুলি প্রভাব ফেলবে।
এখন প্রশ্ন হোল বাংলাদেশ ব্রিকসে যোগ দিলে কতটা লাভবান হবে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে ৫টি ব্রিকস উদ্যোক্তা রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের আমদানি বেশী এবং রপ্তানি খুব কম। ২০২১-২২ সালে আমদানি ছিল ৩৫ বিলিয়ন ডলার আর রপ্তানি ছিল মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ তারচেয়ে ৪ গুন বেশী রপ্তানি করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রে এবং ৭ গুন বেশী রপ্তানি করে থাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), যাবতীয় আর্থিক কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা, উন্নয়ন এবং অবকাঠামো ঋণের সিংহভাগ এবং রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের প্রায় সব উৎসই ব্রিকস বহির্ভূত দেশে। বাংলাদেশ মুলত ব্রিকসের দুই দেশ ভারত এবং চীনের জন্য বড় বাজার। তাই ব্রিকসে যোগ দিয়ে ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার অতি আশা হতাশার কারণ হতে পারে। বাংলাদেশ হয়তো ব্রিকস থেকে ঋণ পেতে পারে। কিন্তু এই ঋণ আমাদের জন্য কতটা ভালো হবে সেটা আমাদের ভেবে দেখতে হবে। ঋণের টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার না করতে পারলে সেটা আমাদের গলার কাঁটা হতে পারে। অর্থাৎ ব্রিকস থেকে সুফল তোলার সবচেয়ে বড় বাধা অর্থনৈতিক বৈষম্য। বাংলাদেশের বর্তমান বাণিজ্যঘাটতি, যেখানে আমদানি রপ্তানির চেয়ে অনেক বেশি, সেখানে ব্রিকসের সুবিধা আদায়ে একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
বর্তমানে বিশ্বের রাজনীতি এবং অর্থনীতি একচেটিয়াভাবে পশ্চিমাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সেটার বিকল্প হিসাবে ব্রিকসের আবির্ভাব ঘটেছে। কিন্তু ব্রিকস যদি তাদের পরিকল্পনায় ভুল করে এবং ধীর গতিতে চলে সেই ক্ষেত্রে ভালোর চেয়ে খারাপ হওয়ার সম্ভবনা আছে। পশ্চিমাদের সাথে সু সম্পর্ক বজায় রেখে ব্রিকসকে আগাতে হবে। ভারসাম্য তৈরি করতে গিয়ে যেন নতুন সংঘাতের জন্ম না নেয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ব্রিকসের কোন সদস্য রাষ্ট্র যেন অনৈতিক কোন প্রভাব না তৈরি করতে পারে সেই ব্যাপারে অন্য সদস্যদের সতর্ক থাকতে হবে। আসলে ব্রিকস সফল না ব্যর্থ হবে সেটা জানার জন্য আমাদের আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে।
সূত্র - theconversation.com
প্রথম আলো
উইকিপিডিয়া
ছবি - দা বাংলাদেশ মোমেনটস
প্রথম আলো
২৪ শে জুন, ২০২৩ সকাল ১০:৪২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ব্রিকস খুব ধীরে আগাচ্ছে। এই কারণে অনেক রাষ্ট্র আস্থা হারাতে পারে ব্রিকসের উপরে। ২০০৬ সালে ব্রিকসের যাত্রা শুরু কিন্তু অর্জন অতি সামান্য। এতো ধীরে আগালে এই সংগঠনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ জন্মাবে। পশ্চিমের কোন সংগঠন হলে শুরুর ৫ বছরের মধ্যে অনেক কিছু করে ফেলত। এতো ধীর গতির একটা কারণ হোল মূল ৫ টা সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সেই তেজটা নাই। তেজি ভাব না থাকলে এই ধরণের এই বৈশ্বিক পর্যায়ের সংগঠনকে সফলভাবে দাড়া করানো কঠিন কাজ। রাষ্ট্রগুলি দোমনা হলে চলবে না। যা করার দ্রুত করতে হবে তা না হলে তাদের দলে কেউ আসবে না।
২| ২৪ শে জুন, ২০২৩ সকাল ১০:৫০
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: ২০০৬ সালে ব্রিকসের যাত্রা!! আর আমি ব্রিকসের নাম'ই শুনছি গত এক বছর ধরে।
