নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইউক্রেনের জনগণের খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ মুসলিম, বেসরকারি হিসেবে অনুমান করা হয়, মুসলিমদের সংখ্যা হয়তো এক শতাংশের কাছাকাছি হবে। গত দুটি রমজানে তারা কোভিড মহামারির কারণে সেভাবে কোন উৎসব করতে পারেননি। তাই এবার খুব আগ্রহ নিয়ে রমজানের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু এবার যুদ্ধের কারণে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।
সবচেয়ে কঠিন ব্যাপারটা হচ্ছে নিজেকে নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক-ভাবে প্রস্তুত করা। আমার আরও বেশি করে কোরআন পাঠ করা দরকার, আরও বেশি সময় ধরে নামাজ পড়া দরকার। কিন্তু এখন ইবাদতে মন দেয়া খুব কঠিন, কারণ আমরা যেরকম মানসিক চাপ আর অবসাদের মধ্যে আছি, বলছেন ভিক্টোরিয়া।
নিয়ারা তার শিশু কন্যাকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন, সে কারণে তিনি রোজা রাখছেন না। তবে ভিক্টোরিয়া রোজা রাখছেন। কিন্তু দুজনেই এবারের রমজানে ধর্মকর্মে মন দিতে বেশ সমস্যায় পড়ছেন।
আমরা নামাজ পড়ার জন্য হয়তো সময় ঠিকই বের করে নিচ্ছি। যুদ্ধের কারণে এক্ষেত্রে আমাদের জন্য কিছুটা মাফ আছে। দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যদি পড়তে না পারি, সেটা হয়তো পরে কাজা করা যায়, দিনেরটা সন্ধ্যায়, বা সন্ধ্যারটা রাতে আদায় করতে পারি। এভাবে আমরা আমাদের ধর্মীয় ফরজ অন্তত রক্ষা করতে পারি, বলছেন তিনি। গত আট বছর ধরে নিয়ারা ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় যাপোরিঝিয়া শহরে থাকেন। সেখানে তিনি একটি এনজিও চালান, যেটি পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো বা মুসলিমদের ব্যাপারে গৎবাঁধা ভুল ধারণা দূর করতে নানা ধরণের কর্মসূচি নিয়েছে।তার চতুর্থ সন্তানের জন্ম হওয়ার মাত্র তিন সপ্তাহ পরেই পুরো-দমে যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছিল। নিয়ারা এবং তার পরিবার তখন রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে সাজানোর কথা ভাবছিলেন।আমরা একটা বিরাট ধাক্কা খেয়েছিলাম। বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ছিল, তেলের গুদামে আগুন জ্বলছিল.. রুশ সেনারা শহরের খুব কাছে চলে আসছিল। তখন আমরা সেখান থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।রাশিয়া যখন ক্রাইমিয়া দখল করে নিয়েছিল, তখন সেটা প্রায় রক্তপাতহীন ভাবেই করতে পেরেছিল। কিন্তু এবারের অভিযান একেবারে নির্মম, চারিদিকে রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে।
কাজেই এবার তাদের আবার ঘর ছেড়ে পথে নামতে হলো। এবার তারা চলে গেলেন পশ্চিম ইউক্রেনের চেরনিভিটসিতে। এই বিষয়টি তার সন্তানদের ওপর বেশ মানসিক চাপ তৈরি করেছিল।
আমার ছেলে-মেয়েরা ওদের বন্ধুদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ওদের নিজের বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। আমরা এমনকি এই শহরেও নিরাপদ নই। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা যে কোন সময় ইউক্রেনের যে কোন শহরে এসে পড়তে পারে।প্রথমে তারা এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন একটি মসজিদে। পরে অবশ্য তারা একটি আলাদা বাসা ভাড়া নিতে পেরেছেন। রমজানের পুরোনো স্মৃতি যখন তার মনে পড়ছিল, তখন বুঝতে পারছিলেন, কী হারিয়েছেন তিনি।
