নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাঁদে সবাই, কেউ নিরবে কাঁদে, কেউ প্রকাশ্য । আমি দ্বিতীয় দলে ....।

পরাধীন বাংগালী

নিজেকে চিনছি আজও...

পরাধীন বাংগালী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের চাকরিতে ইন্ডিয়ানদের আধিপত্য ও আমাদের কাঁকড়াবৃত্তি - এক ভাইয়ের লেখা করুন আকুতি ।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৪

ইন্ডিয়ানদের ম্যানেজমেন্ট এর দক্ষতা এখন বিশ্ব স্বীকৃত। কিছুদিন আগে দেখা গেছে, ইন্ডিয়ার টপ ফাইভ রেমিট্যান্স সোর্স এর অন্যতম বাংলাদেশ। নামে বেনামে কত ইন্ডিয়ান বাংলাদেশে কাজ করে, তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া দুষ্কর। আগে ইন্ডিয়ানরা মূলত MNC গুলোর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে কাজ করত। এরপর গার্মেন্টস এ কিছু শ্রীলংকান ও ইন্ডিয়ান টপ ম্যানেজমেন্ট পজিশনগুলোতে জায়গা করে নেয়। সম্প্রতি মিড পজিশনেও প্রচুর ইন্ডিয়ান বাংলাদেশে কাজ করছে। অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে যে ইন্ডিয়ান আধিক্য এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে নেটিভদের জন্য তা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। অনেকে হয়ত ভাবছেন, পরিচয় গোপন রেখে যেসব ইন্ডিয়ান এই দেশে কাজ করছেন, তাদের বের করে দিলেই সমস্যার আশু সমাধান। হয়ত কিছুটা, কিন্তু তাতে পরিস্থিতির এমন কোন আকাশ-পাতাল তফাৎ হবে না। ব্যক্তিখাতে যারা ব্যবসা করেন, তারা গাঁটের কড়ি বিনিয়োগ করে ব্যবসা করেন। তিনি যদি ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট এ বেশি আস্থা পান, তাহলে হয়ত অবৈধ পথে না পারলে বৈধ পথে বেশি টাকা খরচ করে হলেও ম্যানেজমেন্ট এ ইন্ডিয়ান বসাবেন। এতে হয়ত সরকারেরও কিছু রাজস্ব প্রাপ্তি হবে। কিন্তু সরকারের যে অন্যতম ম্যান্ডেট- এমপ্লয়মেন্ট, সেটা রক্ষা হবে না। আবার কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রাও দেশের বাইরে চলে যাবে।
তাহলে কি আমাদের শিক্ষার মান যথেষ্ট যুগোপযোগী না? IIM গুলো সারা বিশ্বে তাদের গ্রাজুয়েটদের জন্য সুপরিচিত। ওই তুলনায় নিশ্চয় আমরা পিছিয়ে আছি। কিন্তু বাংলাদেশে যারা আসে, তাদের কতজন IIM গ্রাজুয়েট- সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে। সুতরাং এখানে কোয়ালিটি অব এডুকেশনও আমার কাছে এমন কোন ভাইটাল ফ্যাক্টর মনে হয় না।
আমার ধারণা, এর মূলে বাঙালির কাঁকড়াসুলভ আচরণ। জেলেরা যখন কাঁকড়া শিকার করে পাত্রে রাখে, সে পাত্রে কোন ঢাকনা দেয়ার প্রয়োজন তারা বোধ করে না। কারণ, একটা কাঁকড়া যখন অতি কষ্টে পাত্র টপকানোর প্রান্ত সীমানায় পৌঁছে যায়, তখন অন্য কাঁকড়ারা তার পা ধরে তাকে নামিয়ে আনে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে আমরা বাঙালিরা হাত ধরে একজনকে টেনে যতটা উঠাই, পা ধরে কাউকে টেনে নামাতে তার চেয়ে বেশি আনন্দ পাই। অন্তত এই এক ক্ষেত্রে আত্ম-সম্মানবোধপ্রবল বাঙালি পা ধরতে লজ্জা পায় না।
মূলত ম্যানুফ্যাকচারিং ও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে ম্যানেজমেন্ট পজিশনে ইন্ডিয়ানদের জয়জয়কার। আমি অন্তত একটা কাঁকড়া কাহিনী জানি। দেশের নামকরা এক শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানার হেড অব ফ্যাক্টরি হিসেবে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গ্রাজুয়েটকে মোটা বেতনে নিয়োগ দেয়। নিয়োগ দেয়া মাত্রই ওই বেচারাকে প্রথমে ভার্সিটিইজম জনিত কারণে বেশ ঝামেলার পড়তে হয়। সেখানে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশয়ানরা নিজেদের মধ্যে নানা গ্রুপিং শুরু করে কাজে বিঘ্ন ঘটাতে শুরু করে। বেচারা শেষমেশ বাধ্য হয়ে চাকরি ছাড়েন। কাম্পানির টপ ম্যানেজমেন্ট বুঝলেন দেশি চালে পোষাবে না, তারা ত্বরিৎ ওই পজিশনে একজন ইন্ডিয়ানকে নিয়োগ দেয়। এই নিয়োগ নিয়ে কিন্তু দেশপ্রেমের ধোয়া তোলা যাবে। কাম্পানি লস দেয়ার জন্য ব্যবসা করে না।
ফলে ক্ষতি হল বহুমূখী। একজন সম্ভাব্য ইন্ডাস্ট্রি লিডারকে আমরা ডিমোরালাইজড করে দিলাম। যারা আন্দোলন করল তারা ক্ষতিগ্রস্ত হল। এরা খাল কেটে কুমির এনেছে। কোনদিনও এরা আর হেড অব ফ্যাক্টরি হতে পারবে না এই কাম্পানিতে। কাম্পানি যেহেতু দ্বিগুণ খরচে ইন্ডিয়ান এনেছে তার ব্যবসায় ব্যয় বেড়েছে। এই ব্যয় তার মার্জিন ও পণ্য মূলে প্রভাব ফেলবে। ক্ষতির চেইনে ভোক্তারও পণ্য ক্রয়ে ব্যয় বেড়ে যাবে। দেশের বাইরে চলে যাবে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা।
কাঁকড়াসুলভ আচরণ দিয়ে আমরা এভাবেই নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরে যাচ্ছি। কবে আমাদের বোধোদয় হবে কে জানে।

Ali Reza- BBA, MDS, PGD-HRM
Written by
Ali Reza- BBA, MDS, PGD-HRMF

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭

আলী বলেছেন: Dizicon a great example

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৬

ডেল p4 বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটকে ডিগ্রীটা গোপন করে খাটি বাংলা মাল হতে হবে । বাংলা বাঁশ দেয়ার কায়দা যারা জানেন এই ট্রেডে এই মুহুর্তে তারা ভালই করছেন । সমস্যা আরো আছে । আমাদের ভাল মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এখনো এই ইন্ডাস্ট্রিতে
ভাল মন নিয়ে আসছেন না । এই ট্রেডের প্রাথমিক দুর্গন্ধটা নাকে যাবার সাথে সাথে quit . যারা টিকে গেছেন তারা বেশ দাপটেই রাজত্ব করছেন এবং করবেন আগামী দিনগুলোতে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.