নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অপসারণের দাবি

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৫



গেল নভেম্বরের শুরুতে চট্টগ্রামে একটি ধর্মীয় দলের সমাবেশে ১৩ই নভেম্বর মূর্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পড়েছিলাম । যাক মোল্লারা বঙ্গবন্ধুর কোন ভাস্কর্য ভাঙ্গার সাহস দেখায়নি কারন লীগের হেফাজতি ধোলাই তাদের সবার মনে আছে । গার্ডিয়ান কাল শিরোনাম করেছে বাংলাদেশকে নিয়ে যে দেশটি কি মৌলবাদের পথে হাঁটছে !! একজন পাঠক বাংলা একাডেমী ইন্টারন্যাশনাল পেজ এ যা লিখে ছে তাই অবিকল তুলে দিলাম । একজন ভাস্কর শিল্পী হিসাবে আমি উৎকণ্ঠিত ।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অপসারণের দাবি ইসলামী শাসনতন্ত্রের
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের শিরোনাম দেখে অবাক হয়ে যাই। সংবাদপত্র গুলো লিখেছে, 'বঙ্গবন্ধুর নামে স্থাপিত ভাস্কর্য অপসারণের দাবি ইসলামী শাসনতন্ত্রের'।
মোটা দাগে বিচার করলে '৪৭ এর ভারত বিভক্ত, '৫২ এর ভাষা আন্দোলন, '৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ। এর মাঝে বয়ে গেছে রক্তের স্রোত, গঙ্গা পদ্মায় সে রক্ত মিশে তৈরি হয়েছিল শেষ বারের মত বাংলাদেশ। যুদ্ধটা ছিল পশ্চিম-পাকিস্তানী মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে পূর্ব-পাকিস্তানের অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালিদের। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আর মুসলমানরা মিলে সে যুদ্ধে অপসারণ করেছিল সাম্প্রদায়িকতা। বাংলাদেশের সংবিধান লেখা হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হিসেবে। তবে আজ বাংলাদেশে কোন শকুনের উৎপাত? এ কিসের ইংগিত?
গতকাল বিকেলের সংবাদ, যা আজকের দৈনিকগুলোতে মুদ্রিত আকারে এসেছে 'স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি'র ভাস্কর্য অপসারণ করতে হবে। এ দাবি ইসলামী শাসনতন্ত্রের। সত্যি কি শুনছি? বাঙালির মুক্তির পতাকা সত্যিকি খামচে ধরেছে সাম্প্রদায়িকতার শকুনেরা? কবি সুকান্তের কবিতা মনে পড়ে; 'এখনো কি তুমি আমি স্বতন্ত্র?' !
অবাক হবার কিছু নেই, যারা চোখ বন্ধ করে সুখ নিদ্রা যাচ্ছেন তাঁদের জন্য সংবাদ, ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর নামে স্থাপিত ভাস্কর্যকে তারা মূর্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এবং অপসারণের দাবি জানিয়েছে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামে। শুক্রবারের নামাজ শেষে কতিপয় ইসলামী মানুষ ঢাকার ধূপখোলা মাঠের সমাবেশেই এ দাবি তুলেছে। তাদের দাবী, মূর্তির বদলে আল্লা, কোরান আর হাদিসের বাণী নিয়ে মিনার স্থাপন দরকার। তারা বলেছে, 'বাংলাদেশ সমজিদের দেশ, আউলিয়ার দেশ, মাদ্রাসার দেশ। এদেশে কোন মূর্তি থাকতে দেয়া হবে না'।
তবে কি ৩০ লক্ষ শহীদ আর মানুষের রক্ত বৃথা গেল? দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে তাদের রক্ত পিপাসা বেড়ে উঠেছে? ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম কেড়েও তাদের সাধ মেটে নি? দেশ জুড়ে মাদ্রাসা আর মক্তবগুলোতে বলাৎকার আর ধর্ষণ করেও তাদের সাধ মেটে নি? এ কোন পথে চলেছে বাংলাদেশ? তবে কি ২০১৬ সালের দি গার্ডিয়ানের শিরোনামই সত্য; ‘Is Bangladesh turning fundamentalist?’