চীন, রাশিয়া আর মধ্যেপ্রাচ্চ্যের দেশগুলো মিলে যদি বড় কোন জোট গঠন করতে পারে তাহলে হয়তো পশ্চিমা অধিপত্য খর্ব হতে পারে, তবুও সময় লাগবে দীর্ঘ বছর।
২৪ শে জুন, ২০২৩ সকাল ১১:০১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি ব্রিকসের কথা আরও অনেক বছর আগেই শুনেছি। তবে এদের কর্ম তৎপরতা এবং উদ্যম কম হওয়ার কারণে এই নামটা বেশী প্রচার পায় নি। তবে নিজে থেকেই ধারণা করা যায় যে ২০৫০ না হোক ২০৭০ বা তার পরে ইউরোপ আর অ্যামেরিকা জনসংখ্যায় অনেক পিছিয়ে যাবে। এগিয়ে যাবে এশিয়ার দেশগুলি। জনবহুল দেশগুলিই এক সময় সমৃদ্ধ হবে। যদিও এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে অস্ত্রের চেয়ে অর্থনীতি আরও শক্তিশালী একটা অস্ত্র। যার প্রমাণ চীন। যুদ্ধ যে ভালো করে না তার প্রমাণ হোল রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধে ইউরোপ আর অ্যামেরিকার সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্বে বলতে গেলে একটা মন্দার দ্বারপ্রান্তে। মন্দার চোট ধনী দেশগুলিকেও বিব্রত করে। আর গরীব দেশগুলির হারানোর কিছু নাই। এদের মন্দা লেগেই থাকে।
৩| ২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: বড় কঠিন বিষয় নিয়ে লিখেছেন। এসব বিষয় আমি একেবারে কম বুঝি।
২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১:৩৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এগুলি হোল বিশ্ব রাজনীতি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বিশ্ব রাজনীতিকে সফলভাবে মোকাবেলার উপর। ভুল পদক্ষেপ নিলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৪| ২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ১:৪৮
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ব্রিকস মুলত ইকোনমিক জোট, আসিয়ানের মত। এরা আমিরিকার সাথে লাগতে যাবেনা কেউ।
বাংলাদেশের ছোট দেশ হিসেবে বেশি লাভবান হবে। রপ্তানির ক্ষেত্র বাড়বে। কিছু শুল্ক ছাড় পাবে।
ভারত ও চীনে রপ্তানি হয় না কথাটা সত্য নয়।
বাংলাদেশ থেকে ভারত ও চীনে রপ্তানি দ্রুত হারে বাড়ছে।
ভারতে পোশাক সহ অন্যান্ন রপ্তানী প্রবৃদ্ধি ৯৮% চীনে কিছু কম হলেও দ্রুত বাড়ছে।
২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অ্যামেরিকার সাথে অস্ত্র নিয়ে লাগতে না গেলেও রাজনীতি এবং কূটনীতির ক্ষেত্রে ব্রিকসের ভুমিকা আছে বা থাকবে। শুরুর দিকে শুধু অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিলেও ভু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও ব্রিকসের ভুমিকা থাকবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছে। এটা অবশ্যই ন্যাটোর মত সামরিক সঙ্ঘ না। তবে অর্থনীতি, রাজনীতি এবং কূটনীতি ব্রিকসের আওতার মধ্যে থাকবে বা আছে। অ্যামেরিকা নিশ্চয়ই ব্রিকসকে ভালো নজরে দেখবে না।
https://www.thedailystar.net/news/bangladesh/politics/news/move-join-brics-be-wary-the-geopolitical-traps-3352516
উপরের লিঙ্কে এই ব্যাপারে একজন আলোচনা করেছেন। ইচ্ছে হলে পড়তে পারেন।
বাংলাদেশ তার রপ্তানি ক্ষেত্র এই দেশগুলিতে বাড়াতে পারবে কি না এবং শুল্ক ছাড় পাবে কি না এটা নির্ভর করে ব্যবসায়ী এবং কূটনীতিবিদদের দক্ষতার উপরে। আমাদের সমস্যা হোল আমাদের দরাদরি করার মত মেধাবী ব্যবসায়ী এবং কূটনীতিবিদ নাই। তাই রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ আমরা কতটা কাজে লাগাতে পারবো সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে। আবার ভারত, রাশিয়া এবং চীনের উপর আমাদের নির্ভরতা আছে। তাই ভালো দরাদরি আমরা করতে পারবো না।
