নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ভেতরের কারণগুলো জানতে এবং বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করি এবং সবার সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করি। সামাজিক, রাজনৈতিক আর আন্তর্জাতিক বিষয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। তাই ব্লগে পদচারনা।
উরিতে হামলার পর থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের খবর শুনে আসছি। কিন্তু এখন খোদ ভারতের একটি পত্রিকার সম্পাদকীয় আপনাদের জন্য তুলে ধরছি আশাকরি ভাল কিছু তথ্য পাবেন।
বী ভৎস অঘটনের মধ্যেও যে রুপালি রেখা থাকিতে পারে, তাহার উদাহরণ উরি। অনেক দিন পর কাশ্মীর সংকট তথা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক লইয়া ভাবনাচিন্তায় একটি ক্ষীণ রজতরেখা যেন উঁকি দিতেছে। সুসংবাদ, অতি-আক্রমণাত্মক জাতীয়তাবাদী মহলের ‘যুদ্ধু-যুদ্ধু’ চিৎকারের পাশেও সেই নূতন চিন্তার ইশারাসমূহ দৃশ্যমান। বহু-প্রতীক্ষিত একটি স্বীকারোক্তি শোনা যাইতেছে যে, প্রতিরক্ষায় ফাঁক ছিল। বারামুলা-উরি অঞ্চলের সেনা-ছাউনিগুলি সুরক্ষিত নহে, স্বীকৃত হইতেছে। সীমান্ত-পারের জঙ্গিদের আশ্রয়দানে গ্রামবাসীদের ঔৎসুক্য লইয়া ভাবা হইতেছে। অন্যায় রকমে বিলম্বিত এই বোধ, তবু স্বস্তিকর। কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় নিয়ন্ত্রণ নূতন ভাবে বাড়াইবার প্রস্তাবটি ইহার মধ্যে অত্যন্ত গুরুতর। নিয়ন্ত্রণরেখা অঞ্চলে ভারতীয় পক্ষের ক্রমাগত শৈথিল্যের কারণেই পাকিস্তানি অনুপ্রবেশ ও পাক প্রভাব বাড়িয়া আজিকার এই সংকট। এমন একটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কেন এত দিন উদাসীন, বোঝা ভার। উরির সূত্র ধরিয়া পরিস্থিতির কিছুমাত্র পরিবর্তন হইলে পাকিস্তানের সহিত কূটনৈতিক আদানপ্রদানেও একটি প্রত্যয় যুক্ত হইবার কথা। কাঁটাতার বরাবর সদাজাগ্রত সতর্কতা নিশ্চিত করা এবং ক্রমাগত অপর পক্ষের হাতে পর্যুদস্ত হইয়া অপেক্ষা নিজেদের রক্ষা তো সেনাবাহিনীর দায়িত্ব।
অর্থাৎ, পাকিস্তানের প্রতি আক্রমণ শানানোই যথেষ্ট নয়। নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাসমূহের সমাধান প্রথম জরুরি কাজ। কাশ্মীর লইয়া প্রধানমন্ত্রী মোদী যতই মুখে কুলুপ আঁটিবেন, মন্ত্রী-সান্ত্রিরা যতই বলিবেন ইহা কেবল ‘দুষ্টু লোক’ অর্থাৎ পাকিস্তানি গুপ্তচরদের কাজ, কাশ্মীর সংকট হইহই করিয়া বাড়িবে মাত্র। কেন উপত্যকাবাসীর একাংশ পাক জঙ্গিদের প্রতি এতটা সহানুভূতিশীল, তাহা একটি রাজনৈতিক সমস্যা। সামরিক নহে, রাজনৈতিক পথেই তাহার মীমাংসা দরকার। হুরিয়ত, গিলানি হইতে ইয়াসিন মালিক, সকলকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ভারতের শত্রু হিসাবে চিহ্নিত না করিয়া বরং কাহারা পাকিস্তান-পন্থী, কাহারা ইসলামি মৌলবাদী এবং কাহারা কাশ্মীরের আজাদি-কামী বিদ্রোহী, সেই বিচার হউক। উপত্যকাবাসীদের কাছে বার্তা যাউক যে তাহাদের ‘নানা’ মতামত শুনিতে ভারত আগ্রহী। এই রাজনৈতিক আগ্রহ এখনও না দেখাইলে উপত্যকার যে অংশটি আজাদিকামী কিন্তু মৌলবাদী বা পাকিস্তানি দালাল নহে, তাহারাও এ বার সেই দিকে সরিয়া যাইবে। মধ্যবর্তী পরিসরটি ধ্বংস হইলে ভারতের অবশিষ্ট কাশ্মীর-আশাও শেষ হইবে।
গত দুই মাসে এই পরিসর আগের তুলনায় অনেকখানি কমিয়াছে। সংকট মোকাবিলায় বিজেপি-পিডিপি রাজ্য সরকারের অক্ষমতা দিল্লির নিকট তাহার বাধ্যতা বলিয়া প্রতিভাত হইয়াছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বদলীয় বৈঠক প্রচেষ্টায় ঐকান্তিকতার তুলনায় উন্নাসিকতাই চোখে পড়িয়াছে। যেন এই বৈঠকের লক্ষ্য যথার্থ সমাধান খোঁজা নয়, সরকারি নীতি ও রণকৌশলের পক্ষে রাজনীতির সমস্ত শিবিরগুলিকে সংহত করা। প্রশ্ন কেবল রাষ্ট্রযন্ত্রীদের সম্পর্কেই নহে, বৃহত্তর সমাজ সম্পর্কেও। সংবাদমাধ্যমও তাহার অংশ। উদারপন্থী কাশ্মীরি মহলেও প্রশ্ন উঠিয়াছে, সতেরো জন জওয়ানের দুঃখজনক অকালমৃত্যুতে ভারতীয় মিডিয়ার যে লাগাতার শোক, তাহার কয়েক শতাংশও কেন এতগুলি কাশ্মীরি প্রাণ বিষয়ে দেখা গেল না, এমনকী গুরুতর আহত শিশুকিশোরদের ছবি পর্যন্ত দেখানো হইল না। তাহারা বিদ্রোহী বলিয়া শোক পালনের যোগ্য নহে? না কি কাশ্মীরি, সুতরাং ‘পূর্ণ নাগরিক’ নহে বলিয়া? ইহা একটি রাজনৈতিক ক্ষোভ। রাবার-বুলেট ছোড়া আর প্রাণে মারা ইহার সমাধান হইতে পারে না, তাহা মোদী-শাহরা জানেন নিশ্চয়।
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: হুম
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৬
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আনন্দবাজারের আনন্দ বিতরণ।