![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পড়ন্ত বিকেল ।
ঝিরঝির বাতাস বয়ে
চলছে । এই বাতাসে
গিয়ে মিশছে কিছু
হাসি কান্না মান
অভিমানের গল্প । আর
তারি মাধ্যমে
পরিসমাপ্তি ঘটতে
চলছে একটি দিনের ।
এবং এমন করে কালের
আবর্তনে বয়ে চলছে
দিনের এ পরিবর্তন ।
লেকের ধারে বসে
আছে সাফি । আর
ভাবছে অতীতের কথা
। যখন ও গ্রামে থাকত
তখনকার কথা । ওর
যখন ৭ বছর বয়স তখন
ওর মা এক দূরারোগ্য
রোগে ভুগে মারা যায় ।
তখন ও ছোটো ছিল
তেমন কিছু বোঝেনি ।
শুধু অজান্তে দুফোটা
চোখের জল ফেলেছে ।
আর দেখেছে তার
বাবার লুকিয়ে কান্নার
দৃশ্য । সাফির বাবা
ছিলেন গ্রামের
স্কুলের একজন
হেডমাস্টার । এবং
গ্রামের একজন
সম্মানীয় ব্যক্তি । মা
মারা যাওয়ার পর তার
বাবা তাকে মায়ের
অভাব নিজে পূরণ
করার যথাসাধ্য চেষ্টা
করেছিলেন । এভাবেই
দুঃখ কষ্টের মধ্যেই
ওর বেড়ে ওঠা ।
তাছাড়া সাফি
অসম্ভব মেধাবী ছিল
। গ্রামের সবার আশা
ছিল যে ও বড় কিছু
হবে । আর ঐ গ্রামের
স্কুল থেকেই সে ভালো
রেজাল্ট করে । ওর
বাবার চাকরিও তখন
শেষের দিকে । কিন্তু
ওর বাবার বিশ্বাস ও
ভালবাসা ছিল সাফির
ওপর যে ও একদিন
অনেক বড় হবে । সেই
আশা নিয়ে ওকে
ভর্তি করায় শহরের
এক কলেজে । এ
বয়সটা ওনেক খারাপ ।
ছাত্রদের ভবিষ্যত
নির্ভর করে মনে হয়
এই বয়সেই । ওর
সামনেও ওনেক
প্রতিবন্ধকতা আসে ।
কিন্তু সে তা
সুকৌশলে এরিয়ে যায় ।
টিউশনি করে আর
বাবার দেওয়া টাকায়
ওর দিন চলে । ওর এতে
নেই কোনো অভিযোগ
নেই কোনো অতৃপ্তি ।
এভাবেই ও দুইটা বছর
পার করে একটা ভাল
রেজাল্ট ও
শিক্ষকদের দোয়া ও
ভালবাসা নিয়ে কলেজ
জীবনকে বিদায়
জানায় । কিন্তু জীবন
তো আর থেমে থাকে না
। এদিকে ওর বাবাও
চাকরি শেষ করে
অবসর নেন এবং
জীবনের অন্তিম
দিনের অপেক্ষা করতে
থাকেন । এখন সাফির
উদ্দেশ্য ঢাকা
মেডিকেলে চান্স
নেওয়া । আর এজন্য
কোচিং করতে হয় ।
সেজন্য প্রচুর টাকা
লাগে । এই কথা ওর
বাবা জানতে পারে আর
নিজের জমি বিক্রয়
করে ওর লেখা পড়া
চালিয়ে যাবার পয়সা
যোগান দেয় । এভাবে
বাবার দোয়া ও নিজের
নিরলস প্রচেষ্টায় ও
মেডিকেলে চান্স পায় ।
আর কয়েকদিন পর ওর
ডাক্তার হয়ে বের
হওয়ার কথা । এরই
মধ্যে খবর পায় ওর
বাবা অসুস্থ হয়ে
পরেছেন । ও দেরি না
করে বাড়িতে যায় ।
বুঝতে পারে ওর বাবা
আর নেই । চলে গেছে
না ফেরার দেশে । ওর
বুক ফেটে কান্না আসে
। যে বাবা ওকে ওর
মায়ের অভাব বুঝতে
দেয়নি , নিজের
রক্তকে পানি করে ওর
লেখাপড়ার খরচ
চালিয়ে এসেছে আর
সেই বাবা আজ
দুনিয়ায় নেই এটা
ভাবতেই ওর গা ঝাকি
দিয়ে ওঠে । দাফন
কাফন সম্পন্ন করে ও
। আর নিজ হাতে ওর
বাবাকে কবরে শোয়ায়
। বাস্তবতাকে মেনে
নিয়ে আবার ঢাকা
আসার প্রস্তুতি নেয়
সে ।এসময় ওর বাবার
এক ডায়েরি চোখে পড়ে
ওর । তা সজত্নে
ব্যাগে তুলে নেয় । ঢাকা
এসে ঐ ডায়েরিটা
খুলতেই একটা চিঠি
চোখে পড়ে তার । ভাল
করে পড়ে দেখে যে ওটা
ওকে উদ্দেশ্য করেই
ওর বাবা তাঁর মৃত্যুর
আগে লিখে ডায়েরিতে
রেখে গেছেন । যতই
ডাইরিটা পড়ে ততই
ওর চোখ দিয়ে পানি
পড়ে । অসংখ্য উপদেশে
ভরা এই চিঠি । আর
কয়েক দিনে ধীরে
ধীরে পড়ে শেষ করে
সেই ডাইরিটা ।
জীবনের প্রতি
পদক্ষপেই ওর বাবার
দেওয়া উপদেশ অনুসরন
করে ও । একদিন ও
ডাক্তার হয়ে বেড়িয়ে
আসে । এখন অনেকেই
তাকে ডাক্তার
হিসেবে এক নামেই
চিনে । সময় বুঝে
একজন সত্ ও সুন্দরী
মেয়েকে বিযে করে । দু
বছর পর তাদের সবার
মুখ উজ্জল করে
দুনিয়াতে আসে এক
ছেলে সন্তান । নাম
রাখে সাবিত । এখন
সাবিতের বয়স ৫ বছর
।
->বাবা , বাবা সন্ধ্যে
হয়ে এল বাসায় যাবে না
।
ওর ছেলের ডাক শুনে
ঘোর কাটে সাফির ।
এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে
উঠে দাঁড়ায় ও । সামনে
ওর আগত স্বপ্নের
অনাগত ভবিষ্যতের
হাতছানি. . . . . . . . . .
তাই সবাই বাবা মার
উপদেশ মেনে চলার
চেষ্টা করি ।
লেখা : prehistoric
fossils (শাহরিয়ার
আসলাম)
©somewhere in net ltd.