নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানভির জুমার

সব সময় সব জায়গায় সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে।

তানভির জুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোল্লারাই কি নারী ফুটবলের অগ্রগতি ঠেকায়ে রাখছে?

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৫৬

সানজিদা আক্তার খেলেন সায়েম সোবাহান আনভীরের মালিকানাধীন বসুন্ধরা কিংস ক্লাবে, মিডফিল্ড পজিশনে। খুঁজলে হয়ত আনভীরের সাথে উনার ফটোও পাওয়া যাবে। এখন, বায়তুল মোকাররমের ইমামের কাছে যেমন আমরা দাবি জানাইছিলাম আনভীরের সাথে ফটো ডিলিটের, সানজিদার কাছেও কি সেই দাবি জানানো উচিত না, যেন উনি বসুন্ধরা ক্লাব ছাড়েন? নারী হয়ে একজন রেপিস্টের ক্লাবে জেনেশুনে খেলা উচিত ওনার?

উপায় নাই। দেশে ফিমেল ফুটবলের সবচে বড় পৃষ্ঠপোষক আনভীর ও তার বসুন্ধরা গ্রুপ। সানজিদার মত গরিব মেয়েরা ইডিওলজির ফান্দে পইড়া আনভিরের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে না, দাঁড়াইতে পারবেও না। কিন্তু মোল্লাদের বিরুদ্ধে তাদের দাঁড়াইতেই হবে। বাস্তবতা এইরকম টুইস্টিং।
মোল্লারাই কি নারী ফুটবলের অগ্রগতি ঠেকায়ে রাখছে? মোল্লারা সিনেমা ঠেকাইতে পারতেছে না, গান-বাজনা ঠেকাইতে পারতেছে না, টিকটক ঠেকাইতে পারতেছে না (ফতোয়া দিয়াও), আরো হাজারটা জিনিশ ঠেকাইতে পারতেছে না। তাইলে ফিমেল ফুটবল কীভাবে ঠেকাইতে পারতেছে তারা? ভাবছেন কখনো?

ফিমেল ফুটবল নিয়া একটা মিছিল করছে হুজুররা। ফাইন। এখন বলেন তো, দেশে কীভাবে নারী ফুটবলের উন্নতি হবে? ফুটবলার বাড়লে, ক্লাব বাড়লে, তাইলেই তো, নাকি? তো ফুটবলার খালি গরিব ঘরের কেন সবাই? মোল্লারা কী ঢাকা বা অন্যান্য জেলা শহরের আরবান মিডল ক্লাশরে পুরাই কন্ট্রোলে নিয়া নিছে? তাদের বাচ্চারা ক্লাব খোলে না কেন, ফিমেল ফুটবলের? কেন একই গ্রামের ৫ জন খেলোয়ার একত্রে জাতীয় দলে খেলে? মোল্লাদের জন্য?

ধরলাম এইটাও মোল্লাদের জন্য। ট্যালেন্ট যে উঠায়ে আনবেন, কীভাবে? টুর্নামেন্ট দেওয়া লাগবে। ওকে। ৬৪ জেলায় দেবেন টুর্নামেন্ট, মোল্লারা জেলায় জেলায় মারামারি করবে, আস্তে আস্তে বোঝা যাবে যে, মোল্লারা এই ব্যাপারে আশলে কদ্দুর বাধা দিতে চায়। সরকার নিজেই যেহেতু ফিমেল ফুটবল আয়োজন করে, সে ওইগুলা সামলাবে। বাট বাস্তবতা কী?
বাস্তবতা হইল, ২০১১ সালে চালু হওয়া ন্যাশনাল উইমেন্স লীগ গত ৭ বছর টানা বন্ধ ছিল, 'অজানা কারণে'। ধরে নিলাম, মোল্লাদের কারণেই এইটা বন্ধ ছিল। চালু হওয়ার পর, খুব অল্প কয়টা ক্লাব অংশ নিছে। এই হইল ন্যাশনাল লেভেল। স্কুল-কলেজ লেভেলের কথা তো বাদই দিলাম।

