নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন এক সময় লেখালেখি শুরু করবো। এখন যা লিখছি তা সেই সময়ের জন্যে প্রস্তুতি আসলে। আর লেখার জন্যে নতুন নতুন তথ্য যোগাড় করছি আপাতত।

ফায়েজুর রহমান সৈকত

মুক্ত সকল চিন্তা করি, নিজের সাথে নিজেই লড়ি।

ফায়েজুর রহমান সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

চারিদিকে বাংলাদেশ(আত্মকথন)

১৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:১৩

সেবার ক্লাস ফাইভে পড়ি। আমার বর্তমান স্কুল ফুলকলি পৌর কিন্ডার গার্টেনের সাথে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়া আমার প্রাক্তন স্কুল উপজেলা আদর্শ বিদ্যালয়ের একটি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করেছি। সেই খেলায় ফুলকলি টিমের ক্যাপ্টেন আমি। ক্যাপ্টেন যেহেতু তাই নিজের টাকায় স্কচটেইপ আর টেনিস বল কিনেছি, স্টাম্প জোগার করেছি, তুমুল উত্তেজনার সম্ভাবনাময় এই খেলার সংবাদ সবার কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তারপর খেলার দিন খুব ভোরে পড়ায় ফাঁকি দিয়ে চুপেচুপে মাঠে এসে পিচ ঝাড়ু দিয়েছি, স্টাম্প গেড়েছি। তারপর শুক্রবার সকাল সাড়ে ন’টার দিকে খেলা শুরু হলো এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি আমরা হেরে যাই। সেদিন ম্যাচ হেরে উত্তেজনাতে মাঠেই বসে সেকি ফুঁপিয়ে কেঁদেছিলাম। এই একটি মাত্র ম্যাচে আমি এত কষ্ট পেয়েছিলাম যে আজকে ১৬বছর পরেও সেই ম্যাচের কথা ভুলি নাই।

ক্রিকেটের সাথে বোঝাপড়াটা ছোটকাল থেকেই তৈরি হয়েছিল। ক্লাস থ্রি ফোরে পড়ার কালে পুরোপুরি খেলা বুঝি। পড়া ফাঁকি দিয়ে মাঠে সারাদিন পড়ে থাকি আর চাইর-ছক্কা খেলি। এটি ঠিক যখন আমার সিরিয়াস আম্মা বুঝতে পারলো তখন একটা অভিনব বুদ্ধি বের করলো। আমি খেলতে যাবার কিছুক্ষণ পরেই একটা বড় বেত(আদতে সাইজ বিহীন লাঠি) নিয়ে আম্মা মাঠে চলে যেত আর পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী আমারে সবার সামনে দৌড়ানি দিতো। আম্মা হয়ত ভেবেছিল সবার সামনে দৌড়ানি খেয়ে শরম পেয়ে আমি আর খেলতে যাবোনা কিন্তু ঘটনা হলো উল্টো। তারপর থেকে খেলার আগে ব্যাটিং দলের কাউকে পাহারায় বসাতাম যেন আম্মা আসার আগে ইঙ্গিত দিতে পারে। ফলে আম্মা বেশিরভাগ সময় আমারে আর মাঠে এসে খুঁজে পেতোনা। কিন্তু আম্মা ঠিকই বুঝতো আমি আশেপাশেই আছি।

