নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পল্লবের সাথে আমার পরিচয় কোচিন - হাওড়া ট্রেনে । তারপর অনেক গল্প গাঁথা । পল্লব কিছুদিন আগে ঢাকায় এসেছিল দলেবলে গান গাইতে । ও নানা ধরনের আন্দোলনে জড়িয়ে থাকে সবসময় । আজ ফেসবুকে আরজিকর আন্দোলনে ওর সরব উপস্থিতি দেখে ভাল লাগলো । নিচে ওর লেখা ।
।।এখন আরজিকর আন্দোলন।।
অভয়া ঘটনার সুবিচারের দাবিতে আন্দোলনের কী হল? এই নিস্তরঙ্গ সময়ে আবার ধীরে ধীরে মাথা তুলছে থেট কালচারের কুশীলবেরা কারণ তারা শাসকদলের অনুগামী।
এই থ্রেট কালচারের মুখ হিসেবে যাঁদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছিল এবং আন্দোলনের প্রবল চাপে রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিল যাঁদের সরিয়ে দিতে বাধ্য হয় আর স্বাস্থ্যভবনও সাসপেন্ড করেছিল যাঁদের সেই দুই ডাক্তার অভীক দে ও বিরুপাক্ষ বিশ্বাসের একজনকে পুনরায় কাউন্সিলে ফিরিয়ে আনা হল, অন্যজনের ওপর থেকে তুলে নেওয়া হল সাসপেনশান। ভেবে দেখুন এরা দুজন আরজিকর হাসপাতালের সেমিনার রুমে অভয়া হত্যার পরদিন সকালে কেন উড়ে এসে জুড়ে বসেছিলেন সে প্রশ্নের মুখে পুলিশ কাঁচা মিথ্যে বলে ধরা পড়ে যায়। ডিসি নর্থ রীতিমত প্রেস কনফারেন্স ডেকে অভীক দেকে তাঁদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ বলে চালাবার চেষ্টা করেছিলেন। কেন? তাতে পুলিশের লাভ কী? অর্থাৎ ওপর মহলের নির্দেশ ছিল। এহেন প্রভাবশালী প্রাণীরা স্বপদে পুনর্বহাল হচ্ছেন অথচ দেখুন এর বিরুদ্ধে নাগরিক মিছিলের ঢেউ নেই। অভয়া বিচার পাবেতো?
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব আন্দোলনই একসময় স্তিমিত হয়ে যায়, সেটাই স্বাভাবিক। তবে এই আন্দোলনে জনগণের যে স্বতস্ফুর্ত জাগরণ দেখা গিয়েছিল তা হঠাৎ পুরোপুরি থেমে যাবে এটাও অস্বাভাবিক।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন এই বৃহৎ লড়াইয়ের প্রাণকেন্দ্রে ছিল। আমরণ অনশনের শেষ লগ্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক যা সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছিল সেখানে তাঁদের নরম ভূমিকা জনমানসে খানিকটা ধাক্কা দিয়েছে বলেই মনে হয়। বিশেষ করে স্বাস্হ্যসচিবের অপসারণ, এই দাবিটি নিয়ে কোনো জোরালো যুক্তিই জুনিয়র ডাক্তাররা সেদিন রাখেননি। অথচ এখানেই বিরাট অপরাধের এবং অপরাধীদের আড়াল করার প্রাণভোমরাটি লুকিয়ে। বছরের পর বছর স্বাস্হ্যব্যবস্হা দুর্নীতি আর থ্রেট কালচারের দাদাগিরির আখড়া হয়ে উঠেছে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে, স্বাস্হ্যসচিব এবং মু্য্যমন্ত্রীর দফতরকে বারংবার জানানো হয়েছে অথচ কোনো সুরাহা হয়নি। অভয়া এই দুর্নীতি চক্রের বলি হয়েছেন এবং প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা যিনি করেছিলেন সবচেয়ে বেশি, তাঁকে পুনর্বহাল করেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বয়ং। সুতরাং এই ঘটনার দায় স্বাস্থ্যসচিব নাহলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেন নেবেন না এই সোজা প্রশ্নটা দৃঢ়তার সঙ্গে সেদিন বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তাররা করলেন না কেন? আমজনতার প্রশ্ন কিন্তু এটাই ছিল, নাহলে বছরের পর বছর স্বাস্হ্য দফতরের এই দুর্নীতি এতবার জানানো সত্ত্বেও কী করে চলতে পারে! তাঁরা এই মূল প্রশ্নটির উত্তরের অপেক্ষায় টিভির পর্দায় সামনে উদগ্রীব ছিলেন সেদিন। অথচ এই বিষয়টি নিয়ে কথাই হল না তেমন। যে বিষয়টি নিয়ে আপামর জনগণের সামনে স্বাস্হ্যমন্ত্রীকে চেপে ধরার কথা, যার সরাসরি সদুত্তর তাঁর কাছে নেই এবং যে প্রশ্নের সঙ্গে অভয়ার ন্যায়বিচার সরাসরি যুক্ত সেটি নিয়ে সেদিন ডাক্তেরদের নরম ভূমিকা জনমানসকে কিছুটা আশাহত করেছিল বলেই মনে হয়। আন্দোলন এরকম আচমকা অস্তমিত হওয়ার পেছনে এটাও একটা কারণ নয় কি?
তবে ছেড়ে দিলে চলবে না। আবার পথে নামতে হবে। এতবড় অন্যায়ের মূল চক্রীদের মুখোশ অন্তত খোলা দরকার। কেন্দ্রীয় সরকারও তা চাইছেন বলে মনে হয় না। না হলে বিনীত গোয়েল আর ডিসি নর্থ অন্তত ডাক পেতেন। প্রেস মিট করে কাঁচা মিথ্যে বলে কেন অভীক দেকে আড়াল করতে চাইছিলেন এই প্রশ্নের উত্তর পেতে অন্তত।
--পল্লব কীর্ত্তনীয়া।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০
রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।