নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ভেতরের কারণগুলো জানতে এবং বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করি এবং সবার সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করি। সামাজিক, রাজনৈতিক আর আন্তর্জাতিক বিষয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। তাই ব্লগে পদচারনা।
প্রতিনিয়ত অন্যের ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে গর্ভবতী মায়েদের গর্ভের শিশুটিও রেহাই পাচ্ছে না।বিশ্বে পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাব নিরূপণে প্রথমবারের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)-এর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়ে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিশ্বে বছরে প্রায় এক লাখ ৬৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হচ্ছে।এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায়। গুলশানের এক বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত এক মহিলা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘তার স্বামী নিয়মিত ঘরে প্রচুর ধূমপান করতেন। দিনে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ প্যাকেট। এমনকি তিনি গর্ভবতী হওয়ার পরও তার স্বামী ধূমপান বন্ধ করেননি। সিগারেটের বিষাক্ত ধোঁয়ায় তার শ্বাস নিতে কষ্ট হতো, সারাক্ষণ মাথা ব্যথা লেগে থাকতো। এভাবে ৩ মাস পরে একদিন পেটে প্রচুর ব্যথা হলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে তিনি সুস্থ হলেও তার গর্ভের সন্তানটি নষ্ট হয়ে যায়। চিকিৎসক জানিয়েছেন পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়ে গর্ভের ভেতরই মারা গেছে তার শিশুটি।
পরোক্ষ ধূমপানে গর্ভস্থ শিশুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় গর্ভের প্রথম এবং শেষ তিন মাসে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে হতে পারে গর্ভপাত, অপরিণত শিশুর জন্ম, স্বল্প ওজনের শিশু, গর্ভকালীন রক্তস্রাব, প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, মৃত শিশুর জন্ম দেয়া ইত্যাদি।
ডব্লিউএইচও’র গবেষণায় জানা যায়, সিগারেট থেকে নির্গত ধোঁয়া ও এতে মিশে থাকা বিষাক্ত উপাদান গর্ভস্থ শিশুর বুকে এবং হাতে রক্ত সঞ্চালন কমিয়ে দেয়। ফলে বিকলাঙ্গ সন্তান জন্ম হতে পারে। ধূমপায়ী মহিলাদের ঠোঁটকাটা এবং তালুকাটা সন্তান জন্মদানের হার অন্যদের তুলনায় বেশি।
মায়েদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাব স্পষ্ট শিশুর জন্ম-পরবর্তী সময়েও। স্বল্প বুদ্ধিসম্পন্ন শিশু, অমনোযোগী, অতি চঞ্চলতা, আচরণগত সমস্যা, লেখাপড়ার সমস্যার জন্যও দায় রয়েছে এর। এমনকি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবে হঠাৎ মৃত্যুও হতে পারে এসব শিশুর।
পরিবারের ধূমপায়ী ব্যক্তির বিষাক্ত ধোঁয়ার পরোক্ষ শিকার উচ্চ, মধ্য কিংবা নিম্নবিত্ত- সব শ্রেণীর অনেক পরিবারের নারী-শিশুকে প্রতিনিয়তই নানা সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে চোখ জ্বলা এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। এ ভাবেই চার দেয়ালের ভেতর এবং বাইরে যেমন- বাস, ট্রেন, লঞ্চ, জনবহুল স্থান কিংবা কর্মক্ষেত্রে নারী-শিশুরা দেহের ভেতর ধূমপানের বিষ টেনে নিচ্ছে। আর আক্রান্ত হচ্ছে নানা মরণব্যাধিতে।প্রতিনিয়তই সিগারেটের ধোঁয়া কেড়ে নিচ্ছে দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম শিশুদের জীবনী শক্তি।
স্পেনের এ রকম এক গবেষণা দেখা গিয়েছে, যেসব বাসায় ধূমপান করা হয় সেসব বাসায় শিশুদের অস্থিরতাজনিত মানসিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা ৩ গুণ বেশি। কেবল তাই- নয় ওইসব শিশুরা রীতিমত অন্যের সিগারেটের ধোঁয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে।
সম্প্রতি ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে দেখা যায়, ধূমপান না করেও পরোক্ষভাবে শিশুরা মারাত্মকভাবে স্থায়ী ক্ষতির শিকার হচ্ছে। পরবর্তী জীবনে তাদের হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে শিশুদের হাঁপানি, ঠাণ্ডা লাগা বা সর্দিতে আক্রান্ত হওয়া, ঘুমের মধ্যে মৃত্যু, মেনিনজাইটিস ও কানের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। শিশু বেড়ে ওঠার ২০ বছর পরই এসব রোগের উপসর্গগুলো ধরা পড়ে।
সুতরাং ধূমপান কে না বলুন এবং পাবলিক প্লেসে অন্যকেও ধূমপানে বাধা দিন। ধূমপানকে আমরা অনেকেই বিষ পান বলে থাকি, কিন্তু ধূমপান কিন্তু বিষের থেকেও ক্ষতিকর। কেননা বিষ খেলে শুধুমাত্র যিনি বিষ খেয়েছেন তার একার ক্ষতি হয়। অথচ ধূমপান যিনি অধূমপায়ী তারও ক্ষতি করে। বিশেষ করে যেসব পুরুষ পিতা হতে যাচ্চেন তাদের কখনোই বাসায় ধূমপান করা উচিৎ নয়।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:০৯
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: সহমত। তবে বাধা দিতে হবে আমাদের সকলের স্বার্থেই।
২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫
সৈয়দ ইসলাম বলেছেন:
বাঁধা দিতে হবে। প্রত্যেক জায়গায়। পাব্লিক প্লেসে সোচ্চার হলে অনেকের সতর্কতা বাড়বে। ধন্যবাদ আপনাকে। গুরুত্বপূর্ণ লেখা প্রকাশ করেছেন।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৩
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: সহমত।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫৪
বিজন রয় বলেছেন: ভাল পোস্ট।
ধুমপান মারাত্মক।
এটিকে এড়িয়ে চলা অত্যাবশ্যক।
কিন্তু কে শোনে কার কথা!!