ছোটবেলায় ক্রিকেট বলতে বুঝতাম টিয়ারঙ্গা টেনিস বলে দুই প্যাঁচ ওসাকা স্কচটেইপ আর ধার করা যেকোন একটা ব্যাট হলেই হলো। আমার পছন্দ ব্যাটিং হলেও আমি ছিলাম ছিলাম মূলত বোলার । সারা জীবন টেইপ-টেনিসে বল করে বড় হয়েছি কিন্তু জীবনে একবার কাঠের বল দিয়ে বল করার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেটি ছিল স্কুলভিত্তিক টুর্ণামেন্ট। তখন মাধবপুর পাইলট স্কুল মানেই ছিল একটা সিরিয়াস আর মান সম্মানের ব্যাপার স্যাপার। সব প্রাক্তন সহ বর্তমান তুখোড় খেলোয়াড় আর শিক্ষকরা মাঠে উপস্থিত থাকতো। এরকম একটা ম্যাচে সেকেন্ড স্পেলে বল করার সুযোগ পেয়ে প্রথম তিন বলে তিন উইকেট নিয়ে প্রথম তিন বল পর্যন্তই চারপাশ আলোরিত করে ফেলেছিলাম। সবার মুখে সৈকত সৈকত!আহা! যদিও পরের তিন বলে তিন ছক্কা সহ একটি নো বল দিয়ে ১৯রান দিয়েছিলাম হিহিহি। ক্লাস টেনের পরে তিন বছর মাঠের ধারে কাছেও যাইনি।
তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আবারও ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলাম। আগে যাও একটু আধটু ব্যাটিং করতাম কিন্তু এখানে এসে নিজেকে পুরোদমে বোলার হিসেবে পরিচয় দিলাম। এবং মোটামুটি বেশ ভাল গতি দিতে পেরে প্রথম বর্ষেই হলের হয়ে ওপেনিং বল করার সুযোগ পেয়েছিলাম। হলের হয়ে, ফ্যাকাল্টির হয়ে সেকি খেলাটাই না খেললাম।

ক্রিকেটে আমার প্রিয় ব্যাটসম্যানরা হলেন জাবেদ ওমর, হাবিবুল বাশার, আশরাফুল, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, ইনজামাম উল হক, ইউসুফ ইয়োহানা, শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি, জয়সুরিয়া, জয়াবর্ধনে, সাঙ্গাকারা, পন্টিং, গিলক্রিস্ট, হেইডেন, সাইমন্ডস, ম্যাককালাম, হাইন্ডস, গেইল, লারা, এন্ডি ফ্লাওয়ার।
আর প্রিয় বোলাররা হলেন মোহাম্মদ রফিক, আল আমিন, সৈয়দ রাসেল, মোস্তাফিজ, রুবেল, ওয়াসিম আকরাম, শোয়েব আকতার, মোহাম্মদ আমির, অনিল কুম্বলে, ইরফান পাঠান, হরবজন সিং, জহির খান, চামিন্দা ভাস, লাসিথ মালিংগা, মুরালিধরন, শেন ওয়ার্ন, গ্লেন ম্যাকগ্রা, ব্রেট লি, শন পোলক, ডেল স্টেইন, ডেনিয়েল ভিট্টোরি, শেন বন্ড।

একটা সময় ছিল যখন সমর্থনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পছন্দ হাতে রাখতে হতো। ইন্ডিয়া-পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা এদের কারে থুইয়া কারে সমর্থন দিবো এনিয়ে দ্বিধায় পড়ে যেতাম। তখন আমার বাংলাদেশ দূর্বল দল ছিল। তাই খেলা দেখতে বসার আগে কোন ভরসা রাখতে পারতাম না। এক বুক ব্যথা আর অপমান নিয়ে আশার প্রদীপরে নিভিয়ে খেলা দেখতে বসতে হতো। কিন্তু এখন সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমরা আর ছোট দল তো নইই বরং সবচেয়ে বড় টূর্ণামেন্টেও কোয়ার্টার ফাইনাল আর সেমিফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারি।
আজকে আমাদের স্বপ্নের সেমিফাইনাল। চ্যাম্পিয়ন কাপটি থেকে আমরা মাত্র দুই ধাপ দূরে। এমতাবস্থায় নিজের দেশ ছাড়া আর কিছু কি ভাবা সম্ভব? শকু মিয়ার মত ক্রিকেটের ছেলের জন্যে অন্তত সম্ভব নয় হিহিহি।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আশাকরি বাংলাদেশ জিতবে। ছোটবেলায় যখন ক্রিকেট খেলতাম তখন খেলায় হেরে গেলে ঘুম আসতনা। খুব কষ্ট হত।
বাংলাদেশ হেরে গেলেও খুবই খারাপ লাগে। মাঝে মাঝে ভয়ে খেলা দেখিনা।
আপনার আত্বকথন ভালই লাগল। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।

১৬ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:০৯

ফায়েজুর রহমান সৈকত বলেছেন: ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.