নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুদ্ধের কবলে গাজা: সামনে একটি পথই খোলা

০৫ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৫:০২



(নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ওয়াল স্ট্রীট ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিন—এ ৪ জুন ২০২১ তারিখে প্রকাশিত নিবন্ধের অনুবাদ)


আপনি ও আমি আমরা সকলেই মানুষ। আমাদের পরিবার আছে, সম্ভবত সন্তান এবং নাতি—নাতনীও আছে। বন্ধুবান্ধব আর প্রতিবেশীতো আছেই। আমরা ভিন্ন ভিন্ন জাতির, ভিন্ন ভিন্ন নৃগোষ্ঠীর। আমাদের বিশ্বাসও ভিন্ন। আমরা সকলেই চরম দারিদ্র ও যুদ্ধ দেখেছি, দেখেছি হত্যা ও মৃত্যু - প্রত্যক্ষভাবে অথবা সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু আমাদের অনুভূতি অভিন্ন। সহমর্মিতা আমাদের ব্যক্তিস্বত্তার, আমাদের ডিএনএ—র অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানবসত্তার এই বৈশিষ্ট্যটি সম্পূর্ণ রুদ্ধ না—করে দিলে গাজায় বিগত সপ্তাহগুলোতে যা ঘটে গেল তা দেখে প্রবলভাবে ব্যথিত, ক্ষুব্ধ ও অসহায় বোধ না—করাটা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়।
গাজার অধিবাসীদের উপর এই অসম যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া দেশটি হচ্ছে সেই দেশটি যা পৃথিবীর বুকে মানব—সৃষ্ট সবচেয়ে হৃদয়বিদারক দুযোর্গগুলির একটি - অর্থাৎ ইহুদি—নিধনযজ্ঞ এর পর প্রাচীন প্যালেষ্টাইনের বুক কেটে সৃষ্টি করা হয়েছিল।
বোমার গন্ধ মিলিয়ে যাবার পর দু’পক্ষই যখন তাদের “বিজয় উদ্যাপনে” ব্যস্ত, এখন আমাদের সকলকেই এ প্রশ্ন করতে হচ্ছে - আমরা এখন কী করবো।
ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি ভূখন্ড, যার অধিকাংশই অনুর্বর, পৃথিবীর প্রাচীন তিনটি একেশ্বরবাদী ধর্মের পয়গম্বরদের জন্মস্থান। কারো পক্ষে এমনটি ভাবাই স্বাভাবিক যে, এই তিনটি শক্তিশালী ধর্মের প্রজ্ঞার ফসল হিসেবে এই স্থানটি ঐক্যের স্বর্গভূমি হবার কথা। কিন্তু এটি পরিণত হয়েছে পৃথিবীর নরকে - অসংখ্য নিরাপরাধ মানুষের অশ্রম্ন আর রক্তে সিক্ত ভূমিতে।
আর কোনো সংঘাত এত বেশী প্রাজ্ঞজনের চিন্তা, জ্ঞান ও ধ্যান খরচ করেনি। গত শতকে আর কোনো সংঘাত এত বেশী “শান্তি পরিকল্পনা”ও “রোড ম্যাপ”সৃষ্টি করেনি যাদের রচয়িতা ও পরিকল্পনাকারীরা কখনো কখনো অকালপক্কভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, মিথ্যা আশাবাদ সৃষ্টি করেছেন যা ভঙ্গ হয়েছে হতাশা আর ক্ষোভে। ফিলিস্তিনিদের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে তাদের নিজেদেরই নেতারা, তাদের প্রতিবেশী অন্যান্য আরব দেশগুলোর শাসকরা, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আমরা এইমাত্র আরেক দফা ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করলাম যা চালিয়েছে ইসরায়েল যা এমন একটি রাষ্ট্র যার কোনো বিবেকবোধ আছে বলে মনে হয়না, যে বিশ্বাস করে যে, এই এলাকায় তার ইশ্বর—প্রদত্ত অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা রয়েছে এবং এই এলাকায় পারমানবিক সমরাস্ত্রে তারই একচ্ছত্র অধিকার আছে। হামাসের রকেটগুলি বিশ্বের চতুর্থ সামরিক শক্তি ইসরাইলের অপ্রতিদ্বন্দী বিমান ও পদাতিক বাহিনীর সামনে সহজেই ধূলিস্যাৎ হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইসরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তার প্রধান গ্রহীতায় পরিণত হয়েছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ও মিসাইল প্রতিরক্ষা তহবিল হিসেবে ১৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (চলতি অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি—অসমন্বিত ডলারে) সরবরাহ করেছে। ২০২১ সালে ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলের জন্য অতিরিক্ত ৩.৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সামরিক অর্থায়ন ও ৫০০ মিলিয়ন ডলার মিসাইল প্রতিরক্ষা সহায়তা চায়। ইসরায়েল মার্কিন বাজেটের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দ, আফগানিস্তানের পরেই যার স্থান, পেয়ে থাকে যার অন্তভূর্ক্ত অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র, উন্নততর মিসাইল প্রতিরোধী প্রযুক্তি এবং সর্বাধুনিক যুদ্ধ বিমান।