আকাশ আনোয়ার ।।

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


দেশটাকে নষ্ট করে ফেলেছে।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২১

শাহ আজিজ বলেছেন: দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধি , রোগ বালাই সামাল ইত্যাদি নিয়ে কোনই মাথাব্যাথা নেই , আছে ব্যাথা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়া ।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মোল্লারা বেশী ঘেউ ঘেউ করতেছে ইদানিং

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২২

শাহ আজিজ বলেছেন: শাপলা চত্বর ধোলাই

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫২

বিজন রয় বলেছেন: বাংলাদেশের জন্য সামনে আরো বেশি সুদিন অপেক্ষা করছে!!

১৫ বছর আগেই এসব অনুমান করেছিলাম।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২৪

শাহ আজিজ বলেছেন: লাখ লাখ যুবক স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রস্তুত , এখনো ।

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২৫

ইসিয়াক বলেছেন: এইসব মোল্লাদের বিষদাঁত এখনই ভেঙে দিতে হবে। নয়তো সামনে ভয়ঙ্কর মূল্য দিতে হবে জাতিকে।
#ইদানিং ফেসবুকেও এইসব মোল্লাদের মারাত্নক উৎপাত বেড়েছে।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯

শাহ আজিজ বলেছেন: এদের নিজেদের কোন সামাজিক প্লাটফর্ম নেই , ঘুরে ফিরে সেই ইহুদি ফেসবুকে --------------

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৮

বিজন রয় বলেছেন: লেখক বলেছেন: লাখ লাখ যুবক স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রস্তুত , এখনো ।

দুঃখিত সিনিয়র, এখন আর সম্ভব নয়, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।

আর আওয়ামীলীগ-বিএনপি মিলেই ওদেরকে পথ দেখিয়েছে।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৭

শাহ আজিজ বলেছেন: সহমত । কিন্তু প্রতিরোধ করার জন্য কিছু অংশ বেচে আছে । আমার বিশ্বাস ---------

৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

লেখক বলেছেন: লাখ লাখ যুবক স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রস্তুত , এখনো ।

স্বয়ং বঙ্গবন্ধুও যদি এসে 7 ই মার্চের মতো ডাক দেন এখন আর কেউ আসবে না।
সময় শেষ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৯

শাহ আজিজ বলেছেন: সবাই খুব হতাশ ।

আমি বলি আর কত সংগ্রাম করতে হবে । আমরা ক্লান্ত ।

৭| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৩

হাবিব ইমরান বলেছেন:
ইসলামের লেবাসে কিছুদিন পরপর মাঠে আসার কারণ ধর্মীয় চেতনা না। এদের টার্গেট হলো রাজনীতি চর্চা। প্রতিপক্ষকে নিজেদের জনবল দেখাতে চায় এরা। ফালতু ইস্যু নিয়েও এরা রাজপথে নেমে আসে। এরা রাজনীতির মাঠে নিজেদের অবস্থান তৈরি দেখাতে চায়। জনগণকে একটা বার্তা দিতে চায় ‘মোল্লারাও সংখ্যায় কম না’। সাধারণ জনগণকে গরু-ভেড়া বানিয়ে রাখতে চায়।

সরকারের উচিত হেফাজতি স্টাইলে আরেকটা ডলা দেয়া। ভাস্কর্য নিয়ে চুলকানি, জাতীয় ইস্যু নিয়ে চুলকানি, মানুষের স্বাধীনতা নিয়ে চুলকানি। এতো চুলকানি থাকলে হেফাজতি থেরাপি দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

বাংলাদেশের বহু জায়গায় মানবাকৃতির ভাস্কর্য আছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। কই সেগুলোর জন্য কিছু বলতে দেখি না। বললেও দুদিন পর ভুলে যায়।

আসলে ঈমানী চেতনা না, নতুন ইস্যুই মূল বিষয়। দুদিন পর নতুন ইস্যু নিয়ে হাজির হবে। আর এর ফাঁকে দেখা যাবে নতুন ভাস্কর্যের কাজ শুরু হয়ে গেছে কিন্তু তাদের খবর নাই।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৭

শাহ আজিজ বলেছেন: ভাল বলেছেন । পুরাতন ঢাকার ওই এলাকা টেস্ট কেস । কিন্তু দেখবেন কখনই ঢা বির দিকে এগুবে না । যেহেতু হেফাজত তাদের মিছিলে সাক্সেস এনেছে তাই এরা একটা টেস্ট কেস দিয়ে শুরু করল ।

৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: করোনার মধ্যে বেকারত্ব বেড়ে গেছে অত্যন্ত বেশি। এত ধধবে সাদা পানাজাবী টুপি কারা সাপ্লাই দিচ্ছে সেটা বের করা নিশ্চই রকেট সাইন্স হবার কথা নয়?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০০