পুরো পরিবার একসঙ্গে রোজা রাখতো, নামাজ পড়তো, এক সঙ্গে ইফতার করে রোজা ভাঙ্গতো। এখন তো আমাদের পরিবারও বিচ্ছিন্ন, যুদ্ধের কারণ একেকজন একেক জায়গায়। অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছে, একেকজন একেক দেশে। আমরা মোটেই সুখে নেই, বলছেন নিয়ারা।
নিয়ারার স্বামী একজন ইমাম হিসেবে কাজ করেন একটি মসজিদে। এটিকে মসজিদ বলা ঠিক হবে না, একটা ঘরকে ঠিকঠাক করা হয়েছে নামাজ পড়ার জন্য। চেরনিভিটসিতে এখন রাতে কারফিউ জারি থাকে। ফলে অনেক সময় তার স্বামীর দেরি হলে তাকে রাতে মসজিদেই থেকে যেতে হয়। তবে এই নতুন অচেনা জায়গাতেও কিছু মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে নিয়ারার।
আমরা এখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্য মানুষদের সঙ্গে একসাথে ইফতার করি। আমরা পরস্পরকে সাহায্য করি। আমরা ধনী মুসলিমদের প্রতি আবেদনও জানাচ্ছি যেন তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হওয়া লোকজনকে খাবার দিয়ে সাহায্য করেন।আমরা সচরাচর যে ধরনের খাবার খাই, সেরকম খাবারই রান্না করার চেষ্টা করি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখানে হালাল মাংস পাওয়া যায় না। মাঝে মধ্যে কিছু হালাল মুরগী পাওয়া যায়," বলছেন নিয়ারা।
তিনি জানান, তুরস্কের মতো কিছু দেশের মুসলিম ত্রাণ সংস্থাগুলো কিছু প্রয়োজনীয় খাদ্য সাহায্য পাঠায়। এর পাশাপাশি স্থানীয় মুসলিমরা কিছু রান্নার হাঁড়ি-পাতিল, বাসন-কোসন দিয়ে সাহায্য করে।
ভিক্টোরিয়া অবশ্য হিমায়িত মাংস এবং মাছ দিয়ে কোন রকমে রান্না চালিয়ে যাচ্ছেন।আমরা হালাল খাবারই দেয়ার চেষ্টা করি। তবে হালাল মাংসের সরবরাহ নেই, তাই আমরা সমস্যায় আছি। যেসব মুসলিম দুর্গম বা বিচ্ছিন্ন এলাকায় আছেন, তারা হিমায়িত হালাল মাংসও পাচ্ছেন না।
হালাল সার্টিফিকেট দেয় কিয়েভের যে সংস্থা, যুদ্ধ শুরুর আগে ভিক্টোরিয়া সেখানে পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি আশা করছেন হালাল মাংসের সমস্যার মোকাবেলা শীঘ্রই করা যাবে।অনেক মুসলিম নারী-পুরুষ ইউক্রেনের নিয়মিত সেনাবাহিনীতে এবং আধা সামরিক বাহিনীতে কাজ করেন। কেউ কেউ সম্প্রতি তৈরি হওয়া সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীতে যোগ দিয়েছে।
আমার অনেক আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু রুশদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, বলছেন ভিক্টোরিয়া।কিয়েভের যেটা প্রধান মসজিদ, সেখানে স্বাভাবিক সময়ে যত মানুষ নামাজ পড়তে আসে, এখন আসছে তার মাত্র ৫ শতাংশ। এই বিষয়টা ভিক্টোরিয়াকে বেশ পীড়া দেয়।ভিক্টোরিয়া মনে করেন, অনেক মুসলিম হয়তো এখনো শহরে আছে। তবে তারা অত্যাবশ্যকীয় নানা সেবা দেয়ার কাজে বা সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কাজে ব্যস্ত, সেজন্যে তারা হয়তো নামাজ পড়তে মসজিদে আসতে পারছেন না। তবে এই কাজ যে জরুরি সেটা তিনি বুঝতে পারেন।