বাগাড়ম্বর ও মুষ্টি—আস্ফালন বাদ দিলে ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য কার্যত কোনো বৈদেশিক হুমকি নেই। ইরানকে সম্ভাব্য শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা যায়, কিন্তু ইসরায়েলের ২০০ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের মোকাবেলায় পরমাণু অস্ত্রহীন ইরান দুর্বল এক শক্তি। হামাস যে রকেটগুলো ছুঁড়েছে, যার প্রায় সবই ইসরায়েলের “আয়রণ ডোম” ধ্বংস করেছে, ইসরায়েলের সমরশক্তির তুলনায় কোনো ট্যাংক—সজ্জিত সেনাবাহিনীর দিকে বালকের পাথর ছোড়ার নামান্তর। এরপরও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে যা তারা অর্ধ—শতাব্দী আগে আরব—ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে চালিয়ে আসছে।
সাম্প্রতিক সংঘাতটি, যা শুরু হয়েছে সবচেয়ে পবিত্র মুসলিম স্থান আল—আকসা মসজিদে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে যার ফলে শত শত মানুষ আহত হয়, প্রকৃতপক্ষে একটি দীর্ঘ প্রচারণার সর্বশেষ চাল মাত্র। এই আগ্রাসনকে আরো বেশী অযৌক্তিক মনে হবে এ কারণে যে, গাজার জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশেরই বয়স ১৪ বছরের নিচে, যে জনপরিংখ্যান নিধনযজ্ঞের শিকার কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যেই সচরাচর দেখা যায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশীদার এবং এই সমস্যার সমাধানে তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাইডেন প্রশাসনকে ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু মারাত্মক ভুলের দায়ভার বহন করতে হচ্ছে যেগুলি নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে একটি পোড়ামাটি যুদ্ধের সবুজ সংকেত ও লাইসেন্স হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। এই ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে প্রয়োজন হবে সাহস, প্রজ্ঞা ও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থনের।
এই সমস্যা সমাধানের পথটিকে শুরু হতে হবে সকল পক্ষকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মানদন্ডগুলিকে মেনে নিয়ে। শক্তিশালী রাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট কোনো জোটেরই কোনো রাষ্ট্র বা পক্ষকে এই মানদন্ডগুলি লংঘনের দায়বদ্ধতা থেকে সুরক্ষা দেয়াটা উচিত হবে না। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের আন্তর্জাতিক মানদন্ডগুলি যা স্লবোদান মিলেসোভিচ বা ওমর আল—বশিরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়েছে তা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য না হওয়াটা হবে অর্থহীন।



