![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সপ্নটা অনেক বড় , কিন্তু দিনকে দিন সপ্ন গুলো ফিকে হয়ে যাচ্ছে ।
বর্তমানের অবরোধ এবং অবরোধের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারার যে 'আন্দোলন' চলছে তা নিয়ে এই নাদানের তেমন কিছু বলার নেই। প্রতিদিনই দেশের টিভি চ্যানেলগুলিতে বড় বড় পন্ডিত মানুষেরা এ-নিয়ে বলছেন এবং কেউই কারো কথা শুনছেন না। দেশে অবরোধ চলছে, কেননা দেশে 'গণতন্ত্র নেই'। গণতন্ত্র হচ্ছে একদিন ভোট বুথে গিয়ে ভোট দিয়ে আসা, গণতন্ত্র মানে এই নয় যে আপনি আপনার নিজের গাড়িটি নিয়ে বাইরে বের হবেন, গণতন্ত্র মানে এই নয় যে সারা বছর পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়ে সেই ফসল আপনি বাজারে পাঠাবেন, আপনি আপনার ব্যাবসা বানিজ্য সচল রাখবেন।
আপনি ভোট দিতে পারেননি বলে সরকার তথা আওয়ামীলীগকে গালিগালাজ করেন। সরকারকি আপনাকে ভোট দিতে নিষেধ করেছিলো? সেই সময়ে সারাদেশে এখনকার মতই জ্বালাও পোড়াও সন্ত্রাস চলছিলো, আপনি কি সেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছিলেন? আপনি ষ্টেডিয়ামে খেলা দেখতে গেলেন, নির্ধারিত ম্যাচে একদল অনুপস্থিত থাকায় অন্যদল বিজয়ী হয়ে গেলো, এখন খেলা উপভোগ করতে না পারার দায় কি আপনি কেবল উপস্থিত দলকেই দেবেন? বলা হয়ে থাকে তত্ত্বাবধায়ক বাতিলই এই সমস্যার মূল কারন। এখন বিএনপি এবং খালেদা জিয়া সংলাপের কথা বলছেন, সরকার ইচ্ছে করলেই সংলাপে যেতে পারে, কিন্তু সরকার এই ইচ্ছেটা করবে কেনো। ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী ফোনালাপের কথা কি মনে আছে? অনেক কথার ফাঁকে আলোচনা নিয়ে কথাগুলি একটু ঝালাই করে নেওয়া যাক।
হাসিনা : আমি আপনাকে ফোন করলাম। আগামী ২৮ তারিখে সন্ধ্যায় গণভবনে আমি আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি। আপনি যানেন যে, আমি ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। আগামী নির্বাচন সম্পর্কে আমি আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি। আমার গণভবনে আসার জন্য আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি।
খালেদা : কি বিষয়ে দাওয়াত দিচ্ছেন সেটা তো বলবেন যে, কেন দাওয়াত দিচ্ছেন।
হাসিনা : দাওয়াত দিচ্ছি যে, আমার সঙ্গে বসে রাতে একটু খাবার খাবেন।
খালেদা : না, আমি খাবার খেতে রাজি আছি। কিন্তু ২৮ তারিখ আমি যেতে পারব না। আমাদের হরতাল আছে। ২৯ তারিখ ৬টায় আমাদের হরতাল শেষ হবে।
হাসিনা : আপনি হরতাল প্রত্যাহার করেন।
খালেদা : আমি হরতাল প্রত্যাহার করতে পারব না। আমি অনেকদিন ধরে আপনাদের রিকয়েস্ট করেছি আসুন আলোচনায় আসুন। আলোচনার সময় পর্যন্ত আপনারা শোনেননি। কাজেই আমার হরতাল পার হওয়ার পরে আপনি যেদিন...। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমি বের হতে পারব না।
হাসিনা : কিন্তু আপনি তো নিজেই কালকে বলেছেন যে, এই সময়ের মধ্যেই...
