নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনু্য্য

কে এ এম শফিউল আলম প্রিন্স

কে এ এম শফিউল আলম প্রিন্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

হতাশাবাদ

১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:১৭

হতাশাবাদ এক প্রকার সামাজিক অথবা ব্যক্তিগত ব্যধি । এই দুই প্রকার বিশেষন ( সামাজিক ও ব্যক্তিগত ) আলাদা আলাদাভাবে হতাশাবাদ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে । প্রথমত সামাজিক ব্যধি হিসেবে এর ব্যাখ্যা দেওয়া যাক । আমরা বিভিন্ন প্রকার সমাজ ব্যবস্থার অনুগত । এগুলো হচ্ছে- পারিবারিক সমাজ, বন্ধু সমাজ, প্রতিবেশী সমাজ, শিক্ষাক্ষেত্র/ কর্মক্ষেত্রের সমাজ, দেশীয় সমাজ ইত্যাদি । প্রতিটি সমাজের কিছু অভ্যন্তরীন অথবা সুপ্ত এবং প্রকাশিত নিয়ম কানুন থাকে । আমাদেরকে জ্ঞাত অথবা অজ্ঞাতভাবে সেই সকল নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয় । নিয়মের বাইরে চলে বিদ্রোহ করলেই আমরা সামাজিক রোষানলে পড়ি এবং সমাজ বহির্ভূত হই । এরকমই একটি সুপ্ত সামাজিক নিয়ম হচ্ছে হতাশাবাদ । হতাশাবাদ জ্ঞাত অথবা অজ্ঞাতভাবে বিভিন্ন সমাজের ভেতর পরিব্যপ্ত রয়েছে । আমাদের হতাশাবাদ সাধারনত জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু হয় । "বাংলাদেশের পক্ষে উন্নতি করা সম্ভব নয়" "বাংলাদেশ ধনী রাষ্ট্রদের পা- চাটা দেশ" " এ দেশের মানুষদের ভেতর কোন নৈতিকতাবোধ নেই" - এই ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য হরহামেশা করা হয় চারিদিকে । বিভিন্ন সমাজ ব্যবস্থাতেও তাই এ ধরনের কথাগুলো ঢালাওভাবে প্রচলিত । এগুলো হচ্ছে হতাশাবাদ বা দায়িত্ব এড়ানোর প্রচাষ্টামূলক কথাবার্তা । এ কথাগুলো যখন কোন সামাজিক আড্ডায় হয়, তখন আলোচনা খুব জমজমাট থাকে । সকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসব আলোচনায় অংশগ্রহন করে । এরমধ্যে কেউ যদি হঠাত করে কোন আশাবাদ ব্যক্ত করে এবং বাংলাদেশের মানুষের কোন একটা ইতিবাচক দিক সম্বন্ধে বলতে চায়, তখন তার দিকে সকলে ভ্রূকুটি করে তাকায় । তাকে তখন সেই সমাজের মানুষ অবজ্ঞা এবং অবহেলার দৃষ্টিতে দেখে । তখন প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে মানুষটি সমাজ বহির্ভূত হয়ে পড়ে । তখন সমাজ বহির্ভূত হয়ে মানুষটি একাকীত্ব, হীনমন্যতা এবং মানসিক যন্ত্রনায় ভোগে । পরবর্তীতে যা হবার তাই হয়, সঙ্গীহীন একাকী জীবন সহ্য করতে না পেরে, নিজের ব্যক্তিত্বকে বর্জন করে ওই সামাজিক নিয়ম মেনে নিয়ে পুনরায় সমাজের অন্তর্ভুক্ত হন ।


এ গেল হতাশাবাদের সামাজিক রূপের কথা । এবার ব্যক্তিগত অংশে আসা যাক । বর্তমান যুগ পরিবর্তন এবং প্রতিযোগিতার যুগ । যুগের এই বৈশিষ্ট্যকে মনে মনে স্বীকার না করলেও অনেকে স্বেচ্ছাবিরুদ্ধভাবে এই পরিবর্তন এবং প্রতিযোগিতায় নিজেদের নিয়োজিত করে দেন । এর মধ্যেও কিছু ভীষন স্বাধীনচেতা মানুষ থাকেন যারা কিছুতেই নিজেদেরকে প্রতিযোগিতায় সামিল করতে পারেননা । তখন তারা আশ্রয় নেন হতাশার । হতাশা মানুষের একটি খুব সহজাত প্রবৃত্তি নিজের কষ্ট দূর করার । " আমার দ্বারা জীবনে কিছু হবেনা" " আমি বোধহয় জীবনে উন্নতি করতে পারবোনা" "আমি আর বেঁচে থাকার কোন কারন খুঁজে পাচ্ছিনা"- এগুলো খুব সহজাত হতাশাজনিত কথাবার্তা । এই কথাগুলো মানুষের আবেগকে আলোড়িত করে প্রচন্ডভাবে । তখন মানুষ সমবেদনা অনুভব করে এবং হতাশা জর্জরিত মানুষটিকে প্রচন্ড সমবেদনা দান করে । এতে হতাশাগ্রস্ত মানুষটি আনন্দিত হন এবং প্রলুব্ধ হন । তখন সহজ এবং লাভজনক পদ্ধতি হিসেবে তারা মানুষের কাছে হতাশার কথা বিক্রি করে বেড়ান ।


"হতাশাবাদ" একটি প্রকট মানসিক ব্যাধি । এর ক্ষতির মাত্রা অত্যন্ত ভয়ানক । এটি ব্যক্তিগত, সামাজিক, জাতীয় পর্যায় হয়ে একসময় বৈশ্বিক পর্যায়ে ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে । জাতিগতভাবে আমাদের বাংলাদেশীদের ভেতর এক প্রকার প্রচন্ড শক্তি আছে, সেটি হচ্ছে "আবেগীয় শক্তি" । এই আবেগীয় শক্তি আমাদেরকে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ এনে দিয়েছে । চোখের সামনে ৩০ লক্ষ মানুষ একের পর এক শহীদ হয়েছে দেখেও বাঙালী ভয়ে পিছপা হয়নি । নিজেদের ভেতরকার আবেগকে জিইয়ে রেখে এগিয়েছিল জয়ের উদ্দেশ্যে । সেই জয় আমরা পেয়েছি । সেই বাংলাদেশীদের পক্ষে সম্ভব অনেক কঠিন কাজও, এই "হতাশাবাদ" দূর করা আর এমন কি । তাই আমাদের জীবন থেকে "হতাশাবাদ" দূর হবে এই "আশাবাদ" ব্যক্ত করে শেষ করছি ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.