সশস্র বাহিনী কর্তৃক কাউকে জোরপূর্বক বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ থেকে শুরু করে গাজায় ঘরের এককোণে লুকিয়ে কাঁপতে থাকা ১০ বছরের কোনো ইসরায়েলী বালিকার শয়নকক্ষে মিসাইল ছুড়ে মারার উন্মাদনার এই চলমান নাট্যশালার প্রতিটি সংঘাতই ১৯৬৭ সালের সীমান্তরেখার ভিত্তিতে একটি দ্বি—রাষ্ট্র সমাধানের যৌক্তিকতা ও আশু প্রয়োজনকে আবারো সমর্থন করছে। এছাড়া আর একমাত্র যে সমাধানটি রয়েছে তা হলো ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র যেখানে ফিলিস্তিনিদের সংখ্যাগরিষ্টতার স্বীকৃতি থাকবে। এছাড়া আর কোনো বিকল্প সামনে খোলা নেই।
এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে পরবর্তী পদক্ষেপগুলি হবে গাজায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলির অবাধ প্রবেশ এবং অবকাঠামো ও মানুষের জীবনের যে নিরর্থক হানি ও ক্ষতি সাধিত হয়েছে তার পুনর্নির্মাণ ও ক্ষতিপূরণের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা। মানবতা এবং মানুষের প্রতি আমাদের সার্বজনীন সহমর্মিতা এটাই প্রত্যাশা করে।



(প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী ২০০৬, এবং হোসে রামোস—অরতা, নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী ১৯৯৬ ও প্রেসিডেন্ট, পূর্ব তিমোর ২০০৭—২০১২)



অনুবাদ: কাজী নজরুল হক

-----------------------------------------------------------------------------

ভয়ানক তাগিদে ছেপে দিলাম স্বেচ্ছায় ।।

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৫:০৪

ইনদোজ বলেছেন: ঠিক বলেছেন

০৫ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৫:০৬

শাহ আজিজ বলেছেন: এটা উপরের দুজন বলেছেন , আমি না ।

২| ০৫ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লাস্ট প্যারার সুপারিশই যৌক্তিক সমাধান। কিন্তু এই সমাধান সুদূরপরাহত মনে হচ্ছে।

লেখাটা দুজনে লিখেছেন নাকি?

০৫ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৪

শাহ আজিজ বলেছেন: হ্যা লেখাটা দুই নোবেল বিজয়ীর লেখা । নজরুল হক অনুবাদক ।


এখনকার পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে ইসরায়েল কোন ছাড় দেবে না । ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলের মধ্যেই বিলীন হতে হবে । রাষ্ট্র গঠন নিয়ে কত বিচিত্র ঘটনা আছে পৃথিবীতে । একটা জাতি আজ আছে কাল নাই হয়ে গেল । নেক্সট গেম ইন্ডিয়া আর পাকিস্তানে শুরু হবে ।

৩| ০৫ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:




এটা ড: ইউনুসের লেখা?

ড: ইউনুসকে ঠাংগানোর ব্যাপারে শেখ হাসিনা ঠিকই আছেন, ড: ইউনুস সাহেব আসলে হোমিওপ্যাথী ডাক্তার; উনি বুঝতে পারেননি, এবার গন্ডগোল কি নিয়ে শুরু, কোথায় হয়েছে ও গাজা কিভাবে ইহাতে জড়িত হয়ে গাজা ধ্বংস করালো; উনাকে নোবেল দেয়া ঠিক হয়নি।

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:০৩

শাহ আজিজ বলেছেন: ডঃ ইউনুস আর আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা হতেই পারে তবে একজন নোবেল লরিয়েট কে এভাবে বেইজ্জত করা ঠিক নয় ।