ফিমেল ফুটবলের স্পন্সর নাই, কারণ পাব্লিকের আগ্রহ নাই। এই আগ্রহ না থাকার কারণও ধরলাম, মোল্লাদের উস্কানিজাত রক্ষণশীলতা। ফাইন। ওয়ার্ল্ডওয়াইড ফিমেল ফুটবলে মানুশের আগ্রহ কেমন? ওয়ার্ল্ড কাপ ফিমেল দলরে কে গোনে? ধরা যাক, আর্জেন্টিনা মেল দল ওয়ার্ল্ড কাপ জিতল, ব্রাজিল ফিমেল দল। তর্কে কি বরাবর হইতে পারবে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সাপোর্টাররা? জীবনেও না।
আমি নিজেও ফিমেল ফুটবল দেখি না। আগ্রহ পাই না, এন্টারটেইনড হই না। খেলা আমার কাছে আগে এন্টারটেইনমেন্ট, পরে অন্যকিছু। আমি নেইমার, মেসি বা রনের খেলায় যে আনন্দ পাই, সেটা কোন ফিমেল ফুটবলারের খেলায় পাই না। মার্শেই ফিমেল টিম একাধিকবার ইউসিএল জেতা টিম। তাতে কী? মার্শেইরে কেউ গোনে? কেউই গোনে না। বার্সার খুব খারাপ সময় গেছে কিছুদিন আগে। তখন, বার্সা ফেমিনো রিয়াল ফেমিনোরে হারাইছিল এক ম্যাচে। বার্সা ফ্যানরা ওইটা দিয়া রিয়ালরে ট্রোল করতে পারবে? জীবনেও না। ফুটবলের গ্রুপগুলায় আমি থাকি। বার্সার যে সাপোর্টাররা তখন রিয়াল ফ্যানদের ট্রোল করতে আসছে, তারাই উলটা ট্রোল্ড হইছে। বার্সারে ট্রোল কইরা রিয়াল ফ্যানরা তখন বলছিল 'মাতৃতান্ত্রিক ক্লাব'।

এইটা মোটামুটি গোটা দুনিয়ার চিত্র। হ্যাঁ, ইকোনমিক ও অন্যান্য এডভান্সমেন্টের কারণে ইওরোপে নারীরা অন্যান্য ক্ষেত্রের মত খেলায়ও পার্টিসিপেশন বাডাইছে। সেখানে তারা উন্নত সুবিধা পায়, সব পায়। তাও স্যালারি কত কম, না? ট্রান্সফার মার্কেটে নারী ফুটবলারদের বেচাকেনার একটা নিউজ, জাস্ট একটা নিউজও, আমি আজতক, বাঙলাদেশের কোন পত্রিকায় দেখি নাই। ফিমেল ফুটবল তো দৈনিক হয়, মেল ফুটবলের পাশাপাশি। কোন দৈনিক রিপোর্ট করে দেশের? ফিমেল ফুটবলের টাইমটেবিল বলে কোন নিউজ চ্যানেল?

তো এই অবস্থার জন্যেও কী মোল্লারা দায়ী? আমি জানি না। পার্সোনালি আমি দেখি যে, ফিমেল ফুটবলের এন্টারটেইনিং ভ্যালু খুবই কম, প্রায় নাই। এটা জাস্ট থাকার জন্য আছে; ইকুয়ালিটি, নারী অধিকার এইসবের জন্য আছে। বাট এর এন্টারটেইনিং ভ্যালু প্রায় নাই। এই যে না থাকা, এটা কি প্রগতিশীলতা আর মৌলবাদের মামলা, না মানুশের সহজাত রুচির মামলা— আমি জানি না। কিন্তু আমি এতটুক বুঝি, চরম প্রগতিশীল লোকও রুচিগত কারণেই ফিমেল ফুটবল/ক্রিকেট দেখতে না'ই চাইতে পারেন। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফিমেল ফুটবল-ক্রিকেটের হালত এমনই।

সব খেলায় যে আবার এমন, তা কিন্তু না। টেনিস দেখেন, দাবা দেখেন, সাঁতার বা দৌড়, আর্চারি ইত্যাদি খেলা দেখেন। সেখানে আবার নারীদের আলাদা কদর আছে। বাট ক্রিকেট ফুটবলে নাই।বাস্কেটবল যদি ধরি, সেখানে তো নরমালি ফিজিকালিটিজেরই গুরুত্ব থাকে আলাদা; হাইট এন্ড আদার্স। সেখানেও নারীরা প্রায় আনরেকগনাইজড।
এখন আপনে এই সবকিছুর বিরুদ্ধে কমন এনিমি মোল্লাতন্ত্ররে খাঁড়া করতেই পারেন। বাট দিনশেষে সেইটা তেমন কোন ফলাফল দেবে কিনা, স্পেশালি ফিমেল ফুটবলের অগ্রগতিতে, আমি জানি না। বরং এমনও হইতে পারে যে, ওলামা লীগের কেউ হইল বাফুফের প্রেসিডেন্ট। তখন আরো কঠিন বিপদে পউড়া যাইতে হবে।
T. Khan

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৪২

অক্পটে বলেছেন: যথেষ্ট যুক্তিবাদি লেখা, মোল্লারা আসলে কিছুই ঠেকায়া রাখতে পারেনা। আসলে মোল্লাদের নাম ব্যবহার করে অপকর্মের লাইসেন্স বানিয়ে নিয়েছে এরা। একটাও কমেন্ট নাই। কমেন্টের জন্য আওয়ামী ঘড়ানার হতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.