![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাঙালির শত সহস্র বছরের ঐতিহ্যের ধারাকে বিশেষ ভাবে অলঙ্কৃত করে এসেছে যে কিছু ঐতিহ্য তার মধ্যে অথিতি পরায়নতার খ্যতি সর্বদা ছিল জগত বিখ্যাত।দিনের পর দিন বছরের পর বছর বাঙালি এই সত্ত্বা সজতনে জাতি সত্ত্বায় লালন করে এসেছে।এ এক অনাবিল আনন্দ খুজে পায় বাঙালি অতিথি আপ্যায়নে।সে যেই হোক।বাদ যায় না কখনো ক্লান্ত পথিকও।নিদেন পক্ষে তৃষ্ণােতর জলপান।আর পরম আত্মীয় হলে তো রীতিমতো তুলকালাম আপ্যায়ন।হুলুস্থুল এক বেপার ।অতিথি আপ্যায়নে নাভিশ্বাস গ্রিহকত্রি,এ যেন চিরায়ত বাংলার শাশ্বত রূপ।
পরিচিত,অপরিচিত সকল অতিথি দের আপ্যায়ন ,এ যেন হাজার বছরের জাতি সত্তার অনেকটা সযতনে লালন।মানুষে মানুষে ভাত্রিত্য এভাবেই তো বাঙালি বজায় এসেছে সুদিরঘ কাল থেকে।
কিন্তু আজ বাঙালির জাতি সত্ত্বার অলঙ্কার কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?আজ আমরা খুবই নাজুক অবস্থাতে এসে হাজির হয়েছি।গর্বের এই গুন আজ ম্লান হতে হতে কঙ্কালসার এক জড় পদার্থ ছাড়া আর কিছুই না।এপাড়ের বাঙালি ওপারের বাঙালির মাঝে অন্তত পার্থক্য রচনার নুন্যতম গর্বের প্রাচীর টুকুও আর নেই।"কি দাদা খেয়ে এসচেন,নাকি গিয়ে খাবেন?" কিংবা "দাদা,এই অর্ধেক ডিমের পুরোটাই কিন্তু খেয়ে তারপর উঠতে হবে" -ওপাড়ের দাদাদের এ ধরনের কথার ধারাতেই বোঝা যায় কতটা অতিথি পরায়ণ তারা।এ ধরনের তুলনা মূলক চিত্রের চিত্রায়ন হয়তবা শোভনীয় নয়।
কিন্তু আজ শহুরে বাঙালির জীবন ধারা এবং আতিথি পরায়নতা ওপাড়ের দাদাদেরও প্রতিনিয়ত নির্মম ভাবে হার মানাচ্ছে।ছোট্ট একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেই সবাই বুঝবেন যে আমরা শহুরে বাঙালি কতটা জাতিসত্তার কেন্দ্রবিমুখী এবং এই বিমুখিতার গতি রীতিমতো তাক লাগানো।রাজধানী ঢাকার নাগরিক জীবন অবিশ্বাস আর যান্ত্রিকতায় ঠাঁসা।এখানে বাড়িওয়ালা আর ভাড়াটিয়ার মধ্যে এক বিরাজমান সম্পর্ক বড়ই আজব এবং অবিশ্বাসে ভরা।বাড়িওয়ালা মানে এক ধরনের মহাজনী ভাবধারার বাহক অন্যদিকে ভাড়াটিয়া মানে এক ধরনের নতজানু মেরুদণ্ড।ভাড়াটিয়া বাড়িওয়ালার কাছে রীতিমতো প্রতিপক্ষ।
তো সেরকমই একটা ঘটনা।চট্যগ্রামের এক দম্পতি থাকেন ঢাকা এয়ারপোর্ট সংলগ্ন আস্কনা এলাকায়।একমাত্র মেয়ে স্বামী স্ত্রি আর গৃহ পারিচারিকা সর্বসাকুল্যে চার জনের পরিবার।ওনাদেরই এক কাছের আত্মীয় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এ পরীক্ষা দিতে দিন সাতেক ঢাকায় ভদ্রলোকের বাসায় থাকেন।সহজ এবং খুবই স্বাভাবিক একটা বেপার।এই দিন সাতেক এর মধ্য দিয়ে কিছু ঘটনা হাজার বছরের বাঙালির গর্বের ধারায় দৃশ্যত এক ঘৃণ্য কালিমা লেপন করে।জীবনের পরম বন্ধু পানি ব্যবহার নিয়েই সুত্রপাত এবং পরবর্তীতে অতিথি রাখার জন্য মাসিক বিশ হাজার (২০,০০০/=) টাকার ভাড়ার সাথে গুন্তে হয় অতিরিক্ত আরও ছয়(৬,০০০/=) হাজার টাকা।ভদ্রলোক চক্ষু লজ্জা ত্যাগ করে অতিরিক্ত ভাড়ার কারন জানতে চাইলে ভারাটিয়া অত্যন্ত রুড ভাষায় উত্তর দেন পানি তো আর পানির দামে আসে না।ঘটনা শুনে আমি পুরাই “টাস্কি”!!!রীতিমতো ‘থ’ খেয়ে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ।শুধু ভাব্লাম অতিথি পরায়ণ জাতির পরম রূপ;মুগ্ধ মোরা,মুগ্ধ।
)
©somewhere in net ltd.