নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনু্য্য

কে এ এম শফিউল আলম প্রিন্স

কে এ এম শফিউল আলম প্রিন্স › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবেগের অজানা বিষ

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:১৭

কোন এক শব্দভান্ডারে একবার দেখেছিলাম,
Emotion- Some poisonous elements of human mind.
ব্যাপারটা তখন খুব ভাবায় আমাকে। আমরা বাঙ্গালীরা আবেগের পিঠে ভর করেই এতদূর এসেছি, সেই আবেগকেই কিনা বলা হচ্ছে poisonous element. ভাবতে গিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই নতুন এক জগতের সাথে পরিচিত হলাম। সেই জাগতিক দৃশ্যের কিছুটা অবতারনা করার চেষ্টায় লিখতে বসা-

প্রথমে একটা ঘটনার উদাহরণ দিয়ে শুরু করা যাক।
আমার সবচেয়ে ছোট ভাই ছোটবেলায় কিছু মুরগীর ছানা কিনে আনে পুষবে বলে। যথারীতি আমরা বাসার সবাই দায়িত্বমাফিক বকা ঝকা শুরু করি। "নিজে থাকার জায়গা নেই, মুরগীর বাচ্চা নিয়ে এসেছে"। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই ঘটে যায় বিপত্তি। আমরা সবাই ছানাগুলোর প্রেমে পড়ে যাই। আমাদের আশে পাশে দিয়ে ছানাগুলো ঘুরে বেড়ায়, চিউ চিউ শব্দ করে, পটি করে। আহা ! কি মায়াবী দৃশ্য। আমরা আমাদের দায়িত্ব ভুলে ছানাগুলোর আদর যত্ন শুরু করি। তখন পর্যন্ত সব ঠিক ঠাক। এরপর হঠাত একদিন খেলতে খেলতে আমার ছোট ভাইয়ের পায়ের নিচে পড়ে দুটো ছানা মারা যায়। এই দেখুন, শুনেই আপনাদের হৃতপিন্ডে কেমন উত্তেজনা এবং দুঃখ জনিত আবেগের উতপত্তি হলো। আমাদেরও হয়েছিল। আমার ছোট ভাইতো দুঃখে নাওয়া খাওয়া বন্ধ করে দিল।নিজেকে অভিশপ্ত মনে করতে থাকলো। কিছুদিন এই আবেগের তাড়নায় আমাদের সময় নষ্ট হল। পরবর্তীতে আবার আগের মত। আস্তে আস্তে আমরা ছানাগুলোর কথা ভুলে গেলাম।

উপোরক্ত আলোচনা থেকে কি বুঝলেন? অতি সাধারন আলোচনা। কিন্তু এই অতি সাধারণ বিষয়টা থেকেও অতি অসাধারণ একটা বিষয় হারিয়ে গেল- কয়েকটা দিন।
পাগলের প্রলাপ মনে হচ্ছে? হওয়াটাই স্বাভাবিক।
এবার পরিস্থিতিটাকে একটু ঘুরিয়ে ভাবুন। ধরুন একটি দেশ বহিঃবিশ্বের নজরে পড়েছে। বিভিন্ন কারনে আশে পাশের অনেক দেশ চাচ্ছে দেশটি দখল করে নিতে। কিন্তু সেই দেশের রাষ্ট্রপতির প্রচন্ড মানসিক ক্ষমতার জোরে দেশ কিছুতেই হাতছাড়া হচ্ছেনা। হঠাত করে রাষ্ট্রপতি কিছু মুরগীর ছানা কিনে আনলেন। কিছুদিন পাল পোষ করলেন, প্রেমে পড়লেন। তারপর হঠাত মুরগীর ছানা তার পায়ের নিচে পড়ে মারা গেল। তিনি আবেগাক্রান্ত হলেন কয়েকদিনের জন্য।
মাত্র কয়েক দিন!
হয়ে যেতে পারে কিন্তু দেশ দখল।
মুরগীর ছানার আবেগে একটি দেশের স্বাধীনতা হরণ।
কি ভয়ানক ব্যাপার ! কেমন হলো বিষয়টা?
এভাবেই প্রতিনিয়ত আমরা বিভিন্নভাবে আবেগের কবলে পড়ছি। কখনো এক ধাপ পিছিয়ে যাচ্ছি, কখনো এক ধাপ এগিয়ে।

আবেগের সবচেয়ে ভয়ানক বিষয়টা হচ্ছে একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়না। কোন এক যুদ্ধবীরকে হয়তো যুদ্ধ করতে করতে খুনের আবেগে পেয়ে বসলো। যুদ্ধ শেষ, তার খুনের আবেগ শেষ হয়নি। ব্যস, চলে যেতে পারে কিন্তু আরো কিছু প্রাণ। অতিরিক্ত আবেগের মূল্য, কতিপয় মানুষ, আতিরিক্ত কিছু প্রাণ। তবে হতাশ হবেন না। উতপন্ন আবেগের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রন না থাকলেও, আবেগ উতপত্তির ক্ষেত্রে কিন্তু আছে। তাই চেষ্টা করতে হবে উতপন্ন হবার আগেই আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলতে। তবে আর এধরনের বিপত্তি ঘটবেনা।

উপোরক্ত আলোচনা শুনে মনে হতে পারে উক্ত শব্দভান্ডারের ব্যাখ্যাটিকে পূর্ণভাবে সমর্থন করেই আমি লিখেছি। না, এখানে আমি আবেগের নেতিবাচক দিকগুলোকে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি। ইতিবাচক দিকগুলো আপনারা সবাই জানেন, তাই তা নিয়ে আর বলার কিছু নেই। এমনকি আমার ব্যক্তিগত মতামতও এর ভেতরে খুঁজে লাভ নেই। আমি আমার কিছু পর্যবেক্ষণজনিত অভিজ্ঞতার কথা বললাম মাত্র। বাকিটুকু আপনাদের হাতে।

শুভ রাত্রি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.