খালেদা : আমি বলেছি, আলোচনাও চলবে। কর্মসূচিও চলবে। আমি সেটা বলেছি।
হাসিনা : আপনি আলটিমেটাম দিলেন দুই দিনের। আমি দুই দিনের মধ্যেই ফোন করলাম। অথচ এখন হরতালও করবেন আবার বলছেন ২৯ তারিখের পরে। আপনি কী বক্তৃতা দিলেন আর আজকে এখন কী বলছেন, আপনি একটু ভেবে দেখেন তো।
খালেদা : আমি বলেছি আলোচনা চলুক, কর্মসূচিও চলবে।
হাসিনা : কিন্তু আপনি নিজেই বলছেন দুই দিনের মধ্যে আলোচনা...হরতাল দেবেন না।...শুনেন আমার কথা...আপনি কি ক্যামেরা-ট্যামেরা নিয়ে কথা বলছেন?
খালেদা : আমার এখানে ক্যামেরা-ট্যামেরা কেউ নেই। বুঝছেন। আমি নিজেই কথা বলছি। আমি বাসায় বসে কথা বলছি। অফিসে হলে আমার জন্য সুবিধা হতো। ক্যামেরা-ট্যামেরা থাকত। টেলিভিশনে দেখব আপনারাই ক্যামেরা দেখাচ্ছেন। আমাদের এখানে ক্যামেরা-ট্যামেরা কিছু নেই। আপনি চেক করেন যে বলেছে...টেলিভিশনে স্ক্রল দিয়েছে যে ওনার রেড টেলিফোন ঠিক আছে। আমি এটা দেখতে চাই
।
হাসিনা : ... ফোন ঠিক নাই। এরপর তো আমার এদিক দিয়ে আপনার শিমুল বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হয়েছে...
খালেদা : আপনার সঙ্গে কথাই ছিল যে এই টেলিফোনে কথা হবে আমাদের। আমি তো বসে আছি এখানে। আধা ঘণ্টা বসে ধরে আছি যে আপনার টেলিফোন আসবে। আমরা তো গোপন কিছু বলব না। এক সময় আমরা অনেক কথা বলেছি। আমরা এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একসঙ্গে কাজ করেছি। কেন কথা বলব না। আপনার বাসায় গেছি। আমরা তো একসঙ্গে...। এসব করেছি। কেন করব না। এখনও করতে চাই, বলতে চাই, কাজ করতে চাই। যে আসুন দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে বসি, কথা বলি।
হাসিনা : এজন্যই আমি বলব যে আগামী ২৮ তারিখ আসেন। আমরা আলোচনা করি।
খালেদা : না, আমি ২৮ তারিখ যেতে পারব না। আপনি যদি সত্যি আন্তরিক হন, ২৯ তারিখের পর ডেট দেন। আমি আসব।
হাসিনা : আপনি কালকে বললেন...
খালেদা : না, আমি কর্মসূচি দিয়ে ফেলেছি। এখন সম্ভব না।
হাসিনা : আপনি নিজেই বলেছেন, দুই দিনের মধ্যে আলোচনার জন্য না ডাকলে হরতাল দেবেন।
খালেদা : আমি হরতাল দিয়ে ফেলেছি। তার আগে বলা উচিত ছিল।
হাসিনা : আপনি আপনার বক্তৃতাটা আবার শুনেন।
খালেদা : হ্যাঁ, এখন আমি নিজে শুনলেও কর্মসূচি দিয়ে ফেলেছি। সঙ্গে সঙ্গেই বলেছি, কর্মসূচিও চলবে, আলোচনাও চলবে।
হাসিনা : আমি দুঃখিত, আপনি যেহেতু বললেন দুই দিনের মধ্যে...
খালেদা : আমি বলেছি। কর্মসূচি-সংলাপ একসঙ্গে চলবে।
হাসিনা : এর আগেই আমি ফোন করলাম।
খালেদা : না, হরতাল ঘোষণা হয়ে গেছে। কর্মসূচি ঠিক হয়ে গেছে। ১৮ দলের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৮ দলকে পাব কোথায় এখন? এখন কেউ নেই।
হাসিনা : ১৮ দল আপনি পাবেন, ডাকলেই পাবেন। আপনি ডাকলে হবে না, এটা কোনো কথা হল নাকি। এটা কেউ বিশ্বাস করবে না।
খালেদা : বিশ্বাস করবে না ঠিকই। আমি ডাকলে হতো। কিন্তু এখন হবে না, এই কারণে...