ভারত এবং চিনে রপ্তানি হয় না এই কথা বলি নি। ভারত এবং চীনে রপ্তানির চেয়ে আমদানি অনেক বেশী। ঋণের কারণেও চীন এবং রাশিয়ার উপর আমরা নির্ভরশীল। তাই আমরা জোর গলায় দরাদরি করতে পারবো না। এমনিতেও আমাদের দেশের কূটনীতিবিদরা নতজানু নীতি অবলম্বন করে এবং হীনমন্যতায় ভোগে। আমার ধারণা বাংলাদেশ মুলত সহজ ঋণের জন্য ব্রিকসের দিকে ঝুকছে। কিন্তু শুধু ঋণ না বরং আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য এবং প্রযুক্তির আদান প্রদানের ক্ষেত্রেও সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের কূটনীতিবিদরা কৌশলী হলে ব্রিকস থেকে সুবিধা নেয়া সম্ভব।
৫| ২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ২:১০
ভুয়া মফিজ বলেছেন: ব্রিকস (BRICS) কি পশ্চিমা দেশগুলির একচেটিয়া অর্থনৈতিক এবং ভু-রাজনৈতিক প্রভাবকে কমাতে পারবে? সহজ উত্তর হলো..........পারবে।
ব্রিকস এর শুরুটা ধীরগতিতে হলেও ইউক্রেইন যুদ্ধ এখন একটা ট্রিগার হিসাবে কাজ করছে। কাজেই আগামী দশ বছরের মধ্যে বিশ্ব একটা বিরাট পরিবর্তন দেখতে পাবে। ডলারের পতন ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আমেরিকার অর্থনৈতিক পরাশক্তির দিন এখন ক্রমাগত ক্ষয়ের দিকে। পশ্চিমারাও অতোটা দ্রুত না হলেও সেইদিকেই যাচ্ছে।
আগামী অগাস্টে সৌদি আরব, ইরান আর তুরস্ক যদি যোগ দেয়, আর ব্রিকস মুদ্রার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হয়ে যায়, তাহলে খেলা শুরু হয়ে যাবে আরো দ্রুতগতিতে।
ব্লগে অনেকেই দেখি আম্রিকান সাম্রাজ্যের পতন দূরবীণ দিয়েও দেখে না। চলমান বিশ্ব নিয়ে পড়ালেখা না করলে যা হয় আর কি!!!
২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ২:৪৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া সঙ্কটের মধ্যে থাকলেও ব্রিকস রাষ্ট্রগুলির ঐক্য বদ্ধ হওয়ার এটা একটা সুযোগ হতে পারে। কারণ ডলার ছাড়া অন্য মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন দেশ বুঝতে পাড়ছে এখন। ভীত না হয়ে বরং এখন ব্রিকসকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। আমার মতে রাশিয়ার এই ব্যাপারে নেতৃত্ব দেয়া উচিত। কারণ রাশিয়ার একটা আলাদা ইমেজ এবং ওজন এখনও আছে। সেটাকে কাজে লাগিয়ে ব্রিকসকে দ্রুত শক্তিশালী করতে হবে। চীনের উপরে অনেক দেশের আস্থা কম। দ্বিধা দ্বন্দ্ব ত্যাগ করে কাজে নেমে যেতে হবে। কারণ ব্রিকস এখনও ধীর গতিতে চলছে।
সৌদি আরব, ইরান এবং তুরস্ক যোগ হলে ব্রিকসের উপর অন্যান্য দেশের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে।
ব্লগে একমাত্র আপনাকে দেখলাম যে পশ্চিমে থেকেও পশ্চিমের সমালোচনা করার জায়গা খুঁজে পান। অনেকে অ্যামেরিকা বা অন্যান্য পশ্চিমা দেশের কোন ত্রুটি খুঁজে পায় না। যত দোষ এই সব মধ্যবিত্ত এবং গরীব দেশগুলির।
৬| ২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ২:১১
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আসলে ছোট একটা পোষ্ট ও ছোট একটা কমেন্টেই সব কিছু বলে ফেলা সম্ভব হবে এমন সহজ বিষয় এটা না।
রাশিয়া ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে জড়ানো যে আম্রিকার কফিনে পেরেক মারার শুরু, সেটা ব্রিকস দিয়ে কিন্তু ভালোই টের পাওয়া যাচ্ছে।
আইপিএল এর সাথে পাল্লা দিয়ে কোন দেশ কিন্তু কিছু করতে যায়নি প্রথমে। কিন্তু বাংলাদেশ বিপিএল করার পরপর কিন্তু সবাই নিজেদের মত করার সাহস পেয়েছিলো। কদ্দুর এগিয়েছে সেটা পরের বিষয়।