৪| ০৫ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



এসব গার্বেজ প্রকাশ করার আগে একটু পড়ে নেবেন; এনালাইজ করে নিজের মতামত যোগ করবেন। উনি লিখেছেন, সাম্প্রতিক ঘটনার শুরু আল আকসা মসজিদে, ইহা ভুল; ইহা শুরু হয়েছিলো মসজিদ থেকে বেশ দুরে, শহরের পুর্ব এলাকায় একটা রাস্তায়, যেখান থেকে কয়েকটি মুসলিম পরিবারকে উৎখাত করা হয়েছে, সেখানে ইহুদীদের একটা সভার মতো হওয়ার কথা ছিলো ও ১ জন এমপি আসার কথা ছিলো; সেখানে মারামারি শুরু হলে, মুসলমানেরা মসজিদের সামনে জড়ো হতে গিয়ে পুলিশের সাথে লাগে।

ইহা গাজাতে যায়নি। হামাস গাজা থেকে রকেট ছোঁড়ে; এরপর শুরু হয় বোম্বিং।

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:০৬

শাহ আজিজ বলেছেন: গারবেজটি নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ওয়াল স্ট্রীট ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিন—এ ৪ জুন ২০২১ তারিখে প্রকাশিত নিবন্ধের অনুবাদ । তারা ওয়েল কনসারনড আমার আপনার থেকে ।

৫| ০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:০৬

কামাল১৮ বলেছেন: সকলকে মানবিক হতে হবে, ধর্মকে নিয়ে বসে থাকলে কোন সমাধান হবে না।সারা দুনিয়া নবী শুন্য আর দুইজন নবীকেই জন্ম নিতে হলো ওখানে একজনকে আবার স্বপ্নে নিয়ে হাজির করতে হলো।গোড়ায় গলদ।

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ৮:০৭

শাহ আজিজ বলেছেন: নো কমেন্টস

৬| ০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ৯:০৫

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: শেষ প্যারার সুপারিশ বাস্তবায়নে যদি বিশ্ব মোড়লরা আন্তরিক হতো তাহলে এতো সংঘাত, মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ আমাদের দেখতে হতো না।

০৫ ই জুন, ২০২১ রাত ৯:১৭

শাহ আজিজ বলেছেন: ফিলিস্তিনএর হামাসকে অস্ত্র সরবরাহ করে কারা ? তাদের স্বার্থে এই গোলযোগ কখনই থামবে না । বিশ্ব মোড়লরা ইজরায়েলকে সমর্থন দিয়ে এসেছে । তবুও চাই একটা সুরাহা হোক । বিশ্ব শক্তি ইজরায়েল কে আরব পেনিন্সুলার একক শক্তি হিসাবে চাইছে তাদের স্বার্থে ।

৭| ০৬ ই জুন, ২০২১ ভোর ৪:০৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



ভাল একটি সংগৃহীত বিষয় আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন ।

পোষ্টেরএকজায়গায় থাকা কথামালা যথা -
ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি ভূখন্ড, যার অধিকাংশই অনুর্বর বিষয়ে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য
অতি অগ্রসরমান কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই অনুর্বর ইসরাইলী ভুখন্ড হতেই
ইজরাইলীরা বছরে ২বিলিয়ন ডলারের বেশী ফলমুল শাকসব্জি বিশ্ববাজারে রপ্তানী করে ,
যা আমরা কেন, পৃথিবীর অনেক বড় ও উর্বর ভুমিওয়ালা দেশও এর ধারে কাছেও নেই ।