শাহ আজিজ বলেছেন: হুম , এদের পয়সা কড়ি লন্ডন থেকে আসে । পুরানা ঢাকার কট হওয়া নেতাদের কারসাজি মনে হয় ।

৯| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মীয় লেবাসে এরা আসলে দুষ্টলোক। এরা জাতির শত্রু।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০১

শাহ আজিজ বলেছেন: ৭১ সালের ময়লা বল সাবান ছাড়া যাইব না ।

১০| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৮

ঢাবিয়ান বলেছেন: লন্ডনী টাকায় ধবধবে সাদা পাঞ্জাবী পরিহিতদের পুলিশের খাতিরদারীটা একটু বেশ চোখে লাগছে ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৩

শাহ আজিজ বলেছেন: পুলিশ জানে এরা ক্ষমতায় আসলে ঘুষ খাওয়া যাবেনা । ইমান আমান ঠিক করতে হবে ।

১১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: খাল কেটে কুমির শেখ হাসিনাই আনছেন।আনেক আগেই কঠোর হওয়া উচিত ছিল।এখন মনে হয়না সময় আছে।সরকারে,দলে,প্রশাসনের মধ্যে অনুপ্রবেশ এমন ভাবে হয়ে গেছে যে বের হয়ে আসা সম্ভব নাও হতে পারে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:১৯

শাহ আজিজ বলেছেন: ঝোল একরকম রান্না করে , পরে তা মুরগি , মাছ , গরুতে মিলায় । দুই নেত্রী ক্ষমতায় থাকার জন্য একই ক্ষমতার ঝোল গেল ৩০ বছর সাম্প্রদায়িক , অসাম্প্রদায়িক , বাম ,আম কাউরে গিলাইতে বাদ দেয় নাই । এখন শুরু হইছে বমন ।

১২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০৬

এমেরিকা বলেছেন: ৭১ যুদ্ধটা ছিল মুসলিম পশ্চিম পাকিস্তানীদের সাথে অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালীদের - নিতান্ত মূর্খ না হলে এরকম উক্তি কেউ করেনা। পশ্চিম পাকিস্তানীরা কি কোন ইসলামী বিধিবিধান চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করেছিল, নাকি পূর্ব পাকিস্তানী হিন্দুদেরকে ধরে ধরে মুসলমান বানাচ্ছিল, যে বাঙালীরা 'মুসলিম পাকিস্তানীদের' বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে? মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আপনার আরো ভালো করে পড়া উচিত ছিল।

বঙ্গবন্ধু কেন, এদেশে কোন মোল্লাই কখনোই কোন ভাস্কর্য ভাঙতে যায়নি, কেবল নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে, তাতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। সরকার তাদের দাবীকে তোয়াক্কাই করেনি - যেখানে যত ভাস্কর্য বানানোর, ঠিকই বানিয়েছে।

মোল্লারা রাজপথে জড়ো হয়ে খালি ভাস্কর্য স্থাপনের প্রতিবাদ করেছে আর গরম গরম কিছু কথা বলেছে - তাতেই ৩০ লক্ষ শহীদের জীবন আর ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত বৃথা হয়ে গেল - এতই সস্তা? এই ব্যাপারটা নিয়ে এত মাঠ গরম করার কি আছে বুঝলাম না। মোল্লাদেরকে চেঁচাতে দিন - আপনারা মজা দেখতে থাকুন।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২৫

শাহ আজিজ বলেছেন: উপরের চার লাইন ঠিক পরিস্কার হলাম না , আরেকটু বয়ান করেন ।

বাই দা ওয়ে আপনার জন্ম কত সালে ? আমার ৫৭ সালে । গেল ফেব্রুয়ারি আমার প্রথম প্রকাশনা ৭১ আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় বেরিয়েছে ।

১৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: মূর্তি ওদের সমস্যাটা কি করলো?
ধর্ম কি এতই ঠুনকো, যে একটা মূর্তি সমস্যা করবে?

১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৬

শাহ আজিজ বলেছেন: বাহানা দরকার তাই ।

১৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১০

এমেরিকা বলেছেন: আমার জন্ম ১৯৮৭ সালে। তারপরেও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করেছি, কারণ মুক্তিযুদ্ধের উপর ছোটবেলা থেকেই রচনা, আবৃত্তি, বক্তৃতা - এসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আসছি। পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে - আমি জানিনা এমন অদ্ভুত তত্ত্বের ভিত্তিতে বিশ্বে আর কোন দেশের জন্ম হয়েছিল কিনা। এদেশের মানুষ ভোট দিয়ে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে রায় দিয়েছিল তাই দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদেরকে পাকিস্তানের মধ্যে থাকতে হয়েছিল। অবশ্য এ ছাড়া যে আর কোন উপায় ছিলনা, সেটা আমরা স্বাধীন হতে চাওয়া হায়দরাবাদ আর সিকিমের পরিণতি দেখেই ভালোই বুঝতে পারি।

কিন্তু পাকিস্তান আসলে কোন ইসলামী দেশ ছিলনা। এই দেশে ইসলামী আইন কানুনের কোন বালাই ছিলনা। বেশির ভাগ সময়েই সামরিক ব্যক্তিবর্গ দেশ চালিয়েছে এবং তারা তাদের খেয়াল খুশীমত ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছে। সামরিক স্বৈরতন্ত্রকে ব্যবহার করে ইচ্ছেমত লুটপাট চালিয়েছে এবং পূর্ব পাকিস্তান অংশের উন্নয়নে যথেচ্ছ অবহেলা দেখিয়েছে, যদিও পাকিস্তানের রাজস্ব আয়ের সিংহভাগ পূর্ব পাকিস্তান থেকেই আদায় হত। অথাপি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ দেশপ্রেমের স্বাক্ষর রেখে তাদের সমস্ত অন্যায় মেনে নেয়।

কিন্তু ষাটের দশকে পাকিস্তান দরকার কাশ্মীর নিয়ে দ্বৈরথে ভারতের কাছে কুটনৈতিকভাবে চরম পরাজয়ের মুখোমুখি হবার পর পূর্ব পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে এবং ফলশ্রুতিতে আঞ্চলিক স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবিতে জনগণ রাস্তায় নেমে আসে, ফলে আইয়ুব খান সরকারের পতন হয়। ইয়াহিয়া খান এসে নির্বাচন দেয়, সেখানে আওয়ামী লীগের বড় ধরণের বিজয় ঘটে। কিন্তু পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানা করে, আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করে এবং গোপনে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে জাহাজে করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ আর সৈন্য আনতে থাকে যাদের বেশির ভাগই ছিল ভাড়াটে সেনা। এর পরের ইতিহাস আর বলার কিছু আছে কিনা - আমি জানিনা।

এখন বলুন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস উপরে যা বললাম, তাতে ভুল কোথায়? যদি ভুল থেকে না থাকে, তাহলে এখানে মুসলিম পক্ষ আর মুসলিম বিরোধী পক্ষের মেরুকরণ করার সুযোগ কোথায়? পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কি ইসলাম রক্ষার নামে পূর্ব পাকিস্তানে হামলা করেছিল, নাকি ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য? আমি তাহলে এখনও পরিষ্কার না। আপনি বলুন তো মুক্তিযুদ্ধ কেন হয়েছিল?

১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫০

শাহ আজিজ বলেছেন: পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল মুসলিমদের একটি স্বতন্ত্র আবাসভুমির জন্য । জিন্নাহ একজন ভারতীয় গুজরাটি , বিলাতে ব্যারিস্টারি পাশ কিন্তু মানচিত্র অদলবদলে গান্ধীর সমকক্ষ । খুব শীঘ্রই জিন্নাহ বাংলা ভাষার পেছনে লেগে গেলেন । যার ফলে ঢাকায় উত্তেজনা এবং এর বিস্তৃতি আমাদের ৭১ সালে আবারো মানচিত্র বদলের দিকে ধাবিত করে । পাঞ্জাবি শাসকদের সবসময় ভয় ছিল বাংলাকে নিয়ে যদি বাংলা ভারতের সাথে মিলে যায় বা ভারত দখল করে নেয় । কার্যত বাংলা একটি উপনিবেশের মতই পাকিস্তানি জুনটার শাসনে তৎপর থাকে । ভাষা বর্ণ খাদ্য সামাজিক অভ্যাস সব মিলে দেখা গেল কার্যত বাঙ্গালরা পাঞ্জাবিদের দাস হিসাবে বেচে আছে । ৭০ সালের নিরবাচনে আওয়ামি লীগ যথেষ্ট আসন পেলেও পাঞ্জাবিরা আমাদের চেয়ার দেয়নি । এরপরের ইতিহাস সবার জানা । আমরা স্বাধীন দেশ গড়লাম কিন্তু প্রশাসনিক আর উৎপাদনশীলতায় মেধা আর ঘাটতির অভাবে আবারো সংকটময় মুহূর্ত চালিয়ে যাচ্ছি । পাকিস্তান ৮০র দশকে ইসলামিক রিপাবলিক গড়েও রক্ষা পায়নি , তাকে বিদেশি খয়রাতে চলতে হচ্ছে । এই মুহূর্তে অনেক কিছুই আলাপ নিষিদ্ধ বলেই চেপে যাচ্ছি । ভবিষ্যতে আবারো মুখ খুলব । ৭১ সালে গুলির মুখে পালানো তরুন চীন দেখে এসেছি কিন্তু চীনের কানাটুকু গড়তে পারিনি বা কেউ শোনেনি । অপেক্ষা করুন দিন ফিরবে । ৭১ সালে প্রথম আক্রমন হিন্দুদের উপর হয়েছিল । ১ কোটি হিন্দু বর্ডার পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল । লুঙ্গি তুলে চেক করত খৎনা করা কিনা । ভারত ইন্ধন যোগাচ্ছে এই অভিযোগে হিন্দু এবং আওয়ামি লীগের মুসলমানদের ওপর আক্রমন হয়েছিল । আমি ভারত ফেরত আসা শরণার্থী ক্যাম্প চালিয়েছি রেড ক্রসের স্কাউট কর্মী হিসাবে । রাষ্ট্র পরিচালনায় আমাদের অব্যাবস্থা ভয়াবহ তা আমরা করোনা কালে বুঝতে পারছি । ধর্মীয় জিগির , মূর্তি এসব সেই পাকিদের ক্লিক এখন ঘসে মেজে আবার তাওয়ায় বসিয়েছে রাজনিতিকরা ।

১৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৩

এমেরিকা বলেছেন: আপনার এবং আমার বয়ান প্রায় মিলেই যায়। কিন্তু "যুদ্ধটা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানী মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানী অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালীদের" - এই কথাটার মানে খুঁজে পেলাম না। পশ্চিম পাকিস্তানের জনসংখ্যার ৯৭ ভাগ মুসলিম, তাই হানাদার বাহিনীর মধ্যে প্রায় সবাই মুসলিম - একথা চোখ বন্ধ করে বলা যায়। কিন্তু তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যার মাত্র ৭৬ ভাগ ছিল মুসলিম - কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় মাইক্রোসকোপ দিয়ে খুঁজেও কোন অমুসলিম পাওয়া যায়না। একজন ছাড়া সমস্ত সেক্টর কমান্ডার ছিল মুসলিম। তাই যুদ্ধটা মুসলিমদের সাথে মুসলিমদেরই হয়েছিল - অনেকটা ইরাক ইরান যুদ্ধের মত।

৭১সালে প্রথম আক্রমণ হিন্দুদের উপর হয়েছিল - এ কথাটাও ভুল। ২৫ শে মার্চের কালো রাতে হানাদার বাহিনী হিন্দু মুসলিম বিচার করেনি - পাইকারী গণহত্যা চালিয়েছিল। এর পরে গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিতে জ্বালিয়েছে, সেখানে মুসলিম তো দূরের কথা - মুসলিম লীগের বাড়িও রক্ষা পায়নি। লুঙ্গি তুলে মুসল্মান পাওয়া গেলেও যে ছেড়ে দিয়েছে - তা তো নয়। এরা কুকুরের মত যাকে পেয়েছে তাকেই মেরেছে। লুংগি তুলে খতনা দেখাটা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ফান করার একটা অনুষঙ্গ হিসেবে অনেক হাইলাইট হয়েছে। ধর্মীয় জিগির বা মূর্তি অপসারণ - এগুলো পাকিদের ক্লিক নয়। পাকিস্তান আমলেও পূজার সময়ে কোন মূর্তি ভাঙ্গা হয়েছিল বলে শুনিনি। বরং এটা সেই সময়ের সব মানুষ স্বীকার করবে যে পাকিস্তান আমলে এখনকার চেয়ে বেশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজ করেছিল।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩১

শাহ আজিজ বলেছেন: কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় মাইক্রোসকোপ দিয়ে খুঁজেও কোন অমুসলিম পাওয়া যায়না