তিতুমিরের বাঁশের কেল্লা কিচ্ছু করতে পারে নি, মুহুর্তেই লুটিয়ে পড়েছিলো ব্রিটিশদের আক্রমণে। কিন্তু সেটা ছিলো একটা বটবৃক্ষের শস্য দানার মত।
আম্রিকার বিরুদ্ধে দাড়ানো, বা কথা বলার মত আগে তেমন কেউ ছিলো না। কিন্তু ব্রিকস ও ওপেক+ কিন্তু সেই চোখরাঙ্গানী শুরু করে দিয়েছে। হয়ত এরা আম্রিকার বিরুদ্ধে সফল হবে না, কিন্তু এরা দেখিয়ে যাচ্ছে যে আম্রিকার বিরুদ্ধে দাড়ানো যায়। এটা শুরু হতে পারে। শেষ হয়ত অন্য কেউ করবে।
একটা বিষয়তো আমরা ইতিহাস ঘাটলেই পাই, ক্ষমতা কারোই চিরস্থায়ী নয়
আবার বাংলাদেশ এর থেকে সুফল হয়ত এখনই পাবে না। হয়ত কখনোই পাবে না। কিন্তু বাংলাদেশের মত বিপদে পড়া দেশের জন্য এটা একটা আশার মত।
২৪ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ২:৫৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপ এবং অ্যামেরিকার যুদ্ধটা আসলে অ্যামেরিকা ও ইউরোপের জন্য হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভবনা আছে। এই যুদ্ধের কারণে অন্যান্য দেশের মতই ইউরোপ আর অ্যামেরিকার অর্থনীতি শ্লথ হয়ে গেছে। ঐ সব দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণী বিপদে পড়েছে। রাশিয়া যে হাল ছাড়বে না এটা বোঝা যাচ্ছে। পরিণতিতে সারা বিশ্বে মন্দা চলে আসতে পারে যেটা ইউরোপ বাঁ অ্যামেরিকার জন্য কখনই ভালো হবে না। অর্থনীতি দুর্বল হয়ে গেলে যুদ্ধে জিতেও কোন লাভ হবে না। আর তাছাড়া এই যুদ্ধে আসলে কেউই জিতবে না। এই মন্দা চলে আসলে সারা বিশ্বে অ্যামেরিকার ইমেজ নষ্ট হবে।
অ্যামেরিকা আরও অনেক বছর হয়তো রাজত্ব করবে কিন্তু জনসংখ্যার আধিক্য এবং সম্মিলিত জিডিপি বেশী হওয়ার কারণে ব্রিকসের দেশগুলি বিশ্বের অর্থনীতিতে জোরালো প্রভাব তৈরি করবে। বিশেষ করে চীন অর্থনীতির দিক থেকে হয়ে গেছে অনেকটা অপ্রতিরোধ্য। চীন, ভারত এবং রাশিয়া দ্বন্দ্বে না গেলে এই দেশ তিনটিই বিশ্ব অর্থনীতিকে নাড়া দেবে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন কেউ হয়তো ভাবতেও পারে নি। কিন্তু দেরীতে হলেও সেটা হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে অস্ত্রের চেয়ে অর্থনীতি আরও বড় অস্ত্র।
বাংলাদেশ ব্রিকস থেকে লাভবান হবে কি না এটা নির্ভর করে আমাদের রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক দক্ষতার উপরে। আমাদের চেয়ে ভারতের কূটনীতিক এবং আমলারা অনেক দক্ষ এবং মেধাবী।
৭| ২৪ শে জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৯
শেরজা তপন বলেছেন: ব্রিকসের আলাদা মুদ্রা ব্যাবস্থা হলে পাশার দান পালটে যেতে বাধ্য! পৃথিবীর প্রায় চারের তিনভাগ মানুষের জোট অবশ্যই একটা বিশাল ফ্যাক্টর হবে।
২৬ শে জুন, ২০২৩ রাত ১:৪৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ব্রিকসের আলাদা মুদ্রা চালুর পরিকল্পনা আছে। তবে এটা অনেক কঠিন একটা কাজ হবে। তার আগে ব্রিকসকে আরও সংগঠিত হতে হবে এবং অন্যান্য দেশের আস্থা অর্জন করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে অনেক কিছুই সম্ভব।
৮| ২৪ শে জুন, ২০২৩ রাত ৯:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার এই লেখাটি সোনাগাজী বেশ পছন্দ করেছেনে।
২৬ শে জুন, ২০২৩ রাত ১:৪৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: জি, সোনাগাজী সাহেব এই পোস্ট সম্পর্কে কিছু ভালো কথা বলেছেন। এই জন্য ওনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মনে করিয়ে দেয়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