যাহোক, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড.ইউনুছসহ অপর লেখক তাঁদের নোবেল প্রাপ্তির যতার্থতা এবার দেখাতে
পারবেন মনে হচ্ছে। তারা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভুমিকা নিতে পারবেন। এ লক্ষ্য সামনে রেখে নিবন্ধটির
পুর্ব কথায় অতি সংংক্ষেপে তাঁরা তাদের মুল কথার স্বপক্ষে বেশ জোড়ালো যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন ।
প্রথমেই সংক্ষেপে ইজরাইলী বর্বরতার কথামালা দিয়ে শুরু করে তার পর শ্পষ্ট করে ইজরাইল
ফিলিস্তিনি সংঘাত শুরু হওয়ার পরে বিভিন্ন শান্তি পরিকল্পনার ব্যর্থতার কথা বলেছেন যথা -
শান্তি পরিকল্পনা”ও “রোড ম্যাপ”………………........ পরিকল্পনাকারীরা কখনো
কখনো অকালপক্কভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, মিথ্যা আশাবাদ সৃষ্টি
করেছেন যা ভঙ্গ হয়েছে হতাশা আর ক্ষোভে। ফিলিস্তিনিদের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে
তাদের নিজেদেরই নেতারা, তাদের প্রতিবেশী অন্যান্য আরব দেশগুলোর শাসকরা,
এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এই চরম হতাশার কথামালা ব্যক্ত করার পরেই নীজেদের মুল বচনে যাওয়ার আগে
প্রতিপক্ষ সহ বিশ্ববাসির সন্মুখে ইজরাইলের শক্তিমত্তার কথা তুলে ধরেছেন সুন্দরভাবে যথা -
বাগাড়ম্বর ও মুষ্টি—আস্ফালন বাদ দিলে ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য কার্যত কোনো
বৈদেশিক হুমকি নেই। ইরানকে সম্ভাব্য শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা যায়, কিন্তু ইসরায়েলের
২০০ পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের মোকাবেলায় পরমাণু অস্ত্রহীন ইরান দুর্বল এক শক্তি। হামাস
যে রকেটগুলো ছুঁড়েছে, যার প্রায় সবই ইসরায়েলের “আয়রণ ডোম” ধ্বংস করেছে,
ইসরায়েলের সমরশক্তির তুলনায় কোনো ট্যাংক—সজ্জিত সেনাবাহিনীর দিকে বালকের
পাথর ছোড়ার নামান্তর। এরপরও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
অব্যাহত রেখেছে যা তারা অর্ধ শতাব্দী আগে আরব ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে চালিয়ে আসছে।

এর মানে হল এরকম চলতেই থাকবে ইজরাইলকে রোখার কোন শক্তি নেই বিশ্ব মাঝারে ।
তাই এসব কথা বলার পরেই এলো মোক্ষম কথা যথা -
চলমান নাট্যশালার প্রতিটি সংঘাতই ১৯৬৭ সালের সীমান্তরেখার ভিত্তিতে একটি দ্বি—রাষ্ট্র সমাধানের
যৌক্তিকতা ও আশু প্রয়োজনকে আবারো সমর্থন করছে। এছাড়া আর একমাত্র যে সমাধানটি রয়েছে
তা হলো ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র যেখানে ফিলিস্তিনিদের সংখ্যাগরিষ্টতার
স্বীকৃতি থাকবে। এছাড়া আর কোনো বিকল্প সামনে খোলা নেই।


এই বিকল্পটিই হল আসল কথা, এটাই তাদেরকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদানের স্বার্থকতা । শেষ
বিকল্পটির বাস্তবায়ন ছাড়া শান্তির কোন বিকল্প নেই এটাই সাফ কথা There is only one road out.
ফিলিস্তিনিদের দাবী নিয়ে এতদিন ধরে যারা দুরু দুরু বক্ষে দুরে দাঁড়িয়ে আবেগী কথা বলতেন তারা
এবার কোন দিকে যাবেন । এবার হয়তবা অনেকেই শান্তিতে নোবেল জয়ীর কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে
বলবেন বিকল্প পন্থার কথা । ওয়াল স্ট্রীট ইন্টারন্যাশনাল মেগাজিনের মত বিশ্বমানের বহুল প্রচারিত
সংবাদ মাধ্যম সাথে দেশী ইউনুছ সেন্টার ,আমিরিকায় গ্রামীন আমিরিকান সেন্টার সহ আরো অনেক
জানা অজানা মাধ্যম হতে তাঁদের এ বানীর প্রচার পাবে তীব্রতা। তাই মনে হচ্ছে শান্তিতে নোবেল জয়ীর
কাঙ্খিত বিকল্প ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পক্ষে বিশ্বজনমত এই সৃজন হল বলে। এখন আমাদের শুধুই
দেখার পালা ।