আমাদের লোকজনকে সাহায্য করার জন্য যতটা সম্ভব আমাকে কাজ করে যেতে হবে। দেশপ্রেমিক হিসেবে এটা আমার দায়িত্ব। ইউক্রেনের জনগণের মূল শক্তি হচ্ছে এর জনগণের ঐক্য। আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে থাকতে হবে, একে অপরকে সাহায্য করতে হবে। তখনই কেবল আমরা শত্রুকে পরাজিত করতে পারবো।নিয়ারা বিশ্বাস করেন, আল্লাহ তাকে এই সংকট উত্তরণে সাহায্য করবেন।
আমরা বেঁচে থাকার চেষ্টা করছি, আমরা শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি, শান্তির অপেক্ষায় আছি, বলছেন তিনি।
বিবিসি থেকে সংগৃহীত
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:১৭
শাহ আজিজ বলেছেন: এরা পুতিনকে মহা বীর মনে করে ।
২| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৪:৫২
রানার ব্লগ বলেছেন: ইউক্রেনের সাধারন আর দশটা মানুষ যেমন আছে মুসলমানরাও ঠিক তেমনি আছে ।
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:১৮
শাহ আজিজ বলেছেন: তাই হওয়া উচিত । তারাও নাগরিক ঐ দেশের ।
৩| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:০৫
রিফাত হোসেন বলেছেন: সেখানে মাছের উৎস কেমন?
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:২৭
শাহ আজিজ বলেছেন: ভাল । কাছেই ব্লাক সি । মাছ প্রচুর ।
৪| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৪১
সোবুজ বলেছেন: ইউক্রেনের মানুষ কষ্টে আছে।সবার কষ্ট একই রকম।পশ্চিম ইউক্রেনে ইহুদি বেশি।মধ্যপ্রাচের মতো মুসলিম ইহুদি দ্বন্দ্ব থাকলে মুসলিমরা একটু বেশিই কষ্টে আছে।ধর্মীয় দ্বন্দ্ব না থাকলে আজাইড়া একটা সমস্যা থেকে বিশ্ব রেহাই পেতো। আমি অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি,ভ্রমনের সময় অনেক ধর্মের মানুষ কি সুন্দর গল্প গুজব করতে করতে ভ্রমন করছে।কিন্ত ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশের পর কেমন একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়।ঐক্যটা আর থাকে না।দূরত্বটা বাড়তেই থাকে।
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৪৭
শাহ আজিজ বলেছেন: আমি বহু ধর্মীয় আর বে ধর্মীদের মধ্যে থেকেছি অনেকদিন । পাকিরা ছাড়া আর কেউ বিরক্ত করেনি ।
৫| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৪৬
সোনাগাজী বলেছেন:
তারা কি ইউক্রেনে ন্যাটো চায়, নাকি ন্যাটোর বাহিরে থাকতে চায়?
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৫০
শাহ আজিজ বলেছেন: এটা সম্পর্কে কিছু জানা যায় না । যেহেতু তারা দেশের পক্ষে অস্ত্র ধরেছে মনে করা হয় তারা পুতিনজির পক্ষের লোক না । তারা ন্যাটো চাইলে অপরাধ কোথায় ।
৬| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০২
সোনাগাজী বলেছেন:
লেখক বলেছেন, " এটা সম্পর্কে কিছু জানা যায় না । যেহেতু তারা দেশের পক্ষে অস্ত্র ধরেছে মনে করা হয় তারা পুতিনজির পক্ষের লোক না । তারা ন্যাটো চাইলে অপরাধ কোথায় । "
-ন্যা টো কি একা পুটিনের (রাশিয়ান জাতির ) সমস্যা, নাকি ৩য় বিশ্বের সবার জন্য সমস্যা?
