![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি/কোন মিস্তিরি বানাইয়াছে '_ জীবনে গাইলাম কতো, কিন্তু সন্ধান করলাম ক'বার? বরং সন্ধানের নামে মন মজেছে শয়তানের তালে, নালে খোলে ঢোলে! পুঁতো পবিত্রতার ছদ্ধবেশে নফস্ কে বানিয়েছি শয়তানের আখড়া। আর গানের গণীভূত আবেগে শয়তানের শীত নিদ্রা দেহঘড়ির চৌদ্দতলা জুড়ে।
আবহমান বাংলা আর তার লোকজ গানের বন্দিত্বে নিজের জীবন-যৌবন তো খুইয়েছি ধর্মহীনতায়, এবার সন্তানদেরটাও ধোলাইয়ের পালা। 'যদি ঘড়ি চিনতে পারতাম/ঘড়ির জুয়েল পাল্টাইতাম'_ গেয়ে গেয়ে মশগুল থেকে না হলো চেনা, না হলো পাল্টানো। তাই সেইম 'জুয়েল' সন্তানদের হ্যান্ডওভারের মধ্য দিয়ে গোমরাহির পথকে মসৃণ রাখার কৃতিত্বও আমাদের। চুপে চুপে বলি তাই, "আল্লা-হুম্মাগফির লী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়াজবুরনী, ওয়া‘আফিনি, ওয়ারফা‘নী"
[হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন এবং আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন।] -আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবন মাজাহ।
'রহমান বয়াতি বলে ওরে আমার মন বোকা/বিবেকের কর্মদোষে হলোনা ঘড়ি দেখা'_ এই তালে-সুরে মাতাল ছন্দবন্ধে কাঙাল থেকেছি কলেজের নবীন বরণ, পহেলা বৈশাখ, জেলা প্রশাসকের বিজয় মঞ্চ, গায়ে হলুদের ব্যান্ডপার্টি, ঈদে টিভি চ্যানেলের ব্যান্ড শো তে। নিজেকে হাজির-নাজির রাখতে সেইসবে প্রাণান্ত চেষ্টার এক একটা দিন। মধ্যখানে মসজিদের খালি স্থান আর পূরণ হয়নি। বয়াতির বয়ান আজ বন্ধ। রহমানকে, রাহমানুর-রাহীম কি অবস্থায় রেখেছেন জানিনা। তবে এইটুকু বোধে আসে তার গানের হট্টগোলে আজো শয়তান অবলীলায় নফস্'গুলোকে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করতে পারছে সহজে।
"হে আমার রব, আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই। আর হে আমার রব, আমার কাছে তাদের উপস্থিতি হতে আপনার কাছে পানাহ চাই।" -[আল মু'মিনূন - ২৩:৯৭-৯৮]
পুনশ্চঃ বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীর দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে অভিন্ন। 'গান' তেমন এক ফিতনা।
[ফিতনা শব্দের অর্থ পরীক্ষা করা। এই পরীক্ষা প্রচন্ড আকর্ষণীয় কোন কিছু (যেমন সম্পদ, সন্তান, নারী) দিয়ে হতে পারে, আবার হতে পারে প্রচন্ড অপছন্দনীয় কিছু দিয়ে (যেমন অকস্মাৎ বিপদ, গৃহযুদ্ধ, বিশৃংখলা, অত্যাচারী শাসক ইত্যাদি)।
ইবনুল আরাবী ফিতনার সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে: ফিতনা মানে পরীক্ষা, দুর্যোগ, সম্পদ, সন্তান, কুফর, মতপার্থক্য। - (লিসান আল আরব – ইবনে মঞ্জুর )]
তাই কারো-বা মনে হতে পারে দেহত্বত্তের গানে শয়তানের আসা-যাওয়া, এটা নিতান্ত বাড়াবাড়ি কথা। তাদের জন্য বলি, সম্প্রতি ফেবু স্ক্রোলিঙে চোখ আটকে গিয়েছিল 'কোক স্টুডিও'র পৃষ্ঠপোষকতায় 'গান বাংলা'র দেহঘড়ি গানটাতে। পুরোটা গানের আয়োজনে বাদ্যযন্ত্র, পোশাক, সহশিল্পী, ভিনদেশী গানের মিশ্রণ আর শিল্পীদের জাগতিক একাগ্রতা সবমিলিয়ে টাশকি খাওয়ার মত। আপনিও দেখে নিতে পারেন। আর বিশ্বাসীদের দলভুক্ত হলে তা আপনার মনঃপীড়ার কারণ হবে নিশ্চয়।
©somewhere in net ltd.