হাসিনা : আপনি বললেন, দুই দিনের মধ্যে আলোচনা না করলে আপনি হরতাল দেবেন। এ সময়ের মধ্যেই আপনাকে ফোন করলাম।
খালেদা : না, আপনি যদি কাল রাতেও ফোন করতেন, তাহলে কর্মসূচি বিবেচনা করা যেত। পুরো রাত চলে তো গেছে। সকালে অফিসে চলে গেছি।
খালেদা : না কালকেই যদি নির্দলীয় সরকার মেনে নেন তবে আমরা রাতেই ঘোষণা দিয়ে দেব। হরতাল উইথড্র করে নেব। কোনো অসুবিধা নেই।
হাসিনা : আপনি সর্বদলীয়টা মেনে নেন।
খালেদা : না সর্বদলীয়টা হবে না। সর্বদলীয় মানা যায় না।
হাসিনা : ওরকম করেন না। পরে আবার কাকে আনবেন। ফকরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের মতো হয়ে যাবে। আসুন আমরা নিজেরা নিজেরাই করি।
খালেদা : না আপনি রাজি আছেন বলে দেন... মেনে...। ২৯ তারিখের পরে ডেট দেন আমি করব।
হাসিনা : ২৮ তারিখে আমি আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি আপনি আসেন।
খালেদা : না আমি ২৮ তারিখে যেতে পারব না। হরতালের মধ্যে আমি কোথাও যাই না।
হাসিনা : ২৮ তারিখ কাকে কাকে আনবেন বলে দেন।
খালেদা : ২৮ তারিখ আমি যাব না। আপনাকে কে ওখান থেকে প্রম্পট করছে।
হাসিনা : আপনি ভাল থাকেন। সুস্থ থাকেন। ধন্যবাদ
খালেদা : ২৮ তারিখে হরতাল প্রত্যাহার হবে না।
এখন আলোচনা করার জন্য মানুষদেরকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, যুদ্ধাবস্থার দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এভাবে মানুষ পুড়িয়ে, বোমা হামলা করে কখনো আন্দোলন হয়না, সরকারের পতনও হয়না। ২০০০ এ ক্ষমতায় এসে জঙ্গীবাদের লালন, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা সংগঠন, ২০১৩ অক্টোবরে আলোচনার টেবিলে না যাওয়া, ২০১৪ এর নির্বাচনে না যাওয়া এগুলি ছিলো বিএনপির রাজনৈতিক ভুল। রাজনীতি পুতুল খেলা নয়, এখানে একটি রাজনৈতিক ভুল প্রতিপক্ষ লুফে নিয়ে নিজের পক্ষে কাজে লাগাবে এটাই স্বাভাবিক। ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন করে আওয়ামীলীগ নিজেও স্বস্তিতে ছিলোনা। এখন মানুষ পুড়িয়ে আন্দোলন সফল করার চেষ্টাও একটি রাজনৈতিক ভুল। বিএনপির রাজনীতিতে একটি উত্তরন ঘটেছে, সেটি হচ্ছে তার আন্দোলনে অফিসিয়ালী জামায়াত শিবির নেই, তাতে চট করে তাদের এই আন্দোলন যুদ্ধাপরাধীদের বাচানোর আন্দোলন সেকথা আওয়ামীলীগ জোরেসোরে বলতে পারছে না, যদিও নাশকতায় জামায়াত শিবির ও বিএনপি কাঁধে কাধ মিলিয়েই মানুষ পোড়াচ্ছে। বিএনপি এখানে মানুষ পোরানোর দায় সরকারী দলের লোকজনকে দিচ্ছে, কেননা সরকার চায় অবরোধে মানুষ পুড়িয়ে, মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে বিএনপির ডাকা অবরোধকে সফল করে তুলতে।
বিএনপি যে ভুলগুলি করেছে তার খেসারত তার নিজেকেই দিতে হবে। এখন সরকার বিএনপিকে সংলাপে ডাকলেও তা কার্যকরী সংলাপ হবেনা। ২০১৯ সালের নির্বাচনের রুপরেখা নিয়েই বিএনপিকে আলোচনা করতে হবে। আজকে জিয়াউর রহমানের জন্মদিন, খালেদা জিয়ার বাসার সামনে থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সব পুলিশ ও ব্যারিকেড। খালেদা জিয়া চাইলেই জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে যেতে পারেন, যাবেন কি?
©somewhere in net ltd.