নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ভেতরের কারণগুলো জানতে এবং বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করি এবং সবার সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করি। সামাজিক, রাজনৈতিক আর আন্তর্জাতিক বিষয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। তাই ব্লগে পদচারনা।
ইতিমধ্যে আপনারা জেনেছেন কাতারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সৌদি আরবের নেতৃত্বে মিসর, আরব আমিরাত,বাহরাইন, ইয়েমেন, লিবিয়া, মালদ্বীপ যাদের মধ্যে একমাত্র মালদ্বীপ হল আরবের বাইরের দেশ।
এতদিন কাতার ছিল সৌদি আরবের সব থেকে কাছের বন্ধু রাষ্ট্র। এমনকি ইয়েমেনে আক্রমণের ক্ষেত্রেও কাতার সৌদি আরবের জোটে সক্রিয় ছিল। কিন্তু হটাত করে সৌদি আরবের সাথে কাতারের দন্দের কারণ কি হতে পারে এই নিয়ে বিস্তারিত হয়ত পত্রিকার কলাম থেকে জেনে থাকবেন।
আমার এই কলাম লেখার মুল কারণ হল কাতারের সাথে সৌদি আরবের দন্দে আসলে কে লাভবান হবে!! মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে আরব-আমিরাত বলতে গেলে একধরনের বিষফোঁড়া যারা টাকার জন্য করতে পারেনা এমন কোন কাজই নাই। আরবদেশ গুলোর সাথে ইসরাইলের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে এতদিন ধরেই কাজ করে এসেছে এই দেশটি। অন্যদিকে মিসরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিসিও একজন ইসরাইলপন্থী হিসেবে পরিচিত, যে কিনা গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিশরের মুরসি সরকারকে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজেই ক্ষমতা দখল করে রেখেছে।
মাত্র কয়েক দিন আগেই আরব-ইসরাইল যুদ্ধের ৫০ বৎসর পূর্তি হয়েছে। কথিত আছে ওই যুদ্ধে আরব দেশগুলোর সেনাবাহিনী যুদ্ধের বিপরীতে ইসরাইলের সাথে গোপন চুক্তি করে অনেকটা ইচ্ছা করেই হেরেছিল। একমাত্র সিরিয়া প্রকৃত যুদ্ধ করে তাদের গোলান মালভূমি হারিয়েছে অন্যরাষ্ট্রগুলো অবশ্য ইসরাইলের সাথে চুক্তি করে তাদের নিজেদের হারানো ভূখণ্ড ফিরে পেয়েছে, যেমন মিশরের সিনাই উপত্তাকা।
একটি বিষয় লক্ষ্য করুন কাতার হল আরবের একমাত্র দেশ যারা ফিলিস্থিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে সহায়তা করছে এবং মিশরের সর্বাধিক জনপ্রিয় সংগঠন ইখওয়ানুল মুসলেমিন বা মুসলিমব্রাদারহুডকে সমর্থন করে আসছে।
সুতরাং আরব ইসরাইল বন্ধুত্বের পথে একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কাতার!! আরব উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র এই দেশটির সাথেই স্বাভাবিক সম্পর্ক রয়েছে ইরানের। এবং ইরান সহায়তা করছে হিসজবুল্লাহদের যারা একমাত্র ইসরাইলকে দুইবার করে পরাজয়ের স্বাদ দিতে সক্ষম হয়েছে।
কাতার তার খাদ্য চাহিদার মাত্র ১০% নিজ দেশে উৎপাদন করে এবং খাদ্যের জন্য দেশটি সম্পুর্নরুপে নির্ভরশীল সৌদিআরবের উপর।আরার কাতারের বিমান সংস্থা কাতার এয়ার ওয়েজ আরব-আমিরাত ও সৌদিআরবের আকাশসীমার ওপর সম্পূর্ণরুপে নির্ভরশীল ছিল, যদিও এইমুহুর্তে তারা ইরান ও তুরস্কর আকাশসীমা ব্যবহার করছে। সুতরাং সম্পর্ক ছিন্ন করে অবোরোধ দিলে কিছুদিনের মধ্যেই দেশটির শাসককে পরিবর্তন করে ইসরাইলপন্থী কাউকে বসানো সম্ভব হবে বলেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি আরব।
এদিকে ইসরাইল কোন রকম রাখঢাক না রেখেই ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলেছে, আরব দেশের সঙ্গে কাতারের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার ঘটনা তেলআবিবের স্বার্থ রক্ষা করবে। ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী এভিগডোর লিবারম্যান বলেছেন, সন্ত্রাসীদের প্রতি দোহার সমর্থনের কারণে কাতারের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় এখন ইসরাইল ও অন্য আরব দেশ মিলে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জোট গঠন করতে পারবে। ইসরাইলী সুত্রগুলো আরো জানিয়েছে, ইসরাইল এখন আর আরব দেশগুলোর শত্রু বলে বিবেচিত হচ্ছে না বরং ইসরাইল ও আরব দেশগুলো মিলে কাতার সমর্থিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
এখানে কাতার সমর্থিত সন্ত্রাসী বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে তা বুঝতে সমস্যা হবার কারণ দেখছি না!!
সুতরাং কাতারের সাথে আরব দেশগুলোর দন্দে নিখাদ লাভ যে ইসরাইলের তা পরিস্কার।
০৭ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ২:০৪
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: ভবিষ্যতের অপেক্ষায় রইলাম। একটু সময় নিয়ে লিখেছি তাই হয়ত কিছুটা গুছিয়ে লিখতে পেরেছি। ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:৩৭
করুণাধারা বলেছেন: উদ্ভূত পরিস্থিতির নিয়ে যতগুলো লেখা পড়েছি এটা সর্বোৎকৃষ্ট। আশাকরি বিশ্লেষণটা আপনার নিজস্ব। ধন্যবাদ চমৎকার বিশ্লেষণের জন্য।
বহুকাল আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক কুয়েত যুদ্ধ লাগাতে ইন্ধন দিল। এককাট্টা আরব দেশগুলো তখন দুই ভাগ হল। ইয়াসের আরাফাতের প্যালেস্টাইন, সিরিয়া, জর্ডান আর লেবানন ইরাকের সাথে, সৌদি আরব আর বাকি দেশগুলো কুয়েতের সাথে। এবার কি হয় তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে।