নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুলনাতে বাসায় শাক খেয়ে গৃহ কর্মীকে জিজ্ঞাসা করলাম কি শাক এটা ? সে বলল ঘি কাঞ্চন । এত স্বাদের শাক আগে খাইনি । চলতে লাগলো ঘৃত কাঞ্চনের অভিযান । বাজারে সবার কাছে থাকেনা এই শাক । শিক্ষা আর কর্মের কারনেই মানুষকে পিতৃ ভুমি ছেড়ে পরিযায়ী হতে হয় । আগে আমি ঢাকায় , এরপর পুরো পরিবার । ঢাকায় ঘৃত কাঞ্চন পাওয়া যায় না । গেলেও জানিনা কোথায় পাওয়া যায় ।
একেবারে ছোট বেলায় মা একটা বড়ি মুখে তুলে দিলেন । সন্দেহজনক ভাবে খেলাম এবং উজ্জ্বল হয়ে গেলাম । স্বাদ অপূর্ব । সাথের টেংরা মাছ ভেঙ্গে নোয়া খালা খাওয়ালেন । বাহ দারুন । ওই শুরু টেংরা মাছ আর বড়ি দিয়ে কাঁসার বড় থালায় ভাত খাওয়া । কদিন আগে প্রায় অর্ধ শতাব্দী বাদে মেয়েকে কাতর স্বরে বললাম আমায় কাঁসার থালা কিনে দাও সাথে কাঁসার গ্লাস। পুজোর পরদিন ফরিদপুর থেকে সজ্জন থালা গ্লাস এনে দিল । বেশ খাচ্ছি । এবার বড়ির খোজ । টেংরা ছোট মাছ আছে কিন্তু বড় মাছ চাই । বড় টেংরার পেট থেকে তেল গলে ঝোলে মেশে আর তাতেই বড়ির তরকারী অসাধারন স্বাদ পায় । বড়ি বানানো দেখতাম ছোট বেলায় । কুলার ওপর হাতে একটা প্যাচ দিয়ে বড়ি বসাত । পাখির যন্ত্রনা থেকে বড়ি বাচাতে পুরাতন জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হত । কুষ্টিয়া , যশোর , খুলনা , বাগেরহাট এলাকায় বড়ির প্রচলন আছে । বড়ি নিরামিশ খাদ্য বলে হিন্দু সমাজ থেকে এর উৎপত্তি । ধারনা করি অনেক আগে থেকেই বড়ির প্রচলন । অগ্রহায়ণ মাস শুরু । কচি লাউ আর পাতা বেশ লোভনীয় ব্যাপার । আমাদের বাড়িতে মাছ খাওয়ার পর তার কাটা লাউ গাছের গোঁড়ায় দিত । এমনকি প্লেট ধোয়া পানি , কাচা মাছ ধোয়া পানি লাউ গাছের খাদ্য । ফসফরাসে লাউ চকচকে হয়ে উঠত । এখন সার দেয় । পুরাতন রীতি মেনে চলা বাড়িতে মাছের পানি মাস্ট ।
পৌষের শুরুতে বাবা আমাকে গ্রামে নিয়ে যেতেন । খুবই ছোট আমি তখন । আমার বিধবা চাচি রাতে আমার পুসুর কাঁথা পাল্টে দিতেন । সকালে দোতালার জানালা দিয়ে নিচের উঠানে অদ্ভুত দৃশ্য দেখতাম । উঠোনে বড় চুলাতে রস জ্বাল দিচ্ছে কিষাণরা । জিরান রস আজ । গ্লাসে দিল খেতে । বাহ কি মজা । পরদিন দোকাট , এরপর ঘোলা রস জ্বাল দিয়ে নরম গুড় বানাত তেতুলের সাথে মিশিয়ে বড় মাটির পাত্রে মুখ এঁটে রাখত । শ্রাবন মাসে কৃষকরা জমি চাষের সময় এই তেতুল গুড় ভাত দিয়ে খেত । ওই সময় আমাদের গুড় কেনা লাগত না । রস দিয়ে চিতই পিঠা এক অপূর্ব খাবার । ছোট পেট আর কতটুকুই বা ধরে । নতুন চাল উঠেছে নিজেদের জমির ধান থেকে ঢেঁকিতে ভাঙ্গানো চাল । জামাইনাড়ু ধানের চাল স্বাদ অদ্ভুত । রস দিয়ে পায়েস , আহা ।
এসবই হারিয়ে গেছে । অদ্ভুত নাগরিক হতে গিয়ে , সাহেবি বাবু সমাজ গড়তে গিয়ে আমরা সব হারিয়ে ফেলেছি । এখন গুড় , বড়ি হাতড়ে বেড়াচ্ছি । চাল কিনে খাই । জামাইনাড়ু ধান স্বপ্ন মাত্র । দেশি জিনিষ বাদ দিয়ে বিদেশীদের ফর্মুলার চাল খাচ্ছি । নাম মিনিকেট । চাল পালিশ করে সাদা বানিয়ে ধান্ধাবাজি নাম মিনিকেট । পালিশের আবরন তেলকলে যায় রাইস ব্রান তেল খাওয়াতে । কেউ যেন দেশি ধান সংরক্ষন করেন বলে পড়েছি কাগজে । স্যালিউট সেই মানুষকে ।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৮
শাহ আজিজ বলেছেন: শুভ দুপুর ।
২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৪
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
উপরের ছবির শাকটি কি? ঘৃত কাঞ্চন সম্ভবত ঘিমা শাক। আমাদের এলাকাতে অনেকেই নুনিয়া শাক বলেন আবার ঘিমা/গিমা শাকও বলেন।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৩
শাহ আজিজ বলেছেন: এইটা গিমা । গৃহ কর্মীদের সবচে অপছন্দের শাক, বাছতে হয়তো তাই । ঘৃত কাঞ্চন ছবি পেলাম না ।
৩| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমাদের চাষীরা ( নাকি দিন মুজুর ) যেভাবে চাষ করছেন, ইহাকে কি চাষ করা বলে? এই লোকগুলো জীবনভর শ্রম দিয়ে, সামান্য ভাত লবন, মরিচ মিশায়ে খেয়ে বাঁচেন। যারা আমাদের খাবার: ইলিশ মাছ, কাতল মাছ, খাসীর মাংসের গল্প করে বেড়ান, তারা কিন্তু চাষী নন।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৪
শাহ আজিজ বলেছেন: আসলেও তাই
৪| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৩
কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: আমার বাড়িও আপনার দেশে.. তাই কুমড়ো বড়ি, খেঁজুরের গুড় আমারও পরিচিত। ঘ্বড় কাঞ্চন শাক চিনি না।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৫
শাহ আজিজ বলেছেন: দেখি ভাবিকে বলি ছবি তুলে পাঠাতে ।
৫| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমি কিছু চিনতে চাও না।
আমাকে রান্না করে দিবে, আমি আরাম করে বসে খাবো। ব্যস।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৫
শাহ আজিজ বলেছেন: নির্ভেজাল
৬| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৮
:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: যদিও তিতা লাগে তার পরেও শুটকি দিয়ে ঘিমা শাক দিয়ে বেশ টেষ্ট লাগে।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৬
শাহ আজিজ বলেছেন: গিমা শাক রসুনে ফোঁড়ন দিয়েও ভাল লাগে ।
৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৩
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: রশের পিঠা এখন পিঠা ঘরে বিক্রি হয়।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৯
শাহ আজিজ বলেছেন: আমরা গুড় নারিকেল তৈরি করে গরম পিঠা চুলার পাশে দাড়িয়ে থেকে কিনি । তারপর রসে ভিজিয়ে দিয়ে ঢেকে রাখি সারারাত । সকালে নরম তুলতুলে পিঠা খাই ।
৮| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ২:০০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বড় লোক শখ করে শাক খায় আর গরিব অভাবে খেতে হয়। এক এক অঞ্চলে এক এক নাম
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০০
শাহ আজিজ বলেছেন: এখন বড় লোক ডায়াবেটিসে খায় , শখে নয় ।
৯| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১৭
কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: ঘি কাঞ্চন শাক
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১২
শাহ আজিজ বলেছেন: ধন্যবাদ । অসাধারন
১০| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৯
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: ঘি কাঞ্চনের নামওতো জীবনে শুনেছি বলে মনে হয় না। এর কি আর কোন নাম আছে? আমরা অবশ্য ঢাকার লোক, সেখানকার লোকেরা এটাকে কি নামে ডাকে সেটাও জানি বলে মনে হচ্ছে না। জানালে উপকৃত হতাম, ধন্যবাদ।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৯
শাহ আজিজ বলেছেন: ঘি কাঞ্চন এটির নাম । খুলনা যশোর সাতক্ষীরায় হয় । ঢাকায় মনে হয় পাওয়া যায় না কারন আমি পাইনি কখনো ।
১১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: শীত কাল তো চলেই এলো।
পিঠা পায়েসের সময়।
আপনার প্রিয় পিঠা কি?
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৮
শাহ আজিজ বলেছেন: চিতই পিঠা রসে ভেজানো ।
১২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪১
মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন: শীতে খেজুর রসে ভেজানো পিঠা আমার খেতে খুবই পছন্দ।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২
শাহ আজিজ বলেছেন: সবার পছন্দ রসে ভেজা পিঠে ।
১৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: অনলাইনে অনেকেই কুমড়ো বড়ি , সরষের তেল বিক্রি করেন, বেশ ভালো।
দেশি টেংরার খোঁজ মেলাই ভার।
শৈশবে নানীর বাড়ি গেলে খেজুর খেতাম। তবে আপনাদের মত বাড়িতে গুড় বানানো র মত পর্যাপ্ত ছিল না। চিতুই পুলি পাটিসাপটার মৌসুম এলো। জামাইনাড়ু চালের নাম ই শুনি নাই
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২
শাহ আজিজ বলেছেন: জামাইনাড়ু ধান খুব অল্প চাষ হয় , চাহিদা বেশি । আমিই কয়েক কেজি চেয়েও পাইনি । এটার লাল আবরন ভিটামিনে ভরপুর । শেষ খেয়েছি সিলেটে এক বাড়িতে , ভিন্ন নাম সেখানে । আমরা অনলাইনে কুমড়া বড়ি কিনব । দেশি বড় টেংরা ডিসেম্বরে ইউনিমারটে পাওয়া যেতে পারে । সর্ষের তেল নওগাঁ থেকে হাতে হাতে পাই মেয়ের কলিগের মাধ্যমে । তার বাবা এখন সর্ষের তেলের ব্যাবসায়ি , মেশিনে সর্ষে ভাঙ্গায় ।
১৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৩
এম ডি মুসা বলেছেন: ভাই আপনার পিঠার দাওয়াত দেন
১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৮
শাহ আজিজ বলেছেন: ভাই , দোকান থেকে এনে খাব । আপনিও দোকানে গিয়ে আমার নামে খেয়ে নেন , করোনায় এর চে বেস্ট আর কিছু নাই ।
১৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২৮
মেহবুবা বলেছেন: মন ভাল হয়ে গেল সকাল বেলা ।
খেজুর রসে চিতই পিঠা নারকেল কোরা দিয়ে শীতের রাতে ভিজিয়ে সকালে খাওয়া সত্যি অতুলনীয় । কতকাল খাই না। ঘৃত কাঞ্চন খেতে ইচ্ছে করছে, খোঁজ লাগাব।
আরেকটু পরিষ্কার ছবি দেখতে পেলে ভাল হত।
খুলনা যশোর বাগেরহাট অঞ্চলের খাবার আমার কাছে বেশী স্বাস্থ্যকর মনে হয়, কম মশলা এবং উপকরন দেখে তাই মনে হয়েছে।
২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৪
শাহ আজিজ বলেছেন: ঘৃত কাঞ্চন ঠিক কখন হয় তা ভুলে গেছি । এই শাকে হলুদ মরিচ লাগেনা , শুধু রসুন শুকনা মরিচ তেলে ফোঁড়ন দিলেই হল । এর থেকে পরিস্কার ছবি পাইনি ।
১৬| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৫
শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: যশোরে একটু স্পেশাল করে পাঠালি গুড় বানায় খেজুরের রস থেকে। যদিও মিষ্টি পছন্দ করিনা কিন্তু ওই গুড় খেতে খুব মজা লাগতো! অমন সুস্বাদু গুড় বাজারে দেখিনি কখনো। লাউয়ের শাক খেতে মজা। চচ্চড়ি তরকারিতে লাউ শাক দিলে সেটা খেতেও ভালো লাগে। বিশেষ করে গ্রামের বাড়িতে যখন গাছ থেকে একদম কচি পাতা নিয়ে রাঁধে সেই স্বাদের কোনো তুলনা হয়না।
২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৬
শাহ আজিজ বলেছেন: জিরান রস দিয়ে যে গুড় বানানো হয় তাতে স্বাদ বেশি হয় ।
শুধু লাউ শাক রান্না মজার সবজি । আমি একদফা কেশবপুরের এক ঠিলা গুড় পেয়েছিলাম যার স্বাদ অন্য গুড়ে পাইনি । এখন সোডা মিশিয়ে গুড় সাদা করা হয় ।
১৭| ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৫
শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: ওই গুড় নিজেদের খাওয়ার জন্য ওরা কাস্টমাইজড করে তৈরী করতো। মনে হয়, নারিকেল মেশাতো। সঠিক মনে নেই। ৮/৯ বছর আগে খেয়েছি। বাজারের নরমাল গুড় তো খেতেই পারিনা। কেমন যেন লাগে।
২২ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:০৯
শাহ আজিজ বলেছেন: কোন কিছুই শয়তানি আর ভেজাল মুক্ত নয় । আমরা মেহেরপুরে অনলাইনে বড়ি অর্ডার দিয়েছি । গুড়ের কথাও বলব । একদল মানুষ অনলাইনে বিশ্বাস আর আস্থা বিক্রি করে খাচ্ছে ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১০
ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিকথায় অসীম মুগ্ধতা। সেই দিনগুলো আর ফিরবে না কখনো।
শুভরাত্রি