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৫
শাহ আজিজ বলেছেন: এর জবাব আমার কাছে নেই । আমি শক্তিকে ভক্তি করার প্রাকটিস করছি ।
৭| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪২
প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: এটা সকল ইউক্রেনীয়দের সমস্যা। ধর্ম হিসাবে অগ্রাধিকার বা বঞ্চনার আলাদা মাপকাঠি নেই নিশ্চই।
প্রার্থনা এটুকুই -
"যুদ্ধ যেনো থেমে যায় "
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:১৮
শাহ আজিজ বলেছেন: সেটা তো আমরা প্রথম থেকেই চাচ্ছি । কিন্তু পুতিন চাইছে খোলা প্রান্তর মনুষ্য বিহীন । আমেরিকা আ র ন্যাটো চাইছে আরও অস্ত্র সরবরাহ । অস্ত্র এখন বাকিতে দিয়ে পরে খনিজ দ্রব্য উঠিয়ে লাভ নেবে ।
৮| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:৩৭
এম ডি মুসা বলেছেন: মুসলিম কে সবাই ভাল থাকুক, ভাই
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১০:২৩
শাহ আজিজ বলেছেন: সকল ইউক্রেনিয়ান ভাল থাকুক ।
৯| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:৩৮
এম ডি মুসা বলেছেন: পৃথিবীর সকল সহিংসতা বন্ধ হোক
১১ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১০:২৩
শাহ আজিজ বলেছেন: ইম্পসিবল
১০| ১২ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:৫৪
বিটপি বলেছেন: চেচেন যুদ্ধে জওহর দুদায়েভকে হত্যা করার পর তাঁর অনুসারীদের একটা বড় অংশ এখন পালিয়ে ইউক্রেনে আছে। রমজান কাদিরভের ইউক্রেন যুদ্ধে এত উৎসাহের মূল কারণ হল এদেরকে সাইজ করা। এছাড়াও ক্রিমিয়ান তাতার মুসলিম জনসংখ্যার একটা বড় অংশ এখন মারিউপোল ও মেলিতোপোল শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই যুদ্ধ তাদের দুর্ভোগই বাড়াবে। কারণ সেই অটোমান আমল থেকেই তারা রাশিয়াকে শত্রুজ্ঞান করে।
১২ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ২:১৮
শাহ আজিজ বলেছেন: এতো বিভাজন আগে জানিনি । এখন জানছি । বহুধা বিভক্ত জাতি, গোত্র , গোষ্ঠী নিয়ে কিভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন গড়েছিল ঈশ্বরই জানেন । কমিউনিজমের নামে শুধু ভণ্ডামি হয়েছে । সমাজতন্ত্রের গুষ্টি কিলাই ।
১১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৫৪
বিটপি বলেছেন: সমাজতন্ত্রের গুষ্টি কিলাবেন কেন? সোভিয়েত যখন সমাজতান্ত্রিক দেশ ছিল, তখনই তো সারা বিশ্বের রাজনীতি ডমিনেট করেছে - এখন তো বিলাই। চীন এখন সমাজতন্ত্র কায়েম করে বিশ্বের অর্থনীতি ডমিনেট করছে। সমাজতন্ত্র খারাপ কিসে? অন্তত পশ্চিমা গণতন্ত্র থেকে অনেক ভালো।
১৩ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৫৯
শাহ আজিজ বলেছেন: পিউর সমাজতান্ত্রিক দেশ এখন নেই নাহলে গিয়ে ৬ মাস থাকতে বলতাম অভিজ্ঞতা অর্জন করতে বলতাম । আমি দেড় যুগ থেকেছি ।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৪:৫১
সাজিদ! বলেছেন: চেচেন রামাদান কাদিরভ আর বাংলাদেশের ভক্তরা ইউক্রেনের মুসলমানকে মুসলমান মনে করে না। এরা কিছু হলেই এক প্যালেস্টাইনের গল্প শুনাবে। ইয়ামেনের বেলায় চুপ, সিরিয়ার বেলায় চোখ বন্ধ!