হিন্দু সমাজ তখন জীবন বাচাতে ব্যাস্ত । কি হবে কেউই জানত না , আমিও না । তাই খুব সামান্য সংখ্যক যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন । ৬১ - ৬৫ র দাঙ্গায় অনেক হিন্দু নিগৃহীত হয়েছিল। ৪৭ এর পরে ৬১ আর ৬৫ তে দেশ ত্যাগি হিন্দুদের সংখ্যা অনেক । ৭১ সালে সবচে বেশি । আমাদের কাছে দলিল রেখে টাকা নিয়েছিল দুই পরিবার আর ফিরে আসেনি । একজন এসে দলিল করে বাকি টাকা নিয়ে গেল । গত দেড় দশকে দেশ ত্যাগি হিন্দুর সংখ্যা অনেক ।

৭১সালে প্রথম আক্রমণ হিন্দুদের উপর হয়েছিল
খুলনা শহরে ঢুকতেই বোমায় আক্রান্ত পাক সেনা । আক্রমন করল কাছের হিন্দু বাড়িগুলোয় । পরদিন বাড়ির কাছে ৬ টি লাশ , হিন্দু পরিবারের রাস্তায় সাজানো । চুকনগর , ডাকরা গনহত্যা উল্লেখযোগ্য ।

পাক সেনা এসেছে , বিহারিরা সঙ্গ দিয়েছে এবং টার্গেটেড বাড়িতে আক্রমন করেছে । আওয়ামি লীগ এবং হিন্দু । আমরাই সাক্ষী , মিথ্যা বলব কেন ।

১৬| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৪০

এমেরিকা বলেছেন: আপনার এবং আমার প্রাণবন্ত আলোচনায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসছে। আমি গবেষকের আর আপনি প্রত্যক্ষদর্শীর দৃষ্টিতে একই জিনিস দেখে যাচ্ছি। হিন্দু সমাজ জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত, মুসলিমদের কি জীবনের ভয় নেই? অবশ্যই আছে। কিন্তু মুসলিমরা আসলে ভাবতে পারেনি যে ধর্মের ভিত্তিতে জন্ম হওয়া পাকিস্তানী সেনা তাদেরকেও যে খাতির করবেনা। তাই তারা অনেকটা নিশ্চিন্ত ছিল। অনেক হিন্দু দেশ ত্যাগ করেছিল, কারণ পশ্চিমবঙ্গে তাদের অনেক আত্মীয় পরিজন ছিল। কিন্তু মুসলিমদের সেরকম সুযোগ ছিলানা - তাই 'অফেন্স ইজ দ্যা বেস্ট ডিফেন্স' নীতি অনুসরণ করে তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে 'বাধ্য' হয়েছিল। এই যুদ্ধ বাঙালিরা শুরু করেনি, তারা নির্বাচন এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পক্ষে ছিল। কিন্তু আমেরিকান মুরুব্বী পেয়ে পাকিরা আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারেনি। তারা মনে করেছিল পাইকারি নিধন করেই বাঙ্গালিকে দমিয়ে ফেলতে পারবে। তাই এই অসম যুদ্ধ তারাই চাপিয়ে দিয়েছিল।

১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২১

শাহ আজিজ বলেছেন: ঠিক এই মুহূর্তের পাকিস্তান চলছে পাঞ্জাবিদের রোষানলে । পাঁচটি ভিন্ন ঘরানা নিয়ে ধর্মীয় জিগির তুল্লেও পাঠান আর বেলুচরা আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল । আমি প্রবাস জীবনে পাকিস্তানিদের সাথে একই অফিসে জব করেছি । পীর এবং জঘন্য শয়তানের আখড়া পাকিস্তান । প্রথমে বাংলার পিছনে লেগেছিল পরে উর্দুর পিছনে লেগে সফল হয়নি । পাঞ্জাবি ভাষা হচ্ছে পাকিস্তানের ভাষা । পাগল এবং উন্মাদ কত রকমের তা পাকিস্তানে পাওয়া যায় । ১২০০ মাইল দুরের মানুষ তাদের ভাইতো দুরের কথা দাস ও হতে পারেনি । ধর্মীয় বন্ধন কারযকর হলে আরবিরা এক হতে পারেনা কেন । এইযে হিন্দুস্তানের খেলা খেলছে মোদী , তাকেও ভয়াবহ বিপদ এর মুখে পড়তে হবে । গুজরাটিদের রক্তে কিছু সমস্যা আছে যা গবেষণা করা যেতে পারে। আমাদের রাজনিতিকদের হীনমন্যতা নিচু ইতর ধ্যান ধারনা আমাদের বিভক্তির মুল কারন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.