বিশ্ব শান্তি বিঘ্নকারী সামপ্রতিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে দু‌ জন নোবেল বিজয়ী
ব্যক্তিত্বের লেখাটি পাঠের সুযোগ করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

শুভেচ্ছা রইল ।

০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:২৯

শাহ আজিজ বলেছেন: ভাল একটি আলোচনার সুত্রপাত করেছেন । আমি অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনার সাথে একমত । ভুমি ভাগ করে দিলেও পাথর ছোড়া বন্ধ হবে না । সাঙ্ঘাতিক এক বৈরি রক্ত প্রবাহমান এই ফিলিস্তিনিদের শরীরে । আমি খুবই ব্যাক্তিগতভাবে এদের দেখেছি । হামাস রকেট মারলে মরদে মুমিন চুপ করে থাকে কিন্তু বিপরীতে ইসরায়েল প্রতি আক্রমন করলে হাউকাউ শুরু হয় । চাষাবাদের কথা আমার নজর কেড়েছে প্রথমেই । একটি রিলিফ খোর জনপদের প্রতি আমার একটুও দয়া হয়না ।

৮| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:২৩

সোহানী বলেছেন: ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১১:৩১

শাহ আজিজ বলেছেন: ধন্যবাদ সোহানী ।

৯| ০৬ ই জুন, ২০২১ সকাল ১০:৩০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ৭ নম্বরে ডঃ এম এ আলী ভাইয়ের কমেন্টটি পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। একটা জ্ঞানগর্ভ বিশ্লেষণ।

দুজন নোবেল লরিয়েট নিজেদের বিবেক বোধ থেকেই ইসরায়েলের এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে কলম ধরতে উদবুদ্ধ হয়েছেন। এটা তাদের নৈতিক দায়িত্বও। অন্যান্যদেরও বিবেকবোধ জাগ্রত হোক এদের দেখাদেখি, অন্যায়, জুলুমের বিরুদ্ধে সবাই সোচ্চার হোক, এ প্রত্যাশা থাকলো।

আরেকটা বিষয় হলো, অনেক যুক্তিগুলো খুবই ঠুনকো। একটা মৃদু চড়ের বিপরীতে একটা কিল বা ঘুষি, বড়োজোর একটা লাথি হতে পারে, কিন্তু মৃদু চড় দেয়ার অপরাধে আপনি খুনই করে ফেলবেন, এটা কোনো বিচারের আওতায় পড়ে না। আমাদের অল্পকিছু লোকজন এই যে হামাসের পিছনে লেগে আছে, অথচ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের টু-শব্দটি নাই। মানুষ কীভাবে এত অমানবিক ও নিষ্ঠুরমনা, এবং একচোখা হতে পারে, তা ভেবে খুব বিস্মিত হই। ইসরায়েল কি কোনোভাবে বিশ্বমানবতার বন্ধু হতে পারে?

১০| ০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৪৩

রানার ব্লগ বলেছেন: ভারত পাকিস্থানের সমস্যা যেমন টু বি কন্টিনিউ একই ভাবে ইজরায়েল প্যালেস্টাইনের সমস্যা টু বি কন্টিনিউ !!!!

০৬ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৫২

শাহ আজিজ বলেছেন: একসময় জাতিসত্তার আওয়াজ উঠবে ভুমির প্রাক্তন বাসিন্দা হিসাবে । শুধু ভারতে চলে যাওয়া হিন্দু নয় ভারত থেকে আসা মুসলিমরা আওয়াজ তুলবে নিজেদের ভুমি ফেরত পাবার । পাকিস্তানে সিন্ধ , বালুচ, পাঞ্জাব , পশ্তুন এবং কাশ্মিরিরা এখনই এবং ৪৭ সালে সে আওয়াজ করে রেখেছে । গুজরাটের অমানুষগুলো ভারী পাজি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.