রবার্ট ফ্রসটকে নিয়ে আপনার পোস্টটা ভালো লেগেছে। ঐ পোস্টেও মন্তব্য করার ইচ্ছা আছে।
৯| ২৪ শে জুন, ২০২৩ রাত ১০:৫২
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সাচু ভাই তথ্যের হিসেবে না গিয়ে স্রেফ অভিজ্ঞতার কথা যদি শোনেন -
আজ থেকে দশবছর আগেও আমার মতো অনেকেই লোকাল দর্জির হাতে প্যান্ট শার্ট কাটিয়ে ব্যবহার করতাম। কিন্তু সপিংমল চালু হবার পর দর্জিদের ভাত উঠে গেছে।পিস কাটিয়ে মেকিংচার্জ দিয়ে যা কস্টিং পড়তো তার অনেক কম দামে দারুণ ফিটিংসের রেডিমেড পোষাক ক্রয় করা সম্ভব হয়।আর এখানেই আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি ভারতের বোম্বাই বা আমেদাবাদের মিলকে পাঁচ গোল দিয়ে ভারতের বাজার দখল করেছে বাংলাদেশ।এতো কমদামে বাংলাদেশী পোষাক আমরা আগে ভাবতেই পারতাম না। তবে রংটা তাড়াতাড়ি উঠে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত বিস্কুটের জগতে প্রাণের জনপ্রিয়তা এই মুহূর্তে তুঙ্গে। তবে প্রাণের পোডাক্টের দাম কিন্তু যথেষ্ট। কাজেই যে কথা বলার ব্রিকস নিয়ে আশাবাদী হবাটা অযৌক্তিক নয়।
২৬ শে জুন, ২০২৩ রাত ১:৫৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পদাতিক দা, বাংলাদেশ তৈরি পোষাকে বেশ দক্ষতা অর্জন করেছে। যদিও কিছু ঝড় ঝাপটা গেছে এই সেক্টরের উপর দিয়ে। প্রাণের বিস্কুট সহ বিভিন্ন খাবার ভারতেও জনপ্রিয় এটা জানা ছিল না। বাংলাদেশ এবং ভারত দুইটা দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থায় অনেক মিল আছে। এই দুইটা দেশের সম্ভবনাও অনেক যদি নেতারা দেশ দুটিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারেন। ব্রিকসের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তাদের কাজের উপর। শুধু কথা না বলে কাজ করতে হবে।
১০| ২৪ শে জুন, ২০২৩ রাত ১০:৫২
ডার্ক ম্যান বলেছেন: লেখক বলেছেন আমাদের চেয়ে ভারতের কূটনীতিক এবং আমলারা অনেক দক্ষ এবং মেধাবী।
তারা শুধু দক্ষ এবং মেধাবী নন বরং দেশপ্রেমিক।
রাজনীতিতে সফল হওয়ার প্রধান শর্ত অর্থনৈতিক সচ্ছলতা।
২৬ শে জুন, ২০২৩ রাত ১:৫৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার দুটি কথাই প্রণিধানযোগ্য। ভারতের আমলা এবং কূটনীতিকরা আমাদের চেয়ে বেশী দেশপ্রেমিক।
অর্থনৈতিক সচ্ছলতার কারণেই পশ্চিমের দেশগুলি বিশ্ব রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পাড়ছে। সাথে আছে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি আর মেধা।
১১| ২৪ শে জুন, ২০২৩ রাত ১১:০৭
কামাল১৮ বলেছেন: জোট নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলির সংগঠন এই ব্রিকস।এটা কোন যুদ্ধবাজ জোট না।তাড়াহুড়ার কিছু নাই।বিকল্প একটা কারেন্সি না হওয়া পর্যন্ত ডিমা তালে চলবে।এখন কিছুটা গতি পাইতেছ।
২৬ শে জুন, ২০২৩ রাত ২:০১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এটা কোন যুদ্ধবাজ জোট না এটা ঠিক। তবে বিশ্বের ভু- রাজনীতি, অর্থনীতি এবং বাণিজ্য নিয়ে কাজ করবে। সত্যি যদি এরা বিকল্প মুদ্রা আনতে পারে তাহলে বিশ্ব বাণিজ্যে একটা আলোড়ন সৃষ্টি হবে। তবে আলাদা মুদ্রা চালু করা বেশ কঠিন কাজ হবে ব্রিকসের জন্য। এটা পারবে কি না আমার সন্দেহ আছে। সব কিছু নির্ভর করছে দেশগুলির ঐক্যের উপরে। ঐক্য না থাকলে কিছু হবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জুন, ২০২৩ সকাল ১০:৩৬
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: পশ্চিমা অধিপত্য ঠেকাতে অনেকেই তো অনেক কিছু করতেছে, ব্রিকস'সের সবে মাত্র শুরু, সময়'ই কথা বলবে।